ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ( দ্বিতীয় পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতকাল আমি আপনাদের সাথে ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলায় যাওয়ার অভিজ্ঞতার প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আজকে এসেছি মেলা ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। এই মেলাটি দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও মাঝে কয়েকটা বছর রাজনৈতিক কিছু সমস্যার কারণে মেলাটি বন্ধ ছিলো। তবে নেতার পরিবর্তনের সাথে সাথে মেলাটি আবার চালু করা হয়। মেলা চালু করাটা ফরিদপুরের গণমানুষের দাবি ছিলো। কারণ জসিম পল্লী মেলা ফরিদপুরের ঐতিহ্যের একটা অবিচ্ছেদ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মেলায় যে শুধু ফরিদপুরের লোকজনই ঘুরতে আসে তা নয়। বরং আশেপাশের কয়েকটা জেলা থেকেও লোকজন আসে এই মেলাটাতে। এই মেলাটা অনুষ্ঠিত হয় পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির ঠিক সামনেই। তার বাড়ির সামনে একটা রাস্তা সেই রাস্তার পাড়ে নদীর ধারে লম্বা মত এক টুকরো জমিতে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। মেলাটা একেবারে ছোটো নয়। বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে মেলাটা অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলে মেলাটা ঘুরে ফিরে দেখতে একটু সময় লাগে।তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে দেখে নেয়া যাক আজকের ছবিগুলো।

IMG_20240220_154805.jpg

মেলায় ঢুকেই প্রথমেই চোখে পড়ল এই আচারের দোকানটি। এই আচারের দোকানগুলো এখন মেলার অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের কাছে সবচাইতে পছন্দের একটা জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আচারের দোকানগুলো। এই সমস্ত দোকানে বিভিন্ন রকমের আচার দেখতে পাওয়া যায়। আচারগুলো দেখতে সুন্দর হলেও এগুলো কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটা নিয়ে আমার মনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যার ফলে এই সমস্ত দোকান থেকে আমি পারতোপক্ষে আচার খাইনা।

IMG_20240220_154821.jpg

এখন ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একটি কাপড়চোপড়ের দোকান। এখন মেলা মানেই বিভিন্ন রকম কাপড় চোপড়ের দোকানের সমাহার। কেউ কোর্ট বা ব্লেজার বিক্রি করছে, তো কেউ মেয়েদের জামা কাপড় বিক্রি করছে, আবার কেউ ছেলেদের জামা কাপড়ও বিক্রি করছে। জসিম পল্লী মেলায় এই ধরনের দোকানের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

IMG_20240220_154913.jpg

ছবিটা আপনারা যেটি দেখতে পাচ্ছেন এটা হচ্ছে আসলে এক ধরনের ওজন এবং উচ্চতা মাপার মেশিন। অনেকেই মজা করে নিজের ওজন এবং উচ্চতা সম্বন্ধে ধারণা নেয়ার জন্য এই মেশিনগুলোতে উঠে থাকেন। ছবিতে তেমনি একজন দর্শনার্থীকে দেখা যাচ্ছে যিনি নিজের ওজন এবং উচ্চতা মাপার জন্য মেশিনে উঠেছেন।

IMG_20240220_154904.jpg

এখন আপনারা যে স্টলটা দেখতে পাচ্ছেন এই স্টলটা আমার কাছে একেবারেই নতুন মনে হয়েছে। আগে কখনো মেলায় এই ধরনের স্টল দেখেছি বলে মনে পড়ে না। এগুলো আসলে আপনার ফোনের পেছনে এক ধরনের স্টিকার লাগিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা। ফোনের ব্যাকপার্ট এ দারুন সব ডিজাইনের স্টিকার এই দোকান থেকে লাগিয়ে দেয়া হয়। বিষয়টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

IMG_20240220_154917.jpg

এখন আপনারা ছবিতে যে স্টল টা দেখতে পাচ্ছেন সেটা আসলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। খেয়াল করে দেখুন এই স্টলের সব কিছু কাঠের তৈরি। একসময় এই সমস্ত জিনিসপত্র মানুষ তাদের প্রতিদিনের কাজে ব্যবহার করতো। এই ধরনের অল্প কিছু স্টলের কারণে এখনো মেলাগুলোর সাথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের কিছুটা সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে হয়।

IMG_20240220_155112.jpg

এখন আপনারা যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন এটা বাংলাদেশের মেলার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাপড় ছাড়া যেনো মেলা উপভোগ করা পূর্ণতা পায় না। বাংলাদেশে মনে হয় এমন কোন মেলা পাওয়া যাবে না যেখানে পাপড় পাওয়া যায় না। আর পাপড় খেতে পছন্দ করে না এমন কোন মানুষও মনে হয় বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবে না। মেলায় গেলেই আমার গরম গরম ভাজা পাপড় খেতে ইচ্ছে করে।

IMG_20240220_155403.jpg

এই ধরনের স্টল এখন মেলায় সবচাইতে কমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটা মেলাই এই ধরনের অনেক স্টল আপনারা দেখতে পাবেন। এদের বেচা কেনাও নেহায়েত মন্দ নয়। মেলার অন্য কোন স্টল তেমন বেচাকেনা না থাকলেও রান্নার জিনিসপত্র বিক্রি করা এই সমস্ত স্টলে প্রচুর বেচাকেনা হয়। কারণ মহিলারা মেলায় গেলেই এ সমস্ত স্টল থেকে কিছু না কিছু কিনবেই।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 8 months ago 

বাসার কাছাকাছি মেলা অনুষ্ঠিত হলে বেশ ভালো লাগে আমার। বেশ কয়েকবার আসা যাওয়া করা যায় এবং এক ধরনের উৎসবের মতো মনে হয়। আসলেই ভাই আচারের দোকানগুলো মেয়েদের সবচেয়ে বেশি পছন্দ। ফোনের পিছনে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার লাগানো দোকান মেলার মধ্যে আমি কখনো দেখিনি। বর্তমানে মেলার মধ্যে কাঠের তৈরি জিনিসপত্র দেখতেই সবচেয়ে ভালো লাগে। পাপড় ভাজা একসময় প্রচুর খেতাম। প্রতিটি ফটোগ্রাফি চমৎকার ভাবে ক্যাপচার করেছেন ভাই। সত্যি বলতে বেশ উপভোগ করলাম প্রতিটি ফটোগ্রাফি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

বর্তমান সময়ে ভাইয়া আসার এবং ফুচকা এই দুটি বিষয়ে মেলার মাঠে মেয়েদের কাছে সব থেকে বেশি প্রিয়। মেলায় গেলেই দেখতে পারবেন চটপটি আসার ফুচকা এগুলোর সামনে মেয়েরা থাকবেই। এখন যদিও মানুষ ওজন বা উচ্চতা মাপতে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না কিন্তু এরকম সামনে দেখলে অনেকেই শখ করি এটা জানার আগ্রহ নিয়ে ওঠে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য আসলেই এরকম কাঠের দোকান গুলোই বহন করে থাকে মেলার মাঝে। পাপড় সে তো আসলে সবাই রে প্রিয় ,গরম পাপড় খেতে আসলেই ভালো লাগে ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76511.74
ETH 3031.28
USDT 1.00
SBD 2.62