ছোলা কচু দিয়ে ভাঙ্গাল মাছের সুস্বাদু রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। আজকে আমি ভাঙ্গাল মাছের রেসিপি তৈরি করেছি। ভাঙ্গাল মাছ অনেকদিন খাওয়া হয় না, আজ অনেকদিন বাদে ভাঙ্গাল মাছ খেতে অনেক টেস্ট লেগেছিলো। এই ভাঙ্গাল মাছটা রান্না করেছিলাম ছোলা কচুর সাথে, ছোলা কচু আমার অনেক প্রিয়। ছোলা কচু কান্ড এবং পাতা যেমন চিংড়ির সাথে বা ইলিশ মাছের সাথে ঘন্ট মতো করলে অসাধারণ লাগে, তবে শুটকি মাছ দিয়েও একদিন খেয়েছিলাম, অনেক ভালো লেগেছিলো। তেমনি এর কচুর স্বাদও দারুন লাগে তরকারিতে। আমি এই ছোলা কচুটা গোটা সম্পূর্ণ কিনে নিয়ে এসেছিলাম, এমনিতেও কচুর কান্ড পাতাসহ আলাদা ভাবে বিক্রি হয়, তবে গোটা সম্পূর্ণ কেনায় লাভ বেশি তাই পুরোটা নিয়ে এসেছিলাম আর এতে একদিকে তরকারিও করা যায় আবার কান্ড-পাতা দিয়েও আলাদা রেসিপি করে খাওয়া যায়। ছোলা কচু বলে না, যেকোনো কচুতে আয়রন থাকে অনেক যা আমাদের আয়রন এর ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে, এছাড়া শরীরে রক্তের পরিমান বাড়াতেও অনেক সাহায্যকারী ভূমিকা রাখে। এছাড়া আয়রন এর পাশাপাশি ক্যালশিয়ামেরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সেটা হলো হাড়কে মজবুত করে থাকে। যাইহোক, এখন এই রেসিপিটার প্রধান বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


✠প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:✠

✔উপকরণ
পরিমাণ✔
ভাঙ্গাল মাছ
২ টি
ছোলা কচু
১ টা গোটা
গোল আলু
৩ টি
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
পরিমাণমতো
লঙ্কার গুঁড়ো
১ চামচ
গোটা জিরা
১ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১.৫ চামচ


ছোলা কচু, গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটি যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


❂প্রস্তুত প্রণালী:❂


➤কেটে নিয়ে আসা ভাঙ্গাল মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে রেখেছিলাম। এরপর ছোলা কচুটির মাঝখান দিয়ে কেটে নিয়ে খোসা ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে কেটে ছোট ছোট পিচ করার পরে ধুয়ে রেখে দিয়েছিলাম।

➤গোল আলুগুলোর খোসা ছালিয়ে নেওয়ার পরে কেটে পিচ করে ধুয়ে রেখে দিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নিয়ে কেটে রেখেছিলাম এবং সেই সাথে রসুনের কোয়া থেকেও খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। এরপর লঙ্কাগুলো কেটে নেওয়ার পরে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤ভাঙ্গাল মাছের পিচগুলোতে লবন ও হলুদ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর মাছের সব পিচে ভালোভাবে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤প্যানে তেল দেওয়ার পরে ভাঙ্গাল মাছের পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤মাছ ভাজার সাথে সাথে কড়াইতে তেল দিয়ে আলুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং আলু ভালোভাবে ভাজা হয়ে আসলে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আলু ভাজার পরে কড়াইতে ছোলা কচুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কচু ভালোভাবে ভেজে নিয়ে তুলে নিয়েছিলাম। কচু ভাজার পরে যে অবশিষ্ট তেল ছিল তাতে পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤সব ভাজা করে নেওয়ার পরে আবার কড়াইতে তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে ভেজে তুলে রাখা ছোলা কচুর পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤কচু দেওয়ার পরে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচ এবং পরে লঙ্কাগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে পেঁয়াজ-রসুনের ভাজা অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজ-রসুনের পরে তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ, লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব উল্টেপাল্টে একে-অপরের সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছিলাম।

➤মিক্স করা হয়ে গেলে তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর কচু আর আলু ভালোভাবে বেশ খানিক্ষন ফুটিয়ে সেদ্ধ করে নিয়েছিলাম।

➤সেদ্ধ আলু তুলে নিয়ে গলিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর তরকারিতে ভেজে রাখা ভাঙ্গাল মাছের সব পিচগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤মাছ দেওয়ার পরে তরকারি আরেকটু ফুটিয়ে নেওয়ার পরে তাতে গলানো আলুটা দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তরকারির সাথে মিশিয়ে দিয়ে একটু জিরা গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম আর তরকারিটা সম্পূর্ণ হয়ে আসার আরেকটু দেরি করেছিলাম।

➤তরকারির ঝোলটা গাঢ় হয়ে আসলে আর কমে আসার পরে আমি তরকারি নামিয়ে নিয়েছিলাম। এরপর আরেকটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে একটি পাত্রে কিছুটা তুলে নিয়েছিলাম পরিবেশনের জন্য।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

ছোলা কচু দিয়ে ভাঙ্গাল মাছের সুস্বাদু রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন দাদা। আসলে এই ছোট মাছ আমার খুবই প্রিয়। ছোট মাছের রেসিপি গুলো খেতে খুবই মজাদার হয়। আর এই কচু ভাজি আমি কিছুদিন আগে খেয়েছি। আপনার কচু দিয়ে ভাঙ্গাল মাছের রেসিপি আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এত মজাদার দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আর রেসিপির পরিবেশন দেখে খুব সহজেই শিখতে পারলাম। পরবর্তীতে তৈরি করে দেখব ভাঙ্গাল মাছ দিয়ে কচুর রেসিপি খেতে কতটা মজা হয়। এই রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

আজকের রেসিপি টা দেখে অসাধারণ লাগলো। ছোলা কচু খেতে আমি নিজেও ভীষণ পছন্দ করি। কিন্তু এখন খেয়েছিলে প্রায় অনেকদিন হয়ে গেছে। তবে আমি বেশিরভাগ সকল ভুটের ডাল দিয়ে রান্না করে থাকি। বুটের ডাল দিয়ে কচু রান্না করলে খুবই মজা লাগে। কিন্তু আপনি দেখছি আজকে ভাঙ্গাল মাছ দিয়ে রান্না করেছেন। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে খুবই অসাধারণ হয়েছে। কারণ আপনার রান্নার কালারটা দেখে বোঝা যাচ্ছে কতটা সুস্বাদু হয়েছে। আর এটাও ঠিক কছুর কাণ্ড এবং পাতা দুটোই বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করে খাওয়া যায়। আমার কাছে কচু পাতা ভর্তা করলেও ভীষণ মজা লাগে । তাছাড়া আমি মনে করি এটা অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। তবে যেহেতু এই দিনে কচু বের হবে তাহলে খাওয়া হবে।

 2 years ago 

আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। তাইতো মাছের প্রতি আমাদের আলাদা রকমের ভালোলাগা আছে। দাদা আপনি খুঁজে খুঁজে ভিন্ন রকমের মাছ গুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেন। আর সেই মজার মজার রেসিপি গুলো উপস্থাপন করেন। ভাঙ্গাল মাছ অনেকদিন থেকেই খাওয়া হয় না। এই মাছ খেতে আমার বাবা খুবই পছন্দ করেন। কচু দিয়ে এভাবে কখনো রান্না করা হয়নি। তবে এই মাছ বেগুন দিয়ে খেতেও দারুন লাগে। আলু বেগুন দিয়ে একবার খেয়েছিলাম। ছোলা কচু দেখেইতো খেতে মন চাইছে দাদা। মন চাচ্ছে এর ডাটা গুলো দিয়ে শুটকি মাছ রান্না করে ফেলি🤭। ইলিশ মাছ কিংবা চিংড়ি মাছের সাথে ছোলা কচু রান্না করলেও অনেক ভালো লাগে খেতে। সাথে আলু দিলে যে কোন তরকারি খেতে বেশি ভালো লাগে। সত্যি দাদা ভাঙ্গাল মাছ দিয়ে ছোলা কচুর দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। দেখে মনে হচ্ছে খেতে দারুণ হয়েছিল। খুবই লোভনীয় একটি রেসিপি আমাদের সকলের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি দাদা। অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

দাদা ছোলা কচু দিয়ে ভাঙ্গাল মাছের সুস্বাদু একটি তরকারি রান্না করেছেন। ভাঙ্গাল মাছ আমাদের এদিকে কি নামে ডাকে জানি না তবে আপনার পোস্টে অনেকবার দেখেছি।
ছোলা কচু সত্যিই ভীষণ পুষ্টিকর একটি সবজি। আমরাও মাঝে মাঝেই খেয়ে থাকি। এর পুষ্টিগুণ খুব দারুন বর্ননা করেছেন দাদা।
রেসিপি উপস্থাপন দারুন ছিল, সবমিলিয়ে বেশ পরিচ্ছন্ন একটি পরিবেশন ছিল।
অনেক ধন্যবাদ দাদা চমৎকার রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 2 years ago 

এই ছোলা কচুকে আমাদের এদিকে সম্ভবত মান কচু বলে। এই কচুর ভর্তা খেতে খুবই মজা। নারিকেল এবং সরিষা দিয়ে একদিন ভর্তা করে খেয়ে দেইখেন দাদা কি মজা লাগে। তাছাড়া ঠিকই বলেছেন কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আইরন এবং ক্যালসিয়াম থাকে যা আমাদের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া আস্ত কচু কেনাইতো ভালো । একসঙ্গে পাতাও খাওয়া যায়, আবার গোড়াও খাওয়া যায়। এভাবে মাছ দিয়ে কখনো এই কচু খেয়ে দেখিনি। মাছ দিয়ে খেতেও মনে হয় বেশ ভালই লাগবে। আর আপনি যত সুন্দর করে সবকিছু ভেজে ভেজে রান্না করেন স্বাদটা আরও দ্বিগুণ হয়ে যায় বোঝা যায়। বরাবরের মতো লোভনীয় কালার দেখেই মুখে পানি চলে আসে।

 2 years ago 

আপনার রেসিপি দেখে আমার এখন ই খেতে ইচ্ছে করছে। কচু যেভাবেই রান্না করা হয় আমার খুব ভাল লাগে। আপনি ভাঙাল মাছ দিয়ে খুব সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন।দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে। এমন রেসিপি খেতে খুব সুস্বাদু হয়।আপনি খুব সুন্দর ভাবে ধাপে ধাপে তুলে ধরেছেন। আমার কাছে খুবই ভাল লাগলো। মজার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।আপনি রেসিপির পাশাপাশি খুব সুন্দর ভাবে কচুর গুনাগুন তুলে ধরেছেন, খুব ভাল লাগলো দাদা।

 2 years ago 

প্রথমত বলবো ভাঙ্গাল মাছ আজ প্রথম দেখলাম বা নাম শুনলাম ৷এরপর বলবো কচু আর ছোলা আমার কাছেও অনেক প্রিয় এবং ভালো লাগে কচু ও ছোলা দুই অনেক প্রোটিন জাতীয় খাবার ৷

যা হোক আপনার করা রেসেপি কচু ছোলা সাথে ভাঙ্গাল মাছ একসাথে করে রান্না দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা এমন সুন্দর একটি রেসেপি শেয়ার করার জন্য ৷

 2 years ago 

ছোলা কচু খেতে আমার কাছে অনেক মজা লাগে। বিশেষ করে আমি কিন্তু অনেক পছন্দ করি। আর আমার কাছে কচু পাতা খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে আমি কচুর ডগা এমনকি কচু সব কিছুই খেতে পছন্দ করি। কচুর যেকোনো রেসিপি আমার কাছে মজা লাগে। কিন্তু আপনি দেখছি বাঙ্গাল মাছ দিয়ে রান্না করেছেন। ভাঙাল মাঝে খেতেও কিন্তু আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। কিছুদিন আগে আমি যখন বাজারে গিয়েছি তখন একটা কচু কিনবো চিন্তা করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে আর কেনা হলনা। এখন তো আফসোস হচ্ছে আপনার রেসিপিটা দেখে। কারণ আপনার রেসিপিটার কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি সুস্বাদু হয়েছে। ভাবছি এরপরে বাজারে গেলে অবশ্যই কিনে নিয়ে আসবো।

 2 years ago 

ছোলা কচুকে আমাদের এখানে মান কচু বলা হয়। কিন্তু এই কচু রান্না করলে আমার কাছে খুবই মজা লাগে। আপনি ঠিক বলেছেন শুটকি দিয়ে রান্না করলেও কিন্তু বেশ ভালো লাগে। বিশেষ করে আমার কিন্তু আপনার মত মাছ দিয়ে রান্না করলেই বেশি ভালো লাগে খেতে। তাছাড়া কচুর ক্ষেত্রে কচুর কান্ড বলেন পাতা বলেন সবকিছুই আসলে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি হিসেবে আমরা খেয়ে থাকি। আমার কাছে কচুর সকল ধরনের রেসিপি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আমি কচু পাতার ভর্তা খেতে খুবই পছন্দ করি। আবার কচুর কান্ড খেতেও কিন্তু ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া যেহেতু এটা অনেক বেশি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এইজন্য আমাদের উপকার হয়। যেহেতু উপকারি সেক্ষেত্রে আমাদের শরীরের জন্য ভালো হয়। আজকে এত সুন্দর একটা রেসিপি দেখতে পেয়ে আরও ভীষণ ভালো লাগলো।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 63466.72
ETH 2683.95
USDT 1.00
SBD 2.80