মামার কর্মক্ষেত্র

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব , মামার কর্মক্ষেত্রে কাটানো কিছু মুহুর্ত

কথায় আছে মামার বাড়ি মধুর হাড়ি বা মামা বাড়ি ভারি মজা কিল চড় নাই।কথা গুলো আমরা সবাই শুনেছি আর জানিও কথা গুলো কতটা সত্য।আপনার ক্ষেত্রে যদি সত্য না হয় তবে আপনার জন্য অনেক সমবেদনা রইল। কারন আপনি যে জিনিস মিস করেছেন তার তুলনা হয়না।মানুষের ছোট বেলায় মামার বাড়ির প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে, আমার কিন্তু উলটো।আমি যত বড় হয়েছি মামার বাড়ির প্রতি আকর্ষন তত বেড়েছে।

আমার মামার বাড়িতে আমার সমবয়সী কেউ ছিল না,এমনি ঐ পাড়াতেই আমার সমবয়েসী কেউ ছিল না।ফলে ছোট বেলায় যেতে চাইতাম না।কারন খেলাধুলা করা যেত না,আবার বিদ্যুৎ ছিল না ফলে টিভি দেখেও সময় কাটানোর উপায় ছিল না।ফলে যাইতে চাইতাম না। কিন্তু আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম আর উপলব্ধি করতে লাগলাম আমার মামা, মাসি দাদুরা এক একজন দার্শনিক পর্যায়ের মানুষ।আর সেই সাথে ব্যাপক রসিক।

দাদুরা বললাম কারন আমার মামার বাড়ি আর মায়ের মামা বাড়ি একটাই।অর্থাৎ পাশাপাশি বাড়ি।ফলে খাওয়াদাওয়া সব একসাথেই চলে। আর যেহেতু ফোন মোবাইল টিভি কিছুই ছিল না তাই ছুটির দিন বা দোকান থেকে ফিরে চলত দারুন আড্ডা। আড্ডায় বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাই উপস্থিত থাকত। আর সেই আড্ডা হত এক জম্পেশ জিনিস। হাসতে হাসতে পেটে ব্যাথা হয়ে যেত।

যাই হোক অনেক সময় পার হয়ে গেছে,সেই পল্লীগ্রামে লেগেছে আধুনিকতার ছোয়া।যৌথ পরিবার ছেড়ে সবাই জীবীকার উদ্দেশ্যে এখন আলাদা আলাদা যায়গার বাসিন্দা। এখন অনেকদিন মামা বাড়ি যাওয়া হয়না। যাই হোক গতকাল একটি কাজে মামার কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়েছিল।যে মামার কর্মক্ষেত্রে গিয়েছিলাম তার নাম মিঠু। কিন্তু আমরা সবাই আদর করে মামাকে ডাকতাম ভুতু বলে।

ভুতু নাম হবার পেছনে অনেক কাহিনী আছে।ইনি ছোট থেকে যে কর্মকান্ড করেছেন শুনলে হা হয়ে যাবেন।একটা উদাহরণ দেই।মামা তখন হাইস্কুলে পড়েন।বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়ে মাত্র সিগারেট খাওয়া শিখেছেন।তখনকার দিনের অনুশাসন বেশ কঠিন ছিল।ছেলেপেলেরা এখনকার মত বেয়াদব ছিল না। ফলে উনি লুকিয়ে সিগারেট খেতেন। এত লুকিয়ে খেতেন যে একদিন পুরো এলাকা জেনে গেল।কিভাবে?

একদিন লুকিয়ে সিগারেট খেতে গিয়ে উনি পুরো আখ খেত পুড়িয়ে ফেলেছিলেন।যাই হোক এমন প্রচুর কর্মকান্ড আছে তার ঝুলিতে।অন্য একদিন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব।তো মামা বর্তমানে মেডিকেল টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করছেন।তবে সেটা নিজের ক্লিনিকেই। কিছুদিন আগে আমি জানিয়েছিলাম যে আমি ডায়েট করছি।তো মামার ক্লিনিকে একজন নিউট্রিশনিস্ট আসছেন কিছুদিন হল।

আমি সেই নিউট্রিশনিস্ট এর থেকেই ডায়েট চার্ট বানিয়ে ফলো করছি।গত শুক্রবার সেটারই ফলো আপ ছিল।তাই সেখানে গিয়েছিলাম। এর আগে যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন মামা ছিল না। গতদিন অনেকদিন পর মামার সাথে দেখা হল,ডাক্তার আসতেও দেরি হচ্ছিল। ফলে অনেকক্ষণ মামার সাথে আড্ডা চলল।অনেক ভাল লাগল, সময়টাও কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারি নি। তবে সেই পুরোনো দিনগুলো খুব মিস করছিলাম।

আজকের পোস্ট এপর্যন্তই। সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।শীঘ্রই হাজির হব নতুন পোস্ট নিয়ে।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 9 months ago 

হ্যাঁ অবশ্যই মামার বাড়ি মধুর হাড়ি কিন্তু আপনি ছোটবেলা সমবয়সী কাউকে পাননি সেই মজাটা উপভোগ করতে পারেননি। যেটা আমি পেরেছি ছোটবেলা মামার বাড়িতে কাটানো যে অনুভূতি সেটা বড় হলে একদমই থাকেনা । সেই দিনগুলো এখনো মনে পড়লে ফিরে যেতে মন চায়। তাছাড়া আপনার মামার কর্মস্থলে গিয়ে যে হাস্যকর উদাহরণটি দিলেন সত্যিই অবাক লাগলো। গোপনে সিগারেট খাইতে গিয়ে নাম হয়েছে ভুতুর ভালই লাগলো বিষয়টি।

Posted using SteemPro Mobile

 9 months ago 

পোষ্টের মাধ্যমে ছোটবেলার সৃতিচারণ করেছো খুব সুন্দর করে।সত্যি মামার বাড়ি সবার জন্য স্পেশাল হয়ে থাকে।আসলে সেই দিন গুলোই ভালো ছিলো যখন একে অন্যকে সময় দিতো। এখন সুযোগ পেলেই ফোনকে সময় দেই আমরা।তোমার মামার সিগারেট খাওয়ার এবংআখ খেত পুরিয়ে ফেলার ঘটনাটি ভয়ংকর ও হাস্য কর বটে।তোমার মামার নামটিও হাস্যকর ভুতু মামা🤪।সব মিলিয়ে বেশ ভালো হয়েছে পোস্ট টি।ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54260.52
ETH 2284.10
USDT 1.00
SBD 2.30