৪৩ তম বিসিএস সুপারিশ প্রাপ্তদের জন্য শুভেচ্ছা রইল
গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখছিলাম, আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবদের সাফল্যের ফেসবুক স্ট্যাটাস। যেহেতু গতকাল ৪৩ তম বিসিএস এর ফলাফল বেরিয়েছে এবং অনেকেই বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে, তাই তাদের জায়গা থেকে এমন স্ট্যাটাস দেওয়া নিতান্তই স্বাভাবিক । এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ। কারণ তাদের এত দিনের পরিশ্রম, চেষ্টা, ধৈর্য তাদের এই ফলাফল এনে দিয়েছে।
হয়তো এই ফলাফলের পিছনে অজানা অনেক গল্পই রয়ে গিয়েছে, যেটা হয়তো আমি-আপনি কেউ জানি না। কারো হয়তো এটাই শেষ বিসিএস ছিল কিংবা অনেকেই একটা সরকারি চাকরির জন্য বেশ মুখিয়ে ছিল। ভালই লাগছিল, যখন নিজের বাল্যবন্ধু গুলো শেষ সময়ে এসে বিভিন্ন ক্যাডারের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে এটা দেখে।
আচ্ছা কিছু কথা এখন আপনাদেরকে জানাই, বিসিএস এর পূর্ণরূপ হচ্ছে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। মানে এটা সরকারি প্রথম শ্রেণীর কর্মকতা নিয়োগের চাকরির পরীক্ষা। শুধু পরীক্ষা বললেই ভুল হবে, মানে কঠিন পরীক্ষা। যেখানে অজস্র পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সামান্য কিছু পদের বিপক্ষে। ধরুন পাঁচ লাখ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, সেখান থেকে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন হাজার পরীক্ষার্থী বিভিন্ন পদের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হবে। এক কথায় অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা বিষয়। তারপরেও যারা এই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে সফল হয়েছে, তাদেরকে অবশ্যই সাধুবাদ জানানো যায়।
আচ্ছা এখন তাদের কাজ কি, এই সম্পর্কে কিছু কথা বলার চেষ্টা করি। যেহেতু আপনি সরকারি চাকরিজীবী, সেটা যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন। হোক সেটা বিসিএস ক্যাডার-নন ক্যাডার কিংবা অন্যান্য যে সরকারি চাকরি গুলো আছে, সেগুলোর যেকোনো কোন একটা। মানে ধরলাম, আপনি যেকোন একটা সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত আছেন। তাহলে আপনার প্রথম পরিচয় কি, সহজ বাংলায় যদি বলি, তাহলে সেটা শুনতে কিছুটা বিব্রত লাগলেও, সেটাই মেনে নিতে হবে। অর্থাৎ আপনি জেনে বুঝে, প্রজাতন্ত্রের চাকর হওয়ার জন্য যুক্ত হয়েছেন এবং আপনার একটাই কাজ, প্রজাতন্ত্রের আপামর সাধারণ মানুষদের সহজ-সরল ও ঝামেলাহীন ভাবে সেবা দেওয়া।
যেহেতু আপনি সিভিল সার্ভিসে নিয়োজিত, তাই আপনার মাইনেটা কিন্তু সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় হয়। তাই কোন অবস্থাতেই, সাধারণ জনগণ যেন আপনাদের উপর অসন্তুষ্ট না হয়, সেদিকটাতে নজর দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার উপর অর্পিত দায়িত্ব, সততা-নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা উচিত। যদিও এই কথাগুলো সবাই জানে, তারপরেও যারা সিভিল সার্ভিসে নিয়োজিত হয়ে যায়, হয়তো এই কথাগুলো একটা সময়ের পরে গিয়ে তারা ভুলে যায়। আর তখনই নিজেকে যেন ভিন্নভাবে সকলের সামনে জাহির করে। কেমন ভাবে জাহির করে, তা আর নতুন করে বলতে চাই না।
যার কারণে হয়তো এখনও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে জনসাধারণের ঝামেলাহীন ভাবে সেবা পাওয়া কিছুটা কষ্টকর থেকেই গিয়েছে । তাছাড়া ঘুষ, দালাল, সিন্ডিকেট কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহার, এইসব তো আর নতুন কোন বিষয় না। এই লেখাটা যারা পড়ছে, তাদের ক্ষেত্রেও সরকারি যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিতে গিয়ে, এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়তো অনেকেই হয়েছেন।
দেখুন আপনি, প্রজাতন্ত্রের যত বড় কর্মকর্তাই হোন না কেন বা যত বড় পদেই চাকরি করুন না কেন কিংবা যে ক্যাডারেই নিযুক্ত থাকুন না কেন, এতে সাধারণ মানুষের কোন মাথা ব্যাথা নেই। সাধারণ মানুষের প্রাপ্ত সেবাটুকু আপনি ঝামেলাহীন ভাবে দিতে পারলেই, সাধারণ মানুষ তাতে খুবই খুশি।
আরও একটা স্পর্শকাতর ব্যাপার নিয়ে, একটু কথা বলার চেষ্টা করছি। সেটা হচ্ছে, আপনি যেহেতু প্রজাতন্ত্রের চাকর কিংবা সিভিল সার্ভিসের সঙ্গে জড়িত, তাই আপনার অধীনস্থ সেক্টরের লোকজন আপনাকে স্যার-ম্যাডাম বলতে পারে, তবে সাধারণ মানুষ আপনাকে কোন অবস্থাতেই স্যার-ম্যাডাম বলতে বাধ্য নয়। তাদের কাছ থেকে এই সম্মোধনটা শুনতে চাওয়া কিংবা প্রত্যাশা করাও বোকামি।
পরিশেষে, আমার যে সকল বাল্যবন্ধু,সহপাঠী কিংবা পরিচিত ছোট ভাই-বোন, যারা এই ৪৩ তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের সকলের জন্য শুভেচ্ছা রইল। তাদের কর্মজীবনের লক্ষ্য হোক, সাধারণ মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য। এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই আমাদের একটাই কাম্য, সেটা হচ্ছে সরকারি যেকোনো অফিসে গিয়ে আমরা যাতে প্রাপ্য সেবাটা খুব ভালোভাবে পাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, সরকারি যেকোনো সেক্টরে কোনো কাজ করাতে গেলে ঘুষ দিতেই হয়। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই একটা প্রশ্ন চলে আসে, বিসিএস ক্যাডার হতে চায় কি ঘুষ নেওয়ার উদ্দেশ্যে? যাতে করে রাতারাতি বড়লোক হয়ে যেতে পারে। ভাই বিশ্বাস করেন সরকারি কোনো সেক্টরে কাজ করাতে যেতে একেবারেই বিরক্ত লাগে। বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠে, দক্ষিণ কোরিয়াতে থাকা অবস্থায় কতোটা ভালো মানের সেবা পেয়েছিলাম যেকোনো সেক্টরে। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এটাই তো ভাই দক্ষিণ কোরিয়া আর আমাদের এখানকার ভিতরে পার্থক্য। তারপরেও সবার সুবুদ্ধির উদয় হোক এই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করছি।
ভাইয়া বেশ গুছিয়ে আপনি আজকের পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি ভাইয়া যদিও আমি একজন সরকারি চাকুরিজীবি তবুও বলতে দ্বিধা নেই যে আমিও কিন্তু আপনার প্রতিটি কথার সাথে একমত। আজকাল আমার জন্যও চাকুরিটা করা বেশ কঠিন হয়ে গেছে। বেশ খারাপ লাগে আশে পাশের এত অনিয়ম আর অত্যাচার। আমি নিজেও কিন্তু সেই অনিয়মের স্বীকার। যাই হোক জানিনা কি হবে আগামীর দিন গুলো। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করুন, তাহলেই যথেষ্ট। আস্তে আস্তেই পরিবর্তন আসবে আপু, ধৈর্য ধরুন।
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1739942256038060193?t=43QTUygpS7C8Nx0C25DLpQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গতকাল আমিও দেখলাম অনেক বড় ভাই সোস্যাল মিডিয়াতে বিসিএস এ পাশ করার বিষয়টি জানিয়েছে! আসলে এতো প্রতিযোগিতার মধ্যে এতো বড় অর্জন এটা গর্বের বিষয়ই। অনেক পরিশ্রমের ফসল পেয়েছে আমি মনে করি। তবে সরকারি কাজে যেহেতু তারা নিযুক্ত থাকবে তাদের কাজ হবে জনগণের সেবা করা। তবে বাস্তবতা হলো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি দূর্নীতিগ্রস্ত! কেমন লেভেলের যে দূর্নীতি হয় সেটা একজন ব্যক্তি না গেলে কখনোই বুঝতে পারবে না। তবে নতুন বিসিএস এ পাশ করেছে সকল ভাই ও বোনদের জন্য শুভেচ্ছা সবসময় 🌼
দুর্নীতি মুক্ত থাকুক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো, এমনটাই তো প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ছি আর ভাবছি সবগুলো কথা এত যুক্তি দিয়ে এত সুন্দর ভাবে কিভাবে লিখেছেন। প্রতিটা কথার যুক্তি রয়েছে তারজন্য পড়েও ভালো লাগলো। গতকাল আমার বেয়াই বিসিএস পাশ করেছে কিন্তু তখন থেকেই যেন তাদের মধ্যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তাহলে ভাবেন যখন সে দায়িত্বে যোগদান করবে আর কিছু সময় পার হবে তখন কি অবস্থা হতে পারে। আমিও কারো অধীনে চাকরি করতে পছন্দ করি না। যেখানে নিজের স্বাধীনতা নেই সেখানে কাজ করে কোনো আনন্দ নেই। তবে যারা ৪৩ তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের সকলের জন্য শুভেচ্ছা রইল। ধন্যবাদ ভাইয়া সময় উপযোগী পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার বেয়াই এর সুবুদ্ধির উদয় হোক এবং সে সঠিকভাবে কর্মে নিয়োজিত থাকুক, এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।