সরস্বতী পূজার কিছু মুহূর্ত ও ফটোগ্রাফি
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি।বসন্তের আগমনে ফুটে ওঠে প্রকৃতির প্রতিটি কনা।পশু পাখিরা আনন্দে ভরে ওঠে।আজ আমি আপনাদের সাথে সরস্বতী পূজার কিছু মুহূর্ত শেয়ার করবো। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা হয়ে থাকে। তাই এই তিথি শ্রী পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামে পরিচিত। বিদ্যা ,বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবী সরস্বতী। সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি প্রিয় উৎসব সরস্বতী পূজা। এই দিনে ছাত্র ছাত্রীরা দেবী তোর কাছে পুষ্পাঞ্জলি দেয়।তেমনি অন্য দিকে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা দেবীর সামনে হাতে খড়ি দিয়ে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে শিক্ষার জগতে পা রাখেন।এ ছাড়া এই দিনটা বন্ধু বান্ধবদের সাথে আড্ডা দেওয়া ও ঘুরতে যাওয়া ও একটি বিশেষ দিন।
সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজা বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। প্রাচীনকালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী সাদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন বলে জানা যায়। উনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতি মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে ধোয়া চৌকির উপর তাল পাতার তাড়ি ও দোয়াত-কলম রেখে পূজা করার প্রথা ছিল। শ্রী পঞ্চমী তিথিতে ছাত্র ছাত্রীরা বাড়িতে বাংলা ও সংস্কৃত গ্রন্থ, শ্লেট ও দোয়াত কলমে সরস্বতী পূজা করতেন। তবে শহরে ধনাঢ্য ব্যক্তিরাই সরস্বতীর প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করতেন। এই ভাবে ধীরে ধীরে প্রতিমা তৈরি পূজা করা শুরু হয়ে থাকে।
তোমার বাহন হাঁসের মতো চরণ তলে বসে,
করতে পারি যেনো পড়াশোনা অক্লেশে।
বিশ্বজুড়ে ছাত্র তোমার সবার তুমি বরেন্য,
আশীর্বাদ করো মাগো জ্ঞান ও বিদ্যা হোক বিকশিত।।
বিয়ের পর এই প্রথম আমি বাড়ীতে সরস্বতী পূজা করেছি। আর আগে ভেবেছি পূজা করবো কিন্তু বাবু ছোট ছিলো তাই আর হয়ে ওঠেনি। এখন বাবু বড় হচ্ছে স্কুলে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু আমাদের হাতেখড়ি না দিয়ে স্কুলে ভর্তি করে না। তাই ভাবছি এবার বাবুর হতে খড়ি দিয়ে দেবো। আর এখন একটু একটু পড়াশোনা ও করছে তাই এখন থেকে পূজা করবো। ঠিক সেই মতো পূজার আগের দিন পূজার সমস্ত বাজার করলাম। যেখানে পূজা করবো রাতে সেই জায়গা সাজিয়ে নিলাম।পরদিন সকাল সকাল উঠতে হবে তাই আর খুব বেশি রাত করিনি। পরদিন সকাল সকাল উঠে পূজার সমস্ত কাজ করলাম। ঠাকুর বলছিলো ১২ টায় আসবে। সেই মতো বাবুকে স্নান করিয়ে নতুন জামা প্যান্ট পরিয়ে দিলাম। কিন্তু ঠাকুরের আসতে আসতে ১.৩০ বেজে গিয়ে ছিলো।
আমি আগের থেকে সবকিছু গুছিয়ে রেখছিলাম।তাই ঠাকুর এসেই পূজা পড়াতে শুরু করেছিলো। আমরা সবাই অঞ্জলী দিলাম। এই প্রথম টিনটিন বাবু ও উপোস থেকে মায়ের কাছে অঞ্জলী দিলো। আর আমি পাঁচ বছর পর আবার অঞ্জলী দিয়েছি। বিয়ের আগে প্রতিবছর নতুন শাড়ি পরে স্কুলে অঞ্জলী দিতে যেতাম। বিয়ের পর আর দেওয়া হয়নি। এই দিনটি ছিলো আমাদের আনন্দের একটি দিন।সারাবছর অপেক্ষা করতাম সরস্বতী পূজার জন্য। কারণ এই দিনে পড়াশোনা থাকতো না।সারাদিন পূজা দেখতাম আর বিকাল পড়লে সবাই মিলে ঘুরতে যেতাম।আর রাত্রে পিকনিক করতাম। ওই দিনে কেউ বাধা দিতো না বলতে গেলে পুরো স্বাধীন। সত্যি অনেক মজা হতো সরস্বতী পূজার দিন।
যাই হোক অঞ্জলীর শেষে বাবুর হতে খড়ি দেওয়া হলো। ঠাকুর আমার বাবুকে অনেক আশীর্বাদ করলেন। এরপর হোম শুরু হবে। এজন্য ঠাকুর হোমের জন্য কাঠ সাজাতে লাগলেন।
বেশ কিছুক্ষণ ধরে ঠাকুর হোম করলো। হোম শেষ হলে আমরা সবাই প্রণাম করলাম। পূজা শেষ হলে ঠাকুর একটু প্রসাদ নিয়ে চলে গেলেন। তবে আমি আর বিকালে কোথাও ঘুরতে গেলাম না। কারণ বাড়ীতে অনেক রান্না ছিলো আর বেশ কিছু লোকজন ছিলো। সবকিছু মিলিয়ে অনেক সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছি।
সরস্বতী পূজার এই দিনটার জন্য ছোটবেলায় সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতাম, কবে আসবে এই দিনটা। যাই হোক এটা টিনটিন এর প্রথম অঞ্জলি ছিল যেটা শুনে খুব খুশি হলাম। আমাদের টিনটিন বাবু এখন থেকে স্কুলে যাবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ বৌদি খুব চমৎকার কিছু মুহূর্ত ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এই সরস্বতী পূজার। অনেক বেশি ভালো লেগেছে বৌদি। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
দিদি দারুন দারুন ফটোগ্রাফির মাধ্যমে পূজোর তাৎপর্য তুলে ধরেছেন দেখে অনেক ভাল লাগলো। আপনি বেশকিছু গেস্ট নিয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন জেনে ভাল লাগলো। আরো ভাল লাগলো টিনটিন বাবু এই প্রথম অঞ্জলি দিল জেনে।অনেক ভাল থাকবেন দিদি সবাইকে নিয়ে।অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
সরস্বতী পূজার দিনের জন্য ছোটবেলায় অপেক্ষা করে থাকতাম।কখন শাড়ি পড়ে অঞ্জলি দেব কিন্তু এই বছর পূজাতে যাওয়া হয়নি।খুবই সুন্দর হয়েছে মায়ের মূর্তিটি।মা সকলকেই বিদ্যা ও বুদ্ধি দিন এই প্রার্থনা করি।টিনটিন বাবুর হাতেখড়ি হয়েছে জেনে খুশি হলাম, ধন্যবাদ বৌদি।