আমাদের জীবনে প্রতিবেশিদের ভূমিকা অনস্বীকার্য

in Incredible India2 years ago

greece-ge5f9cb2a5_1920.jpg

source
(আগেরকার দিনের মতো ভালো প্রতিবেশির পাশাপাশি সবুজে ঘেরা একটি গ্রাম্য পরিবেশ খুঁজে পাওয়াও বড্ড কঠিন)

প্রিয়,
পাঠকগণ,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের সপ্তাহের শুরুটা নিশ্চয়ই খুব ভালো ভাবে হয়েছে।

ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত আমরা জীবনের বহু পর্যায়ে বহু মানুষের সাথে পরিচিত হই। তাদের মধ্যে অনেকের সাথে আমাদের রক্তের সম্পর্ক, অনেকের সাথে আত্মার সম্পর্ক।

তবে আমরা নিত্যদিন যাদের সাথে ওঠাবসা করি তারা আমাদের শুধু আত্মীয় নয়, তারা পরমাত্মীয়- আমাদের প্রতিবেশী।

"প্রতিবেশী" শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে এমন অনেক পরিচিত মুখ ভেসে ওঠে, যাদের সাথে ছোটোবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত অসংখ্য স্মৃতি জমা হয়ে আছে।

আমরা অর্থাৎ মানুষেরা হলো সমাজবদ্ধজীব। আর সমাজ আমি বত্শুধুমাত পরিবারকে দিয়ে গঠিত হয় না। তারজন্য দরকার আরও কিছু মানুষ, কিছু পরিবার, যাদের আমরা প্রতিবেশি বলি।

আর আমাদের এই সকল প্রতিবেশিদের নিয়েই আমাদের সমাজ গঠিত হয়। আমাদের হাতের পাঁচ আঙ্গুল যেমন সমান হয় না, তেমনি আমাদের সব প্রতিবেশিও সমান মানসিকতার হয় না।

অথচ আমাদের জীবনের সমস্যায় বা কোনো বিপদে প্রতিবেশীরাই সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেখবেন আমাদের জীবদ্দশায় এমন অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন আমাদের বিপদের খবর আমাদের আপনজনদের কাছে পৌঁছে দিতে হলেও প্রতিবেশীদের সাহায্য দরকার হয়।

তবে হ্যাঁ একথাও অস্বীকার করার জায়গা নেই যে, এমন অনেক প্রতিবেশি আছে যারা ভিন্ন মানসিকতা বহন করে। অন্যের ভালো দেখলে যাদের হিংসা হয়। অন্যের খুশীতে যারা মন খুলে আনন্দ করতে পারে না।

কিন্তু জানেন আমার মনে পড়ে আমরা যখন ছোটো ছিলাম, তখন আমাদের প্রতিবেশিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিলো একদম নিজের মানুষের মতোই। তখন মানুষের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো অনেক স্বচ্ছ, অনেক আন্তরিক। কিন্তু আজকাল যদিও সেই আন্তরিকতা কিন্তু খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টের।

girl-g929695d29_1920.jpg

source
(আমাদের সময় প্রতিবেশি বান্ধবীর সাথে আমিও এমন অনেক ভালো মুহুর্ত কাটিয়েছি)

ছোটবেলায় পাশের বাড়িতে আমাদের পছন্দের কোনো রান্না হলে সেটা একবাটি আমাদের বাড়িতেও দেওয়া হতো। আবার আমাদের বাড়িতে রান্না হলে তাও চলে যেতো পাশের বাড়িতে।

কোনো অন্যায় করলে মায়ের মারের হাত থেকে যাতে প্রতিবেশি কোনো কাকিমা/জ্যেঠিমা রক্ষা করে, তার জন্য উচ্চস্বরে চিৎকার করে কান্না করতাম। আর কান্নার আওয়াজে সকলে ছুটে আসতেন।

শহর হোক বা গ্রাম বর্তমান সময়ে এমন মুহুর্ত কিন্তু খুবই বিরল। আজকাল আপনজনের সাথে একসাথে থাকতেই ভালো লাগে না, সেখানে প্রতিবেশিদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা কেউই করে না। যে যার মতো একা একা থাকতেই পছন্দ করে।

এমনকি নিজের সন্তানদের ঘরের ভিতরে বন্দী রেখে মানুষ করায় সকলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু তারা জানে না এতে বাচ্চাদের কিন্তু সমাজে বাস করার মতো মানসিকতা তৈরি হয় না।

childhood-g836c50bc8_1920.jpg

source
(আমাদেরও উচিৎ নিজের সন্তানের এমন ভাবেই একে অপরের সাথে মেশার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া)

যদি আগেরকার দিনের মতো প্রতিবেশিদের সাথে সকলে মিলে মিশে থাকতে পারি তাহলে নিজেদের সম্পর্ক ভালো থাকার পাশাপাশি আমরা বাচ্চাদেরও একটি সুস্থ পরিবেশের মধ্যে বড়ো করে তুলতে পারবো।

এই বিষয়ে আপনাদের কি মত নিশ্চয়ই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভ রাত্রি।

Sort:  
 2 years ago 

@baishakhi88 আমাদের ছোটোবেলায় ঠিক এমনটাই হতো যে, মায়ের হাতে মারের থেকে বাঁচার জন্য পাশের বাড়ির কাকিমার কাছে চলে যেতাম।

এখন আর ছেলে মেয়েরা দুষ্টুমি করে না, কারন সময় কোথায় তাদের স্কুল থেকে বাড়ি এসে মাস্টারের কাছে পড়তে যাওয়া তারপর সেখান থেকে বাড়ি এসে আবার স্কুলের পড়া করা।তার মাঝে সময় পেলে ফোনে কার্টুন দেখে নেয়।

এখন বাচ্চাদের ফোন থাকলেই আর কিছু লাগে না।এখনকার সময় আগেকার মতো প্রতিবেশী বাচ্চাদের সাথে মিলে মিশে থাকা সময় কোথায়।

যাইহোক ভালো থাকবেন ছেলেকে নিয়ে।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন, আজকালকার বাচ্চাদের মোবাইল হলেই হলো। খেলাধুলা তো প্রায় ভুলেই গেছে যত খেলা তাও মোবাইলে।

 2 years ago 

দিন বদলাচ্ছে সাথে বদলাচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপনের ধরন, এখন আমি এবং আমার বাইরে কেউ কিছু দেখতে পায় না।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন দিদি। জীবনযাপন এই ভাবে বদলাচ্ছে যে আগামীদিনের কথা ভেবে ভয় লাগছে আজকাল।

 2 years ago 

প্রতিবেশী আজ আর সেইভাবে আলো ফেলে না জীবনে, কারণ এখন ফ্ল্যাট কালচার সব মুছে ফেলেছে।

 2 years ago 

একদম সত্যি স্যার। আজকাল খোলামেলা বাড়ির থেকেও ফ্ল্যাটে থাকতে পছন্দ করে সকলে। আমার যেন দমবন্ধ হয়ে আসে।

Loading...
 2 years ago 

@baishakhi88 আমরা ছোটোবেলায় কতো রকমের খেলা খেলতাম। উলটে খেলা করার জন্য মার খেতাম। কিন্তু এখন এর বাচ্চাদের খেলা করার সময় কোথায়।

অনেক কষ্টে একটু সময় পায় পড়াশোনা করে, তখন ওই যে ফোন নিয়ে বসে পড়ে। আমাদের ইমন তাই করে। শুধু রবিবার একটু পাশের মাঠে খেলতে যায়।

অনেক ভালো লাগলো এত সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সাথে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 68616.15
ETH 2450.08
USDT 1.00
SBD 2.43