ক্রিয়েটিভ রাইটিং :- শওড়া গাছে ভূতের মেলা।
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আর তাই আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি তা হল শওড়া গাছে ভূতের মেলা।এই গাছটি ছিল আমার এক জামাইয়ের বাড়ির পাশে। পাশাপাশি সেখানে বিশাল বাঁশঝাড় ছিল। আর সেখানে যে শওড়া গাছ ছিল সেখানে ছিল ভূতের মেলা। আজকে আমি সেই সম্পর্কে আপনাদের মাঝে বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...
আমি যদি বলি ভূত বলে কিছু আছে, তাহলে হয়তোবা সবাই আমাকে পাগল বলবেন। আসলেই কি ভূত বলে কোন জিনিস রয়েছে? না আসলে ভূত বলে কোন জিনিস নেই। পৃথিবীতে দুইটি জিনিস সৃষ্টি করা হয়েছে, একটি হলো মানুষ জাতি আরেকটা হলো জীন জাতি। মানুষ জাতির মধ্যে যেমন ভালো-মন্দ রয়েছে, ঠিক তেমনি জ্বীন জাতির মধ্যেও ভালো মন্দ রয়েছে। আগের মানুষ ছিল সহজ সরল। তাই তারা অনেক ছোট জিনিসকে অনেক বড় মনে করত। আসলে রাস্তাঘাটে তখন খুব একটা সুব্যবস্থা ছিল না। আমি তখন অনেক ছোট। আমার চাচাতো ফুফুর বিয়ে হয়েছিল মদনাডাঙ্গা। সেই সময় আমার সেখানে যাওয়া হয়নি। তবে মাঝেমধ্যে ফুফু আমাদের বাসায় বেড়াতে আসতো। তার সাথে আসতো তার বড় ছেলে। আমি তাদের গ্রামের কথা শুনতে গেলে সে তখন বলত আমাদের বাড়ির পাশে বিশাল বাঁশেঝাড়। সেখানে মানুষের বসতবাড়ি ছিল খুবই কম। আর যেগুলো ছিল একটি বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি অনেক দূরে। স্বাভাবিক ভাবে বলা যায় বসবাস করাটা সেখানে বেশ কঠিন ছিল। পাশে একটা অনেক গভীর পুকুর ছিল। পুকুরের পাশেই ছিল একটা শওড়া গাছ। রাত্রে যদি কেউ বাহিরে আসতো তাহলে শব্দ শুনতে পেত শহড়া গাছের ডালগুলো যেন মটমট করে ভেঙে যাচ্ছে। এতে সেখানকার মানুষ বেশ ভয় পেত।
এমন ভাবে চলছিল সেখানকার পরিবেশটা। এটা কতটুকু সত্য আমার জানা নেই তবে, আমি আমার ফুফাতো ভাইয়ের মুখ থেকে শুনেছিলাম। তাদের গ্রামের ঘটনা। আসলে অনেক আগে বাথরুমের তেমন ব্যবহার ছিল না। সবাই বাইরে গিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় কাজটা সেরে আসতো। হঠাৎ এভাবে একদিন একটা ছেলে বাইরে গিয়েছিল রাত্রে বেলা। যাওয়ার সময় তার মা বুঝতে পারছিল যে তার ছেলে বাইরে গেল। স্বাভাবিক ভাবে এভাবে মানুষ বাহিরে যায় ঠিক সেভাবে সে গিয়েছিল। আর এই বিষয়টি তার মা খুব একটা বেশি গুরুত্ব দেয়নি। এর পরে মা ঘুমিয়ে গেছে। সে গেছে তো গেছেই আর ফেরার কোন নাম নেই। সকাল হয়ে গেছে মা মনে করেছে ছেলে হয়তো বা ঘুম থেকে উঠে বাইরে গেছে। এভাবে সময় যাচ্ছে তো চলেই যাচ্ছে। যখন তার কোন হতিস নেই তখন তার মা বাড়ির মানুষ সবাই তাকে খুঁজতে বের হয়েছে। যখন তাকে খুঁজে আর পেল না সবাই কান্নাকাটি শুরু করেছে। তার মা তখন বলছিল যে তার ছেলে সন্ধ্যার পরে বাইরে গিয়েছিল আর ফিরে আসে নাই। এভাবে তিন দিন কেটে গিয়েছিল।
এরপর হঠাৎ করে রাত্রে তার ছেলে বাসায় ফিরেছে। তার বাড়িতে ফেরা দেখে সবাই তো কান্নাকাটি শুরু করেছে আরো বেশি। তারা সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করছে তুই কোথায় গিয়েছিলি? সে তখন বলছিল আমি জ্বীনের দেশে গিয়েছিলাম। তার কথা শুনে সবাই অবাক। তখন সে বলছিল সত্যি আমাকে জ্বীন ওঠে নিয়ে গিয়েছিল। তিনটা দিন আমাকে রেখেছিল সেখানে। তাকে বলা হয়েছিল তোকে কোন জ্বীন নিয়ে গেছিল? তখন সে বলেছিল আমাকে একটা জ্বীনে নিয়ে গিয়েছিল। এই কথা শুনে সবাই তো অবাক। সে বলেছিল আমাকে এখানে ফিরিয়ে দেয়ার কোন ইচ্ছে তার ছিল না। কিন্তু আমি অধিক কান্নাকাটি করার জন্যই আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে গেল। আসলে এ বিষয়টি কতটুকু সত্য আমি জানিনা। আমি আগেই বলেছি এই বিষয়টা আমি শুনেছি আমার ফুফাতো ভাইয়ের মুখ থেকে। এছাড়াও আমি আগের মুরুব্বিদের কাছ থেকে এমন গল্প শুনেছি।
শুধু এটাই নয়, এছাড়াও অনেক ঘটনা সেখানে ঘটেছে। শওড়া গাছের পাশ দিয়ে রাত্রে কেউ গেলে তাকে ভয় দেখানো হত। একবার এক ব্যক্তি গাছটি কেটে ফেলার ইচ্ছা পোষণ করেছিল। ঠিক সেই রাতে তাকে সাবধান করছিল। কোন অবস্থাতে যদি তুই এই গাছটি কেটে ফেলো তাহলে তোর পরিবারের প্রতি অনেক ক্ষতি হবে। এই কথা শোনার পরে সে গাছ আর কাটা হয়নি তাদের। শুধু এটাই নয় হঠাৎ একদিন এক মহিলা বাথরুমে গিয়েছিল। যখন তিনি ওখানে ছিলেন তখন এমন বিকট শব্দ এবং হাসির শব্দ শুনে ছিলেন সেই সাথে সাথে তিনি ভয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। এমন ঘটনা অহরহ ঘটতে থাকে সেই গ্রামে। আর তারপর থেকে ওই গাছের পাশ দিয়ে কেউ আর যেতে পারত না। এমনকি দিনের বেলায় গেলেও ভয় পেত। আপনারা সবাই জানেন জ্বিনেদের বিয়ে হয়ে থাকে। একদিন তারা শব্দ শুনতে পেয়েছিল গান বাজনার। তারা স্পষ্ট দেখতেও বলে পেয়েছিল তাদের বিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
বিভিন্ন ধরনের এই ঘটনা ঘটতে থাকতো সেই শওড়া গাছের পাশে। আর যার কারণে মানুষজন সেখানে বসবাস করতে পারল না। সবাই সেখান থেকে চলে আসলো। কিন্তু বর্তমান সময়ে কাল ক্রমে পরিবর্তনের ফলে সেই গাছ কিন্তু এখন আর নেই। পরবর্তীতে অনেক কিছু করার পরে জ্বীনদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবং পরবর্তীতে সেই গাছটি কেটে ফেলা হয়। তবে তাদের মুখ থেকে আমি শুনেছিলাম সেই গাছটি যদি না কাটা হতো তাহলে হয়তো বা কখনোই মানুষজন ওখানে বসবাস করতে পারত না। কারণ যেমন ভালো জ্বীন ছিল তেমন খারাপ জ্বীনও ছিল। আর মন্দ জ্বীন গুলো সব সময় মানুষের উপরে বিরক্ত করতো। আজকে এ পর্যন্তই আবারও অন্য একটি ঘটনা নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো।
ভূল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশায় নিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ডিভাইস | poco M2 |
---|---|
লোকেশন | মেহেরপুর |
👨🦰আমার নিজের পরিচয়👨🦰
আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://twitter.com/ABashar45/status/1801108473591353589?t=_kwU_oF_YJzVI2OXKA9HQw&s=19
আপনার ফুপাতো ভাইয়ের গল্প গুলো ভীষণ ভয়ংকর ছিলো ভাইয়া।আসলে লোকমুখে গ্রামে এখনো তেঁতুল গাছ,শেওরা গাছ,গুলোকে ভুতের আবাসস্থন বলা হয়ে থাকে।জিনের দেশে নিয়ে গিয়েছিল এরকম গল্প আমিও শুনেছি অনেক লোকমুখে। কতোটুকু সত্যি জানি না।ধন্যবাদ সুন্দর গল্পটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
অতীতের সময় এই বিষয় গুলো আসলেই ছিল। কারণ তখন বন জঙ্গল ছিল বেশি। তবে বর্তমান সময়ের খুব কম শোনা যায়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
এমন ঘটনার কথা সাধারণত গ্রামের মানুষের মুখে অনেক শোনা যায়।আমিও নানি দাদীর মুখে অনেক এমন ঘটনার কথা শুনেছি।আপনার ফুফাতো ভাইয়ের মুখে আপনি ভূতের কয়েকটি ঘটনা শুনেছিলেন।একটি ছেলেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা,গাছ কাটতে চাওয়ায় হুমকি দেওয়া, মহিলাটি কোনো শব্দের আওয়াজ পেয়েছিল ইবং অবশেষে অজ্ঞান হয়েছিল ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনা শেয়ার করেছেন ভাইয়া।আপনার ভাইয়ের বলা ঘটনা গুলো শুনে বেশ ভয় লাগছে। অবশেষে যে গাছটি কাটা হয়েছিল এটা জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ।
এমনিতেই ভূতের ঘটনা গুলো শুনলে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। মনের মধ্যে একটু অজানা ভয় কাজ করে। তবে তার কথা গুলো শুনে আমারও সেই সময় ভয় লাগছিল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।