ওয়েব সিরিজ রিভিউ: নভেম্বর স্টোরি ( অন্তিম পর্ব )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে 'নভেম্বর স্টোরি' ওয়েব সিরিজটির সপ্তম পর্ব তথা অন্তিম পর্বের রিভিউ শেয়ার করবো। এই পর্বের নাম হলো "ট্রুথ"। গত পর্বে দেখেছিলাম যে পুলিশ আসল অপরাধীকে খুঁজে পেয়েছিলো আর ওই তিনজন ছেলেকেও ধরেছিলো। এই পর্বে পুরো রহস্য আর সত্যি ঘটনাটা সামনে আসবে।
✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠
☬মূল কাহিনী:☬
তো যখন অনুরাধার মায়ের বিষয়ে কথা হচ্ছিলো, তখন তার বাবা তার মায়ের মৃত্যুর বিষয়ে সবকিছুই গোপন রেখেছিলো, কিন্তু সেটা অনুরাধার সামনে পরিষ্কার হয়ে যায়। কারণ এই যে তার মা বাস একসিডেন্টে মারা গিয়েছিলো, এই ঘটনাটা যেমন একদিক থেকে সত্যি ছিল আবার আরেকদিক থেকে মিথ্যা ছিল। কারণ এই ঘটনাটার এখন কিছুটা পিছনের দিকে ফিরে যদি দেখা যায়, তাহলে ওই লোকটা চেন্নাইয়ে থাকা কালীন তার মেয়েকে অসুস্থ বলে যে সব জায়গায় পরিচয় দিতো, সেটা তাদের বাড়িতে যাওয়া ওই মেয়েটার কাছে কেমন একটা সন্দেহ মনে হয়, কারণ একজন মানুষ অসুস্থ হতে পারে ঠিকই, কিন্তু তাই বলে আলমারি ভর্তি প্যাকেটে প্যাকেটে ওষুধ, যেটা খুবই সন্দেহজনক মনে হয়। আর তার উপর ওই মেয়েটা মেডিকেল নিয়ে পড়াশুনো করে। এখন সন্দেহ হলে ওই লোকটার মেয়েকে দেখাশুনার জন্য যে মহিলাকে বাড়িতে রেখেছিলো, তার কাছে যে বলেছিলাম তার বাকি তিন ছেলে বন্ধুকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো।
এখন তারা আগে একজন ডক্টরের সাথে এই বিষয় নিয়ে কথা বলে আর ডাক্তার তার ব্লাড স্যাম্পল চায়, যাতে পরীক্ষা করে বলতে পারে যে, এটা জন্মগত সমস্যা না অন্য কিছু। এরপর ওইসব ওষুধ পত্র দেখে ডাক্তার বলে যে তাকে ইচ্ছা করেই এইসব ঔষধ খাইয়ে অসুস্থ করে রাখা হচ্ছে। এই বিষয়টা সেই বাড়ির মহিলা সহ তারা ৪ বন্ধু জানতে পারে আর ওই লোকটার উপরেই সন্দেহ হয়। এরপর তারা সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই মেয়েটাকে তার আসল বাবা মায়ের ঠিকানায় পৌঁছিয়ে দেওয়া। কারণ তারা জেনে গিয়েছিলো যে, এই মেয়ের বাবা কখনোই সে হতে পারে না। আর ওই লোকটা এমনটা করেছিল, কারণ এই মেয়েকে পাওয়ার পর তার মনে হয়েছিল যে বড়ো হলে তাকে ছেড়ে একদিন চলে যাবে, তাই সে বড়ো হলেও যেন শিশুর মতো থাকে, সেই ব্যবস্থাই করে মেডিসিন খাইয়ে খাইয়ে।
এরপর ওই মহিলা সহ তারা ৫ জন খুঁজে পেলে চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য তৈরি হয়, কিন্তু তার আগেই ওই লোকটা বুঝে ফেলে যে তারা কোনো ষড়যন্ত্র করছে আর ওই মেডিকেলের পড়া মেয়েটাকেই মেরে পোস্টমর্টেম করে ফেলে আর তার রিপোর্ট দেয় যে, সে নিজে থেকেই আত্মহত্যা করেছে। এরপর ওই তিন ছেলে আর মহিলা মেয়েটাকে নিয়ে চেন্নাইয়ে যায় আর তার বাবার সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু ওই লোকটাও তাদের সাথে সাথে চেন্নাইয়ে যায় আর মহিলাকে মেরে ফেলে, কিন্তু ওই ছেলেগুলো মেয়েটাকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। এখন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে পুলিশ সব তথ্য পায় পরে এবং তার প্রতিদিন যে একই স্থান থেকে বিভিন্ন জায়গায় ফ্লাইটের টিকিট কেটে লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করে সেটা পেয়ে যায় আর তাকে ধরার জন্য সমস্ত জায়গায় পুলিশ পাঠায়। আসলে ওই মহিলা বা ওই তিন ছেলে এটা ভালোর জন্যই করেছিল। কিন্তু সবাই তাদেরই দোষারোপ করে আর তাদের নাম রেপ কেস লাগিয়ে দেয়।
☬ব্যক্তিগত মতামত:☬
মূলত এই কাহিনীটা এই মেয়েটাকে নিয়েই। কারণ এই লোকটা রিটায়ার্ড হওয়ার আগে যখন পোস্টমর্টেম এর কাজ করতো ফারেন্সিকে, তখন একদিন ঝড়বাদলের রাতে একটি বাস এক্সিডেন্ট হয়। আর এই একসিডেন্টে নারী এবং পুরুষ মিলে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয় আর তার সমস্ত পোস্টমর্টেম এর দায়িত্ব পড়ে ওই লোকটার উপরে। সব পোস্টমর্টেম শেষ করার পরে যখন রিপোর্ট তৈরি করছিলো, তখন একটি মহিলার দেহ আনে আর পোস্টমর্টেম করতে বলে। কিন্তু করতে গিয়ে দেখে সেই মহিলা জীবিত আর তার পেটে বাচ্চা আছে। লোকটা ঘাবড়িয়ে যায়, কিন্তু ওই মিহিলা যখন যন্ত্রনায় কাতরিয়ে কাতরিয়ে তাকে বলছিলো অপারেশন করে দিতে, তখন সে করতেই পারছিলো না, কারণ সে জীবিত মানুষের সার্জারি করতেই পারে না আর ওই সময়ে সব ডাক্তার আউট অফ ডিউটি তে থাকে। এখন বাধ্য হয়ে আর রিস্ক নিয়ে জীবিত অবস্থায় পেট ফেড়ে বাচ্চাটা বের করে।
এতে দুইজনেই বেঁচে ছিল, কিন্তু লোকটা স্বার্থপরের মতো মেয়েটাকে বাঁচিয়ে তার মাকেই ইচ্ছা করেই মেরে ফেলে। আর এই মেয়েটাই কিন্তু গনেশন অর্থাৎ অনুরাধার ছোট বোন আর তার বাবার মেয়ে ছিল। আর এই স্বার্থপরের মতো আবারো চেন্নাইতে গিয়ে গনেশন এর মেয়েকে তার কাছে না দিয়ে গনেশনকেই আটকিয়ে রাখে আর তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে আর তাকে বিষাক্ত ইনজেকশনও দিয়ে দেয়। আর এটা উভয়কেই একজন আরেকজনকে দেয় যার ফলে দুইজনেই মরে যায়। আর অনুরাধার বাবা যে গল্পটা অর্ধেক লিখেছিলো সেটা তাকেই শেষ নামাতে বলে আর সেটাই ছিল এই নভেম্বর স্টোরি। মূলত এই নভেম্বর স্টোরি ওই নভেম্বর রাতে ওই মেয়েটার জন্মানোর কাহিনীকে কেন্দ্র করে।
☬ব্যক্তিগত রেটিং:☬
৯.৭/১০
☬ট্রেইলার লিঙ্ক:☬
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সেই লোকটা তো দেখছি রিটায়ার্ড করার আগে খুবই জঘন্য একটি কাজ করেছে। মেয়েটাকে বাঁচিয়ে তার মা'কে মেরে ফেলাটা মোটেই উচিত হয়নি। এই মুভির নামকরণ সম্বন্ধে জেনে খুব ভালো লাগলো। নামকরণের সাথে মুভির কাহিনী একেবারে পারফেক্ট হয়েছে। আগের পর্ব গুলোর মতো এই পর্বের রিভিউ দারুণভাবে শেয়ার করেছেন দাদা। প্রতিটি পর্বের রিভিউ বেশ উপভোগ করেছি। যাইহোক এতো চমৎকার একটি ওয়েব সিরিজের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
ওরে বাপরে লোকটা তো দেখছি খুবই খারাপ। দেখছি লোকটা পোস্টমর্টেম করার কাজ করতো। আবার একসাথে এক্সিডেন্টের অনেকগুলো পোস্টমর্টেমের কাজ করেছে। তবে ওই মহিলাটি জীবিত থাকার কারণে, সে তার অপারেশন করল। কিন্তু সে তো দুজনকে বাঁচিয়ে নিয়েছিল, শুধু শুধু কেন মহিলাটিকে ইচ্ছে করে মেরে ফেলল। অনেক জঘন্য একটা কাজ করেছে। অন্যদিকে আবার গনেশানকে তার মেয়েকে ফিরিয়ে না দিয়ে আবার তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। অনেক বড় একটা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে দেখছি। দাদা এই রিভিউ এর শেষ পর্ব টা পড়ে অনেক বেশি ভালো লাগলো। আসলে এতদিন ধরে একটু একটু করে বিষয়গুলো জেনেছি। আজকে পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার হলাম।