বাসার ছাদ থেকে তোলা এলোমেলো কিছু ছবি
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে এলোমেলো কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করতে চলে এসেছি । বেশ কয়েকদিন হল বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি আর অতিরিক্ত গরমের কারণে বাসা থেকে একেবারে বের হওয়া হচ্ছে না । একটু যে ছাদে যাব সে উপায় নেই । প্রচন্ড পরিমাণে গরম থাকে সারাদিন এসি ছেড়ে তার ভিতরে বসে থাকতে হয় । যার কারণে বাসার বাইরে খুব একটা যাওয়া হচ্ছে না । ছাদে গেলে বাচ্চারাও খুব খুশি হয় এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে ভালোই লাগে । কিন্তু গরমের কারণে ওদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় না । আজকে দুপুরবেলা হঠাৎ করে দেখলাম যে একেবারে কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে গিয়েছে এবং একটু বাতাস বইতে শুরু করেছে । তখন হঠাৎ করে মনে হলো যে এই আবহাওয়াটা ছাদে যাওয়ার জন্য একেবারে পারফেক্ট । তাই সবাই মিলে চলে গেলাম ছাদে । চারিদিকে অন্ধকার আশেপাশটা দেখতে খুবই ভালো লাগছিল । আবার হালকা হালকা বৃষ্টিও পরতে শুরু করেছে দেখলাম । আর আমাদের ছাদের থেকে আশেপাশের সবুজ প্রকৃতিটা দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগে । কারণ এখন পর্যন্ত আমাদের বাসায় আশেপাশে অনেক গাছপালা রয়েছে যার কারণে দেখতে অনেকটা ভালো লাগে । গাছের এবং ছাদের থেকে কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি । পরবর্তীতে বাকি ছবিগুলো শেয়ার করব ।
প্রথমে আম্মার শখের লেবু গাছের ছবি দিয়ে শুরু করলাম ।এখানে পাশাপাশি দুটো লেবু গাছ রয়েছে । ছোট যে লেবু গাছটা সেটা একটা সময় ঝড়ের ভেতরে একেবারে টব থেকে উল্টিয়ে ভেঙে পড়ে গিয়েছিল । সেই গাছটা আমার ভাই অনেক যত্ন করে আবার বড় একটা ড্রামের মধ্যে লাগিয়েছে এবং সেই গাছটাতে বেশ ভালই কয়েকটা লেবু ধরেছে । এগুলো একেবারে দেশি কাগজি লেবু । সেই রকম টেস্ট লাগে এই লেবুগুলো খেতে । আমি আবার কাগজী লেবু ছাড়া অন্য লেবু খেতে পারি না তেমন একটা ভালো লাগে না । কারণ আমি লেবু খাই ঘ্রাণের কারণে আর কাগজী লেবুর যে ঘ্রানটা পাওয়া যায় সেটা অন্য কোন লেবুতে আমি পাইনা । দেখলাম যে গাছের বেশ কয়েকটা লেবু পেকে পেকে রয়েছে । তখন আমার বোন সেখান থেকে কয়েকটা লেবু ছিড়ে আনলো এবং আনার পরে কেটে দেখলাম যে বেশ ভালই রস হয়েছে । আর এই লেবুগুলো দিয়ে দুপুরবেলা ভাত খেয়েছি সত্যি অন্যরকম একটা টেস্ট পেয়েছি নিজের গাছের লেবুর স্বাদই আলাদা ।
এরপর ছাদের অন্যপাশ থেকে তাকাতেই দেখলাম যে পাশের বাসার ভেতরে বড় একটা আম গাছে । বেশ কিছু আম ধরে রয়েছে । এখন তো সব আম একেবারে পেকে গিয়েছে কাঁচা আম নেই বললেই চলে। কিন্তু ওনাদের গাছে দেখলাম বেশ কিছু কাঁচা আম রয়েছে দেখে তো একেবারে লোভ লেগে গেল মনে হচ্ছিল কাঁচা আমগুলো এনে লবণ মরিচ দিয়ে মাখিয়ে খাই কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব হয় না । পাশের বাসার আন্টি হজ করতে গিয়েছিল এই জন্যই উনার জন্য যত্ন করে গাছের আমগুলো রাখা হয়েছে । যদিও আমগুলো এখনো পাকেনি তবে আমগুলো দেখতে মনে হচ্ছে কিছুদিনের ভিতরেই পেকে যাবে । আর তার নিচে একটা নারিকেল গাছের ছবি, এই নারকেল গাছটা আমাদের অন্য পাশের বাসায় ভেতরে রয়েছে ।এই গাছটা গতবার যখন দেখেছিলাম তখন এর প্রত্যেকটা ডালপালা অনেক তর তাজা ছিল । এবার দেখলাম যে নিচের ডাল গুলো কেমন যেন শুকিয়ে গিয়েছে । হয়তোবা অতিরিক্ত গরমের কারণে এরকম হয়েছে ।
এখন যে ছবিগুলো এটা হলো নিম গাছের ছবি । আমাদের একেবারে সাথের যে বাসাটা সেই বাসার ছাদে দেখলাম একটা বড় একটা টব এর ভিতর এরকম একটা নিম গাছ হয়েছে । টবে যে নিম গাছ হতে পারে সেটা এই গাছটা না দেখলে বিশ্বাসই হতো না । নিম গাছের পাতা অনেক সময় অনেক কাজে লাগে এবং নিম গাছের ডালও কাজে লাগে । গাছটা ভালোই তরতাজা হয়ে উঠেছে । তারপর দেখলাম অন্য বাসার ভেতরে একটি কলা গাছ । শহরের বাড়ি ঘর গুলোতে এখন কলাগাছ নেই বললেই চলে যাদের বেশ খানিকটা জায়গা রয়েছে তারা হয়তোবা দু একটা কলা গাছ রেখেছে ।
এখানে দেখতে পাচ্ছেন বড় একটা টবের ভিতর একটি তুলসী গাছ । এই তুলসী গাছটার বয়স অনেকদিন । এই তুলসী গাছটা যখনই দেখিছি তখনই তরতাজা দেখেছি কিন্তু এবার গিয়ে আমি একটু হতাশী হয়ে গেলাম কারণ তুলসী গাছটা প্রায় খানিকটাই মরে গিয়েছে । হয়তোবা অতিরিক্ত গরমের কারণে সময় মতো পানি দেওয়া হচ্ছে না দেখেই গাছটা কেমন যেন মরে গিয়েছে । তুলসী গাছের পাতা অনেক সময় অনেক কাজে লাগে । এজন্য একটা তুলসী গাছ বাসায় থাকলে সর্দি ঠান্ডা লাগলে কিন্তু উপকার হয় ।
এখানে উপরে দেখতে পাচ্ছেন পুঁইশাক গাছের একটি ডাল সুন্দরভাবে বেড়ে উঠছে । এই গাছটি টবের ভিতর আম্মা কিছু ডাল পুঁতে রেখেছিল সেখান থেকেই ডালপালা গজিয়ে একটু বড় হয়েছে । এরপর আম্মা ওপরে একটা কিছু বিছিয়ে তার ভেতরে সুন্দরভাবে গাছটিকে উঠিয়ে দিয়েছে । গাছটি দেখলাম সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠেছে । এরকম ছোট ছোট কয়েকটি পুঁইশাক গাছ ছাদের টবের ভিতরে লাগালে কিন্তু ছোট্ট ফ্যামিলির জন্য কাজেই লাগে । প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে শাকগুলো ছিঁড়ে নিয়ে খাওয়া যায় । নিজের হাতে লাগানো যে কোন জিনিসের টেস্টি আলাদা । আর নিচে যে গাছের ছবিটি দিয়েছি এটা হল মে ফুল গাছের ছবি । প্রতি বছরের মে মাসে এই ফুল গাছগুলো অনেক বেশি বড় হয় এবং সুন্দর ফুল ফুটে । এত বড় মে ফুল ফুটে দেখতে খুবই ভালো লাগে । পুরো টব জুড়ে ফুলটা থাকে অনেক বেশি সুন্দর লাগে । মে মাসে তো ফুলটি আমি দেখতে পারিনি তবে এখন দেখলাম আবার নতুন করে ছোট ছোট গাছ বের হচ্ছে । মে মাস আসতে আসতে গাছগুলো আবার সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে তখন আবার নতুন করে ফুল ফুটবে ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আজ আপনি বাসার ছাদ থেকে এলোমেলো কিছু ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার ছাদের ছবিগুলো আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপনার ছাদে তো বেশ সুন্দর সুন্দর গাছ আছে দেখছি। আসলে ছাদের উপর গাছ থাকলে সেই গাছগুলোকে অনেক বেশি যত্ন নিতে হয়। আর আমার মনে হয় এই কাজটা অনেক বেশি পরিশ্রমের। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার ছাদের গাছের ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়ার জন্য।
বাহ আপনি তো দেখতেছি বাসার ছাদের উপর থেকে খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। তবে এখন আবহাওয়া এবং হালকা বৃষ্টি যদি থাকে তখন বাসার ছাদের উপর গেলে এমনিতে বেশ ভালো লাগে। তবে আপনার সবগুলো ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। এবং ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর করে বর্ণনা দিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
গরমের জন্য তো ছাদে যাওয়া যায়না তাই আবহাওয়াটা ভালো হওয়ার কারণে সাথে সাথেই চলে গিয়েছিলাম । আর সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করে নিয়ে আসলাম ।
বাহ আপু আপনি তো বাসার ছাদ থেকে বেশ কিছু চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন ।ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। আসলে দেশি লেবুর স্বাদ অন্যরকম যা খেতে সত্যি ভীষণ মজার লাগে ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।
ঠিকই বলেছেন দেশি লেবুর টেস্টি আলাদা । আমি তো ঢাকায় সবসময় এ ধরনের লেবু খুজি তবে খুব একটা পাওয়া যায় না এখানে ।
আপনাদের বাসার ছাদের এলোমেলো ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনার আম্মুর লেবু গাছটা আমার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে। তাছাড় সবার শেষে দেখলাম মে ফুল গাছ। এটা আমি প্রথম দেখলাম। এর আগে মে ফুল দেখি নাই। মে মাসে কেমন হয় সেটা দেখার বাকি। ধন্যবাদ।
মে ফুল গাছে কিন্তু অনেক সুন্দর ফুল ফুটে দেখতে খুবই ভালো লাগে ।