দীর্ঘ কয়েক বছর পর বাবার বাড়িতে ঈদ করার অনুভূতি
ঈদ মোবারক
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
দীর্ঘ কয়েক বছর পর বাবার বাড়িতে ঈদ করার অনুভূতি
বাবার বাড়িতে ঈদ করতে এসেছি কিন্তু আজ বাবার বাড়িতে বাবাই নেই। বাবা আমাদের রেখে চলে পরপারে চলে গিয়েছেন এক বছর হল। আমার বাসা থেকে বাবার বাসা পাঁচ মিনিটের দূরত্ব। যার কারনে বিয়ের পর থেকে বাবার বাসায় আর ঈদে থাকা হয়নি। মূলত দু এক ঘন্টার জন্য প্রতিটি ঈদেই বাবার বাড়িতে এসেছি ।কিন্তু এবার যেহেতু হাজবেন্ড দেশের বাইরে আছে তার কারণে বাবার বাড়িতে সম্পূর্ণ সময়টা থাকতে পারবো ।অর্থাৎ আমি বেশ কিছুদিন ধরে বাবার বাড়িতে থাকব বিষয়টা ভাবতেই বেশ ভালো লাগছিল।কিন্তু যখন ঈদের দিন আসলো সবকিছু যেন কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল ।প্রথমেই বাবাকে ভীষণ মিস করছিলাম, বোনদেরকে মিস করছিলাম। ছোটবেলায় সবাই মিলে ঈদ করার আনন্দ ছিল একেবারেই অন্যরকম। কিন্তু আজ সেই আনন্দটা একেবারেই খুঁজে পেলাম না।
যাইহোক ঈদের দিন সকাল থেকেই মেয়ে মুখ গোমড়া করে বসে ছিল। যেহেতু তার বাবা কাছে ছিল না সেহেতু মনটা একটু খারাপ ছিল ।তারপর আবার বাইরে বের হতে পারছিল না যার কারণে আরো বেশি মন খারাপ হয়েছিল। যদিও আমরা আগে থেকে প্ল্যান করেছিলাম আমি, আমার আম্মা ,ভাই ,আমার মেয়ে আমরা সবাই মিলে সকালবেলায় আমার নানু বাড়িতে যাব এবং বিকেল বেলায় সেখান থেকে ফিরবো ।মূলত প্রতিবার আমার নানু বাড়িতে কোরবানি দেওয়া হয় ।তাই সেখানে যেয়ে সারাদিন থেকে বিকেলে মাংস নিয়ে ফিরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমার মায়ের শরীরটা খারাপ হওয়ার কারণে পুরো প্ল্যান ক্যানসেল করতে হয়েছিল ।কিন্তু মেয়ে ভীষণ মন খারাপ করছিল। যার কারণে আম্মা আমাকে বলছিল মেয়েকে নিয়ে নানু বাড়ি থেকে ঘুরে আসতে। এমনিতেও আমার ভাইয়ের সেখানে যাবার কথা মাংস আনার জন্য ।সেখানে যেতে আমাদের বাসা থেকে আধা ঘন্টা সময় লাগে।
যদিও আমার মায়ের শরীর খারাপ দেখে আমি যেতে চাইছিলাম না। কিন্তু আম্মা খুব জোর করে আমাকেও ভাইয়ের সঙ্গে পাঠিয়ে দিল, যাতে মেয়ের মন কিছুটা হলেও ভালো হয়। কারণ সেখানে আরো ছোট ছোট বাচ্চারা রয়েছে ।তাদের সঙ্গে ও খেলার জন্যই মূলত যেতে চেয়েছিল। আমার মামাতো বোনেরা ছিল আমার মেয়ের সমবয়সী ।যাদের সঙ্গে ও বেশ ভালই খেলাধুলা করে। তারপর আমরা আমার নানু বাড়িতে চলে গেলাম দুপুরের দিকে। তারপর সেখানে দু তিন ঘন্টা সময় থাকলাম ।আমার নানু ছিলেন। তিনিও বেশ খুশি হয়েছিলেন ।তবে আমার মা গেলে তিনি আরো বেশি খুশি হতেন ।মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন ।যাইহোক সেখানে আমরা দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করলাম। তবে কোরবানির ঈদ যেহেতু বাচ্চারা কোরবানির ঐখানে সবাই দেখতে ব্যস্ত ছিল ,যার কারণে আমার মেয়ে তাদের সঙ্গে খুব একটা বেশি সময় কাটাতে পারেনি। সেরকম খেলাধুলাও করতে পারেনি ।আর গ্রামে প্রচন্ড গরম ছিল, আমরা মূলত ঘরের মধ্যেই বসেছিলাম।
তারপর আমরা দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম।আমাদের মাংসের যখন পুরো প্রসেসিং শেষ হলো আমরা আমাদের মাংস নিয়ে অটোতে করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ।মূলত গ্রামের গরীব মানুষদের মধ্যে মাংস বিলিয়ে দিয়ে আমাদের অংশ নিয়ে আমরা বাসায় ফিরেছিলাম। বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল ।রাতে আর কোথাও বের হয়নি। আম্মার শরীর ভালো থাকলে হয়তো ঘুরতে বের হইতাম। এভাবেই আমাদের ঈদের দিনটি কাটিয়েছিলাম। তবে আমাদের ঈদের আনন্দ অনেকটাই বেড়ে যাবে আগামীকাল ।কেননা আগামীকাল আমার আরো দুই বোন তৌহিদা আপু ও তানিয়া বাসায় আসবে। কয়েক দিন থাকবে ।সবাই মিলে তখন বেশ আনন্দ করা যাবে। তখন মূলত ঈদ ঈদ মনে হবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাবা বাড়ি নেই এ ভাবনা ভীষণ কষ্টের।যার নেই সেই ভালো বোঝে। এরপর মা অসুস্থ হলে আরও বেশি খারাপ লাগা ভর করে মনে।এদিকে মেয়ে একা হয়ে যাওয়াতে ও খারাপ লাগছে।মেয়েকে নিয়ে নানু বাড়ি থেকে ঘুরে এসে ভালো ই করেছেন। সত্যি কাল ঈদ ঈদ মনে হবে দুবোন বাড়িতে এলে।আশাকরি বেশকিছু দিন সবাই মিলে সুন্দর মূহুর্ত কাটাবেন।আশাকরি পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পারবো।ধন্যবাদ আপু অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু সবাই মিলে একসঙ্গে হলে কোন উৎসব লাগে না এমনিতেই আনন্দ হয় অনেক। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপু মেয়েরা বিয়ের পর বাবার বাড়িতে হঠাৎ করে ঈদ করলে খুব ভালোই লাগে। তবে আপু বাবা-মা যদি দুনিয়াতে না থাকে ঈদের সময় আনন্দটাই মলিন হয়ে যায়। ঈদের সময় বাবা-মায়ের কথা বেশি মনে পড়ে। এদিকে আপনার মাও অসুস্থ। আর ঈদের আনন্দের মাঝে আপনার কষ্টের বেদনা গুলো মনে পড়েছে। তারপর বলব আপু ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। আর সবাইর ঈদ সুন্দর কাটুক সবাই এটাই কামনা করি।
ভাইয়া আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার পোষ্ট পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
হঠাৎ করে আপনার মা অসুস্থ হয়েছেন শুনে সত্যিই খারাপ লাগলো আপু। অনেকদিন পর বাবার বাড়িতে ঈদ করেছেন জেনে ভালো লাগলো আপু। আর যেহেতু ভাইয়া দূরে আছেন তাই হয়তো উনাকে অনেক মিস করেছেন। আপু আপনার অনুভূতি জেনে খুবই ভালো লাগলো। অসাধারণ একটি পোস্ট সবার মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ভাইয়া আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন সবসময়।
ঠিকই বলেছেন এখনকার ঈদগুলোতে তেমন একটা মজা পাওয়া যায় না কেমন যেন একটা শূন্যতা কাজ করে । এখন বাবার বাসায় ঈদ করলেও আর ভালো লাগে না আগেকার দিনের মতো সে আনন্দটা আর নেই । আর বাবাকে হারিয়ে তো আরো বেশি কষ্ট হয় । আপনি অনেকদিন পরে বাসায় ঈদ করেছেন জেনে ভালো লাগছে । ভালো করেছেন মেয়েকে নিয়ে নানা বাড়িতে ঘোরাও হল আবার দেখেশুনে মাংসগুলো নিয়ে আসলেন । ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ।
এখনকার ঈদের দিন গুলো আসলেই একটুও ভালো লাগেনা। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।