"আমার বাংলা ব্লগ"প্রতিযোগিতা - ২৯| নতুন বছরের নতুন ব্যানার
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পেইন্টিং নিয়ে। আসলে কয়েকদিন ধরে নতুন প্রতিযোগিতার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কারণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। এবারের প্রতিযোগিতা দেখার পর আরো অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। কারণ আপনারা সবাই জানেন আমি পেইন্টিং করতে বেশি পছন্দ করি। তবে যখন এর কনসেপ্ট দেওয়া হয়েছে আমার বাংলা ব্লগ নিয়ে করতে হবে, এই বিষয়টা নিয়ে একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম।
ভাবতে শুরু করলাম আমার বাংলা ব্লগ নিয়ে কি করব? আর কিভাবে করব? এইজন্য আমি আমার বাংলা ব্লগের সবকিছু ভালোভাবে দেখতে শুরু করলাম। কোন বিষয়টা দিয়ে আঁকা যায়। প্রথমত চিন্তা করলাম আমার বাংলা ব্লগের লোগো টা দিয়ে কিছু একটা করব। এরপরে ভাবলাম আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা এবং সবকিছুর মূলে রয়েছে আমাদের প্রিয় দাদা। আমার আঁকা কনসেপ্ট এর মধ্যে দাদাকে রাখবো। আর ভেতরের অংশের মধ্যে আমাদের আমার বাংলা ব্লগের সাথে জড়িত সকল বিষয়গুলো একসাথে করব। বিশেষ করে সাইফক্স, এবিবি স্কুলের লোগো, এবিবি ফানের ব্যানার, সাপ্তাহিক হ্যাংআউট রিপোর্টের ব্যানার, বর্তমানে দারুন একটা উদ্যোগ রবিবারের স্টেজ শো এর ব্যানার, আরো একটা দারুন উদ্যোগ ব্লগার অব দ্য উইক, এছাড়াও হিরোজম প্রজেক্ট এর লোগো। এই সব কিছু মিলিয়ে একটা পেইন্টিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
আমি ভেবেছি যেহেতু এই সবকিছু আমার বাংলা ব্লগের সাথে জড়িত, এই সব কিছু দিয়েই এবারের প্রজেক্ট সাজাই। আমি ভেবেছে একটা বড় আর্ট পেপারে এইটা আর্ট করব। এইজন্য ৪২/২৮ ইঞ্চি একটা আর্ট পেপার কিনে আনলাম। আর্ট পেপার আনার পরে এটাকে আমাদের ডাইনিং টেবিলের উপরে টেপ দিয়ে জোড়া লাগিয়ে নিলাম। পুরো টেবিলটা জুড়ে গিয়েছিল। এরপর যখন আঁকতে শুরু করলাম পুরো পেন্সিল স্কেচ টা আঁকতেই একদিন কেটে গেল। এরপরে একটু একটু করে আস্তে আস্তে প্রায় তিন দিন সময় লাগলো আঁকতে। আসলে বুঝতেই পারছেন এটা অনেক বড় করে এঁকেছি এই জন্য একদিনে আঁকা সম্ভব নয়। তবে এটা আকঁকে এত বেশি সময় আর পরিশ্রম হবে এটা বুঝতেই পারেনি। মনে হয়েছে আটটা পোস্টের পেইন্টিং একটাতেই করা লেগেছে। তবে শেষ পর্যন্ত কমপ্লিট করতে পেরেছি এটাই ভালো লাগলো। আর আপনাদের যদি ভালো লাগে তাহলেই আমার কাজের স্বার্থক।
যে ভাবনা সেইভাবে কাজ শুরু করলাম। আজকের এই পেইন্টিংয়ে আমি পোস্টার কালার ব্যবহার করেছি। পোস্টার কালার ছাড়াও পেইন্টিং করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং কিভাবে আমি এই পেইন্টিংটা করলাম তার ধাপে ধাপে বর্ণনা করে আপনাদের সাথে এই সম্প্রদায়ে ভাগ করে নিলাম। আশা করি আমার আজকের পেইন্টিং আপনাদের ভালো লাগবে।
আঁকার উপকরণ
• আর্ট পেপার
• পোস্টার কালার
• রং করার তুলি
• পেন্সিল
• স্কেল
• রাবার
• রংয়ের প্লেট
• পানি
আঁকার বিবরণ :
ধাপ - ১ :
প্রথমে আমি একটি আর্ট পেপার নিলাম। এরপর প্রথমে দাদার ছবিটা কার জন্য এ ফোর সাইজের একটা মাপ নিয়ে, এরপরে সমানভাবে দাগ দিয়ে এক ইচ্ছে করে বক্স তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ২ :
এরপরে পেন্সিল দিয়ে একটু একটু করে মুখের একটা স্কেচ হালকাভাবে এঁকে নিলাম।
ধাপ - ৩ :
এরপরে একদম বড় করে লোগোর চারপাশের অংশটা এঁকে এবং আমার বাংলা ব্লগ লিখাটা লিখে নিলাম।
ধাপ - ৪ :
এরপরে এবিবি ফ্যানের ব্যানারের অংশটা এবং এবিবি স্কুলের লোগোটা পেন্সিল দিয়ে একটা স্কেচ তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ৫ :
এরপরে রবিবারের স্টেজ শো এর ব্যানার এবং হিরোইজম প্রজেক্ট এর লোগো এর একটা পেন্সিল স্কেচ করে নিলাম।
ধাপ - ৬ :
এরপরে সাইফক্স এবং সাপ্তাহিক হ্যাংআউট রিপোর্টের ব্যানার এর একটা পেন্সিল স্কেচ করে নিলাম।
ধাপ - ৭ :
এরপরে আমি একটু একটু করে স্কিন কালার দিয়ে দাদার মুখের অংশটার মধ্যে এরকম করে নিলাম।
ধাপ - ৮ :
এরপর আমি কালো রং দিয়ে একটু একটু করে দুটো চোখ আঁকার চেষ্টা করলাম।
ধাপ - ৯ :
এরপরে আমি চোখের উপরের ভ্র এবং মুখের নিচের অংশের দাড়ি-গোঁফ গুলো এঁকে নিলাম।
ধাপ - ১০ :
এরপরে আমি একটু একটু করে মাথার উপরের চুলগুলোকে আঁকার চেষ্টা করলাম। তার সাথে গলার অংশটাও এঁকে নিলাম।
ধাপ - ১১ :
এরপরে এর সামনের অংশে একটা ল্যাপটপ এর পেছনের অংশ এঁকে নিলাম।
ধাপ - ১২ :
এরপরে রবিবারের স্টেজ শো টা এর মধ্যে সবুজ রং দিয়ে রং করে নিলাম।
ধাপ - ১৩ :
এরপরের লাল রং দিয়ে উপরের অংশ এবং দুই পাশের অংশগুলো রং করে নিলাম।
ধাপ - ১৪ :
এরপর উপরের অংশে রবিবারের আড্ডা লিখে ডিজাইন করে নিলাম। উপরের অংশে কালো রং দিয়ে ডিজাইন করে নিলাম।
ধাপ - ১৫ :
এরপর এবিপি ফানের মধ্যে দেওয়া কার্টুন টাকে রং করে খুব সুন্দর ভাবে এঁকে নিলাম।
ধাপ - ১৬ :
এরপর কার্টুন এর অপর পাশে একটা বোর্ড এঁকে এর মধ্যে ফান লিখে নিলাম
ধাপ - ১৭ :
এরপরে একটু একটু করে হ্যাংআউট রিপোর্টের ব্যানারটা আঁকা শুরু করি। এখানে দুই থেকে তিনটা কালার ব্যবহার করেছি।
ধাপ - ১৮ :
এরপরে মাঝখানের অংশে হলুদ কালার দিয়ে হ্যাংআউট লিখে দিলাম। এরপর ওপারের অংশে আমার বাংলা ব্লগ লিখে নিলাম।
ধাপ - ১৯ :
এরপরে লাল রং দিয়ে ব্লগার অব দ্য উইক লেখার জন্য বাহিরের অংশটা লাল রং দিয়ে রং করে নিলাম।
ধাপ - ২০ :
এরপর লেখার অংশে সাদা রং দিয়ে রং করে লিখে নিলাম।
ধাপ - ২১ :
এরপরে আকাশী কালার দিয়ে হিরোইজম এর লোগোটা আঁকা শুরু করি।
ধাপ - ২২ :
এরপর কালো রং দিয়ে চারপাশে এর পুরো লোগোটা আঁকা শেষ করি।
ধাপ - ২৩ :
এরপরে সবুজ কালার দিয়ে সম্পূর্ণ লোগোটার বাহিরের অংশটা রং করা শুরু করি।
ধাপ - ২৪ :
একটু একটু করে সম্পূর্ণটা রং করে নিলাম। সবুজ রং দিয়ে বাহিরের পুরো গোল অংশ রং করে নিলাম।
ধাপ - ২৫ :
এরপরে লোগোর উপরের অংশে সবুজ রং দিয়ে আমার বাংলা ব্লগ লিখে নিলাম।
শেষ ধাপ :
এভাবে আমি পুরো পেইন্টিং করা শেষ করি। আশা করি আমার আজকের পেইন্টিং আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | পেইন্টিং |
---|---|
ডিভাইস | Redmi note 9 |
ফটোগ্রাফার | @tasonya |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
বাহ্ জাস্ট অসাধারণ হয়েছে আপু। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
আপনার মন্তব্য পেয়ে অনেক বেশি উৎসাহিত হলাম ভাইয়া। চেষ্টা করেছি সুন্দর কিছু উপস্থাপন করার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
নতুন বছর উপলক্ষে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির জন্য আপনি দারুন একটা পোস্টার তৈরি করেছেন দেখছি আপু। কমিউনিটির সকল কার্যক্রম আপনার এই পোষ্টের মধ্যেই ফুটে উঠেছে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে উৎসাহিত করার জন্য।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি তো সত্যি একেবারে মুগ্ধ আপনার ব্যানার তৈরি দেখে। কালার কম্বিনেশনও খুবই সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। দেখেই বুঝতে পারছি অনেক সময় লেগেছে আপনার এই ব্যানারটি তৈরি করতে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক চিন্তা ভাবনা করে এটি অংকন করলেন। খুবই নিখুঁতভাবে এটি অংকন করেছেন আপনি। বলতে গেলে এক কথায় অসাধারণ ছিল।
চেষ্টা করেছে কালার কম্বিনেশনটা সুন্দর ভাবে দেওয়ার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি তো অবাক করেন দিলেন আপু। এত সুন্দর পেইন্টিং আমি নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। আপনি প্রতিযোগিতার জন্য সুন্দর একটি আর্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনি সপ্তাহের প্রত্যেকটা দিন সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এই পোস্টারে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্টার বানিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
চেষ্টা করেছি আমার বাংলা ব্লগের সবকিছু তুলে ধরার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগতো। আপনার প্রতি রইল শুভেচ্ছা ভালোবাসা। আর এই নতুন বছরের নতুন ব্যানারটি অসাধারণ হয়েছে। সত্যিই আপনার দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়।
আপনার কাছে অসাধারণ লেগেছে এটা শুনে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার বাংলা ব্লগের সবকিছু সবসময়ই ব্যাতিক্রমধর্মী, তার সাথে সাথে প্রতিটি সদস্য ব্যাতিক্রম সব কাজ উপহার দিয়ে প্রতিনিয়ত তাক লাগিয়ে দেয়। আপনার অংকন দেখে সত্যিই অসাধারণ কাজ মনে হয়েছে আমার কাছে। আর সত্যি বলতে কতটা পরিশ্রম করেছেন সেটা কাজটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। প্রতিটি বিষয় ভীষণ যত্ন সহকারে ফুটিয়ে তুলেছেন, আর দাদার ছবিটি তো অসাধারণ 😍
শুভ কামনা রইলো, ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে 👌
ঠিক বলেছেন আমার বাংলা ব্লগের সবকিছুই ব্যতিক্রমধর্মী। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি বলতে এই প্রতিযোগিতা টা দেখার পর আমি শুধু অপেক্ষায় ছিলাম আপনি কবে পোস্ট করবেন, কারণ আমি জানি এই প্রতিযোগিতায় আপনি আপনার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবেন। আর আপু আপনার পেইন্টিং এর হাত নিয়ে কথা বলার স্পর্ধা আমার নেই। মুগ্ধ হয়ে যাই প্রতিবারই। চমৎকার হয়েছে পুরো আয়োজনটা আপু। অনেক শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইল।
আপনি আমার পোস্টের অপেক্ষায় ছিলেন এটা শুনে সত্যিই অনেক বেশি উৎসাহ পেলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনার অংশগ্রহণ দেখে অনেক ভালো লাগলো। সত্যিই আপু এই প্রতিযোগিতায় আপনি দারুন ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। আসলে আপনার কাছ থেকে এরকম কিছুই প্রত্যাশা করেছিলাম। অসাধারণ একটি আর্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।
চেষ্টা করেছি ভালো কিছু উপস্থাপন করার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।