হারিয়ে যাওয়া শৈশব
সকলে নিশ্চয়ই ভালো আছেন। আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে আমিও বেশ ভালোই আছি। আজকে আমি শৈশবের হারিয়ে যাওয়া কিছু বিষয়ে আলোচনা করতে চাই।
শৈশব চলে যাওয়ার পর প্রথমেই যে বিষয়টি হারিয়েছি সেটি হচ্ছে বিশ্বস্ত কিছু বন্ধু। সবার জীবনেই ঠিক এমনটাই ঘটে থাকে। সেসময় সারাদিনে খেলাধুলাই ছিলো জীবনের মূল লক্ষ্য। একটুকরো খাবার ভেঙে কয়েক টুকরো করে খাওয়ার দিন ছিলো সেই শৈশবে।খেলতে খেলতে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়া দিন গুলোতে বাবা-মায়ের দৌড়ানি, বকুনি, পিটুনি খাওয়া দিনগুলি আর হাজার চেষ্টাতেও ফিরে পাওয়া যাবে না।
ঘরের চাল চুপ করে বের করে নিয়ে এসে একটাকা দামের আইসক্রিম কিনে খাওয়া,দিয়াসলাই প্যাকেটকে খেলনা বানিয়ে খেলা, গুলি খেলার তো তুলনাই হয় না।সব বন্ধুর বাড়িতে একটা করে গাড়ির টায়ার ছিলো।মাঝে মাঝে সেটা নিয়ে বের হতাম।আহ কতোই না মিস করি সেই দিনগুলিকে।যদি আবারো যাওয়া যেতো শৈশবে।
আমার হারিয়ে যাওয়া দিনগুলিতে যেসব জিনিসের আনন্দ পেয়েছি বর্তমান যুগের বাচ্চারা সেসব থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। হয়তো সুযোগের অভাব নয়তোবা সেই সময়ের সব জিনিস আর টিকে নেই।যেমন ধরুন আগে গোসল করার জন্য অনেক পুকুর ছিলো।এখন সেগুলো বসতবাড়ি করার উদ্দেশ্যে ভরাট করে দিচ্ছে।এভাবে তারা সাতার শিখতে পারছে না।
আগে সব গ্রামে খেলার জন্য পরিত্যক্ত যায়গা থাকতো আর এখনকার দিনে সবখানে ঘনবসতি হওয়ায় তেমন যায়গা পাওয়া যায়না।আর সব থেকে বড় কথা এখনকার দিনের বাচ্চাদের অভিভাবকরা তাদের ছোট থেকে ঘরবন্দী করে রাখতে অভস্ত্য করে ফেলে।হয়তো বা বেশি ভালোবাসাতে নয়তোবা চাকরির চাপে।
আমার শৈশব থেকে হারিয়ে ফেলা সব থেকে বিশেষ একটি জিনিস হচ্ছে জোনাকির সাথে খেলা।এই বিষয়টি আপনারা খেয়াল করছেন কিনা জানিনা।আগেরকার দিনে বাড়ির আনাচে কানাচে সন্ধ্যা হলেই জোনাকির মেলা শুরু হয়ে যেতো। কখনো কখনো তারা বাড়িতেও চলে আসতো।আমি এই বিষয়টি খুবি উপভোগ করতাম।সব সময় ভাবতাম একটা পোকা কিভাবে আলো দিতে পারে।
মাঝে মাঝে তাদের ধরে এসে আমার রুমে ছেড়ে দিয়ে শুয়ে শুয়ে দেখতাম এবং আবার ছেড়ে দিতাম।এখন আর এদের দেখা যায়না।আপনাদের এলাকায় দেখা গেলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। আসলে এরা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করতে যেখানে সেখানে কীটনাশক ব্যাবহার আর পরিবেশ দূষণ করা।এরা এটির সাথে মানিয়ে নিতে পারেনি।তাই তো হারিয়ে গেছে পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর পোকাটি।
মানুষের শৈশব অসুন্দর করার পিছনে যে বিষয়টি বেশি লক্ষ্যনীয় তা হচ্ছে মানুষের কর্মকান্ড।প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হলে জনসচেতনতার জুড়ি নেই।আমরা যদি শিশুদের কথা ভেবে কাজ করি তাহলে সবকিছু সম্ভব হবে।প্রত্যেক শিশু চায় সুন্দর একটা প্রকৃতিতে মুক্তভাবে বিচরণ করতে।আমাদের সকলের উচিত পুকুর ভরাট না করা,খেলার মাঠ বন্ধ না করা,শিশুদের রুমে বন্ধ করে না রাখা।
জোনাকির মতো আরো সুন্দর কোনোকিছুকে হারাতে চাইনা।তাই সকলের উচিত পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখা।আত হ্যাঁ, কিছু বিষয় প্রাকৃতিক ভাবেই হারিয়ে যায়।যেমন ধরেন শৈশবের বন্ধু।এখানে কোন মানুষের হাত নেই।তারা নিজেরাই ভালো কোনো যায়গায় গিয়ে স্বার্থপরের মতো শৈশবের কথা ভুলে যায়।
একথাটা আপনি ঠিকই বলেছেন, একটা খাবার কিনে সবাই মিলে ভাগ করে খেতাম আর তাতে মজাও ছিলো অনেক। তখন সামান্য খাবারে যে আনন্দ পেতাম এখন অনেক দামি খাবার খেয়েও সেই আনন্দ পাওয়া যায় না।
তখন স্কুল ছুটি হলে বাড়িতে বইগুলো রেখেই মাঠে চলে যেতাম খেলাধুলা করার জন্য আর খেলা শেষ করে সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে মায়ের বকুনি শুনতাম।এখন সেই স্মৃতিগুলো সত্যিই খুব মিস করি।
পড়াশুনা কম আর খেলাধুলা বেশি নিয়ে যে বাবার কাছে কত বকুনি শুনেছি সেটা বলে শেষ করা যাবে না। সত্যিই খুব ভালো একটা বিষয় নিয়ে লেখা শেয়ার করেছেন। অনেক ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।ভালো থাকবেন।
আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আসলে সময় যাওয়ার সাথে সাথে মানুষের জীবনের রঙ বদলে যায়।এভাবেই হয়তো জীবনের স্বাদ হারাতে হারাতে একদিন জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে যাবো।এরই নাম জীবন
TEAM 7
Congratulations! Your comment has been upvoted through steemcurator09.শৈশবের কথা বলতে গেলেই আমাদের প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে হাজারো স্মৃতি। আমার মনে হয় প্রতিটি মানুষেরই আবারো ইচ্ছে করে সেই পুরনো দিনের শৈশবে ফিরে যেতে। আহ! কতই না দিনগুলো সুন্দর ছিল। বর্তমানে অনেক পরিবারে মা বাবা আছে সন্তানকে ঘরের বাইরে বের হতেই দেয় না। আসলে এটা ঠিক না নিজের সন্তানকে খোলামেলা পরিবেশে বড় করতে হয়। থেকে বলেছেন ছোটবেলায় এক টুকরো জিনিস কয়েক ভাগ করে সব বন্ধু মিলে একসঙ্গেই খেতাম। সেই খাবারের মধ্যে কতই না শান্তি ছিল।
সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
আপনাকেও আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাই। আসলে আমরা চাইলেও আর সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারিনা।তবুও একটু স্মৃতিচারনা করার উদ্দেশ্য নিয়েই পোস্টটি করা আরকি।আপনাদের সকলের সুন্দর মন্তব্যগুলো আমার কাজের প্রতি শক্তি জোগায় সবসময় পাশে থাকবেন এটাই কামনা করি।ধন্যবাদ
TEAM 7
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator09.@alamin125
ঠিক এই মুহূর্তে যদি আমার নিজের একান্ত ব্যাক্তিগত অনুভূতির কথা বলতে হয় তাহলে এই লেখাটা পড়তে গিয়ে চোখটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে, কারণটা, আপনার লেখায় উপস্থিত প্রতিটি লাইন।
আপনার লেখায় উপস্থিত প্রতিটি বিষয় জড়িত আমার শৈশবের সাথে, আর যেহেতু আমার শৈশব আমি খুব সল্প সময়ের জন্য উপভোগের সুযোগ পেয়েছিলাম অদৃষ্টের কারণে, তাই আজকে আপনার লেখার মাধ্যমে পুরোনো স্মৃতি আওড়াতে গিয়ে নিজের আবেগকে ধরে রাখতে পারছি না। আগেও জানিয়েছি আরো একবার বলছি, চালিয়ে যান এই ধরনের গুণমান সম্পন্ন লেখা। কতজন পারেন লেখার মাধ্যমে শৈশব ফিরিয়ে দিতে? আপনি সক্ষম।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ম্যাম।এই কমিউনিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আমার কাজের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেছে।আপনার মতো মানুষদের যদি আমার পোস্ট পড়ে ভালো লাগে, তাহলে এর থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে।আমি আজকে অনেক খুশি হয়েছি।আমি এখন থেকে আরো চেষ্টা করবো আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার।
এতো ভালো একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার পোস্টে ছবিগুলো দেখে সত্যিই ছোটবেলাকার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমরা ছোটবেলায় যেসব খেলাধুলা করেছি ।এখনকার বাচ্চারা সেইসব খেলাধুলা আর করে না। এখনকার বাচ্চাদের শৈশবের খেলাধুলা সব হারিয়ে গেছে। এখন তারা ছোট থেকেই ফোন নিয়ে ব্যস্ত।
একদম মনের মতো একটা কথা বলেছেন।এখনকার বাচ্ছারা ছোটবেলা থেকেই ফোন নিয়ে ব্যস্ত।এসবের প্রধান দোষী হলো সন্তানের বাবা মা।তারা যদি ছোট থেকে সতর্কতার সাথে বাচ্ছাদের বড় করে তাহলে এমনটা কখনোই হবে না।
আজ আমরা প্রত্যেকটা মানুষ আমাদের শৈশবের দিনগুলো অনেক বেশি মিস করে। আমরা চেষ্টা করলেও আর কখনো সেই শৈশব দিনে ফিরে যেতে পারবো না। আসলে শৈশব দিন ছিল অনেক সুন্দর অনেক মধুর যে দিন বলো আমাদের জীবনে সব সময় স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। আজকে আপনার লেখা পড়ে আমিও হারিয়ে গিয়েছিলাম আমাকে তো সময় আমার শৈশব জীবনে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি লেখা আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আসলেই শৈশব সবার জীবনের একটা অংশ। চাইলেই এটিকে কেউ ভুলে যেতে পারে না।তবে হ্যাঁ, কারো শৈশব একটু বেশি রঙিন হয়ে থাকে আর কারোটা একটু কম।শৈশবের সেই দিনগুলি কখনোই রিদয় থেকে মুছে যাওয়ার যাওয়ার নয়।ধন্যবাদ।