তিন বন্ধুর ঘোরাফেরা (প্রথম পর্ব)
আমার বাসা থেকে নিউমার্কেটের দূরত্ব একেবারে কম। রাসেল খুব অল্প সময়ের ভেতরেই আমার বাসার সামনে এসে আমাকে ডাকতে লাগলো। আমি এত দ্রুত রাসেলকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। তারপর ওকে একটু অপেক্ষা করতে বলে আমি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেলাম। তারপর দুই বন্ধু রিক্সায় যেতে যেতে নানা রকম গল্প করতে লাগলাম। রাসেল জানালো ফেরদৌসের সাথে ওর আগে থেকেই কথা হয়েছে। ফেরদৌস নির্ধারিত জায়গায় উপস্থিত থাকবে। আমরা সেখানে গেলে তারপর তিনজন একসাথে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে বের হবো। যাইহোক আমরা নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছে ফেরদৌসকে ফোন দিলে জানালো সে একটু পাশেই রয়েছে। ফোন দেয়ার মিনিট দুয়েকের ভিতর ফেরদৌস আমাদের কাছে হাজির হয়ে গেলো। তারপর আমরা তিনজন মিলে আমাদের শহর থেকে কিছুটা দূরে বিলের মতন একটি জায়গা আছে সেখানকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
তিন বন্ধু গল্প করতে করতে ধীরে সুস্থে সেদিকেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু কিছুদূর আগানোর পর হঠাৎ করে উল্টো দিক থেকে আসা এক মোটরসাইকেল চালক বলল সামনে গেলে বিপদে পড়বেন। ওইদিকে পুলিশ মোটরসাইকেল ধরছে। আমরা একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম। কারণ কিছুদিন আগে একবার পুলিশ ফেরদৌসের মোটরসাইকেল ধরে পনেরশো টাকা ঘুষ নিয়ে তারপর ছেড়েছে। যাই হোক সময় মতো পুলিশের অবস্থান জানতে পেরে আমরা অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে লাগলাম। তবে আমরা যে রাস্তাটা দিয়ে যাচ্ছিলাম সেটা ছিল একেবারে গ্রামের ভেতর দিয়ে। তাছাড়া রাস্তার অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিলো না। বৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পানি জমেছিলো। যার ফলে আমাদেরকে বারবার মোটরসাইকেল থেকে নামতে হচ্ছিলো।
আমরা মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলাম আর চিন্তা করছিলাম যদি পুলিশ সেখান থেকে সরে যায় তাহলে আমরা সে দিক দিয়েই ফিরে যাবো। যাইহোক আমরা ধীরে সুস্থে সেই বিলের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদেরকে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হচ্ছিলো। যার ফলে প্রচুর সময় লাগছিলো। সেই বিলের দিকে যেতে যেতে পথের মাঝে আসরের আজান শুনতে পেলাম। তখন আমরা একটি মসজিদের কাছে মোটরসাইকেল থামিয়ে তিন বন্ধু নামাজ আদায় করে নিলাম। তারপর আবার সেই বিলের দিকে যেতে লাগলাম। তবে গ্রামের ভেতরের এই রাস্তা দিয়ে আমাদের আগে কখনো সেই বিলের দিকে যাওয়া হয়নি। যার ফলে রাস্তাটা আমরা খুব একটা ভালো চিনতে পারছিলাম না।
যাই হোক শেষ পর্যন্ত অনেক দূর ঘুরে দীর্ঘ সময় নিয়ে আমরা সেই বিলের কাছে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছে দেখি বিলের পাশে বিকালে সময় কাটাতে বেশ কিছু মানুষ এসেছে শহর থেকে। তবে মানুষের পরিমাণ আরো অনেক বেশি হোতো। কারণ পুলিশ যে রাস্তাতে দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল ধরছে সেটি চারটি রাস্তার সংযোগস্থল। যদি পুলিশ সেখানে না থাকতো তাহলে বিলের ওখানে হয়তো আরো অনেক বেশি মানুষ দেখা যেতো। যাইহোক আমরা সেখানে পৌঁছে কিছুক্ষণ বিলের পারে দাঁড়িয়ে সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম। এই বিলে বছর দুয়েক আগে একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট ছিলো। এবার খেয়াল করে দেখলাম সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। যাই হোক আমরা সেখানে বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে তারপর শহরের দিকে ফিরতে লাগলাম। তবে আগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম পুলিশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেই জায়গাটা অ্যাভয়েড করে আমরা শহরের দিকে যাবো। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বিলের দিকে ঘুরাঘুরি করতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। তিন বন্ধু মিলে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করলেন তাহলে। তবে রাস্তায় পুলিশের ঝামেলা না থাকলে,বিলের দিকে যেতে কোনো কষ্টই হতো না। আসলে পুলিশরা সুযোগ পেলেই ধান্দা করে। কাগজপত্র সব ঠিক থাকলেও টাকা নেয়। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ভাইয়া বেশ সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন আজ। আপনাদের বন্ধুদের এরকম ঘুরাঘুরি পোস্ট পড়তে আমার বেশ ভালই লাগে। তবে পুলিশের কথা আর বলেন না। ঢাকা শহরে চলাফেরা খুব বিপদজনক হয়ে যায়। রাস্তাঘাটে জ্যাম লাগিয়ে বসে থাকে। তবে গ্রামের প্রকৃতির যে ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আজ তা কিন্তু বেশ মনোমুগ্ধকর।
বন্ধুরা মিলে বিলের পাশে ঘুরাঘুরি করলে বেশ ভালোই লাগে।পুলিশের ঝামেলা না হলে আগেই পৌঁছে যেতেন।কিন্তু যেতে যেতে আছরের আজান হলো আপনারা মোটরসাইকেল রেখে আছরের নামাজ পড়ে নিলেন।যাই হোক শহরে ফিরে যাওয়ার সময় পুলিশকে এড়িয়ে যাবেন বললেন। তারপর কি হলো পরের পর্বে জানা যাবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।