"সিকিম রাজ্যের নাথুলা পাসের কিছু ফটোগ্রাফি ও হটাৎ অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া "
বন্ধুরা
আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে মিষ্টি সকালের শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। সিকিম রাজের নাথুলা পাসের কথা এর আগে শুনেছেন। পাহাড় এবং বরফ দেখার প্রবল আগ্রহ নিয়েই সিকিম রাজ্যে যাওয়া। কিন্তু বরফ দেখার ভাগ্য আমার হলো না। শুধু পাহাড় দেখলাম।
সিকিম রাজ্যে নাথুলার অবস্থান। ভারত ও চীনের মধ্যে একমাত্র স্থল সীমান্ত পথ। ভারত চীন পথটি হিমালয়ের প্রায় ১৫ ০০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। পথটি ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তের সঙ্গে চীনের তিব্বতের সীমান্ত মিলেছে। ১৯৬২ সালের চীন ও ভারত যুদ্ধের সময় ভারতের সাথে চীনের এই বাণিজ্য পথটি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৪৪ বছর পর ২০০৬ সালের ৮ জুলাই এই সীমান্ত পথটি ভারত চীনের সাথে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে খুলে দেওয়া হয়। আর সেখান থেকেই পর্যটকরা উপড়ে উঠে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।তবে এটা নভেম্বর - ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বরফে ঢাকা থাকে। অনেক সময় মার্চ ও এপ্রিলে বরফ দেখা যায়। তবে সেটা প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। এপ্রিলের পর পাহাড়ে না যাওয়াই ভালো। তখন প্রায়ই পাহাড় ধসে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমরা নাথুলা পাস যেতে গেলে মিলিটারির পারমিশন নিয়ে যেতে হয়। আমাদের আগের থেকে সেখানে যাওয়ার পারমিশন নেওয়া হয়েছিলো। তাই আমরা সকাল বেরিয়ে পড়েছিলাম নাথুলার উদ্দেশ্যে। যথারীতি আমরা পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে চলছিলাম। আমার বাবু ও বেশ আনন্দ পাচ্ছিলো। পাহাড়ের আঁকা বাঁকা রাস্তা বেয়ে গাড়ির ভেতরে দুলতে দুলতে যাচ্ছি।আমরা খুব একটা সকালে খেলাম না। শুধু মাত্র এক কাপ চা আর হালকা লুচি, সবজি খেয়েছিলাম। পাহাড়ে উঠতে গেলে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। আমরা যত উপড়ে উঠছিলাম তত ঠান্ডা লাগছিলো। আমরা পৌঁছায় গাড়ি থেকে নামতেই এক ঝটকা ঠান্ডা হাওয়া এসে আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলো। তবে আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন অল্প অল্প বরফ জমা শুরু করছিলো। কিন্তু প্রচন্ড ঠান্ডা ছিলো। আমরা সবাই তিনটা মোটা মোটা জ্যাকেট পড়েছিলাম।আমাদের সমস্ত শরীরে ঢাকা ছিলো তারপরও শীত করছিলো। সবাই নাথুলা পাসের উপরে উঠছিলো। আমি উঠতে চাইছিলাম না বাবুর জন্য। ও ছোট কোন সমস্যা হয় কি না। ওখানে যেতে গেলে সঙ্গে করে কর্পূর নিতে হয়। কর্পূর শ্বাস কষ্ঠের হাত থেকে রক্ষা করে। আমরা ও নিয়ে গিয়েছিলাম কর্পূর।আমার প্রিয় মানুষটির অনুরোধে উপরে উঠছিলাম। আমার অল্প অল্প কষ্ট হচ্ছিলো কিন্তু বুঝতে পারিনি ভাবছি সিড়ি ভেঙ্গে উঠছি তাই হয়তো খারাপ লাগছে। আমরা ১৪৪৫৬ ফুট উঠে যাওয়ার পর আমি আর নিশ্বাস নিতে পারছি না, প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে। আমার অবস্থা দেখে বাবু কান্না করছে। বাবুর বাবাও ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। আমি কথাই বলতে পারছিলাম না।মনে হচ্ছিলো আমি হয়তো বাড়ি ফিরে আসতে পারবো না। এটা দেখে ও আরো বেশি ভয় পেয়ে গেল। আমি বললাম তুমি যাও দেখে এসো। কিন্তু ও আমাকে ছেড়ে গেলো না। শুধু বললো তুমি যেতে পারছো না দেখতে ও পারছো না আমি যাবো না। আমি যতবার যেতে বলেছি ততবারই না বলছে। আসলে আমি ওর জীবনে আসার পর থেকে আমাকে ছাড়া একা কোন কিছু দেখতে যাই নি। ভালো - মন্দ সবকিছু আমরা দুজনে একসাথে দেখে আসছি। তাই শুধু মাত্র উপড়ে উঠেছিলো আমার দেবোর। আমরা নিচে এসে গাড়িতে বসে ছিলাম। আমাদের ইচ্ছা ছিলো নর্থ সিকিম যাওয়ার কিন্তু আমার অসুস্থ তার জন্য আর যাওয়া হলো না। নাথুলা ঘুরে আমরা গেলাম ছাঙ্গু লেক ও বাবা মন্দির।
নাথুলা পাস চীন ভারতের বর্ডার।
নাথুলা পাসের পাহাড়।
বৌদি নমস্কার
আসলে আপনার যদি এসব জায়গায় ভ্রমন করতে না যেতেন ৷ তাহলে হয়তো বা এতো কিছু জানাই হতো না তার সাথে ফটোগ্রাফি ৷
আপনি সিকিম রাজ্যের নাথুলা পাসের অনেক অজনা কথা শেয়ার করেছেন ৷ আর এখন অনেক কিছুই জানতে পারলাম ৷ ১৪৪৫৬ ফুট উঠেছেন ভাবা যায় ৷ আমি তো শুনেই ভয় লাগতেছে ৷ যা হোক আপনার জন্য দাদা আর যেতে পারলো না ৷
সত্যি বৌদি ফটোগ্রাফি গুলো দারুন ছিল ৷ অনেক ভালো লাগলো বৌদি ৷
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা আপনাকে কতটা ভালোবাসে তা মাঝেমধ্যে আপনাদের কিছু পোস্ট পড়েই বুঝা যায় বৌদি।সত্যিই আপনি মারাত্মক লাকি একজন মানুষ,অবশ্য দাদাও লাকি।আগেই শুনেছিলাম আপনার সমস্যা হয়েছিলো।বাট এখন পড়ে বুঝলাম সমস্যা অসম্ভব বেশিই হয়েছিলো।
প্রথমে তো খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম আপনার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল শুনে।তবে খুব খারাপ লাগছে দাদার সাথে আপনি যে যেতে পারলেন না দেখার জন্য সেজন্য।এত বড় আশা নিয়ে গেছেন দাদা আপনাকে নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠবেন কিন্তু ওটা হল না।এভাবে জীবনের ভালো-মন্দ মুহূর্তগুলো শেয়ার করলে অনেক বেশি ভালো লাগে।
আপনার পোস্ট পড়ে বোঝা যাচ্ছে দাদা আপনাকে বেশ ভালবাসে। আপনার এতো ইচ্ছা ছিল তাও যেতে পারলেন না জেনে খারাপ লাগল। বেড়াতে গিয়ে বেশ অসুস্থ্য হয়ে পরেছিলেন জেনে খারাপ লাগল। তা যাইহোক পরবর্তিতে বেশ মজা করে ঘুরে বেরিয়েছেন । এবং সুস্থ্য ভাবে ফিরে এসেছেন। ছবিগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে । ধন্যবাদ সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য।
১৯৪৭ সালের ভারত ও পাকিস্তান বিভক্তির পর ভারতের সাথে অন্য কোন দেশের যুদ্ধ হয়েছে তা অবগত ছিলাম নাহ। ভারতের সাথে চিনি যুদ্ধ হয়েছে তা এখন জানলাম। বিষয়টা পর্যবেক্ষন করতে হবে,নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে বেশ ভালো লাগে। যাইহোক দাদা আপনাকে কতটা সম্মান ও ভালোবাসে তা আবারো দেখলাম। ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দারুন হয়েছে।
আপু তাও তো আপনি ১৪৪৫৬ ফুট উঠেছেন। আমি তো ৫ ফিটের বেশি উঠতে পারতাম কিনা সন্দেহ আছে। যাক আপু আপনার মাধ্যমে সিকিম ভ্রমণের কিছু অসাধারণ ফটোগ্রাফি দেখতে পারলাম। ভারত চীন সীমান্ত আমার কখনো দেখা হয়নি। আজ আমি আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে দেখতে পেলাম। কিন্তু খারাপ লাগছে আপনার আর বরফ দেখা হয়নি এজন্য।
বৌদি আপনার অসুস্থ থাকার কথা দাদা বলেছিলো কোন এক পোস্টে তবে এতটা যে অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন তা বুঝতে পারি নি।আসলে বৌদি দাদার মত জীবনসঙ্গী পাওয়া অনেক ভাগ্যের ব্যপার। আসলে আপনারা দুইজনই অনেক ভাগ্যবান।যাই হোক প্রতিটি ছবিই বেশ সুন্দর। ইশ বরফ দেখতে পারলে আরো ভালো লাগতো।এত উচুতে উঠার কারনে অক্সিজেনের ঘাটতি কারনে এমন হয়েছে, মনে হয়।
ধন্যবাদ
নথুলা পাস জায়গাটি অনেক সুন্দর।ফটোগ্রাফি গুলোতে দারুন দেখতে লাগছে বৌদি।দাদা আপনাকে ছাড়া কোথাও যেতে চাইনা। কতো টা ভালোবাসা থাকলে সম্ভব।সারাজীবন এভাবেই ভালো থাকুন আপনারা,একে অপরের পাশে থাকুন।তারপরেও বৌদি অনেক উচুতে উঠেছিলেন কিন্তু।তাই কষ্ট হচ্ছিল এত।কর্পূর এর বিষয়টি জানতাম না।তাহলে কর্পূর তো বেশ উপকারী উচুতে ওঠার জন্য।ধন্যবাদ আপনাকে বৌদি নাথুলা পাস এর ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।
বৌদি দাদার একটি পোস্টে পড়েছিলাম পাহাড়ে উঠতে যেয়ে আপনার বেশ সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু সমস্যাটা মারাত্মক ছিল সেটা বুঝতে পারিনি। সত্যি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আপনি ।বেশ খারাপ লাগলো পড়ে। তবে আপনারা দুজন দুজনকে যে সমান ভাবে ভালোবাসেন পোস্টগুলো পড়লে অনেকটা বোঝা যায় ।আর দুর্দান্ত হয়েছে ফটোগ্রাফি গুলো।জায়গাটাও কিন্তু অসম্ভব সুন্দর দেখে চোখ ফেরানো যাচ্ছে না ।বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ।