প্রশান্তির খবর

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

inspiration-1514296_1280.jpg
source

আমার শুভাকাঙ্ক্ষীর তালিকা বড্ড সংক্ষিপ্ত, তারথেকেও বেশি সংক্ষিপ্ত আরো বন্ধুর সংখ্যা। বলতে গেলে, বন্ধুবান্ধব নেই বললেই চলে। আসলে নিজের মতামতের সঙ্গে তেমন কারো মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়না বিধায় যার তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আর এগিয়ে যাই না।

স্কুল, কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সমাজ-সংসার সবকিছু পেরিয়ে আমার হাতেগোনা কিছু বন্ধু। প্রীতমের সঙ্গে সম্পর্ক আমার সেই স্কুল জীবন থেকেই। যদিও পরবর্তীতে প্রীতম , কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অন্যত্র চলে গিয়েছিল, তারপরেও যেহেতু আমাদের স্কুল জীবনের বন্ধুত্ব, সেই হিসেবে পথের দূরত্ব খানিকটা বাড়লেও, সম্পর্কটা ছিল বেশ অমলিন।

একটা বিষয় আমাকে প্রতিনিয়তই ভাবায়, যে সম্পর্ক গুলোতে প্রত্যাশা-প্রাপ্তি কিংবা আকাঙ্ক্ষা কম থাকে,সেই সম্পর্ক গুলোর স্থায়িত্ব বড্ড দৃঢ় হয়। শেষ ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল বছর তিনেক আগে, তাও সেটা ওর বিয়ের সময়। মূলত দাওয়াত পেয়েছিলাম,এজন্যই সেই সময়টার কথা আমার এখনো বেশ ভালোভাবেই মনে আছে।

ভালোবাসার বিয়ে ছিল তো, এজন্য ছেলে-মেয়ে উভয়েই গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল। তারপর নতুন একটা জীবন শুরু হয় ওদের। পৃথিবীর বাস্তবিক রূপগুলো যেন তখন থেকেই ওরা দেখতে শুরু করে। আসলে এখানে টিকে থাকতে গেলে, অবশ্যই কোন কিছু একটা করতে হবে। প্রেম ভালোবাসা দিয়ে হয়তো নিজেদের ভিতরের আত্মিক সম্পর্কটা বেশ ভালোভাবে টিকে থাকে, তবে আর যাইহোক সংসার চালাতে কর্মের দরকার।

অতঃপর নানা রকম প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে, অবশেষে তাদের গন্তব্য হয় রাজধানীর বুকে। যেহেতু প্রীতমের সহধর্মিনী কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করেছিল, তাই সেই সুবাদে দ্রুত একটা কোম্পানিতে চাকরি হয়ে যায়। প্রীতম চেষ্টা করছিল,পড়াশোনায় বেশ ভালোভাবে মনোযোগী হওয়ার জন্য। প্রতিনিয়ত সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলোতে সে ক্রমাগত পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছিল। আসলে ভাগ্য সহায় হচ্ছিল না।

তাছাড়া রাজধানীর বুকে দুজন মানুষের থাকা-খাওয়া কিংবা সংসার করা, ব্যাপারটা একটু খরচ সাপেক্ষ। প্রীতম পড়াশোনার পাশাপাশি চেষ্টা করছিল, টিউশনি করানোর জন্য। কেননা তার সহধর্মিনীর একার চাকরির পয়সায় তো আর এত কিছু ম্যানেজ করা সম্ভব না।

হয়তো যতো সহজে সাবলীল ভাবে লেখাগুলো লিখে ফেললাম, তার থেকেও কয়েক হাজার গুণ বেশি কঠিন ছিল ওদের জীবন। একেকটা দিন যেন একেকটা বছরের মতো কেটেছে ওদের কাছে। মাঝে মাঝেই কথা হতো প্রীতমের সঙ্গে,তবে ও নিজেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করতো। কেন চেষ্টা করত, তার আর নতুন করে বলার কিছু নেই।

বাস্তবতা যখন বড্ড কঠিন রুপ নেয়, তখন হয়তো হাজার মিষ্টি কথাও সহজে হজম হতে চায় না। তারপরেও আমি ওর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রাখতাম না, কোন না কোন ভাবেই যোগাযোগ করেই যেতাম। বন্ধু হিসেবে তো আর সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া কিছুই করার ছিল না। যতদিন কথা হয়েছে ততদিন শুধু সুপরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছি বরং এখনো করছি।

মানুষের সফলতার গল্প লিখতে ভালো লাগে, তারথেকেও বেশি ভালো লাগে নিজের কাছের বন্ধুর সাফল্যের কথা লিখতে। গতকাল প্রীতমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলো, অনেকটা দীর্ঘ সময় ধরেই। ওর কাছ থেকেই জানলাম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওর চাকরি হয়েছে। বড্ড গর্ব হচ্ছিল ওর জন্য। কেননা ওর বিবাহ পরবর্তী শেষ তিন বছরের জীবনযুদ্ধের ঘটনা কিছুটা হলেও টুকটাক জানি তো, তাই খবরটা শোনার পরেই, নিজের ভিতরে প্রশান্তির পরিমাণটা যেন অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল।

ভালো থাক প্রীতম, তোর আগামী আরো সুন্দর হোক, এই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করছি।

Banner-16.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

আসলে ভাইয়া জীবন মানে যুদ্ধ। প্রীতর কষ্টের জন্য হয়তো সে আজ সুখের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে। আসলে ভাইয়া কথাই আছে না রাত যত গভীর হয় প্রভাত তত নিকটে আসে। প্রীতম অনেক কষ্ট করেছে বলেই আজ সে সুখের মুখ দেখেছে।আর প্রতিটি মানুষের প্রীতমের মতো ধৈর্য ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

একটা সত্য ও ওর বাস্তব জীবনে বেশ ভালোই কষ্ট করেছে, যার কারণে আজ হয়তো এই সফলতার মুখ দেখেছে।

 5 months ago 

প্রীতম ভাইয়ার জীবনের লড়াই সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। আসলে এরকম পরিস্থিতিতে জীবনটা অনেক বেশি কষ্ট হয়। এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যারা সময় পার করে তারাই শুধু সেই কষ্টটা বুঝতে পারে। যাই হোক অবশেষে প্রীতম ভাইয়ার চাকরি হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগলো।

 5 months ago 

জীবন গুলা আসলেই বেশ অদ্ভুত, হয়তো সেটা জায়গা ভেদে।

 5 months ago 

যে সম্পর্ক গুলোতে প্রত্যাশা-প্রাপ্তি কিংবা আকাঙ্ক্ষা কম থাকে,সেই সম্পর্ক গুলোর স্থায়িত্ব বড্ড দৃঢ় হয়।

একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই, আকাঙ্খা বেশি থাকলে সম্পর্ক বেশিদিন টিকে না। আসলে কাছের মানুষদের সুপরামর্শ দিতে পারলে এবং প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করতে পারলে,নিজের কাছেই অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। যাইহোক আপনার এতো কাছের বন্ধুর অবশেষে সরকারি চাকরি হয়েছে, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। আশা করি প্রীতম ভাই এবং তার পরিবারের সামনের দিনগুলো অনেক ভালো কাটবে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

প্রীতমের আগামী দিনগুলো ভালো কাটুক, এই প্রত্যাশা আমি নিজেও করছি ভাই।

 5 months ago 

এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া, সংসার চালাতে হলে দরকার কর্মের। প্রিতম ভাই অনেক চেষ্টার পর একটা চাকরি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের চাকরির বাজার খুবই কঠিন! বলতে গেলে সরকারি চাকরি পাওয়া মানে সোনার হরিণ! বন্ধুর সাফল্যের কথা শুনে এমনিতেই মন বড় যায়, আপনারও তাই হয়েছে। প্রিতম ভাইয়ের জন্য শুভকামনা রইল, যেন আগামী দিনগুলো সুন্দর হয়

 5 months ago 

ধন্যবাদ ভাই, আমার অনুভূতি বুঝতে পেরে মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57979.07
ETH 3124.67
USDT 1.00
SBD 2.36