শততম হ্যাংআউট উদযাপন ও আমার কিছু কথা।
কিছুক্ষণ আগে শততম হ্যাংআউট শেষ হলো। আজকে এখন পর্যন্ত পোস্ট করা হয়নি তাই চিন্তা করলাম আজকের হাংআউট নিয়ে কিছু লিখি। অবশ্য শুধু হ্যাংআউট বললে ভুল হবে আমার স্টিমিট জার্নি, কমিউনিটি এবং আমাদের ডিসকার্ড নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। হ্যাংআউটের সময় যখন শুভ ভাই বলল শতোতম হ্যাংআউট নিয়ে কিছু বলুন। তখন আসলে খুব একটা কিছু বলতে পারিনি সময় স্বল্পতার জন্য। কারণ আগে থেকেই আমাদের সময় ঠিক করা ছিলো। যদিও মনের ভেতর অনেক কথা জমা হয়েছিল। অনেক আবেগের বহিঃপ্রকাশ শব্দের মাধ্যমে করতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে আর সেটা হয়ে ওঠেনি। তাই চিন্তা করলাম সেই কথাগুলি পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করি।
আমি স্টিমিটে কাজ শুরু করেছিলাম সেই ২০১৮ সালে। কিছুদিন কাজ করার পরে যখন স্টিমেট ভেঙে হাইভ তৈরি হলো তখন কাজ করা বেশ কিছুদিন বন্ধ রেখেছিলাম। বেশ কিছুদিন বলতে প্রায় তিন বছর। এর পরে আবার একদিন স্টিমেটে কাজ শুরু করি। কিন্তু কাজ শুরু করতে গিয়ে পড়লাম বিপদে। খেয়াল করে দেখি কাজের ধরন সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আমি যখন ২০১৮ সালে জয়েন করেছিলাম তখন শুধু কমেন্ট করে ভালো টাকা আয় করা যেতো। আমি যে কয় মাস কাজ করেছিলাম সেই সময় মোটামুটি ভালই ইনকাম হয়েছিলো। তখন পোস্ট না করেও আপনার ভালো আয় করার সুযোগ ছিল।
কিন্তু এবার দ্বিতীয় ধাপে যখন কাজ শুরু করলাম তখন খেয়াল করে দেখি এখন পোস্ট ছাড়া অন্য কিছুর তেমন গুরুত্ব নেই। তাছাড়া আগে যখন কাজ করেছি তখন কাজের ব্যাপারে কিছুই শিখিনি। যার ফলে এবার দ্বিতীয় দফায় কাজ করতে এসে পড়লাম অথৈ সমুদ্রে। প্রথম কিছুদিন বুঝতে পারছিলাম না আসলে কিভাবে শুরু করবো। এর ভেতর হঠাৎ করে একদিন স্টিম বাংলাদেশ নামে একটি কমিউনিটি নজরে পড়লো। সেখানে দেখলাম অনেকে বাংলায় লিখছে। ব্যাপারটা দেখে মনে কিছুটা সাহস পেলাম। তবে দু তিনটে পোস্ট করার পর যখন সাপোর্ট পেলাম না তখন যেসব পোস্টে ভালো অংকের সাপোর্ট রয়েছে সেই পোস্টগুলো দেখতে লাগলাম।
এভাবে আস্তে আস্তে করে নিজের চেষ্টায় কাজ শিখতে লাগলাম। এর ভেতরে একদিন সুমন ভাই আমাকে পরামর্শ দিল নিউ কামার্স কমিউনিটিতে লেভেল ফোর পর্যন্ত কমপ্লিট করার জন্য। তাহলে স্টিমেটের বেসিক ব্যাপার গুলো সম্বন্ধে নাকি জানতে পারবো। সুমন ভাইয়ের পরামর্শ পাওয়ার পর আর দেরি না করে আমি নিউকামার্স কমিউনিটিতে লেভেল ফোর পর্যন্ত কমপ্লিট করলাম। সুমন ভাইয়ের এই উপদেশটা ছিল আমার স্টিমেট জার্নিতে একটা টার্নিং পয়েন্ট। তারপর থেকে আমাকে আর খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি। কাজগুলি ভালোভাবে শেখার পর আমি কয়েকটা কমিউনিটিতে কাজ শুরু করি।
কিন্তু তখন খেয়াল করে দেখেছি বিভিন্ন কমিউনিটিতে ব্যাপক স্বজন প্রীতি হয়। সেখানে পোস্টের কোয়ালিটি থেকে আপনি ফাউন্ডার বা এডমিনের কাছের লোক কিনা সেটাই মূল বিবেচ্য বিষয়। সে কারণে অনেক সময় ভালো পোস্ট করে সাপোর্ট পেতাম না। আবার অনেকে এমন ছিল যারা নিম্নমানের পোস্ট করেও ভালো সাপোর্ট পেতো শুধু এডমিন মডারেটরদের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে। যাইহোক এভাবে কাজ করতে করতে এক সময় আমার স্ত্রীর মাধ্যমে আমার বাংলা ব্লগের সন্ধান পাই। তারপর এখানে মাঝে মাঝে পোস্ট করতে থাকি। যদিও তখন দাদার এখনকার মত এতো ভোটিং পাওয়ার ছিল না। তার পরেও পোস্ট করলে ছোটখাটো কিছু ভোট পাওয়া যেতো সবসময়ই।
তবে তখন পর্যন্ত দাদার সম্বন্ধে আমার কোন ধারণা ছিল না। আস্তে আস্তে আমার বাংলা ব্লগে কাজ করতে লাগলাম আর বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে ভালো ধারণা পেতে লাগলাম। দিন যাচ্ছিল আর বুঝতে পারছিলাম এই কমিউনিটি যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি কোন সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছেন। প্রতিনিয়তই দেখছিলাম কমিউনিটিতে নানা ধরনের নিয়মকানুন চালু হচ্ছিল যেগুলো কমিউনিটির ইউজারদের জন্য খুবই উপকারী। এভাবে কাজ করতে করতে একসময় কমিউনিটিতে হ্যাংআউট চালু হলো। তখনো বুঝতে পারিনি, সেই চালু হওয়া হ্যাংআউট এতদূর গড়াবে। কারণ এই ধরনের কিছুর সাথে আমার আগে তেমন পরিচয় ছিল না। যাইহোক প্রথম দিকে হ্যাংআউট কিছুটা অদ্ভুত লাগতো। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে এই হ্যাংআউটের গুরুত্ব বুঝতে পারলাম। আর হ্যাংআউটের প্রতি এক ধরনের ভালো লাগা তৈরি হল।
আমাদের দাদা অত্যন্ত মজার মানুষ। তিনি সবাইকে নিয়ে সুন্দর সময় কাটাতে পছন্দ করেন এটা আমি এই হ্যাংআউটের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছি। তিনি একজন শিল্প সাহিত্যের অনুরাগী আশা করি সেটা আপনারাও ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন। এই হ্যাংআউট আমাদের অনেকের ভেতরে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েছে। অনেকে সুন্দর গান গাইছে যারা আগে কখনোই জনসম্মুখে গান গাইনি। আবার অনেকে কবিতা আবৃত্তি করছে যারা কখনো কবিতা লেখেনি বা আবৃত্তি করেনি। এটা সম্ভব হয়েছে এই হ্যাংআউটের মাধ্যমেই। এই হ্যাংআউটের কারনেই আমরা কমিউনিটিকে আরো ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারছি। কারণ অনেক কথা আছে যেটা কমেন্ট করার মাধ্যমে বা মেসেজের মাধ্যমে বোঝানো যায় না। অথচ হ্যাংআউটের সময় যখন সবাই উপস্থিত থাকে তখন অল্প সময়ে সেই কথাগুলি বা বার্তাটা সকলের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়।
আস্তে আস্তে এই হ্যাংআউট হয়ে উঠলো আমার বাংলা ব্লগের প্রাণকেন্দ্র। যাই হোক দেখতে দেখতে শততম হ্যাংআউট হয়ে গেলো। আমরা এখনো চেষ্টা করছি আপনাদের জন্য আরো নতুন কিছু যোগ করতে। প্রতিনিয়তই দাদা এবং আমাদের এডমিন প্যানেল এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে যে কমিউনিটির সদস্যদের জন্য আরো কি করা যেতে পারে। যেমনটা আমি হ্যাংআউটে বলেছিলাম আমি চাই আমরা এইভাবে আরো দীর্ঘদিন একসাথে থাকতে। আরো অনেকগুলো হ্যাংআউট একসাথে কাটাতে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
| ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
|---|---|
| ফটোগ্রাফার | @rupok |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR



Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো । আপনার মতো আমিও নিউ কামারসে লেভেল ফোর পার করেছিলাম। যাই হোক অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার পোস্ট পড়ে। এখন খুব সুন্দর একটি কমিউনিটিতে এসে কাজ করছেন আর সুন্দর সময় কাটাচ্ছেন। এভাবেই বাকিটা সময় সুন্দর ভাবে কেটে যাবে এই কামনা করি।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
স্টিমিটে কাজ করার শুরুর দিকটা আসলেই অনেক কষ্টের ছিলো ৷ যখন আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি ছিলো না , তখন ভালো পোস্টের মূল্য পাওয়া যেতো না ৷ সবটা বুঝতেও সময় লেগেছিলো ৷ কেও এমন করে ভুল সঠিক বুঝিয়ে দিতো নাহ ৷ আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি আসলেই আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে শিখিয়েছে ৷ যা সত্যিই অস্বীকার কিংবা ভোলার নয় ৷ দাদার জন্যই সম্ভব হয়েছে এতো কিছু ৷ দাদার জন্য সর্বদা শ্রদ্ধা ভালোবাসা থাকবে আমাদের সবার ৷ যাই হোক আপনার সুন্দর অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে প্রত্যেক সপ্তাহের সাপ্তাহিক আউট। শততম সাপ্তাহিক হ্যাংআউট সম্পর্কে আপনার কথাগুলো জেনে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমাদের সকলের প্রত্যাশা আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এভাবে আরও অনেক দূরে এগিয়ে যাবে এবং সাপ্তাহিক হ্যাংআউটের পরিমাণটা লক্ষ্য-কোটির ঘরে পৌঁছে যাবে।
পুরো স্টিমিট কমিউনিটিতে আমার বাংলা ব্লগ ছিলো একটা স্ফুলিঙ্গের মতো, সকল অনিয়মকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়ার জন্য। হ্যা, এটা সত্য সেই সময়ে দাদা সঠিক সিদ্ধান্ত এবং চিন্তা ভাবনা আমাদের সবাইকেও পাল্টে যেতে দারুণভাবে অনুপ্রাণীত করেছিলো। সময়ে সাথে সাথে আমার বাংলা ব্লগ তার শ্রেষ্ঠত্ব ঠিক ধরে রাখতে পেরেছে।
আমার মনে হয় আমার বাংলা ব্লক কমিউনিটি প্রত্যেকটি ইউজারদের প্রাণের কমিউনিটি। আর এই কমিউনিটির প্রাণকেন্দ্র হ্যাং আউট। শততম হ্যাংআউট নিয়ে আপনি আপনার অনুভূতি গুলো বেশ সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। আমি মনে করি দাদার উৎসাহ উদ্দীপনায় আগামীতে হ্যাংআউট প্রোগ্রামটি আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।