রেসিপিঃ "এসো নিজে করি"//সুজির দুধ বড়া তৈরি//
প্রিয় পরিবারের
সকল ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে শুভ সকাল! আশা করি সবাই ভা্লো আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায় সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। যদিও সকাল বেলা অনেক ব্যস্ত থাকি। বাচ্চাদেরকে নিয়ে স্কুলে নিয়ে যাওয়া আবার নিয়ে আসা বেশ ব্যস্ততম সময় কাটাতে হয়। কিন্তু সময় সুযোগ পেলে সকাল সকাল উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করি। আজকে হাতে একটু সময় ছিল তাই আপনাদের সাথে চলে আসার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া ও একটু গ্রামে যাব আজকে তাই তাড়াহুড়ো আছে। চেষ্টা করছি আপনাদের সাথে আজকে একটি রেসিপি শেয়ার করবো। প্রতি সপ্তাহে একটি করে রেসিপি পোস্ট শেয়ার করার চেষ্টা করি। যদি ইউনিক কোন রেসিপি শেয়ার করতে চেষ্টা করি তাহলেই যথেষ্ট পরিমাণ সময়ের দরকার হয়।
কারণ ইউনিক রেসিপি তৈরি করার জন্য চিন্তা করতে হয়। আবার সেই রেসিপি তৈরি করে উপস্থাপন করা বেশ জটিল এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তারপরও এই কমিউনিটির জন্য কাজ করতে যেকোনো কিছু করতে আমার তেমন জটিল মনে হয় না। সবকিছুকে খুব সহজ মনে করে আনন্দের সাথে করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো সুজির তৈরি দুধ বড়া। যদিও আগে বেশ ঘন ঘন সুজির নাস্তা তৈরি করা হতো। কিন্তু ইদানিং কেমন জানি হয়ে গেছি নাস্তা একদম তৈরি করা হয় না। বাইর থেকে এনে খাওয়ার বেশি অভ্যাস হয়ে গেছে। এবার থেকে চিন্তা করলাম যে আর বাইরের জিনিস খাওয়া যাবে না। যা কিছু সব ঘরে তৈরি করে খেতে হবে। কালকে বিকেলে এই নাস্তাটি তৈরি করেছিলাম বাচ্চাদেরকে দেওয়ার জন্য। ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করে দিলে বাচ্চারা খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে।
সুজির তৈরি দুধ বড়া খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল। যেহেতু আমি দুধের মধ্যে কাস্টার্ড দিয়েছিলাম ভিন্ন ধরনের একটি ফ্লেভার ছিল। খেতেও খুবই সুস্বাদু হয়েছিল বাচ্চারা বেশ খুশি হয়েছিল। সেই রেসিপিটি নিয়ে আমি আজকে উপস্থিত হয়েছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনারাও চাইলে এভাবে তৈরি করে বাচ্চাদেরকে দিতে পারেন খেতে বেশ ভালো লাগছিল। আর বাচ্চারা আনন্দের সাথে খেয়ে ছিল। তাতে আমি মনে করি সকল বাচ্চারা আশা করি পছন্দ করবে খেতে। বন্ধুরা আমি রেসিপিটি কিভাবে তৈরি করেছি সেই ধাপ সমূহ আপনাদের সাথে উপস্থাপন করে নিচ্ছি—---
উপকরণ | পরিমাণ |
---|
সুজি- ২০০ গ্রাম।
ডিম- ১ টি।
গুঁড়া দুধ- ১৫০ গ্রাম।
লবণ - স্বাদমত।
কাস্টার্ড পাউডার- ৩ চামচ।
তরল দুধ- ৫০০ গ্রাম।
লবণ- স্বাদমত।
চিনি - পছন্দমত।
এলাচ-৩ টি।
সয়াবিন তেল।
সুজির দুধ বড়া তৈরির ধাপ সমূহঃ
রন্ধন প্রক্রিয়া-১
বন্ধুরা প্রথমে আপনাদেরকে দেখিয়েছে আমি উপকরণ সমূহ কি পরিমাণে নিয়েছি। যেহেতু আগেই উপকরণ সমূহ পরিমাণ মতো নিয়ে দেখিয়েছি তাই এখন সরাসরি প্রস্তুত প্রণালীতে চলে যাব। এখন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন সুজির বাটিতে আমি প্রয়োজনীয় সব উপকরণগুলো দিয়ে দিয়েছি।
রন্ধন প্রক্রিয়া-২
সব উপকরণ দেওয়ার পরে এখন ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি হাত দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিলাম। যাতে সব উপকরণ সমূহ মিশ্রিত হয়ে যায় সেভাবে হাত দিয়ে সময় দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ মেখে নিয়েছি।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৩
যেহেতু সব উপকরণ দিয়ে মাখন মেখে নিলাম। এখন সুজির বড়া তৈরির জন্য চুলায় একটি কড়াই বসায় দিয়েছি। কড়াইতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে অপেক্ষা করতে হবে যাতে তেল গরম হয়ে আসে। তবে সুজি গুলো আমি মাখার আগেই ভেজে নিয়ে তারপরে মেখেছি। তাই তেলে বেশি ভাজবো না। যেহেতু সুজিতে বেশি তাপ দিলে পুড়ে একদম কালো হয়ে যায়। তাই তেল অল্প গরম হলে সুজির বড়া তেলে ছেড়ে দিয়েছি। নেড়েচেড়ে কম আঁচে ভেজে নিয়েছি।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৪
এখন নিয়ে নিব তরল দুধ। একটি পাত্রে নিয়ে নিলাম। সেখানে পরিমাণ মতো লবণ দিলাম। অল্প পরিমাণ চিনি দিয়েছি। সেই সাথে তিন চামচ কাস্টার্ড পাউডার দিয়েছি। তিন টি এলাচ দিয়েছি। সব উপকরণ দেওয়ার পরে হালকা নেড়ে দিয়েছি। নেড়ে দেওয়ার পরে চুলায় বসিয়ে দিলাম।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৫
দুধ চুলায় বসিয়ে দেওয়ার পরে ঘন ঘন চামচ দিয়ে নেড়ে দিতে হবে যাতে নিচে লেগে না যায়। যেহেতু আমি কাস্টার্ড পাউডার দিয়েছি। দুধ গরম হয়ে আসলে সেখানে দিয়ে দেব ভেজে রাখা সুজির তৈরি বড়া।
রন্ধন প্রক্রিয়া-৬
গরম দুধের মধ্যে সুজির বড়া দেওয়ার পরে অনেকক্ষণ আমি অল্প আঁচে সিদ্ধ করে নিব। এমনভাবে সিদ্ধ করে নিব যাতে বড়া গুলো নরম হয়ে আসে এবং দুধগুলো একদম ঘন হয়ে যায়। বেশ খানেক জাল দেওয়ার পরেই যখন দুধ ঘন হয়ে আসে তখন চুলা বন্ধ করে দিলাম।
রেসিপির পরিবেশনা
সুজির বড়া চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে যখন ফ্রিজে দিলাম আরো ঘন হয়ে আসলো। ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করে নিলাম। এত সুস্বাদু হয়েছে ভাবতে পারিনি আমি আসলে এতটা সুস্বাদু হবে খেতে। বিশেষ করে কাস্টার্ড পাউডার দেওয়ার কারণে বেশ ঘন হয়ে আসলো। আর বড়া গুলো খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল ভিতরে পাউডার দুধ দেওয়ার কারণে। বন্ধুরা আপনারাও তৈরি করে নিতে পারেন এভাবে। অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য খুবই ভালো হবে। তাছাড়া পরিবারের সবাই মিলে বেশ মজার করে খাওয়ার মত একটি বিকেলের নাস্তা। চাইলে সকালের নাস্তায় খাওয়া যাবে। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের তৈরি করা রেসিপিটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সময় দিয়ে আমার রেসিপিটি দেখার জন্য।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
---|---|
মডেল | W-V770 |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | সুজির দুধ বড়া রেসিপি |
আজ এখানে আমার লেখা সমাপ্তি করছি। আবার উপস্থিত হব নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই সুস্থ থাকবেন আর ভাল থাকবেন।
💘ধন্যবাদ সবাইকে💘
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
আপু আমি ভেবেছিলাম রেসিপিটা রান্না করতে অনেক সময় লাগবে কিন্তু আপনি তো ঝটপট রেসিপিটি বানিয়ে ফেলেছেন। যেটা দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে। খেতেও খুবই সুস্বাদু হয়েছিল নিশ্চয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুজির দুধ বড়া রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু তবে এত কম সময় লাগেনি একটু সময়ের দরকার ছিল। যেহেতু সুজি তেলে ভেজে নেওয়া আর দুধের মধ্যে দিয়ে সিদ্ধ করছিলাম।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
কাস্টার্ড পাউডার দেওয়ার কারণে কালার টা একটু হলুদ হয়ে গেছে আপু। এভাবে সুজির দুধ বড়া খেতে অনেক ভালো লাগে। তবে আমি কখনো তৈরি করে খাইনি। নানার বাড়িতে গেলেই মামি এভাবে সুজির দুধ বড়া তৈরি করে দেয়। আপনি আজকে অনেক সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ রেসিপিটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। দেখে শিখে গেলাম আপু। এরকম সুস্বাদু এবং মজাদার একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
খাবার টি খুবই সুস্বাদু ছিল ভাইয়া আপু।
বাহ দারুন একটি রেসিপি দেখলাম। সুজির দুধ বড়া তো কখনো খাওয়া হয়নি। আজকেই আপনার পোষ্টে প্রথম দেখলাম। যে ভাবে দুধের মধ্যে ভিজিয়েছেন দেখে তো লোভ লেগে গেলো। বাসায় অবশ্যই তৈরী করবো। ধন্যবাদ।
চলে আসেন বাসায় তৈরি করে নিচ্ছি আবার।
তাহলে তো গ্রামে অনেক সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করবেন। সেজন্যই এত সুন্দর ইউনিক সুজির বড়া রেসিপি তৈরি করেছেন যেটা আগে কখনো দেখেনি । এই ধরনের বড়া এসিপি আসলেই নিজের চিন্তা ভাবনা কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করার মনোভাব আমাদের কমিউনিটিতে দেখতে পাই। যেগুলো ভালই উপভোগ করি। আপনার রেসিপি তৈরি ভালোই উপভোগ করেছি আপু। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
দেখে দেখে উপভোগ কেন করবেন বাসায় চলে আসেন তৈরি করে নিচ্ছি আবার।
সুজির দুধ বড়া তৈরি এই খেতে ইচ্ছা করছে। এই রেসিপি আমার কাছে একদম ইউনিক লেগেছে। আসলে এভাবে কখনো রেসিপি তৈরি করি নাই।যার কারণে রেসিপিটা শিখে নিয়েছি।
রেসিপিটি খুবই সুস্বাদু ভাইয়া আপনিও তৈরি করে নিতে পারেন।
আপনি তো দেখছি খুবই মজাদার এবং ইউনিক একটা রেসিপি আজকে তৈরি করেছেন। আসলে বাহিরের খাবার খাওয়া আমাদের জন্য একেবারেই উচিত না। সব সময় ঘরে বিভিন্নভাবে তৈরি করে খাওয়াই ভালো। আপনি নিজের হাতে এত মজাদার একটা রেসিপি তৈরি করেছেন দেখেই লোভ লাগছে। সুজির দুধ বড়া কখনো আমার খাওয়া হয়নি। অনেক মজাদার হয়েছে বলে মনে হচ্ছে এই রেসিপিটা। যারা এটা তৈরি করতে পারে না, তারা খুব সহজেই রেসিপিটা তৈরি করে নিতে পারবে আপনার উপস্থাপনা দেখে। কারণ আপনি রেসিপিটা তৈরি করার পদ্ধতি সুন্দর করেই তুলে ধরেছেন।
সোনিয়া আপুকে বলবেন এভাবে তৈরি করে নিতে বেশ ভালো লাগবে খেতে।
বাচ্চাদেরকে নিয়ে স্কুলে গেলে দিনের রুটিনটি উলট-পালট হয়ে যায়। সারাদিন খুব ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে যায়। আমারও একই অবস্থা আপু আপনার মত। যাইহোক সুজির দুধ বরা প্রথম দেখলাম। সুজির বড়া এমনিতে খেয়েছি কিন্তু এরকম ভাবে খাইনি। দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল। বাসায় একদিন তৈরি করতে হবে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
একদম আপু অনেক ব্যস্ত থাকি। কিন্তু মাঝে মধ্যে সময় সুযোগ পেলে তৈরি করার চেষ্টা করি ইউনিক কিছু।
বোঝাই যাচ্ছে অনেকটা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন, যেহেতু গ্রামের বাড়িতে যাবেন তারমানে বোঝাই যাচ্ছে অনেকটাই এক্সাইটেড। যাইহোক আপনি বরাবরি আমাদের মাঝে অনেক মজাদার মজাদার রেসিপি শেয়ার করে থাকেন। আজকে যেই সুজির দুধ বড়া রেসিপিটি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন,বোঝাই যাচ্ছে অনেক বেশি লোভনীয় ছিল। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ব্যস্ততার মাঝে ইউনিক কিছু তৈরি করে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলে বেশ ভালো লাগে।
রেসিপিটি দেখেই তো জিভে জল চলে আসলো। এর আগে কখনো সুজির দুধ বড়া খাওয়া হয়নি। তবে রেসিপিটি দেখে শিখে নিতে পারলাম কোন একদিন এভাবে তৈরি করে খাব। পরবর্তীতে যদি কক্সবাজার যায় তাহলে আপনার হাতের বানানো সুজির দুধ বড়া খেয়ে আসবো। সুস্বাদু ও লোভনীয় একটা রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
তাহলে তো আপনাকে তৈরি করে খাওয়াতে হয় ভাইয়া।