ওয়েব সিরিজ রিভিউ: নভেম্বর স্টোরি ( পর্ব ১ )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে "নভেম্বর স্টোরি' ওয়েব সিরিজটির বিষয়ে রিভিউ দেব। এই সিরিজটি থ্রিলার বেস আর এর প্রথম পর্বের নাম হলো "সেভ হিম ফ্রম হিম"। এই সিরিজটি দেখেছিলাম অনেকদিন আগে, ভাবলাম এটার রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করি। তবে এটি সম্পূর্ণ দিলেও ভালো হতো, কিন্তু অনেক বড়ো স্টোরি, তাই খন্ড ভাবে দিচ্ছি।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
☬মূল কাহিনী:☬
কাহিনীটা মূলত ১৯৯৬ সালের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে অর্থাৎ ওই বছরের নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখে হাইওয়ের পাশে একটি বড়ো হাস্সা হয়, মানে খুনখারাপি। ওখানে ওভার ব্রিজের নিচে প্রায় যতজন লোকজন বসবাস করতো, ওইদিন রাতে তাদের সবাইকেই খুন করা হয়। তবে ওখানে একটি ছোট বাচ্চা মেয়ে বেঁচে যায়। তবে ওখানে সম্ভবত একজন ওই রাতে ছিল, সেটা খুনি হতে পারে বা অন্য কোনো লোক। তবে তার ড্রেস দেখে যেটা সন্দেহ হলো যে, খুনিই হবে। তবে বাচ্চাটাকে কিছু করিনি। এরপরে যে কাহিনীটা দেখা যায় যে, নামিতা নামের একটি মেয়েকে একটি মহিলা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ড্রাগস্ বা কিছু একটা মেডিসিন তার শরীরে প্রায় সময় দিতে থাকে। মূলত এই মেয়েটাকে পাচার করার একটা চক্রান্তে আছে তারা। বাইরে কিছু লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে এই ধান্দায় হাত লাগায়। তবে মেয়েটির বয়স অনেক কম আর তার স্বভাব কিছুটা বাচ্চাদের মতো। আর ওকে নিয়ে বাইরে বেরোলে সবার সাথে একটাই কথা বলে যে, তার মস্তিষ্কের সমস্যা আছে। যার ফলে এইরকম করে সবসময়, এটা তাদের জাস্ট লোক বোঝানোর মতো একটি টেকনিক।
যাইহোক, এরপরে অনুরাধা নামের একটি মেয়ের কাহিনীতে ফিরে আসি, এ আসলে ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোতে কাজ করে। তো একদিন ওদের সুপার কম্পিউটার একজনা হ্যাকার হ্যাক করে নেয়। এটা মূলত কিছু ক্রাইম এর রেকর্ড করা ফাইল ডাটা হিসেবে সংগ্রহ করে রাখা আছে, সেগুলো হ্যাকিং করে নেওয়ার জন্য এই কাজ করে। তবে অনুরাধা গিয়ে বুঝে ফেলে, বিষয়টা, মূলত তাদের সিস্টেম হ্যাক করার জন্য হ্যাকার একটা ডিভাইস তাদেরই অফিসে এসে একটা স্থানে লাগিয়ে দিয়ে যায়। সেটা অনুরাধা বের করে নিয়ে আসে আর পরে হ্যাকিং এর সমস্যাটা সমাধান করে ফেলে। মূলত সেও এই হ্যাকিং এর বিষয়ে এক্সপার্ট আছে। তবে বেশি তেমন ডাটা চুরি করতে পারেনি। তবে ওদের সফ্টওয়ার এর একটা সময় থাকে, আর ওদের হাতেও ৫ মিনিট ছিল, ফেইল হয়ে গেলে আর কিছু করার ছিল না।
তবে এই অনুরাধার একটা জীবনের কাহানি আছে এখানে। তার বাবা মূলত একজন লেখক ছিলেন, আর সে সাধারণত খুনের রহস্য নিয়ে লেখালেখি করতেন। এই করতে করতে তার একসময় ব্রেনের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এবং সে নিজেই নিজের সাথে কথা বলতে থাকে। যেমনটা হ্যালুসিনেশন হলে মানুষ সামনে কোনো ব্যক্তিকে দেখতে পায় এবং তার সাথে কথা বলতে চায়। এই বিষয়টাও ঠিক তেমনই ঘটে তার বাবার সাথে। এখন অনুরাধা মূলত তাদের ওই বাড়িটা সেল করে দিয়ে অন্যত্র বাড়ি কিনতে চায়, কিন্তু তার বাবা একদমই রাজি না, সেল করবেই না ওই বাড়ি। এই নিয়ে অনেক ঝামেলার সৃষ্টি হয়, কিন্তু অনুরাধা আবার এটা সেল করবেই করবে। এই নিয়ে বিভিন্ন কাস্টমার এর সাথে যোগাযোগ করে আর সবাই মূলত দামটাও ভালো দিতে চায়।
কিন্তু তার বাবা রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বেয়ানি পথে করার জন্য রাজি হয় অর্থাৎ তার বাবার ডেথ সার্টিফিকেট বের করে তারপর সেটাকে কাজে লাগিয়ে বিক্রি করতে চায়, কারণ তা ছাড়া আর উপায় ছিল না। এদিকে তার বাবার মানসিক অবস্থা দিনকে দিন এতো খারাপ হয়ে যায় যে সে তাদের বাড়িতে থাকা একটি মেয়েকেই খুন করে ফেলে। এদিকে আরো একটা তাদের অফিসে ঘটনা ঘটে অর্থাৎ সেই হ্যাকার আবারো তাদের সিস্টেম হ্যাক করে সমস্ত কম্পিউটার এর ডাটা হ্যাক করে ফেলে। এখন অনুরাধা দেখছে এই হ্যাকার তাদের কতগুলো কম্পিউটার আছে সেই বিষয়ে সব জানে, তাই সে পুরানো অন্য আরেকটা ল্যাপটপ দিয়ে তার সিস্টেমকেই হ্যাক করে দেয়।
☬ব্যক্তিগত মতামত:☬
এই সিরিজটা মূলত একটি হত্যাকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে অপরাধী একটি ক্লাসিক হত্যার মাধ্যমে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে এই হত্যার মধ্যে যে রহস্য রয়েছে, সেটাকে খুঁজে বের করা এখন একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ। তবে এই হত্যার পিছনে সম্ভবত একজন হ্যাকারই আছে, যেটা আপাতত দৃষ্টিতে বোঝা যাচ্ছে। কারণ এই খুনের সমস্ত ডাটা কিন্তু ব্যুরো তে জমা আছে। আর এই হ্যাকার পুরানো কোনো ফাইল খুঁজছে না, নতুন যেসব ফাইল আছে সেগুলো খুঁজে বের করে নষ্ট করতে চাইছে। আর তারপর এখানে আরো একটি খুনের রহস্য ঘটে গিয়েছে অর্থাৎ অনুরাধার বাবা যে একজনকে খুন করেছে। তবে এখানে আরো রহস্য বেশি, কারণ অনুরাধা সেই লাশের পাশে শুধু তার বাবাকে বসে থাকতে দেখেছে আর তার সমস্ত শরীর যেন কাঁপছে এমন। এখন আসলেই তার বাবা এখানে খুন করলো না অন্য কেউ সেটাই বিষয়। কারণ সবাই বা অনুরাধাও বিশ্বাস করবে যে তার বাবা খুন করেছে, কারণ তার বাবার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে, ফলে সেও করতে পারে।
☬ব্যক্তিগত রেটিং:☬
৭.৫/১০
☬ট্রেইলার লিঙ্ক:☬
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
দাদা থ্রিলার টাইপের ওয়েব সিরিজ দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তার মানে ১৯৯৬ সালের নভেম্বর মাসে হাইওয়ের পাশে এমন ভয়ানক খুনখারাপি হয়েছে বলেই, এই ওয়েব সিরিজের নাম দেওয়া হয়েছে নভেম্বর স্টোরি। যাইহোক তামান্না ভাটিয়া অর্থাৎ অনুরাধা তাহলে ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোতে কাজ করে। অনুরাধা তাদের বাড়িটা বিক্রি করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছে দেখছি। অনুরাধার বাবার মানসিক অবস্থা যেহেতু অনেক খারাপ, তাহলে কি সেই মেয়েকে অনুরাধার বাবা খুন করলো নাকি। আশা করি পরবর্তী পর্বে সেটা জানতে পারবো। যাইহোক এতো চমৎকার ভাবে এই পর্বের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ট্রাইলার দেখে তো বেশ ইন্টারেস্টিং ই মনে হচ্ছে। আসলে আপনজনদের কেন্দ্র করে এমন দোটানার কারণ তৈরি হলে মন-মস্তিস্ক মিলিয়ে যত দ্রুত পারা যায়, সঠিক তথ্য বের করার উপায় খুঁজতে থাকে! অনুরাধাও তাই ই করবে। ১৬ নভেম্বর টা বারবার আসছে, মানে অনেক রহস্য আছে মন বলছে এই দিনটাকে কেন্দ্র করেই। পরবর্তী পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম।