ভোরের আলোয় বন্ধুদের সাথে পদ্মার চর ভ্রমণ (প্রথম পর্ব)।
যাই হোক আমি কিছুক্ষণের ভেতরে তৈরি হয়ে নিচে নেমে গেলাম। কিন্তু আমাদের যাওয়ার কথা ছিল সর্বমোট ছয়জনের। সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম শুধু আমার সেই বন্ধু একা বসে রয়েছে। অবশ্য তার কিছুক্ষণ পরেই রাকিব নামের আমাদের এক সহযাত্রী সেখানে এসে উপস্থিত হোলো। তারপরে আমরা টেনশন করতে লাগলাম আমাদের দুই বন্ধু শোভন এবং রুবেলকে নিয়ে। কারণ যে কোন জায়গায় যাওয়ার সময় শেষ মুহূর্তে কোন ঝামেলা তৈরি করার জন্য এই দুজনের সুনাম রয়েছে। এর ভেতরে শোভন নানা রকম সমস্যা দেখিয়ে শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে। সেই কারণে তাকে সবাই মিলে বারবার ফোন দিচ্ছিলাম। ফোন দিয়ে বুঝতে পারলাম তার যাওয়ার খুব একটা ইচ্ছা নেই। তারপরেও কিছুটা জোরাজুরি করতে সে আমাদেরকে জানালো কিছুক্ষণের ভেতরে সে আমাদের কাছে এসে উপস্থিত হচ্ছে।
তারপর আমরা আমাদের বন্ধু রুবেলকে ফোন দিলাম। কিন্তু ফোন দিয়ে যথারীতি তার নাম্বারটা বন্ধ পেলাম। অথচ আমাকে পদ্মার চরে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাবটা সেই দিয়েছিলো। অবশ্য রুবেলের ক্ষেত্রে এটা নতুন কিছু নয়। ছোটবেলা থেকেই আমরা দেখে এসেছি ও এরকমটাই করে। যাই হোক কিছুক্ষণ পরে সেখানে আমাদের আরো এক সহযাত্রী এসে উপস্থিত হোলো তার নামও রুবেল। এই ছেলেটা চাকরি-সুত্রে আমাদের এলাকাতে থাকে। এলাকায় থাকতে থাকতে আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে তার বেশ সখ্যতা হয়ে গিয়েছে। যাই হোক সেই রুবেল এসে উপস্থিত হওয়ার পরে আমরা পাঁচজনে মিলে রওনা দিলাম। প্রথমে মিনিট পাঁচেক হেঁটে মেইন রোডে গেলাম। তারপর সেখান থেকে একটা অটো রিক্সা নিয়ে আমরা ধোলার মোড় নামক জায়গায় উপস্থিত হলাম। সেখানে অটো থেকে নেমে আমরা হেঁটে পদ্মার চর পাড়ি দিয়ে খেয়াঘাট পর্যন্ত পৌছালাম। তবে খেয়াঘাট পর্যন্ত পৌছাতে আমাদেরকে অনেকটা পথ হাটতে হয়েছিলো। কারণ আগে যেখানে নদীর পাড় ছিলো সেখান থেকে শুরু হয়ে পদ্মার বুকে বিশাল বড় চর জেগেছে। যার ফলে নদীর পানি পর্যন্ত পৌঁছাতে এখন সবাইকে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়।
কিন্তু সেখানে পৌঁছে আমরা অবাক হয়ে দেখি খেয়া নৌকায় ওঠার জন্য যে পল্টনের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো সেই পল্টন পর্যন্ত যেতে হলে বেশ খানিকটা পানি ডিঙিয়ে যেতে হবে। মূলত হঠাৎ করে পদ্মার পানি কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছিলো। এর ভিতর আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম জুতা পড়ে। তাই নৌকায় ওঠার জন্য আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত জুতা খুলে হাতে নিতে হয়েছিলো। পরবর্তীতে নৌকায় উঠে আবার জুতা পড়েছিলাম। ভোরবেলার চমৎকার আবহাওয়ায় যখন নৌকাটা ছাড়লো তখন নদীর ঠাণ্ডা বাতাসে রীতিমতো ঘুম চলে আসছিলো। প্রচন্ড গরমের ভেতর দীর্ঘদিন কাটানোর পরে এমন ঠান্ডা বাতাসে শরীর মন দুটোই জুড়িয়ে যাচ্ছিলো। যদিও নদীর বেশিরভাগ অংশ শুকিয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের বেশিক্ষণ নৌকায় থাকতে হয়নি। অল্প সময়ের ভেতরেই আমরা ওপারে গিয়ে পৌঁছালাম। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভোর বেলায় বন্ধুদের সাথে পদ্মার চড়ে ঘুরতে গিয়ে নিশ্চয়ই খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছিলেন। আপনারা মোট ৬ জন যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনার বন্ধু রুবেল না যাওয়ার কারণে পাঁচজনই যেতে হয়েছিল দেখছি। আসলে বন্ধুদের মধ্যে এরকম কিছু বন্ধু থাকে যারা কোথায় যাওয়ার সময় বা কোন কিছু করার সময় শেষ মুহূর্তে এরকম করে। যাই হোক এরপরে কি হয়েছিল নিশ্চয়ই পরবর্তী পর্বের মাধ্যমিক জানতে পারবো। ধন্যবাদ
ভোরবেলায় চরের পরিবেশটা আসলেই ছিলো দারুন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।
আসলে ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে ২/১ জন এমন বন্ধু বান্ধব থাকে যে,কোনো কিছু প্ল্যান করার সময় তারা সবার আগে থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে খুঁজে পেতে কষ্ট হয়ে যায়। যাইহোক আপনাদের একেবারে ভিন্ন ধরনের একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে ভাই। এতো সকালে এমন পরিবেশে সময় কাটাতে যে কি ভালো লেগেছে আপনাদের, সেটা ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে। নদীর ওপারে গিয়ে আপনারা কি কি করলেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গ্রুপে কয়েকজন বন্ধু থাকে যারা শেষ মুহূর্তে এসে মতামত পাল্টে ফেলে আর প্লান ক্যান্সেল করে ফেলে। যাই হোক অবশেষে সবাই মিলে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। ভোরবেলার শীতল হাওয়া আর এরকম সুন্দর পরিবেশ ভাবতেই ভালো লাগছে ভাইয়া।
সত্যি বলতে, বন্ধুদের গ্রুপে এরকম অনেকেই থাকে যারা ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে ঠিকই কিন্তু যেদিন ঘুরতে যাওয়ার কথা ফাইনাল হয়, সেদিন কারোর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, কারোর আবার অসুস্থতা চলে আসে, এটাই হয় আর কি। হা হা হা... আসলে দাদা ভোরের আলোয় বন্ধুদের সাথে এইভাবে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা। যাইহোক, আপনারা কি কি মজা করলেন সেটা তো আর জানতে পারলাম না। আশা করি, পরবর্তী পর্বে সেই ব্যাপারটা জানতে পারবো।