সমালোচনা ( সেকাল-একাল )
যুগের পরিবর্তন হয়েছে, সঙ্গে দিন দিন সমালোচনার ধরন বদলে গিয়েছে। এখন আর কেউ প্রকাশ্য দিবালোকে একজন আরেকজন কে সশরীরে সমালোচনা করে না বরং সমালোচনা হয় সোশ্যাল মিডিয়া নামক প্ল্যাটফর্মে।
গতানুগতিক যে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম গুলো আছে, এগুলো আমার কাছে অনেকটা মাছ বাজারের মতো মনে হয়। কি নেই এই বাজারে,আপনার রুচি অনুযায়ী, আপনি যা চাইবেন তাই পাবেন।
সবথেকে বড় অদ্ভুত লাগে আমার আশেপাশে যে সকল পরিচিত লোকজন আছে, তাদেরকে যখন আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখি বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ করছে, তখন সেগুলো আমাকে বেশ হাসায়-ভাবায় এবং চিন্তায় ফেলে দেয়।
এর মাঝে কেউ কেউ আবার পণ্ডিত সেজে যায় সোশ্যাল মিডিয়াতে, সেকি বক্তব্য যেন অগ্নিঝরা, কেউ কেউ আবার নিজের দৈনন্দিন কর্মকান্ড তুলে ধরে, এসব ব্যাপার কে সাধুবাদ জানানো যায়। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, যদি আপনি একটু নিজের মতো করে গঠনমূলক মন্তব্য করে বসেন, তাহলে দেখবেন কিভাবে লংকা কান্ড ঘটে যায়।
মানুষ প্রশংসা শুনতে শুনতে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে যে, কেউ যদি একটু গঠনমূলক মন্তব্য করে, তখন যেন তার শরীরে কাঁটা দিয়ে যায়।
গতকাল রাতের একটা ছোট্ট ঘটনা শেয়ার করছি, তথাকথিত এক পরিচিত বড় ভাই সাম্প্রতিক সময়ে প্রাইমারিতে চাকুরি পেয়েছে, কিছুদিন যেতে না যেতেই, সে এসে সোশ্যাল মিডিয়াতে তার নিজেদের বেতন বাড়ানোর জন্য নানা রকম প্রস্তাব করে বসেছে। এমন আবদার সে করতেই পারে, তবে এমন স্ট্যাটাসের বিপক্ষে কেউ কেউ যখন পাল্টা গঠনমূলক মন্তব্য করে বসেছে, তখন যেন তার কোনভাবেই সেগুলো সহ্য হচ্ছিল না।
সেই বড় ভাই বারবার যুক্তি দেখাচ্ছিল যে আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে এসে এই চাকরিতে ঢুকেছি, আমাকে আমার যোগ্যতা অনুযায়ী সবদিক থেকেই ছোট করা হচ্ছে । যদিও আমি সচরাচর এইসব বাজারের কর্মকাণ্ডে কখনোই মতামত দেইনা, তবে দিন দিন যে মানুষের বুদ্ধিমাত্রা হ্রাস পেয়ে যাচ্ছে, তার হয়তো জ্বলন্ত প্রমাণ সেই বড় ভাই নিজেই।
এবার বাধ্য হয়েই তার স্ট্যাটাসে একটা মন্তব্য করে বসলাম। মন্তব্যটা ঠিক এমন ছিল,
ভাইয়া দেখুন আপনি জেনে বুঝেই এই চাকরিতে এসেছেন, কেউ আপনাকে জোর করে নি। তাছাড়া আপনি যেভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ টানলেন, সেগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা একদম জগাখিচুড়ি। এশিয়া মহাদেশের ভিতরেই র্যাংকিংয়ের তালিকায় তলানিতে , পুরো বিশ্বের কথা না হয় বাদই দিলাম। বেতন বাড়ানোর কথা বলার আগে নিজেদের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন। কেননা আপনাদের বেতন হয়, আমাদের মত সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের পয়সায়। শিক্ষাকে বাণিজ্য না করে, সেটার যৌক্তিক প্রয়োগবিধি গুরুত্ব পাক প্রতিনিয়ত । এমন ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা চলতে থাকলে, আগামী দিন অন্ধকার।
ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়
ধন্যবাদ।
এমন মন্তব্য যখন করে বসেছি, ভাই যেন তা কোনভাবেই তা গ্রহণ করতে পারেনি, সে রীতিমতো মাঝরাতে আমাকে ফোন করে নানা রকম ব্যাখ্যা দিলেন, তার স্বপক্ষের ব্যাপারগুলো বার বার আমার কাছে বলার করার চেষ্টা করছিলেন, এক কথায় সে আমাকে বোঝাতে চাচ্ছিল, আমি যেন আমার মন্তব্যটা সেখান থেকে ডিলিট করে ফেলি, কি একটা অবস্থা তাই না।
পারিপার্শ্বিক অবস্থা কতটা জটিলতা সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে, সেটাই আমি বারবার ভাবার চেষ্টা করছি, সমালোচনা গ্রহণ করার মত মানসিকতা এদের নেই, শুধু আছে প্রশংসার জোয়ারে শরীর ভাসানো।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের বর্তমান সমাজে এমন কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা তাদের নিচুস্থান হতে একটু উপরে উঠলেই যেন নিজেকে বনের রাজা মনে করে। যেমন আপনার পোস্টে বর্ণিত যে ভাইয়ের কথা বললেন। আপনিই বা আমি কিংবা সরকার কেউ কি বলেছিল তাকে এই চাকরিতে যোগদানের জন্য? অবশ্যই না। কত বেতন কতক্ষণ থাকতে হবে প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানে কি কি করতে হবে সবকিছু জেনেই কিন্তু সে এই চাকরিতে আবেদন করেছে। তাহলে কিভাবে তাকে ছোট করা হলো। সে তার এডুকেশনাল স্ট্যাটাস দিয়ে এই চাকরিটার যোগ্য তাই পেয়েছে এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই এটাই স্বাভাবিক। আপনি একদম গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন ভাইয়া আপনার মন্তব্যের পক্ষে আমি সহমত পোষণ করছি। তবে বর্তমান সময়ে এইরকম বিষয়গুলো অহরহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো আমাদের পরিহার করা জরুরী।
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাই, এমন বিষয় এখন প্রতিনিয়তই লক্ষ্য করা যায়।
মাঝে মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট দেখে মন্তব্য করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পরক্ষণে আর যুক্তি তর্কে জড়াতে ইচ্ছে করে না। তবে কিছু কিছু বিষয় দেখতে মন্তব্য না করে থাকা যায় না। ভাইয়া আপনি কিন্তু ঠিকই বলেছেন। তবে উনার ধারণাটাই ভুল। উনি তো জেনেশুনে এই প্রফেশনে এসেছিলেন। তাহলে এখন এসব কথা বলে লাভ কি। তিনি যেহেতু দাবী করছেন তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়েছেন তাই আমার মনে হয় দেশের নামকরা বিদ্যাপীঠে পড়েও উনার মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি।
অর্থের চিন্তা সারাদিন যদি মাথায় ঘোরে, তাহলে কি আর মানসিকতা ঠিক থাকে আপু।
ভাই আমার মতে সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে একমাত্র ফেসবুকের কোনো ক্লাস ই নেই। যেকোনো শ্রেণীর মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে বলে,একেবারে বাজে অবস্থা হয়ে গিয়েছে। যাইহোক কেউ যদি তেল মারে,বেশিরভাগ মানুষ সেটা খুব পছন্দ করে। তাইতো গঠনমূলক মন্তব্য তারা হজম করতে পারে না। সেই পরিচিত বড় ভাইয়ের স্ট্যাটাসে আপনার মন্তব্যটা দারুণ হয়েছে। আর এই মন্তব্য ডিলিট করার কোনো প্রশ্নই উঠে না। উনি তো প্রাইমারিতে চাকরি পেয়েছে, কিন্তু যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে রিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করছে, তারা তাহলে কি বলবে? অতিরিক্ত চাহিদা কখনোই ভালো নয়। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
যার আছে, তার আরো চাই, ব্যাপারটা অনেকটা সেরকম হয়ে গিয়েছে ভাই।
একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই, পাঁচতলা বিল্ডিং একটা থাকলে আরও দশটা চায়। আমার মনে হয় তাদেরকে পুরো পৃথিবী লিখে দিলেও তাদের কাছে কম মনে হবে।
হঠাৎ করে যদি কেউ চাকরি পেয়ে যায় তখন সে বদলে যেতে শুরু করে। আর তার চাহিদা বেড়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব নিউজ দেখে মাঝে মাঝে খুবই বিরক্ত লাগে। আপনার মন্তব্যটি একদম ঠিক ছিল ভাইয়া। আপনি আপনার জায়গা থেকে একদম ঠিক। আমিও আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করছি ভাইয়া।
বেশ ভালো লাগলো ভাই আপনার মন্তব্যটি, তবে সবাই তো সহজে মন্তব্য গ্রহণ করতে চায় না, এই হচ্ছে সমস্যা।
আগে আমরা গ্রামে গঞ্জে দেখতাম কথার পালটা কথা। তর্ক প্রতিবাদ কিন্তু এখন এগুলো নেই।এখন কোনো কিছু নিয়ে একটা পোস্ট দিলেই হলো আর সেখানে যদি গঠন বা সচ্ছ একটা মন্তব্য করে বসা যায় যদি পোস্ট কারির সেই মন্তব্য পছন্দ না হয় রীতিমতো হয়রানি হতে হয়।তাই চুপ ই থাকা লাগে বটে কারন বাক সাধীনতার তো দফারফা হয়েছে।বেতন বারানো প্রসংগে বলতে গেলে এটা একটা অযুক্তিক দাবি তারা এতো সুযোগ সুবিধার পরেও বেতন বাড়ানোর কথা বলে অথচ তার থেকেও অরধেক বেতন পেয়ে একজন বেসরকারি সুযোগ সুবিধাহীন ভাবে সংসার চালিয়ে যাচ্ছে কোনো প্রতিবাদ করার যায়গা নেই।
জীবনগুলো প্রতিনিয়ত বড্ড জটিলতা সম্পন্ন অবস্থায় ভুগছে, কেউ কারো কথা শুনতে চাচ্ছে না কিংবা মানতে চাচ্ছে না, সবাই ব্যস্ত আপন চিন্তায় আপন ভুবনে।
এটা ঠিক কথা দাদা, এখন সোশ্যাল মিডিয়া অনেকটা মাছ বাজারের মতই হয়ে গেছে। হা হা হা... তবে আপনি এখানে যে লোকটার কথা বললেন, সে লোকটা বেতন বাড়ানোর জন্য দাবি করতেই পারে। তবে তার বিপক্ষের কথাগুলো সহ্য করার মত ক্ষমতাও তার থাকা উচিত ছিল। আপনি যে মন্তব্যটা করেছেন তার স্ট্যাটাসে, সেটা আমার কাছে কিন্তু বেশ খানিকটা যৌক্তিক মনে হলো। তবে উনি মনে হয় প্রচন্ড রেগে গেছিলেন, এই জন্য আপনাকে মাঝরাতে ফোন করেছিল।
শুধুই কি রেগে গিয়েছে, মাঝ রাতে আমার সঙ্গে দেখা করতে পারলে মনে হয় বেঁচে যেত। কি একটা অবস্থা।
ওরে বাবা, তাহলে তো সে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা দাদা! 🙀
স্যোসাল মিডিয়ার অবস্থা টা এমন যখন যার যা মনে আসে ওখানে এসে যেন উগড়ে দেয়। একবার হয়তো ভাবেও না এটা কী আমি ঠিক করছি আমার এমনটা করা কী উচিত হবে। কিছুই ভাবে না তারা। এই যে যার উদাহরণ দিলেন উনি কিন্তু সবকিছু জেনেই এসেছে এই চাকরিতে। তারপরও এমনটা বলছে। এখন উনাকে যদি বলা হয় আপনারা তো বছরের অর্ধেক সময় ছুটি কাটান অধিকাংশ সময় ক্লাস নেন না। সেই হিসেবে প্রাইমারির শিক্ষকের স্যালারি ঠিকই আছে। তাহলে হয়তো ওখানে আরও বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়ে যাবে।
যতটুকু বলেছি তাতেই লঙ্কা কান্ড ঘটিয়ে গিয়েছে, পুরোটা বললে এতক্ষণ অবস্থা আমার নাই হয়ে যেত ভাই।