হঠাৎ পরিচয়
পৃথিবীটা বড় অদ্ভুত একটা জায়গা, এখানে কখন কার সঙ্গে কার পরিচয় হবে, তা আগে থেকে সঠিকভাবে বলা মুশকিল। গত দুদিন আগের রাতের কথা বলছি, হঠাৎই মেসেঞ্জারে একটা অপরিচিত ফোন কল চলে এসেছে। যদিও যে ফোন করেছে, সে আমার পূর্ব পরিচিত কেউ না। তবে তারপরেও ভদ্রতার খাতিরে ফোনটা রিসিভ করলাম। তবে আমরা কেউ কাউকে চিনি না। ভদ্রলোকও বুঝতে পারছে না, আমি তার কিভাবে ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় যুক্ত হলাম।
আসলে ফেসবুকের বন্ধু তালিকাটা তো দিন দিন বড্ড লম্বা হয়ে গিয়েছে , যার কারণে কে কিভাবে বন্ধু তালিকায় যুক্ত হয়ে গিয়েছে , তা বুঝতে যেন কিছুটা বেগ পেতে হয়। অতঃপর ভদ্রলোকের পুরো প্রোফাইল ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করলাম, দেখলাম আমার পরিচিত অনেক মানুষজন তার বন্ধু তালিকায় আছে।
আমাদের কথাবার্তা বেশ ভালোই সময় ধরে চলছিল, যেহেতু দুজনই সাবলীল ভাবে কথা বলছিলাম, তাই আলাপচারিতা দীর্ঘ হওয়া নিতান্তই স্বাভাবিক। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, এই শহরেই তার বাসা, আমার বাসা থেকে স্বল্প দূরত্বে। পেশায় কলেজের প্রভাষক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। যেহেতু আমিও রাজশাহীতে দীর্ঘ সময় ছিলাম তাই কথা আরো কিছু সময় জমিয়ে গিয়েছিল।
তবে রাত গভীরতার কারণে, সেই সময় আর আলাপচারিতা দীর্ঘ করতে পারিনি। তবে ভদ্রলোককে বলেছিলাম, আমরা কিন্তু চাইলেই সামনাসামনি দেখা করতে পারি বা জমিয়ে আড্ডা দিতে পারি। আসলে ভদ্রলোক প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ তো, তাই হয়তো আমার প্রস্তাবটা প্রত্যাখ্যান করেনি। বরং বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছিল।
দীর্ঘদিন পরে নতুন এক মানুষের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি, একটা অদ্ভুত রকম অনুভূতি কাজ করছিল নিজের মাঝে। বয়সে প্রবীণ, তবে চিন্তা চেতনায় বেশ পরিবর্তনশীল। তাই হয়তো আমাদের ভিতরে বয়স কোন বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সন্ধ্যা বেলার দিকে, এই ব্যস্ত শহরের ছোট্ট রেস্তোরাঁর কেবিনে বসে দীর্ঘ সময় কফি খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা দিলাম। মনে হচ্ছিল না, তার সঙ্গে এই প্রথম দেখা ।
হঠাৎ পরিচয়ে এমন একজন মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতা বা দেখা-সাক্ষাৎ করে অনেকটাই আত্মতৃপ্তি পেয়েছি। কেননা নিজেদের চিন্তা চেতনা যখন কারো সঙ্গে মিলে যায়, তখন সেই পরিচয়গুলো মুহূর্তেই আরো কিছুটা আত্মিক হয়ে যায়। ভদ্রলোকের একটাই ছেলে, আর্মিতে আছে মেজর পদে। তাছাড়া তার সহধর্মিনী তিনিও কলেজের প্রভাষক। একথায় বলতে গেলে, তাদের বাসায় এখন আর কেউ নেই, শুধু তারা দুজন ছাড়া আর সন্তান তো তার কর্মস্থলে।
এই শহরে মানুষ কতভাবে একাকী জীবনযাপন করে, তা হয়তো মানুষের কাছে না গেলে বা কথা না শুনলে, বোঝা যায় না। পরিবার,সন্তান,আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধব সব থাকার পরেও অনেকে ভিতর থেকে বড্ড একা,হয়তো তার নিজের মতো করে মত প্রকাশ করবে এমন একটা মানুষের সান্নিধ্যের জন্য বড্ড মুখিয়ে থাকে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আজকাল আমরা এমন একটি যুগে এসে দাঁড়িয়েছি যে আমাদের আশেপাশের মানুষ গুলোর কোন খবর নেওয়ার সময় পর্যন্ত আমাদের নেই। মাঝে মাঝে এমন কিছু মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয় যে তাদের কথা শুনে তাদের জন্য আমাদের বেশ কষ্টই লাগে। এই যেমন আজকের ভদ্রলোকের সাথে কথা বলে কিন্তু আপনারও বেশ ভালো লেগেছে।
আমরা সবাই একটা সময়ের পরে গিয়ে একাকীত্ব তে ভুগি, তবে একাকীত্বটা দূর করাটা খুবই জরুরি।
সত্যি ভাইয়া আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ আছে যারা একাকী জীবন যাপন করছে। প্রয়োজনের তাগিদে সন্তানরা দূরে চলে যায়। যাইহোক ভাইয়া আপনার সাথে নতুন একজন মানুষের পরিচয় হয়েছে জেনে ভালো লাগলো।
আমারও কিন্তু ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয় হয়ে বেশ ভালোই লেগেছে।
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1737765641208426616?t=KEs0rFl-yaG1QW-OkW-Uhw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বর্তমানে যুগে কমবেশি সবাই ব্যস্ত জীবন জীবিকার তাগিদে। তাইতো এতো এতো কাছের মানুষ থাকা সত্ত্বেও, আমরা একাকী বোধ করে থাকি অনেক সময়। যাইহোক লোকটাকে দেখে বেশ ভদ্র মনে হচ্ছে। কাছাকাছি বাসা হওয়ায় দেখা করে জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন আপনারা। আসলে চিন্তা ভাবনার মিল থাকলে অপরিচিত মানুষের সাথে ও অনেক কথা বলা যায়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মোটামুটি লোকটা বেশ ভদ্র এবং বিনয়ী, তাই হয়তো সময়টাতে বেশ ভালো জমিয়ে আড্ডা দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।