মূর্খতা
আমার বাসার দুই বাসা পরেই এক সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা থাকেন। ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার মাঝে মাঝেই, বাসার গলিতে দেখা হয়। টুকটাক কথাও হয়, তবে তার প্রতিটা কথার মধ্যেই কিছুটা তুচ্ছ তাচ্ছিল্যপূর্ণ আচরণ থেকেই যায়। ব্যাপারটা এমন, সাধারণ মানুষকে তার দৃষ্টিতে হয়তো তিনি মানুষ মনে করতে পারেন না।
যাইহোক, একেকজনের চিন্তাভাবনা একেক রকম হয়তো তা জায়গা ভেদে। আমি অবশ্য পারাতো পক্ষে এসব মানুষকে চেষ্টাকরি একটু এড়িয়ে চলার জন্য। তবে মাঝে মাঝে ব্যাপার গুলো একটু এদিক সেদিক হয়ে যায়, তখন হয়তো বাধ্য হয়েই কথোপকথন করতে হয়।
সেদিন সন্ধ্যেবেলা চা চক্রে যখন হঠাৎই তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তখন কোনভাবেই সে আমাকে উঠতে দেবে না, বারবার বলছিল ভাই আর একটু সময় থেকে যান আমাদের সঙ্গে। মূলত সে নতুন ভাবে প্রমোশন পেয়েছে, যার কারনেই এত আদিখ্যেতো দেখাচ্ছে।
সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে সে পদোন্নতি পেয়েছে। এখন সে একটা শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বে আছেন। এটা আসলেই প্রশংসনীয়, কেননা নিজের চেষ্টায় নিজের কর্মস্থলে প্রমোশন পাওয়া, বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
সে নিজের থেকেই বলছে, তার কর্মস্থলের গুনগান। সে হাউস লোন পেয়েছে, সদ্য গাড়ি কিনেছে বলতে গেলে ভাবখানা এমন সে যেন মাটিতে পা ফেলতে চাইছে না। এইরকম আনন্দের ব্যাপার যখন, কেউ নিজ ভাবে নিজের মতো করে বলতে যায়, তখন আমার কেন জানি একটু ন্যাকামি মনে হয়। সত্যি বলতে গেলে কি, আমাদের সমাজের শিক্ষিত মানুষজনের ভিতরে এমন ন্যাকামি বড্ড বেশি সাদৃশ্য ।
চা খাওয়া শেষ হওয়ার পরে, যখন একসঙ্গে দোকান থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম, আচ্ছা ভাই সরকারি ব্যাংকগুলো কি, শুধুমাত্র নিজেদের কর্মচারী আর কর্মকর্তাদের উন্নয়নেই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে নাকি।
এবার ভদ্রলোক কিছুটা আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়েছে, আমি তাকে হেসেই বললাম, এখনো সরকারি ব্যাংকগুলোতে গেলে, সেই আগের মতো অনিয়ম , ভাঙা ফ্যানের কটমট আওয়াজ, চেয়ার টেবিলের রং চটে যাওয়া বা এখনো তেমন এটিএম বুথ নেই কিংবা ডিজিটাল ব্যাংকিং সহজলভ্য হয়নি, এর কারণ গুলো কি। তাছাড়া অবকাঠামো গত উন্নয়নের কথা, নাই বা বললাম।
সরকারি ব্যাংকিং মানে তো আর শুধুমাত্র ব্যাংকে যারা চাকরি করে তাদের উন্নয়ন না বরং সর্বপরিসরে গ্রাহকের কতটা কাছাকাছি তারা যেতে পেরেছে এবং গ্রাহক কে কতটা ঝামেলাহীন ভাবে সেবা দিতে পেরেছে এটাই তো মুখ্য বিষয়, আমার তো তাই মনে হয়। আমি বুঝতে পেরেছি, ভদ্রলোকের কথাটা ভীষণ লেগেছে। তবে আমার কিছুই করার নেই, এভাবে যারা নিজের গুণগান নিজে গেয়ে বেড়ায়, তাদেরকে এক প্রকার আমার ভন্ড মনে হয়।
আর এমন ভন্ড লোকরাই সর্বদা বিরাজমান। কয়েকদিন আগেই যখন পত্রিকা খুলে দেখছিলাম, তখন মুহূর্তেই চোখে পড়ছিল, একটা সরকারি ব্যাংক থেকে নাকি কয়েক কোটি টাকার গায়েবি লোন উত্তোলন করা হয়েছে। কি একটা হাস্যকর অবস্থা, তাই না ।
যাইহোক মানুষের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়া বড্ড জরুরি। বিশেষ করে যে কথোপকথন গুলো অন্য মানুষের সঙ্গে ক্রমাগত হচ্ছে , সেগুলো কথা অন্যরা কিভাবে গ্রহণ করবে,সেটা অন্তত ভেবে দেখা উচিত। কারণ আপনার গুণ কীর্তন অন্যের কাছে নিতান্তই মূর্খতা মনে হতে পারে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এসব মানুষ নিজের ঢোল নিজেই পিটাতে খুব পছন্দ করে। সত্যি বলতে এসব মানুষেরা একেবারে নির্লজ্জ টাইপের। তাদের সাথে কথা বলার সময় খুবই মেজাজ খারাপ হয়। তারা সবসময় নিজেদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মনে করে এবং সাধারণ মানুষদের তো মানুষ বলেই গণ্য করে না। আপনি একেবারে উচিত জবাব দিয়েছেন ভাই। সরকারি ব্যাংকের সার্ভিস নিয়ে যদি আপনি কথা না তুলতেন সেই লোকের সামনে, তাহলে সেই লোক নিজের গুণগান আরও বেশি শোনাতেন আপনাকে। এসব লোকদের নিয়ে কিন্তু মানুষ হাসাহাসি করে। কিন্তু তারা সেটা ভাবে না। মোটকথা তারা শিক্ষিত হয়েও মূর্খতার পরিচয় দিয়ে থাকে। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
এমন মানুষদের সুবুদ্ধি উদয় হওয়া বড্ড জরুরি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
প্রবাদেই আছে, "নিজে যাকে বড় বলে বড় সে নয়, অপরে যাকে বড় বলে বড় সে হয়! " নিজের সুনাম, খ্যাতি নিজেই ছড়িয়ে দেয়া নিতান্তই বোকামি! প্রমোশন হয়েছে বলে বলে বলে বেড়াতে হবে ব্যাপারটাও এমন নয় । বরং সাইলেন্টলি এগিয়ে যাওয়া সততার সাথে। আমাদের সমাজে এমন মানুষ অনেক আছে। আমিও চাই তাদের মানসিকতার পরিবর্তন হোক
অবশ্যই ভাই, মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া বড্ড জরুরি।
নিজের অবস্থান নিয়ে বড়াই করা মোটেও ঠিক নয় ৷ আজ ভালো অবস্থানে আছেন বলে যে কালও থাকবেন , তার কোনো নিশ্চয়তা নেই ৷ সময় মানুষকে এবং মানুষের অবস্থানকে নিমিষেই পাল্টে দিতে পারে ৷ এজন্য সবাইকে সম্মান করা উচিত ৷ কাউকে ছোট করে কথা বলা মোটেও ঠিক নয় ৷ আপনি একদমই ঠিক করেছেন দাদা , আসলে এসব মানুষের মুখের উপর দু একটা উচিত কথা বলাই ঠিক ৷ যারা এমন আত্ম অহংকারী ভাব নিয়ে চলে আর নিজের গুণগান নিজেই গায় ৷
একদম ঠিক বলেছেন ভাই, কখন কার কি হয়ে যাবে, তার কোন ভরসা নেই।