রৌমারির বাজারে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি
হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন। আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি।
আজ আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। দুদিন আগেই আমি রৌমারী থেকে ঘুরে আসলাম। রৌমারীতে গিয়ে সেখানে বাজারে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করেছিলাম, সেই বাজারের কিছু ছবি এবং আমার ঘোরাঘুরি অনুভূতি নিয়ে আমার আজকের এই পোস্ট।
কুড়িগ্রাম জেলার সর্বশেষ দুটি উপজেলার একটি হল রৌমারী, ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে রৌমারীতে যেতে হয়। ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকায় করে যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টার মতো, এখন রৌমারী যাওয়ার জন্য নতুন কিছু ঘাট চালু করা হয়েছে এই ঘাট গুলো দিয়ে রৌমারী যেতে সময় লাগে ১ ঘন্টার মত।
কুড়িগ্রাম জেলার উপজেলাগুলোর মধ্যে সবথেকে জাকজমক উপজেলা হলো রৌমারী। উপজেলা হলেও ঠিক জেলার মতোই উন্নত এই উপজেলা। তবে রাস্তাঘাট কিছুটা খারাপ এই রৌমারী উপজেলার। তবে একটি জেলা শহরে যা যা পাওয়া যায় সেই সব কিছুই রৌমারী উপজেলাতেও পাওয়া যায়।
শুধু অফিস আদালতের কাজের জন্য রৌমারির মানুষকে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে আসতে হয়, অফিস আদালতের কাজ না থাকলে তাদের কুড়িগ্রামে আসতেই হত না কারণ রৌমারী সবকিছুতে পরিপূর্ণ। আমার কাছে এই রোমারি বেশ ভালই লাগে শুধু একটাই জিনিস খারাপ লাগে সেটা হল এখানকার রাস্তাঘাট এবং ধুলাবালি।
রৌমারী নদীমাতৃক এলাকা রৌমারীর চারদিকেই বালুরচর দিয়ে ভর্তি। এত বেশি বালুরচর থাকায় রৌমারীতে ধুলাবালির প্রকোপ টা একটু বেশি, একটু জোরালো বাতাস বইলেই মনে হয় ধুলোর ঝড় চলে এসেছে।
এই রৌমারির এমন কোন জায়গা নেই যেখানে আমার আত্মীয়-স্বজনের বাসা নেই প্রায় সবগুলো এলাকাতেই আমার আত্মীয় রয়েছে। তাই মাঝে মাঝেই রৌমারীতে আসতে হয়। রৌমারী আসতে হলে নৌকা দিয়েই আসতে হয় আর এই নৌকা জার্নি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।
নৌকা জার্নি করার সময় চারিদিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নদীর বিশুদ্ধ হওয়া আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। তাই ছোট থেকেই এই নৌকার জন্য আমার কাছে খুবই প্রিয়, সুযোগ পেলেই আমি বাড়ি ছেড়ে রৌমারীর উদ্দেশ্যে রওনা হই।
জায়গা: ভোলামোড় রৌমারী
সময়: সন্ধ্যা ০৬:৩৬
তারিখ: ০১/০১/২০২৩
রৌমারির লোকজনের প্রধান যাতায়াত করার মাধ্যম হলো এই ভ্যান গাড়ি। বাজার থেকে রৌমারির যে কোন এলাকায় যেতে চাইলে এই ভ্যান গাড়ির সাহায্যেই যেতে হয়। রৌমারীতে একদমই রিকশা নেই বললেই চলে।
আমিও এই ভ্যান গাড়িতে চড়ে অনেক ঘোরাঘুরি করেছি, সত্যি বলতে এই ভ্যান গাড়িতে চড়ে ঘুরতে বেশ ভালই লাগে। বৃষ্টির সময় একটু অসুবিধা হলেও শুকনো মৌসুমে এই ভ্যান গাড়িতে উঠে ঘুরতে বেশি মজা। চারদিকের পরিবেশকে খুব ভালোভাবেই উপভোগ করা যায় এই ভ্যান গাড়িতে চড়ে ঘুরলে।
জায়গা: রৌমারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:৪৩
তারিখ: ০১/০১/২০২৩
রৌমারী খুবই উন্নয়নশীল এলাকা হলেও বাজারগুলোর মধ্যে এখনো গ্রাম্য ভাব রয়েই গিয়েছে। গ্রামের দিকে যেমন টং দোকান করে সবকিছু বেচাকেনা হয় তেমন এই রৌমারির বাজারেও এরকম অসংখ্য টঙের দোকান চোখে পড়ে।
আর এই দোকানগুলোতে বিক্রি হয় বিভিন্ন রকমের খোলা বিস্কিট, বাদাম, বাড়িতে বানানো খোলা চানাচুরসহ বিভিন্ন সামগ্রী। এই খাবারগুলো সম্ভবত খুব একটা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হয় না তবুও এই খাবারগুলো খেতে কিন্তু ভীষণ সুস্বাদু।
আমার এখনো মনে পড়ে অনেকদিন আগে এরকম দোকান থেকে বিস্কিট চানাচুর কিনে খেয়েছিলাম সে বিস্কিট চানাচুরের স্বাদ একদমই অন্যরকম ভালো লাগার মত ছিল। এবার হাতে খুব একটা সময় না থাকায় এই দোকানটায় খুব একটা দেরি করিনি শুধু ছবি তুলে নিয়েই সামনে এগিয়ে গিয়েছি।
জায়গা: রৌমারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:৪৬
তারিখ: ০১/০১/২০২৩
তারপর হাঁটতে শুরু করলাম সামনের দিকে, সেদিন সম্ভবত রৌমারীর হাট ছিল কারণ বাজারে লোকজনের সমাগম ছিল অন্যদিনের থেকে অনেক বেশি। বাজারটা এতটাই জাঁকজমক ছিল যে বোঝাই যাচ্ছিল না যে এটা রৌমারীর বাজার।
আমিও অনেকক্ষণ সেই বাজারের ভেতর হাঁটাহাঁটি করেছি, বাজারের ভেতর আমার এক বন্ধুর সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে দেখা হয়ে যায় তার সাথে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে গল্প গুজব করে আবার নিজের মতো ঘোরাঘুরি করতে থাকি।
জায়গা: রৌমারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:৪৮
তারিখ: ০১/০১/২০২৩
আমরা শহরের দিকে বেশিরভাগ ফলের দোকান গুলোই বড়সড়ো করে সাজানো অবস্থায় দেখি কিন্তু গ্রামের দিকে গেলে এভাবে ডালিতে করে ফল নিয়ে ফলের দোকানগুলোকে দেখা যায়। এই কমলাগুলো ইন্ডিয়া থেকে আমদানিকৃত কমলা।
একটা কথা তো বলতেই মনে নেই রৌমারির পাশেই ভারতের আসাম বর্ডার। আসাম থেকে রোজ বিভিন্ন ধরনের পণ্য সামগ্রী তুরা ল্যান্ড পোর্ট দিয়ে আমদানি করা হয়। বিশেষ করে শিমলা আলু এখানে লোকজনের খুবই প্রিয় একটি খাবার এই শিমলা আলু ভারতের শিমলা থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়।
বাজারে লোকজনের ভিড়ে ভালোমতো দাঁড়িয়ে ছবিও তুলতে পারছিলাম না তাই এই ছবিটি কিছুটা ঘোলা হয়েছে। এজন্য আমি সবার কাছে অনেক বেশি দুঃখিত।
জায়গা: রৌমারী বাজার
সময়: সন্ধ্যা ০৬:৫০
তারিখ: ০১/০১/২০২৩
এটা হল রৌমারী বাজারের পানের দোকান, আমরা শহরের যে পানগুলো দেখি সেই পানগুলোর থেকে এই দোকানে দেখা পানগুলো একদমই আলাদা। এগুলো হলো আসামি পান বাংলাদেশের যে পান গুলো পাওয়া যায় সেই পানগুলোর থেকে এই পানগুলো মাপে অনেক বড়।
তারপর আমি আরো অনেকক্ষণ বাজারে ঘোরাঘুরি করি, আরো কিছু বন্ধুদের সাথে বাজারে দেখা সাক্ষাত হয় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে গল্প করি চা খাই। তারপর ঘোরাঘুরি করতে করতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি নটা পার হয়ে গিয়েছে। তাই আর বেশি দেরি না করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই।
এদিকে না নিয়ে অনেকবার ফোন দিয়েছে রাতের খাওয়া দাওয়া করার জন্য। রৌমারী উন্নয়নশীল এলাকা হলেও গ্রামের মত অবস্থা এখানে এখনো বিরাজমান। এখানে মানুষজন রাতের খাবার খুব তাড়াতাড়ি সেরে ফেলে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে।
যাইহোক বন্ধুরা আশা করি আমার আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে, আমার পোস্টটি আপনাদের কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার এই পোস্টে আসার জন্য। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভকামনা রইল সকলের জন্য।
We support quality posts anywhere and any tags.
Curated by : @steemdoctor1
Thank you 🥰
আপনি বাজারে হাটাহাটি করেছেন আর হটাত বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে দাড়িয়ে গল্প করেছেন। বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন। আসলে বাজারে ঘুরতে আমারও খুব ভালো লাগে, বিভিন্ন রকমের কাচামাল, নিত্যনতুন খাবার, ইত্যাদি খাবার সদাই দেখতে ও খেতে ভালো লাগে। আমি যখন বাসায় যাই, আব্বুকে বাজারে যেতে নিষেধ করি। আমিই যাই, ভালো লাগে।
যাইহোক আপনার রৌমারী বাজারের ঘুরাঘুরি নিয়ে পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসসালামু আলাইকুম
সন্ধা বেলায় বাজারের মধ্যে ঘোরাঘুরি করার আনন্দটাই অন্যরকম।
বিশেষ করে গ্রাম্য বাজারগুলোতে সন্ধ্যার পরে অন্যরকম একটা আমেজ পাওয়া যায় ।যার কারণে ওই সময়টায় বাজারের মধ্যে ঘুরতে গেলে, অন্যরকম একটা আনন্দ উপভোগ করা যায়।
আমার কাছে আপনার লেখাটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো। তার সাথে আপনার বাজারের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা ফটোগ্রাফি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
তোমার পোস্টের মাধ্যমে অনেকদিন পর রৌমারির বাজারটি দেখতে পেলাম। বাজারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। তুমি ঠিকই বলেছ, রৌমারি সবকিছুতেই পরিপূর্ণ, শুধু অফিস আদালতের কাজ নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলাতে আসতে হয়। খুবই চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছো রোমারি বাজারে ঘোরাঘুরি নিয়ে, পড়ে খুব ভালো লাগলো। খুব সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।