কচু দিয়ে ল্যাটা মাছের মজাদার রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে একটি রেসিপি পোস্ট শেয়ার নেবো। এই রেসিপিটা গতকাল তৈরি করেছিলাম আর এটি খেতে অনেক মজাদার হয়েছিল। কচু আমার অনেক প্রিয় আর সাথে ছিল ল্যাটা মাছ। ল্যাটা মাছ আর কচু দুটি দারুন কম্বিনেশন, অসাধারণ লাগে, যদি কচু ভালোমতো সেদ্ধ হয়। এই কচুগুলো গাঁটি কচু, আর এই কচুগুলো বিভিন্ন ভাবে খেতে অনেক মজাদার হয়ে থাকে। বিশেষ করে আমার কাছে গরম ভাতের সাথে ভর্তা খেতে অসাধারণ লাগে, মনে হয় যেন এক থালা ভাত এটা দিয়েই খেয়ে ফেলি। আসলে আঠালো জিনিস অল্পতেই ভাত বেশি লাগে, বলতে হয় সাশ্রয়ী হা হা। ল্যাটা মাছ সাধারণত তেমন একটা খাওয়া হয় না আমাদের, তবে এইগুলো গ্রামের দিক থেকে নিয়ে আসা।

আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়ি আছে মালতীপুর, ওদের এইসব মাছের ঘের প্রচুর। আর এই ল্যাটাগুলো চাষের, চাষের যদিও তেমন দেশীর মতো স্বাদ লাগে না, তবে এই মাছগুলো খেতে অনেক মজাদার হয়ে থাকে। আগে একসময় প্রচুর এইসব মাছ নদী, নালা থেকে বড়শি দিয়ে ধরে ধরে খেয়েছি। বড়শি দিয়ে এইসব মাছ ধরতেও যেমন আলাদা মজা লাগতো আবার এইসব মাছ বাড়িতে রান্না করে খেতেও সেই স্বাদ লাগতো। অরিজিনাল সবকিছুরই স্বাদ আলাদা। এখন যেমন সবকিছু ভেজাল খাচ্ছি আমরা, কিন্তু কিছু করার নেই, স্বাদ না লাগলেও মশলাপাতি দিয়ে স্বাদ করে নিতে হচ্ছে হা হা । যাইহোক, এই মজাদার রেসিপিটির এখন মূল উপকরণের দিকে চলে যাবো।


☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫

ল্যাটা মাছ
৩ টি
কচু
৩ পিস
পেঁয়াজ
১ টি
রসুন
১ টি
কাঁচা লঙ্কা
৫ টি
লঙ্কার গুঁড়ো
১.৫ চামচ
গোটা জিরা
২ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৫ চামচ
হলুদ
৪ চামচ
জিরা গুঁড়ো
২ চামচ


কচু, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা লঙ্কা


সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


❦এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


❂প্রস্তুত প্রণালী:❂


➤ল্যাটা মাছগুলোকে প্রথমে ভালো করে কেটে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর কচুগুলোর খোসা ছালিয়ে নিয়ে কেটে নিয়ে ধুয়ে রেখেছিলাম।

➤পেঁয়াজ এর খোসা ছালিয়ে নিয়ে কুচি করে নিয়েছিলাম এবং সেই সাথে রসুনের কোয়াগুলো থেকে খোসা ছালিয়ে রেখেছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো কেটে নিয়েছিলাম।

➤ল্যাটা মাছের পিসগুলোতে লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে পিসগুলোর গায়ে মাখিয়ে নিয়েছিলাম।

➤একটি প্যানে তেল দিয়ে গরম করে নিয়েছিলাম এবং তাতে ল্যাটা মাছের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। সব ভালোভাবে ভাজা মতো করে নিয়েছিলাম।

➤এরপর কড়াইতে তেল দিয়ে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কেটে-ধুয়ে রাখা কচু দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤কচু দেওয়ার পরে তাতে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব একবার উল্টিয়ে নিয়েছিলাম।

➤এরপর তাতে কেটে রাখা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম এবং পরে তাতে স্বাদ মতো লবন, হলুদ আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤উপাদানগুলোর সাথে ভালোভাবে মিক্স করে নেওয়ার পরে তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জল দেওয়ার পরে তরকারি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়েছিলাম এবং কচু ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে আসলে কিছু কচু তুলে নিয়ে গলিয়ে নিয়েছিলাম।

➤এরপর তরকারিতে ভেজে রাখা ল্যাটা মাছের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম এবং কিছুক্ষন ফুটিয়ে নেওয়ার পরে তাতে গলিয়ে রাখা কচু দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিতে অল্প জিরা গুঁড়ো দিয়ে আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিয়ে নিয়েছিলাম ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য।

➤কচু আর ল্যাটা মাছের মজাদার রেসিপিটা হয়ে আসলে জ্বাল নিভিয়ে দিয়েছিলাম এবং কিছুক্ষন পরে তাতে আরেকটু জিরা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।


রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 4 months ago 

একদম ঠিক বলছেন দাদা আপনি রেসিপি সম্পর্কে অনেক তথ্য দিলেন। ল্যাটা মাছ যেটি আপনি বলছেন সেটা অবশ্যই আমাদের এদিকে অন্য নামে জানি। যাক অবশ্যই একেক জিনিসের নাম স্থান বেধে এক এক রকমের নাম হয়ে থাকে। কচু আমার কাছেও বেশ ভালোই লাগে। তবে বিশেষ করে কচুর ছরা খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে যদি সেদ্ধ হয়। আর আপনি যেভাবে রান্না করলেন খেতে খুবই মজার হবে। চাষ করা মাছ গুলো তেমন মজার হয় না। যেগুলো সাধারণত পুকুরে কিংবা নদীতে থাকে সেগুলো অনেক বেশি স্বাদের হয়। চাষের মাছ গুলো তাড়াতাড়ি বড় হওয়ার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের খাবার দিয়ে থাকেন। অনেক ভালো লেগেছে আপনার রেসিপি দেখে।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

বাহ্! বেশ লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন দাদা। এই মাছকে আমাদের এখানে টাকি মাছ বলা হয়। ঝাল ঝাল করে টাকি মাছের ভর্তা তৈরি করে খেতে দারুণ লাগে। ২/১ প্লেট ভাত টাকি মাছের ভর্তা দিয়ে নিমিষেই শেষ করা যায়। একসময় টাকি মাছ পুকুর, নদী নালা,খাল-বিলে অনেক পাওয়া যেতো। সেই মাছগুলো খেতে ভীষণ ভালো লাগতো। কিন্তু এই মাছ এখন পাওয়া যায় চাষের গুলো। চাষের গুলো খেতে তেমন স্বাদ লাগে না। কয়েকমাস আগে বিলের শোল টাকি মাছ ২ কেজি কিনেছিলাম ১৮০০ টাকা দিয়ে। সেগুলো খেতে খুব সুস্বাদু লেগেছিল। যাইহোক কচু আমার খুব পছন্দের একটি সবজি। তবে কচু দিয়ে টাকি মাছ রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। আমরা সাধারণত টমেটো এবং পেঁয়াজ দিয়ে টাকি মাছের ভুনা রেসিপি তৈরি করে খেয়ে থাকি। তাছাড়া টাকি মাছের ভর্তাও খেয়ে থাকি। তবে আপনার রেসিপির কালার দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব ইয়াম্মি লেগেছিল। রেসিপিটা দেখে খুব ভালো লাগলো দাদা। যাইহোক ধাপে ধাপে এতো মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

দেশি মাছ এখন কোথায় পাবেন দাদা! সবই চাষের মাছে। আর সেই সাথে ভেজাল। কি আর করা এই নিয়ে চলছি আমরা। তবে আমাদের এখানে ল্যাটা মাছকে টাকি মাছ বলে। এই মাছের ভর্তা খেতে বেশ লাগে। তবে আপনার কচু দিয়ে ্ল্যাটা মাছের রেসিপিটিও দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে। মনে হচ্ছে বেশ মজা করে খেয়েছেন। মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

রেচিপি টি try করব।

 4 months ago 

কচু আর মাছের সমন্বয় তৈরি আপনার অসাধারণ রেসিপি দেখে আমি মুগ্ধ। খুব সুন্দর ভাবে আপনি রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আর রেসিপি সাজানো আমার খুবই ভালো লাগে দেখতে। দাদা আশা করি এমন সুন্দর রেসিপি নিয়ে উপস্থিত হবেন।

 4 months ago 

তাই তো দেখছি দাদা দারুন একটা রেসিপি নিয়ে আজ হাজির হয়েছেন । আসলে এই ধরনের কচু দিয়ে ভর্তা খেতে দারুন মজা । আমিও ভর্তা খেতে খুবই পছন্দ করি। আপনি ল্যাটা মাছ কচু দিয়ে খুব সুন্দর একটা রেসিপি তৈরি করেছেন। যেটা গরম গরম খেতে অনেক মজা লাগে। এক সময় নদী নালা খাল বিলে প্রচুর ল্যাটা মাছ পাওয়া যেত। বর্তমান মাছের পরিমাণ কম নাই বললেই চলে। বিভিন্নভাবে ঘেরে চাষ হচ্ছে ।যাইহোক, আজকের রেসিপি তৈরি খুবই সুন্দর ছিল।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

ল্যাটা মাছ নামটি শুনে মাছটি দেখতে চলে এলাম দাদা।এই মাছটাকে আমরা টাকি মাছ বলে থাকি।আর এই টাকি মাছ খেতে খুব স্বাদের।এই মাছ সব রকমেরই ভালো লাগে খেতে।ভেজে রান্না করলেই এই মাছ ভীষণ স্বাদের হয়।আপনি কচু দিয়ে ভেজে রান্না করলেন।রেসিপিটি দেখতে যেমন চমৎকার হয়েছে খেতেও তেমনি স্বাদের হয়েছে। আপনি খুব সুন্দরভাবে রেসিপিটি শেয়ার করলেন দাদা।এজন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। ভালো থাকবেন।রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 4 months ago 

বড়শি দিয়ে নিজে হাতে মাছ ধরে সেই মাছ বাড়িতে রান্না করে খাওয়ার অন্যরকম আনন্দ আসলেই ।যদিও আমি জীবনে একটাও মাছ ধরতে পারিনি যে কয়বার ট্রাই করেছি ফেইল।আপনার ল্যাটা মাছের প্রশংসা শুনে তো খেতে ইচ্ছে করছে দাদা রেসিপিটি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

দাদা আজকে আপনি ইউনিক একটা রেসিপি তৈরি করেছেন দেখে আমার তো খুবই লোভ লেগে গিয়েছে। এভাবে কখনো কচু দিয়ে ল্যাটা মাছের রেসিপি আমার খাওয়া হয়নি। আজকেই প্রথমবারের মতো এই রেসিপিটা আমি দেখতে পেলাম। গরম ভাতের সাথে কচুর ভর্তাটা আসলেই খুব ভালো লাগে খেতে। আমি দু'একবার খেয়েছিলাম এই ভর্তা। তবে যাই হোক দাদা কচু দিয়ে ল্যাটা মাছের রেসিপি তৈরি করা যায়, এটা আজকে প্রথমবারের মতো জানতে পেরেছি। ছোটবেলায় বড়শি দিয়ে প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরেছিলাম। আর সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়লে এখনো খুব ভালো লাগে। ছোটবেলায় নিজ হাতে মাছগুলো ধরে যখন নিয়ে আসলাম, তখন আম্মু বিভিন্নভাবে রান্না করে থাকতো, যার স্বাদ সব থেকে বেশি ভালো হতো। দাদা আপনি কিন্তু একেবারে লোভনীয় একটা রেসিপি তৈরি করেছেন, যেটা দেখেই বুঝতে পেরেছি অনেক বেশি সুস্বাদু হয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই দাদা এই রেসিপিটা তৈরি করার পদ্ধতি সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66188.19
ETH 3564.66
USDT 1.00
SBD 3.14