গত রাতের ঘটনা

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)

lamp-2903830_1280.jpg
source

হঠাৎই রাত্রি বারোটার দিকে বেশ কয়েকটা মিছিল যেন শহরের বড় রাস্তা দিয়ে বারবার ঘোরাঘুরি করছিল। অনেক লোকের মুখে শুধু একটাই ধ্বনি, হয়তো তা মাতৃভাষা দিবস কে কেন্দ্র করে। বিভিন্ন দল ও অঙ্গ সংগঠন থেকে শুরু করে, সর্বস্তরের লোকজন শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে গিয়েছিল ফুল দিতে।

আমরা আসলে এমন একটা জাতি, যেখানে বারবার ভুলে যাই আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা। তাই হয়তো শহীদ মিনারের মত পবিত্র জায়গাতে গিয়েও, হট্টগোল কিংবা চিৎকার চেঁচামেচি তে লিপ্ত হয়ে যাই।

সারা বছর শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার কোন নাম গন্ধ নাই, যেই শহীদ দিবস এসেছে তাতেই যেন শহীদদের প্রতি সবার ভক্তি শ্রদ্ধা সব যেন উজাড় হয়ে উপচে পড়ছে। বিভিন্ন দলের লোকজনের মধ্যে তো এক প্রকার হাতাহাতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। প্রশাসনের লোকজন কোনভাবেই তাদেরকে শান্ত করতে পারছিল না।

কোন দলের নেতা আগে ফুল দেবে, সেটা নিয়েই অনেকটা বিচার বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর এটাকে কেন্দ্র করেই সেই হট্টগোল। এখানে কতটুকু শহীদদের প্রতি সত্যিকার অর্থে ভালোবাসা জানানো হয়েছে, তা আমার বোধগম্য নয়।

এভাবেই একটা সময়ের পরে গিয়ে তাও সবার ফুল দেওয়ার কার্যক্রম ও ফটো তোলা শেষ হয়ে গেল। তারপর শহীদ মিনার এলাকাটা আবারো অনেকটা নিশ্চুপ নীরব অবস্থায় রূপান্তরিত হলো সেই পূর্বের মতো। এবার সবাই রাজপথে, মূলত যে দলের যে নেতা, তার পেছনে সবাই চিৎকার চেঁচামেচি করে মিছিল করে বেড়ালো। আমি বুঝলাম, সবার ভিতরে শহীদদের জন্য ভালোবাসার জোয়ার বইছে।

এভাবে মিনিট পনের যেতে না যেতেই, যেখানে সবার খাওয়া দাওয়া করার জন্য আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে আবারও হট্টগোল লেগে গিয়েছে। এবার আর কোন শহীদ প্রীতি এদের ভিতরে নেই, এক প্লেট বিরিয়ানির জন্য যেন এদের ভিতরে হাতাহাতি লেগে গিয়েছি। অনেকে মাংস পেয়েছে বিরিয়ানিতে আবার অনেকে মাংস পায়নি, এটাই তাদের আলোচ্য বিষয়।

এই মাঝরাতে মিছিল করে এক প্লেট বিরিয়ানি যদি এরা শান্তি মতো খেতে না পারে, তাহলে কিসের সেই মিছিল করা। মনে মনে অনেকেই রাগে গজগজ করছিল, রাগে একেক জনের চোখমুখ লাল হয়ে গিয়েছে, এত কষ্ট করে রাত জেগে শহীদ মিনারে গিয়ে হট্টগোল করে সবার আগে ফুল দিয়ে এসে যদি দেখা যায়, প্লেটের বিরিয়ানিতে মাংস নেই, তাহলে কি আর মেজাজ ঠিক থাকে।

যাইহোক গতরাতে এমন কিছু বিষয় অনেকটাই চোখে পড়েছিল, আর মনে মনে যা ভাবার আমি ভেবে নিয়েছি।

Banner-16.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

ভাই আপনার পোস্টটি পরে বুঝতে পারলাম প্রত্যেকটা এলাকাতেই এরকমই পরিস্থিতি হচ্ছে। আসলে সারা বছর ফুল দেয়ার কোন নাম নাই, শহীদ দিবস আসলেই রাত বারোটা থেকে যেন অনেক ভক্তি-টক্তি শুরু হয়ে যায়। আমাদের এখানে ঠিক তাই হয়েছে, কিন্তু আমি যখন দুপুর বারোটার দিকে শহীদ মিনারে গেলাম দেখতে পেলাম ফুলগুলো এভাবে পড়ে রয়েছে মনে হয় সেখানে অনেক মারামারি হয়েছে এবং ফুলগুলো ছিটিয়ে পড়েছে জুতা দিয়ে শহীদ মিনারে যেন কি একটা অবস্থা এবং শুনতে পেলাম কিছুক্ষণ আগে নাকি এখানে মারামারি হয়েছে। আসলে আমরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই না আমরা কি করি, সেটা নিজেরাও বুঝতে পারি না।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

এখন এসব উপলক্ষ মানেই তো শুধুমাত্র নিজেদের ভিতরে অস্থিরতা বাড়ানো, কে কাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাবে, এটা নিয়েই সবাই ব্যস্ত।

 5 months ago 

ভাই এরকম ঘটনাগুলো একেবারে হাস্যকর। এমন ঘটনা সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটেছে গতকাল রাতে। মিছিলে কি আর লোকজন এমনি এমনি যায় নাকি,তাদেরকে যদি ভরপেট না খাওয়ানো হয় এবং দুই তিনশ টাকা না দেওয়া হয়,তাহলে মিছিলে গিয়ে লাভ কি। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা এসব করে শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য। এমন বিশেষ দিনে ফুল নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে, ফটোশুট করে যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড দিতে না পারে, তাহলে কিসের নেতা😂। আজব দেশের আজব নাগরিক এরা। যাইহোক সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

চলিতেছে সার্কাস ভাই, আমরা শুধু সার্কাস দেখে যাই।

 5 months ago 

হ্যাঁ ভাই আমরা দর্শক হিসেবে শুধু সার্কাস দেখে যাই। দিনদিন বিনোদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 5 months ago 

শুভ দা আপনি একদম বাস্তবিক কিছু কথা তুলে ধরেছেন ৷ একদম যথার্থ বলেছেন কথা গুলো আসল কথা আজকের দিনে বাঙালির মনে সেই শহীদের কথা মনে পরলেই বিন্দু মাত্র ভালোবাসা আক্ষেপ নেই বললেই চলে ৷

যে কথা গুলো লিখেছেন ঠিক তেমনি ঘটনা আজকে সকালেও ঘটেছিল আমার কলেজে ৷ যা হোক দিনশেষে কিছু বলার নেই ৷

কোন দলের নেতা আগে ফুল দেবে, সেটা নিয়েই অনেকটা বিচার বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর এটাকে কেন্দ্র করেই সেই হট্টগোল। এখানে কতটুকু শহীদদের প্রতি সত্যিকার অর্থে ভালোবাসা জানানো হয়েছে, তা আমার বোধগম্য নয়।

আমরা সবকিছু তে আগে পরে বিচার করি ৷

 5 months ago 

সবকিছু যখন শো-অফ এর পর্যায়ে চলে যায়, তখন আর কি কিছুই বলার থাকে না।

 5 months ago 

এ ধরনের ঘটনা গুলো সামনে আরো অনেক দেখা যাবে। কে কার আগে ফুল দেবে? কে কার আগে দেবে? এসব তো শো অফ করার জন্য। অন্য আর কিছু নয়।সত্যিকারের ভালোবাসা মনে থাকলে সারা বছরই ফুলে ফুলে ভরে থাকতো আমাদের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনটি।এরপর আবার সেই বিরিয়ানিতে মাংস না থাকার ব্যাপারটিও আসতো না।মনুষ্যত্ব বলে কিছু ই নেই আর।

 5 months ago 

আমারও তাই মনে হয়, সামনে হয়তো আরো অনেক কিছুই দেখা লাগবে, এমনটা দিনই আসছে।

 5 months ago 

হাহাহা! কি একটা অবস্থা! কিছু বলার নেই আসলে ভাইয়া। দিবস উপলক্ষ করেই সব হট্রগোল অথচ সারাবছর তাদের মুখে মুক্তিযু্দ্ধের কোনো কিছুই শোনা যায় না। অনেকে জানেও না যে আজকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস 🙂

 5 months ago 

কিছুই বলার নেই ভাই, আমি শুধু দেখি আর ভাবি।

 5 months ago 

আসলেই মানুষের মানসিকতা এতটাই নিম্নমানের হয়ে গেছে যে কে আগে ফুল দিবে সেটা নিয়েই ঝামেলা।এই ভাষার প্রতি সম্মান কোথায়!সব দলের নেতা একত্রে মিলে একটি দিন সুন্দরভাবে উদযাপন করলে কত সুন্দর পরিবেশ-ই না সৃষ্টি হতো।যাইহোক খুবই খারাপ লাগার মতো ঘটনা এটি,ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 66052.74
ETH 3320.33
USDT 1.00
SBD 2.69