বিপত্তি যেন লেগেই আছে
গ্রামে এসেছি কয়েকদিন মানসিকভাবে শান্তিতে থাকার জন্য, তবে এখানে এসেও ঝুট ঝামেলা যেন আমার সঙ্গে লেগেই আছে। সেই বিষয়গুলো না হয়, অন্যদিন লিখব।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, শায়ানকে ঘিরে তা নিয়ে আমি বড্ড শঙ্কিত।দিনদিন ওর ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্তি ক্রমাগত বেড়েই যাচ্ছে। ব্যাপারটা এমন যে, ও কার্টুন দেখতে দেখতে খায়, কার্টুন দেখতে দেখতে ঘুমায় এবং সারাক্ষণ ডিভাইস নিয়েই ব্যস্ত সে।
বেশি বিপত্তি লেগে যায় ডিভাইসের চার্জ শেষ হলে কিংবা ইন্টারনেট কানেকশন চলে গেল। তখন এক প্রকার কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। গতদিনেও ঠিক তেমনটাই হয়েছিল। ওর ট্যাবে যখন চার্জ শেষ হয়ে গিয়েছিল, তখন ওকে কোন রকমে, ওর মায়ের মোবাইলে কার্টুন চালু করে দিয়ে দেখতে দেওয়া হয়েছিল।
ও আসলে কিছু হিন্দি কার্টুনের ডাবিং করা বাংলা ভার্সন গুলো দেখে। ইতিমধ্যেই কিছু কার্টুন চরিত্র ওর কাছে বেশ প্রিয় হয়ে গেছে। সেই কার্টুনগুলো দেখে, ও নিজে নিজেই হাসে এবং কথা বলার চেষ্টা করে।
তখনও আমি ঘুমের ভিতরে ছিলাম, ওর মা ওকে সকালের খাবার খাওয়াচ্ছিল। এমন সময় কার্টুন দেখতে দেখতে হঠাৎই ও রেগে যায়। মূলত বিষয়টা যেটা হয়েছে, তা হচ্ছে ওর প্রিয় কার্টুন চরিত্র কে অন্য কার্টুন মারছিল। এটা ও দেখে, কোনভাবেই তা মেনে নিতে পারেনি। তাই ওর হাতে যে, শক্ত প্লাস্টিকের পুতুলটা ছিল, তা দিয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে জোরে জোরে আঘাত করেছে।
ওর মা বুঝে ওঠার আগেই, যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। মোবাইলের গ্লাস ও ডিসপ্লে ভেঙে চুরমার। আমি এমনিতেই স্বল্প আয়ের মানুষ তার ভিতরে হঠাৎ করে এমন ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটে গেল, যেটার জন্য আমি কোনভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না।
যদিও মোবাইলটা এখনো সার্ভিস সেন্টারে দেখাই নি, তবে ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছি, এটা ঠিক করতে বেশ ভালোই পয়সা গুনতে হবে। যতই খরচ সবদিক থেকে কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি, ততই খরচ কোনো না কোনোভাবে অন্য দিক দিয়ে কিছুটা বেড়েই যাচ্ছে।
বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চাদের নিয়ে আসলে কিছু বলার নেই, আমি মনেকরি আমার মত ভুক্তভোগী অনেকেই। তারপরেও যতদূর সম্ভব আমাদের উচিত নিজেদের জায়গা থেকে বাচ্চাদের ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্তি কিছুটা হলেও কমিয়ে নিয়ে আসা দরকার এবং ডিভাইস গুলোতে ওরা কেন আসক্তি হচ্ছে , সেটাও ভেবে দেখা দরকার।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আহারে! আপুর মোবাইল ফোনের স্ক্রীন এবং ডিসপ্লে তো একেবারেই ভেঙে গিয়েছে ভাই!! শায়ান বেশ ইমোশোনাল এটি বোঝা গেলো। সবসময় কার্টুন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কার্টুনগুলো ওর জীবনের বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে।তাই তো পছন্দের কোন চরিত্রকে মাইর খেতে দেখে নিজেকে কনট্রোল করতে পারে নি।
আসলে ও অনেকটা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করে, যার কারণে এমনটা হয়ে গিয়েছে আপু।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি বলেছেন ভাই বর্তমানে প্রতিটি শিশুই ডিজিটাল ডিভাইস এর উপরে বেশ আসক্ত হয়ে গিয়েছে। আমাদের বাড়িতেও আমার এক কাকাতো ভাই আছে অনেক ছোট সে ও আপনার বাবুর মতই ডিজিটাল ডিভাইসে বেশ আসক্ত। বাচ্চাদের কাছে ডিজিটাল ডিভাইস একটু কম দেওয়াই ভালো তার থেকে তার সাথে যদি নিজেরা একটু সময় দেওয়া যায় সব থেকে ভালো হয়।
এটা ঠিক বলেছেন, যদি বাচ্চাদের সাথে নিজেরা একটু বেশি সময় দেওয়া যায় তাহলে ভালো হয়।
সবাই তার প্রিয় মানুষকে সেইফ করেন।যেটা বাবুও করতে গিয়েছে ।তার প্রিয় কার্টুন কে মারছিল অন্য কার্টুন এটা সহ্য হয়নি।তাই আঘাত করেছে আর স্ক্রিন ফেটে গেছে মোবাইল এর।আসলে বাচ্চারা ইদানিং খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে সবসময় মোবাইল ইন্টারনেট নিয়ে থাকে।বাবুর ট্যাব এ চার্জ শেষ হওয়ায় বাবুর মায়ের ফোনটা নষ্ট হলো।এই ডিজিটাল ডিভাইস এই আসক্তি গুলো থেকে বাচ্চা থেকে তরুণ কেউ বেরোতে পারছেন না।আর এগুলো ছাড়ার কোনো অপশন ও আসলে নেই।কেননা বাসা বাড়ি তে মোবাইল ফোন ই আমাদের ভরসা।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনার কথায় বেশ যুক্তি আছে আপু, আমাদের আসলে সবারই আসক্তি বেড়ে গিয়েছে ইন্টারনেটে, এটা একদম সত্যি।
ভাইয়া আপনার মতো আমার মেয়ের ও একই অবস্থা। যদিও আমার মেয়ের বয়স ৬+ তারপরে সারাক্ষণ ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত।শুধু স্কুল প্রাইভেট বাদে। আর ফোন নিলেই নানা রকম বাহানা আর কান্নাকাটি।যাইহোক ভাইয়া ফোনটা টাকা লাগলেও এখন সারতে হবে করার কিছুই নেই। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বাসায় ফিরে ঠিক করব এমনটাই আমিও ভাবছি, তবে আমি পরিস্থিতির শিকার।
ঘটনাটি জেনে আসলেই বেশ খারাপ লাগলো ভাই। আমি মনে করি বাচ্চাদের এখানে কোনো দোষ নেই। কারণ এখনকার বাচ্চাদের খেলার তেমন জায়গা নেই। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি এবং আমার ভাই একেবারে ছোটবেলা বাসার মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যাট বল দিয়ে ক্রিকেট খেলতাম। তাছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতাম। কিন্তু এখনকার বাচ্চারা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের প্রতি পুরোপুরি নির্ভরশীল। তবে আমি যতটুকু জানি, মোবাইলের ডিসপ্লে পরিবর্তন করলেও লং টাইম এই মোবাইলটা ব্যবহার করতে পারবেন না। কারণ যত ভালোই ডিসপ্লে লাগান না কেনো, কয়েকমাস বা বছর খানেক ব্যবহার করার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। তাই বুঝে শুনে ডিসপ্লে পরিবর্তন করবেন। এর আগে আমার আম্মুর স্যামসাং এ-৩০ মোবাইলের ডিসপ্লে মোতালিব প্লাজা থেকে পরিবর্তন করেছিলাম ৪২০০ টাকা দিয়ে, মাত্র কয়েকদিন ব্যবহার করার পর ডিসপ্লের টাচ কাজ করেনি।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুপরামর্শের জন্য, দেখি কি করা যায়।
শুভ ভাই আমিও সেইম ঝামেলার মধ্যে রয়েছি।
আমার ছেলে মোবাইলের কার্টুনের প্রতি ভীষণ আসক্ত, তাকে কোনভাবেই এর থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারছি না। যদি তাকে মোবাইল দেয়া না হয় তখন বেশ রাগান্বিত হয়ে যায়। গত কিছুদিন আগে ওর মায়ের মোবাইলের স্ক্রীন ভেঙ্গে ফেলেছিল। 😕
আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ তাই হঠাৎ মোবাইল নষ্ট হলে বিপদে পড়তে হয়। যাইহোক দোয়া করি অল্পের উপর দিয়ে কেটে যাক বিপদটা।
আপনার ব্যাপারটা জেনে বেশ ব্যথিত হলাম ভাই।
ভাইয়া, বেশ কয়েক মাস আগে আমার মোবাইল ফোনেরও একই অবস্থা হয়েছিল। তবে আমার মোবাইল ফোনটি মোটরসাইকেল চালানোর সময় হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে চুরমার হয়েছিল। আর আপুর মোবাইল ফোনটি তো আমাদের শায়ান বাবু ভেঙে ফেলেছে। শুধু শায়ান বাবু নয় ভাইয়া, বরং বর্তমান সময়ে প্রতিটি বাচ্চারই ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি আসক্তি বেড়ে গেছে। আমার ছেলেরও একই অবস্থা। খেলার সঙ্গী না থাকার কারণে একপ্রকার বাধ্য হয়ে মোবাইল ফোন হাতে দিতে হয়। এটা যে কত বড় ক্ষতিকর তা জানা সত্ত্বেও কিছুই যেন করার নেই। তবে যথাসাধ্য চেষ্টা করি যতটুকু সম্ভব ওর হাত থেকে মোবাইল ফোনটি দূরে রাখার জন্য। যাই হোক ভাইয়া, প্রতিটি শিশুরাই যেন এই ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দূরে থাকে এই প্রত্যাশা করছি।
দিন যত গড়িয়ে যাচ্ছে সবকিছুই তত জটিল হয়ে যাচ্ছে ভাই, সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে যে আরও কি অপেক্ষা করছে তা বলা মুশকিল।
আপনার মতো বলতে সবাই এমন ভোক্তভোগী বর্তমানে। এখনকার বাচ্চারা অনেক এডভান্স। ছোট থাকতেই হাতে ডিভাইস পেয়ে যাচ্ছে, সহজেই নতুন দুনিয়া সম্পর্কে জানতে পারছে। তবে আমাদের সতর্ক থাকা জরুরি। বাচ্চাদের হাতে মোবাইল না দিয়ে আমার মনে হয় খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দেয়া উচিত। এতে তাদের মানসিক বিকাশটাও ভালো হবে।
খেলাধুলা কই করবে বলুন, শহরে তো মাঠ ই নাই। তবে আপনার কথায় কিন্তু বেশ যুক্তি ছিল।
এজন্য গ্রামে কিছুদিন কাটানো যেতে পারে ভাইয়া। মুক্ত আবহাওয়ায় ভালো সময় কাটবে শায়ানের এবং আপনারও।
ওর পছন্দের ক্যারেক্টার কে মারবে আর ও কি বসে বসে দেখবে নাকি ও পাল্টা জবাব দিয়ে দিয়েছে । তবে জবাব দিতে গিয়ে তো ভাবির ফোনটার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে । ভাইয়া এখনকার সব বাচ্চাদের একই অবস্থা ফোন ছাড়া যেন কিছুই বোঝেনা । তবে ফোন থেকে যত দূরে রাখা যায় ততই মঙ্গল । আমার বাচ্চাটা ফোন দেখে দেখে এখন মোটা গ্লাসের চশমা লেগেছে । আগে যদি বুঝতাম তাহলে একটু দূরে রাখার চেষ্টা করতাম । নিজের সুবিধার জন্যই ফোন দিয়ে বসিয়ে রাখতাম এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি ।