পঙ্গু
শহরের পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে বুধবার বিকালেই গ্রামে চলে এসেছি । গ্রামে আসার পরেই জানতে পারলাম, আমাদের শহরেও নাকি ভীষণ মারামারি হয়েছে। কোনমতে বুধবারের দিনটা কাটিয়ে দেওয়ার পরেই, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চারপাশের থমথমে অবস্থা বেশ ভালো ভাবেই আন্দাজ করতে পারছিলাম।
যদিও গ্রামের দিকটায় এসবের বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই, তারপরেও যতবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকছিলাম ততবারই রক্তাক্ত খবর গুলো দেখে যেন মানসিক ভাবে আহত হয়ে যাচ্ছিলাম। পাখি শিকারের মতো করে গুলি করে মারা হয়েছে নবীন প্রাণ গুলোকে। সেকি বিভৎস দৃশ্য, তা যেন কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছিল না।
ওয়াইফাই সংযোগ ছিল বিধায়, ভুলেও টের পাই নি মোবাইল নেটওয়ার্কের গুরুত্ব। আসলে সকাল থেকেই মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না। তখন সন্ধ্যে সাড়ে আটটা, সারাদিনের ধকল সামলিয়ে কেবল মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম সাপ্তাহিক হ্যাংআউট শো এর জন্য। হঠাৎই খেয়াল করলাম ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন।
একি অবস্থা, মানে দেশে সকল প্রকার ইন্টারনেট সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । সুদক্ষ পরিকল্পনা অনুযায়ী, মানুষের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হলো। জাতির টুঁটি চেপে ধরে, একধাক্কায় নিক্ষেপ করা হলো কালো অন্ধকারে।
টিভি চ্যানেলের সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম, দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ভীষণ অসহায় লাগছিল নিজের কাছে, অস্থিরতায় যেন বারবার ছটফট করছিলাম। কোনভাবেই যেন সময় কাটছিল না। কতটা পরিমাণ অসহায় হয়ে গেলে, এমন অবস্থার ভিতর দিয়ে যেতে হয়, তা অনুমান করার চেষ্টা করছিলাম।
নিজেদের ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য, একটা জাতিকে কিভাবে মুহূর্তের ভিতরে পঙ্গু করে দিতে হয়, তারই যেন চাক্ষুষ প্রমাণ পেলাম।
১৯৫২ এর আন্দোলন দেখি নি, তবে ২০২৪ এ যা দেখলাম তা কোনদিন ভুলতে পারবো না। বড্ড দাগ কেটে গিয়েছে নিজের ভিতরে। হয়তো ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক অবস্থায় আসবে, তবে এতো গুলো নবীন প্রাণের অনুপস্থিতি, তা কিন্তু কোন কিছুর বিনিময়ে পূরণ হবে না।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যে কয়টা নবীনদের প্রাণ গেল তারা ছিল জাতির সূর্যসন্তান বিশেষ করে গ্রাম বাংলার। এক একটা বাছাই করা স্টুডেন্ট ছিল যাদের তাজা প্রাণ দিতে হল কোটা সংস্কার আন্দোলনে। সরকার যা করল তা সবকিছু পরিকল্পনার ভিত্তিতে করেছে। তারা যদি সবকিছু বন্ধ করে না দিত তাহলে সরকারের পতন হতো নিশ্চিত। যার কারণে সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে নিজেদের তাণ্ডব গুলো খুব সুন্দর করে চালিয়ে গেল।
সবাই সব কিছু বোঝে কিন্তু দিন শেষে কেউ আবার কিছুই বুঝতে চায় না, বিষয়টা অনেকটা এমন। কিছুই বলার নেই আপু।
বেশ কয়েকদিন যাবৎ আমাদের দেশের দালাল সাংবাদিকরা কোথায় কি পুড়েছে সেটা ফলাও করে প্রকাশ করছে। অথচ নির্মম ভাবে কয় শত তাজা প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে,সেটার কোন তথ্য প্রকাশ করছে না। এমনকি হাসপাতালের ফ্লোরে শুয়ে ছটফট করা কোন স্টুডেন্টের তথ্য প্রকাশ করছে না। কিছু বলার নেই।
বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজ আদায় করে, মসজিদ থেকে বাসায় এসে হ্যাংআউটে জয়েন করবো,কিন্তু তখনই দেখলাম ইন্টারনেট নেই। মেজাজটা তখন ভীষণ খারাপ হয়েছিল। আসলেই আমাদেরকে একেবারে পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছিল। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এতো খারাপ হবে, সেটা কল্পনায়ও ভাবিনি কখনো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে আমাদের ভাই, এছাড়া আর কিছুই বলতে চাই না।