ক্রিয়েটিভ রাইটিং :- অসমাপ্ত ভূতুড়ে বাড়ির গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। অনেক দিন আগে শুনেছিলাম এক ভূতের বাড়ির গল্প । গল্পটি শুনে ভালো লাগলো। কিছু গল্প থাকে যা শেষ পর্যন্ত শোনার আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে। কিন্তুু গল্পের শেষ হয়েও হয় না। এই রকম একটা গল্প ভাবলাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করি। আর তাই আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি তা হল অসমাপ্ত ভূতুড়ে বাড়ির গল্প। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


Source

ঘন কালো অন্ধকার শূন্য রাত। চারিদিকে নিস্তব্ধ কোন সাড়া নেই শব্দ নেই। রাস্তার দুই পাশে বড় বন জঙ্গল। সবকিছু যেন শ্মশানের মত মনে হচ্ছে। একা একা পথ হেঁটে চলেছি। রাত তখন বাজে বারোটা। নিজের তেমন উদ্দেশ্য ছিল না। তারপরও একটা গন্তব্যস্থান খুঁজছিলাম। যখন বাসা থেকে বের হয় তখন দিদি ডেকে বলছিলেন সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে আসবি। কারণ এখানেই সবকিছু তোর অজানা। আমি নিজেও ভেবেছিলাম খুব সংক্ষেপে এই চারিদিকে ঘুরে বাসায় চলে আসব। হঠাৎ একটা শব্দে আশঙ্কা মনের ভিতর কেমন যেন হয়ে উঠল সবকিছু ভুলে গেলাম। মনে হল রাস্তাটা হারিয়ে ফেলেছি। গ্রামের চারিদিকে মেঠো পথ, রাস্তার কিছু শাখা বের হয়েছে। দিনের বেলায় একজন মুরুব্বির সাথে দেখা হয়েছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন বাবা তুমি কোথায় যাচ্ছ? তার কথায় আমি বেশ কর্ণপাত করছিলাম না। তবে পিছনের দিকে থেকে বলেছিলেন যেখানে যাও ওই রাস্তা দিয়ে তুমি যেও না। প্রশ্ন করা হয়নি কেন যাব না? কারণ তিনার কথা তো আমি গুরুত্ব দেইনি তখন।


রাত যখন আটটা বাজে পাশে একটা চায়ের দোকান ছিল। গ্রামে চায়ের দোকান কারেন্ট ছিল না পিটপিট করে জ্বলছিলো মোমবাতি। নির্জন একলা বসে চা বিক্রি করছিলেন। তার কাছে গিয়ে এক কাপ চা খেলাম। বেশ কিছু কথা হলো তার সাথে। তিনি আমাকে বলছিলেন কোথা থেকে এসেছো বাবা? আমি বললাম চাচা আমি শহর থেকে এসেছি। তিনি আমাকে বলেন বাবা তুমি তো এখানে নতুন এসেছো তাই একটু দেখে-শুনে চলবে। সেই সময় ওই চাচার কথা আমি গুরুত্ব দিয়েছিলাম না। তিনাকে জিজ্ঞাসা করি নাই কেন চাচা আপনি এমন কথা বলছেন। আসলে আমার ইচ্ছা ছিল নিজের মতো করে ঘুরবো। আমাদের শহর অঞ্চলে রাত আটটা তো এমন বেশি রাত নয়। আমাদের কাছ থেকে তো মনে হয় সন্ধ্যা রাত। কিন্তু গ্রামের রাত আটটা টা মনে অনেক রাতে এটা আমার বোঝার দরকার ছিল। রাখার পাশাপাশি চাচার কাছ থেকে এক বোতল পানি নিয়েছিলাম। আসলে সেখানকার পরিবেশটা ছিল খুবই মনোরম এবং ঝিমঝিম ঝিঝির শব্দের চারদিকে যেন একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিল। অন্ধকার রাতে জোছনার আলো নেই জোনাকিদের মিট মিটমিটে আলোয় পরিবেশটা বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে।


এইসব সৌন্দর্যের মধ্যে আমি ডুবে রয়েছি কখন যে বারোটা বেজে গেছে একটুও বুঝতে পারি নাই। এখন আমি কি করবো সেটা বুঝতে পারছি না। আর একটু সামনে গিয়ে দেখি একটা বিশাল ভিলা। সেখানে গেটের সামনে গিয়ে নক করতেই কোন সারা শব্দ নেই। হঠাৎ দরজাটা এমনিতেই খুলে গেল। এমন একটা আচরণে বেশ চমকে গেলাম। তারপরও মনের কাছে একটু স্বস্তি পেলাম। যদি বাসায় না ফিরতে পারি তাহলে এখানে রাত কেটে যাবে। একটু ভয় ভয় লাগছিল তারপর সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। বাড়িটা ছিল অনেক পুরনো কিন্তু বেশ সুন্দর দেখতে। দেখে মনে আছে কোন রাজমহল। চারিদিকে থেকে তাকিয়ে দেখলাম মনে হচ্ছে এখানে বেশ বাগান ছিল। তার নমুনা দেখেই বুঝতে পারছিলাম। ঠিক এমন সময় একটা শব্দ আমার কানে বেজে উঠলো। শব্দটা ছিল নুপুরের শব্দ। শব্দটা ভালো লাগলেও এত বড় শ্মশান বাড়িতে এমন শব্দ নিজেকে বেশি শতভাগ করেছে।


চারিদিকে তাকিয়ে যখন কোন কিছু দেখলাম না হঠাৎ করে শরীরে লোমগুলো যেন খাড়া হয়ে গেলা। ভয়ে ভয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম। এরপরে একটা রুমের সামনে দাঁড়াতে রুম টা খুলে গেল। বাইরে যেমন মনে হয়েছিল ভিতরটা তার পুরোটাই উল্টো। ভেতরে কি সুন্দর চাকচিক্য সবকিছু অনেক সুন্দর ভাবে সাজানো। এমন সময় সিঁড়ি দিয়ে মনে হল কে যেন নেমে আসছে। একটু পরে দেখি মায়াবী হাসিতে চারিদিকে মাতাল করিয়ে দিল একটা মেয়ে। এরপরে আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম। হঠাৎ করে কথা বলে উঠলো। এই কথা শুনে তো আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলাম। দেখতে যেমন সুন্দর তেমন তার হাঁসি। এদিকে আমি ভুলে গেছি এতো বড় বাড়িতে কোন মানুষ নেই। তাহলে এতো সুন্দর একটা মেয়ে কোথা থেকে এলো। এই কথা ভাবতেই ভয়ে গাম ঝরতে লাগলো। কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না। যাইহোক সামনে এসে যখন আমার সাথে কথা বলা শুরু করে তখন আমি আমতা আমতা করে কথা বলি। ভয়ে আমার গা শীতল হয়ে আসে, কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে তার সাথে কথা বলি আর সময় পার করতে থাকি।


এভাবে চলতে থাকে কিছু সময় পর পর ভয়ংকর শব্দ হতে থাকে। এই বুঝি প্রাণটা চলে গেলো। বলে না বিপদের সময় সহজেই যায় না। শুনেছি রাতের শেষ ভাগে যখন আজান দিলে সব খারাপ আত্মা চলে যায় কিন্তুু সময় যায় না। এখন বসে মনে হচ্ছে সেই মানুষদের কথা যারা আমাকে সাবধান হতে বলেছিল। কিন্তুু তখন তারা পরিস্কার করে বলে নাই এই ঘরের কথা যে, এখানে অশুভ আত্মা আছে....।


ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।


আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস poco M2
লোকেশন মেহেরপুর


👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxFqYAEtmnwbJrshP4Tdaov4BmxkXJqLhx2USjht6Vy2soth7e34k1TKBQ2RZ2vXNJBF8X9uKH9aLNKFV...xU6W1ggWaLoBhkXz82k34bfNqfnFypapZe2oHzEHELJzLj6msr2RorLQSivfSXJaPiBZmUdQYzewFKsaGxDCyC6yRhEDYu8mNwzeEnkjmmjmpLrQEyQZKZnCTp.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

আপনার গল্পটা পড়তে ভয় লেগেছিল। আসলে এমন গল্প পড়তে ভয় লাগে। সত্যি এমন ভূতরে বাড়ি থেকে এতো সুন্দর মেয়ে কিভাবে কথা বলতেছে। আর নির্জন বাড়িতে এভাবে একটা আত্মা কথা বললে ভয় কার না লাগে। আমি তো গল্পটি পড়তেই ভয়ে অস্থির।আসলে বিপদে পড়লে সমাধান মানুষের কথা বেশি মনে পড়ে। যাইহোক অবশেষে চলে গেছে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

ভূতের গল্প শুনতে আমার কাছেও ভীষণ ভালো লাগে। বাস্তবে অবশ্যই এমন সম্মুখীন হয়নি। ভবিষ্যতে জেনো এমন অবস্থায় না পড়তে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.12
JST 0.026
BTC 57014.79
ETH 2478.23
USDT 1.00
SBD 2.29