The Diary Game || June 14, 2024 || ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আনন্দ।

in Incredible India2 months ago

প্রিয় বন্ধুরা ,

  • আশা করছি সবাই ভালো আছেন ।আমিও বেশ ভালো আছি। আজ আমি বেশ আনন্দিত দীর্ঘ একটা মাস পরে বাড়ি ফিরছি এই একটা মাস আমার কাছে এক বছরের সমান। আর এই আনন্দের দিন টা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো না তা কি করে হয়! তো চলুন শুরু করছি সেই শুরু থেকে এই।

আজ বাড়ি যাওয়ার আনন্দে ঘুম ভেঙ্গেছে আমার ভোর চার টা বাজে, রাতে তো ঘুমিয়ে আসতে ছিল না, ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু নাস্তা তৈরি করলাম, এবং মেয়ে কে ডেকে তুললাম। ওকে রেডি করে আমিও রেডি হয়ে নিলাম। হাজবেন্ড খুব করে বলছিলো। কিছু খাওয়ার জন্য কিন্তুু খাওয়ার প্রতি কোন ইচ্ছাই আমার তখন ছিল না। কারণ এত সকাল বেলা কি করে খাবো,, অভ্যাস নেই যে।

তবুও তার কথা কারণে দুই পিস কেক খেয়ে নিলাম। আর মেয়েকে কিছুই খাওয়াতে পারি নি, এরপরে আমরা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে ছয়টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়েছি। বাসা থেকে বের হয়ে নিচে আসার পরে আমার হাজব্যান্ড জানতে পারলো,, আমাদের এই এরিয়ার ভিতরে যে অটো গাড়িগুলো চলে ও গুলো সাতটার আগে এক নাম্বার গেট পর্যন্ত যায় না।

এ কথাটা শুনে আমি তো বেশ হতভম্ব হয়ে গেলাম এবার কি হবে। আমার হাজব্যান্ড একটু ভেবে চিন্তে বললো, তুমি আমার সাইকেলের পিছনে ওঠো, কথা টা শুনে আমি অবাক। তার উপরে আবার মেয়েকে কোলে নিতে হবে। এত দূরের পথ যা শুরুতেই এই অবস্থা না জানি সামনে কি আছে,, কি আর করার অনেক কষ্ট করে ব্যাগটা কে সামনে দিয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে অনেক শক্ত করে বসেছি।

এটা আমার কাছে অনেক বড় একটা পরীক্ষার মত ছিলো, আমি একটু নড়াচাড়া করলেই বড় কোন বিপদ হয়ে যেতে পারে, তাই তখন আমার মনে হচ্ছিলো। এ যেন আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে আমরা এক নাম্বার গেট পর্যন্ত আসি। এরপরে গেট পার হয়ে বাহিরে বের হই।

  • এরপরে শুরু হলো আসল ঘটনা, গরুর হাট জ্যাম জট, এত এত মানুষের ভিড় ঠেলে কোন ভাবে কেরানীগঞ্জ কাউন্টারে এসে পৌঁছেছি। আমার বয়সে আমি কোনদিন ও এরকম জ্যামের মধ্যে পড়িনি ,এবং দেখি ও নি। তবে আমার কপাল ভালো, আমার হাজব্যান্ড অনেক কষ্ট করে তার এক বন্ধুর মামার মাধ্যমে আমার জন্য একটা টিকিট আগে থেকে বুক করে রেখেছিলো। যদিও 300 টাকার ভাড়া 700 টাকা রেখেছে,, তবে আমার হাজব্যান্ড খুশি একটা ডাইরেক গাড়িতে উঠিয়ে দিতে পেরে।

তাই এসে এই গাড়িতে উঠে পড়ে ছিলাম। এত বেশি মানুষের ভিড় ছিলো। যদিও তখন সাত টা বাজে নি। তবে আমার কাছে মনে হয়েছিলো এখন মনে হয় দুপুর। তবে অনেক কষ্ট হয়েছে এ পর্যন্ত আসতে কিন্তুু ভিতরে একটা আনন্দ কাজ করছিলো বাড়ি যাচ্ছি এই ভেবে। এরপরে হাসবেন্ড কে বিদায় দিলাম। যদিও খারাপ লাগছিলো মানুষ টা কে রেখে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছি এই ভেবে।

তবে মন কে বুঝিয়ে নিলাম কিছু করার নেই, পরিস্থিতি সবসময় এক রকম হয় না এটাই বুঝি নিলাম। এরপরে, গাড়িটা ছেড়ে দিলো । গাড়ি ছাড়া পাঁচ মিনিট পরেই শুরু হলো আমার মেয়ের বমি, পেটে কিছুই ছিল না পানি ছাড়া। একবার নয় দুইবার নয় সব মিলিয়ে চার বার বমি হয়েছে,,,, আর এর মধ্যেই শুরু হয়েছিল রাস্তার জ্যাম কেরানীগঞ্জ থেকে শুরু করে পদ্মা সেতুর টোল উঠানো পর্যন্ত ছিলো এই জ্যাম, এত বেশি বিরক্ত লেগেছিল আমার কি বলবো,, প্রচন্ড গরমে যেন অর্ধেক হয়ে গিয়েছি।

এত বেশি খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছিল আমার এবং আমার মেয়ের। কোন ভাবে কষ্ট করে রাজর পর্যন্ত এসে পৌঁছেছি, গাড়ি থেকে নামার পরে মনে হলো। যেন আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছি। এরপরে আবার একটা গাড়িতে উঠলাম, এখানেও সে একই অবস্থা ভাড়ার কোন কমতি নেই। তবে ভীষণ ভালো লাগছিলো কারণ নিজের জেলার মধ্যে ঢুকে পড়েছি। এরপরে আরো একটা ঘন্টা পার করার পরে আমি আমার এলাকার মধ্যে ঢুকেছি।

  • গাড়ি থেকে নেমে এই প্রথমে একটা ভ্যান গাড়িতে উঠলাম, কারণ আমি গাড়ি থেকে ভ্যান গাড়িতে ,উঠতে বেশি পছন্দ করি মুক্ত আকাশের খোলা বাতাস খেতে খেতে বাড়ি এসে পৌঁছলাম। আহ্ তখন যে কি শান্তি লাগছিলো। এরপরে বাড়ির গেটের সামনে এসে নেমে গেলাম। আমার মেয়ে তো আপা আপা করতে করতে এক দৌড়ে ঘরে ঢুকে গিয়েছি। আপা হলো আমার শাশুড়ি আম্মা।

বাসায় ঢুকে প্রথমে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নিলাম। এরপরে আমি আমার বিছানায় গিয়ে কিছুটা সময় রেস্ট নিয়ে ছিলাম। আর একটা শান্তির ঘুম দিয়ে ছিলাম। বিয়ের পর থেকে আমি আমার খাটে যে শান্তির ঘুম আমি ঘুমাতে পারি।। এটা অন্যের পালংকে গিয়েও মনে হয় হবে না। এরপরে উঠে সবার সাথে কথাবার্তা বললাম।

যেহেতু সামনে ঈদ অনেক পরিকল্পনা রয়েছে ঈদ কে ঘিরে, তাই শ্বশুরের সাথে বসে অনেক বিষয়ে কথাবার্তা বললাম। এসব কথা শেষ করতেই সন্ধ্যার আজান হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে দেখলাম শাশুড়ি আম্মা রান্নার আয়োজন করছে তাই একটু তার কাজেও সাহায্য করলাম।

তবে হঠাৎ করে সন্ধ্যার পরে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছি আমি,,, সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায় এবং আপনাদের মাঝে ফিরতে পারি। তাই আজ আর লিখব না এখানেই বিদায় নিবো আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
 2 months ago 

আপনি যেহেতু ঢাকা শহরে রয়েছেন। তাই এখন ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য বাড়িতে ফিরে এসেছেন। আসলে ঈদের সময় বাড়িতে আসা একটা পরীক্ষা। গাড়িতে বসে থাকা জ্যামের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করা। সবকিছু মিলিয়ে মোটামুটি অনেকটা ব্যস্ততা। কিন্তু তারপরেও আপনারা সঠিক সময়ে বাড়িতে ফিরে আসতে পেরেছেন। ঈদের সময় অনেক পরিকল্পনা অনেক জিনিসের প্রয়োজন হয়। তাই শ্বশুরের সাথে কিছু জিনিস নিয়ে কিছুটা সময় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আপনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আশা করি সৃষ্টি কর্তা খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে সুস্থ করে দেবেন। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

একদম তাই অনেক বড় পরীক্ষা, ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসা এত বেশি যানজটের মাধ্যমে এটা অনেক কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার।
তবে শুকরিয়া দিনশেষে আসতে পেরেছি।
আমার শশুর সব কিছুতেই আমাকে অনেক অনেকে রাখতে চাই। এবং ছোট্ট একটা বিষয় হলেও তিনি আমার সাথে পরামর্শ করে।
যদিও এত বুদ্ধি এখনো আমার মাথায় হয়নি তবে তাদের এই আগ্রহটা দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

আপনি যাদের পরিবারের বড় বউ আর আপনার কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া, এটা তাদের দায়িত্ব। তাই তারা যে কোনো পরামর্শ আপনার কাছ থেকে নিয়ে থাকে এবং আপনি চেষ্টা করেন তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য। এটা তো বেশ ভালো খবর। আশা করি পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন এবং আনন্দ খুব সুন্দর ভাবেই চলবে।

Loading...
 2 months ago 

আসলে আপনি তো এখন বর্তমানে ঢাকাতে আছেন এবং এই ঈদের গুনে ঢাকা থেকে তার নিজের পরিবারের সাথে ঈদ কাটানোর জন্য হাজারো মানুষ বাড়ি যাবে এবং গেছে আসলে পরিবারের সাথে ঈদ কাটানোর আনন্দটা অন্যরকম।

একটা সময় ছিল আমিও ঢাকায় ছিলাম আমি দুইটি ঈদ ঢাকা থেকে এসে নিজের বাড়িতে করেছে এবং এই আনন্দের অনুভব আমি করতে পারি এবং বর্তমানে পরিবার ছাড়া ঈদ কাটাবো এটা ভাবলেই কেমন জানি লাগে।

 2 months ago (edited)

ঈদের সময় সকলের বাড়ি যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। আত্মীয় পরিজনের সাথে ঈদ না কাটালে যেন ঈদের আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়। এজন্য রাস্তায় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। খুব সকালবেলা উঠলে আমিও কিছু না খেয়ে বেরিয়ে পড়ি। আসলে এত সকালে কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। অনেক চড়াই উৎড়াই পার করে অবশেষে ঠিকভাবে বাড়িতে পৌঁছেছেন দেখে ভালো লাগলো। সকলের সাথে আনন্দে ঈদ উদযাপন করুন সেই কামনা করি। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

বাবা!!!
অনেক কষ্ট করে পৌঁছালেন বাড়িতে। বাসে অনেকেরই বমি হয়। তাছাড়া কিছু না খাওয়ায় বোধহয় মেয়ের এমন অবস্থা হয়েছে। এ কথা সত্যিই আমরা দীর্ঘ দিন একটি খাটে শুতে শুতে অভ্যস্থ হয়ে পরি, যা বদলাতে সময় লাগে। শশুর বাড়ি ফিরে আপনি যে শান্তি পেয়েছেন, তা আপনার লেখায় একেবারে স্পষ্ট। অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা রইল। আশাকরি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য,,,,
যখন কষ্টের পরে আমরা ফলটা পাই তখন আমাদের সেই কষ্টটা স্থায়ী হয় না, ঠিক তেমন বাড়িতে আসার সময় আমার বেশ কষ্ট হয়েছে তবে আসার পরে কষ্টটা যেন নিমিষেই দূর হয়ে গিয়েছে।
মেয়েটাকে না খাওয়ানোর জন্য অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তবে খাওয়াতে ভয় পাচ্ছিলাম কারণ বমি করে ফেলে দিতো।
আপনাকেও ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ধন্যবাদ।

 2 months ago 

ঈদ বলে কথা, বাড়ি তো যেতেই হবে না হলে ঈদের আনন্দ তো মাটি হয়ে যাবে। বাড়িতে যাওয়ার আগের রাতে হয়ত আপনার ঘুম ঠিকমত হয় নি খুশিতে। আর এটা হওয়া স্বাভাবিক।

আপনার মেয়েকে কিন্তু খুব মিষ্টি লাগছে দেখতে। অনেক সকালে বাসা থেকে বেরিয়েছেন এজন্য তেমন কিছু খান নি। বাসে উঠলে বমি হওয়ার সমস্যা আমার আগে হতো তবে এখন আর হয় না। এত কষ্ট করে সবাই বাড়িতে ফিরে শুধু মাত্র পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

আসলেই বাসায় যাওয়ার আনন্দটা অন্যরকমের।আপনার খুশির ঠেলায় ঘুম আসতেছিলো না।আমারো এমন হয়।বিশেষ কোনো দিনে ঘুম আসেনা।যাই হোক আপনি আপনার স্বামীর সাইকেলে উঠেন।আবার কোলে বাচ্চা আছে।যদিও বা এটা কষ্টকর আর কঠিন, তবুও এর থেকে রোমান্টিক সিন আর কি হতে পারে।ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন,ধন্যবাদ

 2 months ago 

হ্যাঁ এটা রোমান্টিক সিন তবে, ওই সময়টা তে এই রোমান্টিক সিনের কথা মাথায় ছিল না তাহলে একটা ছবি তুলে রাখতাম।

তখন শুধু একটা একটা কথা মাথায় কাজ করছিল যে গেট পর্যন্ত যে ভাবেই হোক যেতে হবে। তবে পরবর্তীতে এটা নিয়ে ভীষণ ভেবেছি কারণ ,,হাজব্যান্ড সাইকেল চালিয়েছে আর তার পিছনে আমি এই প্রথম উঠেছি অবশ্য মনে রাখার মতন একটা বিষয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 61129.70
ETH 2660.38
USDT 1.00
SBD 2.55