আমি হাসনাহেনা আর আমার ইউজার নাম @hasnahena। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। Incredible India কমিউনিটির মেম্বার ও মডারেটরগণ @sampabiswas, @munaa, @manisha.jain9, @noelisdc এবং আমাদের শ্রদ্ধেয় এডমিন ম্যাম @sduttaskitchen সহ সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি @sduttakitchen ম্যাম কে এত সুন্দর একটি বিষয়কে কনটেস্টের বিষয় হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য। আর আমি চেষ্টা করছি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর সুন্দরভাবে দেয়ার জন্য।
অধিকার একটি সামাজিক ধারণা যা আমাদের ব্যক্তি জীবনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। সামাজিক জীব হিসেবে আমরাই অধিকার তৈরি করি আবার আমরাই এই অধিকারের লঙ্ঘন করি।আমার মতে, সমান অধিকার হচ্ছে সেই অধিকার যে অধিকার প্রদানে ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, নারী,পুরুষ, উচ্চ-নিম্ন স্তরে জন্মগ্রহণের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি সমাজ বা রাষ্ট্র তার অধিকার প্রদানে কোন বৈষম্য করবে না।এমনকি কোন ব্যক্তিও কারো অধিকার খর্ব করবে না। রাষ্ট্র কাউকে কোন রকমের নাগরিক অধিকার থেকে এবং মানুষ হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না। রাষ্ট্র ও জীবনের সর্বস্তরে সবকিছুতেই সকলের সমান অধিকার থাকবে।
বৈষম্যে পরিপূর্ণ এই পৃথিবীতে সমান অধিকার আজও একটি লড়াইয়ের বিষয়। প্রকৃতি যেহেতু সমস্ত অঞ্চলে সমানভাবে বিরাজমান নয় ঠিক একই রকম প্রভাব মানুষের জীবনে ও বিদ্যমান। অধিকার একটি আইনগত ধারণাও বটে। আবার জীবনের অধিকার অর্থাৎ বেঁচে থাকার অধিকার হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। তাই সমস্ত ধরনের অধিকার কে যখন একত্র করব সেখানে নারী পুরুষের কোন আলাদা জায়গা নেই বরং তা সবার জন্যই সমান। যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুসারে প্রতিটি ব্যক্তি তার কর্মে নিযুক্ত হতে পারবে। রাষ্ট্রের কর্তব্য হল প্রত্যেকের সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে সমাসীন করা। কর্মের অধিকার না থাকলে ব্যক্তি কখনোই সম্মুখ ভাবে তার ব্যক্তিসত্তার বিকাশ ঘটাতে পারে না।তাই বিশ্বের প্রতিটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মের অধিকার স্বীকৃতি লাভ করেছে। আমি মনে করি যোগ্যতার ভিত্তিতে সমান সুযোগ সকলকে দিতে হবে।
আমরা সবাই বেড়ে উঠছি এটা ঠিক কিন্তু ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সমান সুযোগ পাচ্ছি না ।খেয়াল করে দেখুন, কেবল কর্মের অধিকার থাকলেই সমান সুযোগ দেওয়া হয় না।উপযুক্ত কাজের জন্য উপযুক্ত বেতন দেয়া না হলে কর্মের অধিকার মূল্যহীন হয়ে পড়ে। ব্যক্তি জীবনেও ব্যক্তির কাজের মূল্যায়ন ও প্রাপ্য সম্মান না পেলে সমান অধিকার বর্তায় না। এখনো পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে অনেক সময় নারী-পুরুষ কে কাজে নেয়ার সময় ভেদাভেদ করা হয়।অথবা সে কতটা উচ্চ পর্যায় থেকে এসেছে এটি দেখা হয় । অনেক সময় ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা থেকেও তার বাহ্যিক রূপকে প্রাধান্য দেয়া হয়। ফলে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে মানুষের অধিকার খর্ব করা হওয়ার সুযোগ কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। কর্মবাজারে এখনো এটি প্রচলিত আছে যে পুরুষ থেকে নারী অবশ্যই বেতন কম পাবে কারণ তুলনামূলকভাবে তাকে কম যোগ্যতা সম্পন্ন হিসেবে ধরা হয়। আমি দেখতে পাই, সমাজ নারীর জন্য আলাদা কিছু কর্মের খাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। যেন এর বাইরে সমাজ তাকে যোগ্য মনেই করে না।সত্যিকার অর্থে আমরা বাহ্যিক ভাবে বেড়ে উঠছি তবে আমাদের নৈতিকতা, মানসিকতার দিক থেকে এখনো বহু অংশে আমরা পিছিয়ে আছি।
নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হলে সবার আগে নিজেকে শিক্ষিত করতে হবে।এজন্য শিক্ষা গ্রহণ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্যই বাধ্যতামূলক হওয়া জরুরী। শিক্ষার আলোই পারে একটি জাতিকে উন্নত করতে এবং বিভেদ বিভাজনকে দূর করে দিতে। তাই সর্বপ্রথমে আমি শিক্ষাকে রাখতে চাই পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে। আমার ক্ষমতা থাকলে আমি নৈতিক শিক্ষাকে করে দিতাম বাধ্যতামূলক। যাতে শিশু কাল থেকেই পরস্পরকে সম্মানবোধ ও নৈতিক শিক্ষার আলোকে শিশুরা গড়ে উঠতে পারে। তবে একটি ছোট সমস্যা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আর তা হলো বর্তমানে বাংলাদেশে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অধিক পরিমাণে শিক্ষিত হচ্ছে এই শিক্ষার হারের তফাৎ আবার সমাজে কিছুটা বৈষম্য সৃষ্টি করছে। আরো একটি বিষয় আমি যোগ করতে চাই ।ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অবকাশের অধিকার একান্ত প্রয়োজন। অবকাশ না থাকলে মানুষ যন্ত্রতুল্য হয়ে পড়ে।দিবারাত্রি কর্মরত থাকলে মানুষ চিত্ত-বিনোদনের সময় পায়না। তাই বৈচিত্র্যহীন জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অন্তরআত্মা অনেক সময় বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। আমি যদি কোন কিছু পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখতাম তবে অবশ্যই আমি মানুষের জীবনে চিত্ত-বিনোদনের প্রক্রিয়াগুলোকে বাধ্যতামূলক করে দিতাম।
আমি বিশ্বাস করি সমান অধিকার একটি দেশের অবস্থা উন্নত করতে অনেকখানি সহায়তা করে।কর্মক্ষম অবস্থায় প্রতিটি ব্যক্তি তার সামর্থ্য অনুযায়ী রাষ্ট্র তথা সমাজের জন্য কাজ করে। কিন্তু বৃদ্ধ হয়ে পড়লে রাষ্ট্র শুধু সরকারি বিভাগ গুলোতে কর্মরত ব্যক্তিদেরই পেনশনের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু বাকি সমাজের একটি বড় অংশ সরকারের থেকে সুবিধা বঞ্চিত থাকে। আর এখানেই বৈষম্য দেখতে পাওয়া যায়। তাই সরকারকে সার্বজনীন ভাতা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।সমাজতান্ত্রিক ও জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র সমূহে বার্ধক্য ভাতা, বীমা পরিকল্পনা, প্রভিডেন্ট ফান্ড পরিকল্পনা প্রভৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বিকলাঙ্গ, মারাত্মক ব্যাধিগ্রস্থ, অক্ষম বৃদ্ধ, দেউলিয়া, নদী ভাঙ্গনে সর্বহারা, এতিম, স্বামী পরিত্যক্তা, মাদকাসক্ত,পথশিশু,বিধবা,সন্তানহীন ব্যক্তিদেরও এই সুবিধাগুলোর আওতায় আনতে হবে। তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলার হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে। অর্থাৎ সামাজিক নিরাপত্তা অধিকার সমস্ত নাগরিকদের মধ্যে সমভাবে বন্টিত হলে দেশের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি হবে।
পরিশেষে আমার তিনজন বন্ধুকে আমি আমন্ত্রণ জানাতে চাই তারা হলেন:
@mdrabbe
@yoyopk
@suborna03
আপু প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই কনটেস্টের প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর খুব ভালোভাবে দিয়েছেন
তবে একটি জায়গায় আমি বুঝতে পারিনাই সেটি হলো।
কর্মবাজার বলতে আপনি কি বিশ্বের কর্ম রাজার তুলে ধরেছেন ,না শুধুমাত্র বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করছেন। যদি বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে থাকেন তাহলে এটা ঠিক আছে যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েদের কম বেতন দেওয়া হয় কিন্তু বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো ছেলে ও মেয়েদের অধিকার সমান এবং তাদের বেতন একই রকম।
বিশ্বের কর্ম বাজারে উন্নত কিছু দেশে শুধু সমান নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে পুরুষ থেকে নারী বেশি উপার্জন করে। কিন্তু সেটা তো পুরো বিশ্বের দৃশ্যপট নয়। পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে যারা আমাদের বাংলাদেশ থেকেও দরিদ্র। তাদের দেশে বৈষম্যের হার ও অধিক।
কর্পোরেট চোখ দিয়ে পৃথিবীর উন্নতি দেখলে হবে না। দেখতে হবে আপামর জনসাধারণের দৃষ্টিতে। এখনো বিশ্বের অনেক দেশ ক্ষুধা, দারিদ্রতা,কর্মহীনতা ইত্যাদির সঙ্গে লড়াই করছে। মাটি দিয়ে রুটি তৈরি করে খাওয়ার দৃশ্য আমরা এই পৃথিবীর বুকেই দেখেছি।
তাই বলতে চাই যে শুধু বেতনের বৈষম্য নয়। সবরকম বৈষম্যই সব দেশে বর্তমানে কম বেশি বিরাজমান।
আমার লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন সুন্দর ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপু আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই যে আমি যেখানে বুঝতে পারছিলাম না সঠিকভাবে উত্তর দিয়েছেন। ঠিক বলছেন আমাদেরকে জনসাধারণের চোখ দিয়ে দেখতে হবে পৃথিবীর প্রেক্ষাপট ।
Heartiest Congratulations!!
Thank you so much.