ভারাক্রান্ত মন
অতিরিক্ত বয়স হওয়ায় বার্ধক্য জনিত কারণে কেউ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলে ব্যাপারটা যতটা স্বাভাবিক লাগে, তারথেকেও বেশি কষ্ট পাই, যখন শুনি মাঝবয়সী কেউ হঠাৎই মরণব্যাধি ক্যান্সারে ভুগে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে, তখন বেশি খারাপ লাগে। শুধু খারাপই লাগে না, ব্যাপারটা বেশ যন্ত্রণা দেয় এবং দাগ কেটে যায় মনের ভিতরে।
এখনো মাঝে মাঝে ভাবি, ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচটা যদি একটু সকলে সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা যেত বা সবাই যদি প্রথম থেকেই এই বিষয়ে সচেতন হত কিংবা প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক গুলো যদি সহজলভ্য হত, তাহলে হয়তো আরো অনেক প্রাণ বেঁচে হত। এই ব্যাধি এতটাই ভয়ানক, যা শুধুমাত্র একটা মানুষকে মেরে ফেলে শান্ত হয় না বরং অর্থনৈতিকভাবেও পঙ্গু করে দিয়ে যায়, পুরো পরিবারকে।
আজ ঘুম থেকে ওঠার পরেই, পরিচিত এক বড় আপুর মৃত্যুর খবর শুনলাম। হঠাৎই যেন বারবার তার স্মৃতি গুলো আমাকে এমনভাবে নাড়া দিয়ে যাচ্ছিল, যেন আমি মানসিকভাবে কিছুটা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম। বয়সের তফাৎ আমাদের মাঝে খুব যে আহামরি ছিল তেমনটা না। সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ বছর। যেহেতু ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছিলাম, তাই সম্পর্কটা অনেকটা আত্মিক ছিল।
একটা সময়ের পরে পথের দূরত্ব কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল, তবে টুকটাক কথা হতোই। হয়তো তা সম্ভব হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে। আপু যে ক্যান্সারে ভুগছিল এটা প্রথম থেকে সে বুঝতেই পারেনি। আপু যেহেতু কলেজের প্রফেসর ছিল, তাই সারাদিন কলেজ সামলিয়ে, নিজের দিকে যে একটু সময় করে যত্ন নেবে, এমনটা যেন তার জন্য প্রতিনিয়ত ভীষণ কষ্টকর হয়ে যেত। হয়তো কর্মজীবী মহিলাদের বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়। সংসার, বাচ্চাকাচ্চা, পরিবার, নিজের কর্ম এত কিছু সামাল দিয়ে উঠার পরে, নিজের শরীরটার দিকে যে একটু যত্নশীল হতে হয়, তা হয়তো অনেকে ভুলেই যায়।
শুরুতে ছোট্ট একটা টিউমারের মত বর্ধিত অংশ ভেবে খুব একটা পাত্তা দেয়নি, তবে যখন পাত্তা দেওয়ার মত সময় হয়েছিল, তখন তা মোটামুটি আর প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল না, অনেকটা ছড়িয়ে গিয়েছিল। জায়গা ভেদে জীবন গুলো একেক জায়গায় একেক রকম, কারো হয়তো শুধু শুরুতেই সুযোগ থাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার আবার কারো হয়তো বড্ড দেরি হয়ে যায়।
আপুর ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হয়েছিল, অবশেষে দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে, যত রকম ট্রিটমেন্ট ছিল সব চিকিৎসা গ্রহণ করার পরেও, কখন যে মরণব্যাধি ক্যান্সার তাকে হারিয়ে দিয়েছে সে যেন তা বুঝে উঠতেই পারেনি। মুহূর্তেই নিভে গেল মাঝবয়সী একটা তরতাজা প্রাণ। আর তার সঙ্গে ভেঙে গেল, একটা পরিবার-সংসার বা সন্তানেরা হারিয়ে ফেললো তার মাকে। ব্যাপারটা বড্ড যন্ত্রণাদায়ক। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে এমন একটা খবর পেতে হবে, এটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। বেশ দাগ কেটে গেল সংবাদটা আমার হৃদয়ে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1737406838390624762?t=pBebAkTB14K8HfTiH_kY-w&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যে কোন মৃত্যুই বেদনা দায়ক। তবে অল্প বয়সে মৃত্যু গুলো বেশি দাগ কাটে মনে। মেনে নিতে কষ্ট হয়। আসলে মরণ ব্যাধী ক্যান্সারে অকালে ঝড়ে পড়ছে, অনেক তাজা প্রাণ।আর এই ক্যান্সার আর্থিক ভাবেও পঙ্গু করে দেয় একটি ফ্যামিলিকে। আপনার পরিচিত আপুর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা। লেখাটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু আমার অনুভূতি বুঝতে পেরে মন্তব্য করার জন্য।
মৃত্যু সবারই অবধারিত। কারো আগে কারো পরে। লেখাটি পরে মন ভারী হয়ে গেলো।
আপনার পোস্ট পরে আমারও মনটা বেশ ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। আসলে যে কোন মৃত্যুই কিন্তু দুঃখ জনক। আর তা যদি হয় কাছের কোন মানুষের। আসলে ভাইয়া আপনি কিন্তু একেবারে সত্য বলেছেন যে ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ আরও অনেক কমানো উচিত। এতে করে হয়তো বেঁচে যেত অনেক তরতাজা প্রাণ। আজকের পোস্ট পড়ে শুধু আপনাকে শান্তনা দেওয়া ছাড়া আমার কিছু বলার নেই।
আশেপাশে সব জায়গাতেই একই সমস্যায় অনেকেই ভুগছে, তবে সবার সাধ্যের ভিতরে সবকিছু হওয়া উচিত।
ক্যান্সারের কবলে পড়ে একটি মানুষ যেমন শেষ হয়ে যায় তেমনি একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। ভাইয়া আপনার পরিচিত সেই আপুর কথা শুনে সত্যিই অনেক কষ্ট পেলাম। ক্যান্সারের খরচ একটু কম হলে আমাদের মত সাধারণ মানুষরা একটু বাঁচতে পারতো।
শুধু ক্যান্সারের খরচ না, সব রোগের চিকিৎসা খরচ সর্বসাধারণের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত ।
আপনার পরিচিত সেই বড় আপুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ভাই। আসলে আমরা সবাই জানি যে, সবাইকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়। অকালে তাজা প্রাণ ঝরে গেলে খুবই খারাপ লাগে। গত বছর আমাদের এলাকার আমার সমবয়সী একটি ছেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আসলে ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ যদি এতো ব্যয়বহুল না হতো, তাহলে সত্যিই খুব ভালো হতো। কারণ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করাতে করাতে পুরো পরিবার একেবারে সর্বশান্ত হয়ে যায়। যাইহোক ভাই মন খারাপ করবেন না। বেশি বেশি দোয়া করেন ওনার জন্য। আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
আসলেই ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচটা যদি সর্বসাধারণের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা যেত, তাহলে কিছুটা হলেও হয়তো এ ব্যাধি নিরসনে সবাই সজাগ থাকতো।
ঠিক ২০১২ সালে! আমার বড় পরিবারের বড় আপু, যাকে নিয়ে সবার অনেক আশা ছিল। কিন্তু মরণব্যধী ক্যান্সার যে তার ফুসফুসে বাধাঁ বেধেছিল সেটা কেউই বুঝতে পারেনি! একদম লাস্ট স্টেইজে গিয়ে বুঝতে পেরেছিল আপু ক্যান্সার হয়েছে! আমার বড় আপুকে হারালাম! এখনও ভুলতে পারিনি তাকে 🥲। তবে আপনার প্রতিবেশি আপুর এটা শুনেও খারাপ লাগলো! আসলে এমন মরণব্যধী ক্যান্সার যেন আল্লাহ তায়ালা কাউকে না দেন 😓
বেশ ব্যথিত হলাম ভাই, আপনার বড় আপুর খবরটা শুনে।
প্রথমেই আপনার সেই আপুর আত্নার শান্তি কামনা করছি ভাই। উনার আত্নার শান্তি কামনা করা ছাড়া উনার জন্য তো আর কিছু করারও নেই। তবে প্রত্যেকেরই আসলে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে - এটিই সবথেকে বড় সত্য। উনার যতদিন হায়াত ছিলো, উনি তত দিন ই বেঁচেছিলেন। জন্ম-মৃত্যু আর বিয়ে তিনটি জিনিস ই সরাসরি উপরওয়ালার হাতে ভাই। মন খারাপ হলে দোয়া করেন আপুর জন্য।
দোয়া বা আশীর্বাদ ছাড়া তো আর কিছুই করার নেই এই মুহূর্তে।