ট্রেনে করে ঢাকা যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ বনাম বাস্তবতা।
গত কয়েকদিন থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট গুলিতে বিভিন্ন রকম তথ্য শেয়ার করা হচ্ছিলো ট্রেন সংক্রান্ত। কিন্তু এই তথ্যগুলো দেখে কোনটাই আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছিল না। সেই কারণে আমি ঠিক করেছিলাম সরাসরি রেল স্টেশনে গিয়ে রেলের কোন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে আসবো। তাহলে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। সেই কারণেই আমি কয়েকদিন আগে হাটাহাটি শেষ করে সরাসরি চলে গিয়েছিলাম ফরিদপুর রেল স্টেশনে। সেখানে গিয়ে দেখি টিকিট কাউন্টারে কোন লোক নেই। যদিও আমি যখন স্টেশনে পৌঁছেছি ঠিক তার মিনিট খানেক আগে একটা ট্রেন ছেড়ে গিয়েছে। যাই হোক আমি কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে সাব স্টেশন মাস্টারের কক্ষটি খুঁজে পেলাম। তারপর তার কাছে সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম আসলেই কি ফরিদপুর থেকে ঢাকা ট্রেন চলাচল ১০ তারিখে শুরু হবে কিনা? কারণ আমরা জানি দশ তারিখে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুরের ভাঙ্গা আসবেন পদ্মা সেতু হয়ে রেলের উদ্বোধন করতে। আমি আশা করেছিলাম হয়তো সেদিন থেকে বা তার পরের দিন থেকেই আমরা ট্রেনে করে ঢাকা যেতে পারবো।
কিন্তু তাদের উত্তর শুনে আমি খুবই হতাশ হলাম। তারা বলল এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ আমি যেদিন রেল স্টেশনে গিয়েছিলাম সেদিন ছিল সম্ভবত ৭ বা ৮ তারিখ। আর দু-একদিনের ভিতরেই পদ্মা সেতু হয়ে রেল চলাচল শুরু হবে। সেই রেল যদি ফরিদপুর পর্যন্ত আসে তাহলে ফরিদপুরের স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তাদের অবশ্যই কিছু জানার কথা। তবে তাদের কথা শুনে বুঝতে পারলাম এ ব্যাপারে এখনো আসলে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। রেলের এই উদ্বোধনটা আসলে এক ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা যদি জনগণের জন্য হতো তাহলে সেদিন থেকে বা তার পরের দিন থেকে রেল চলাচল শুরু হতো।
এদিক থেকে আবার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আরো একটি তথ্য দেখতে পেলাম। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি। এই ১০০ কিলোমিটারে নন এসি সিটের টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৪০০ টাকার কাছাকাছি। আর এসি টিকিটের দাম হবে ৭০০ টাকার উপরে। অবশ্য এটা এখনো প্রস্তাবিত। যদি টিকিটের দাম এমনটা থাকে তাহলে কেউই ট্রেনে যাতায়াত করতে আগ্রহী হবে না। জনগণের প্রচুর অর্থ অপচার করে তৈরি করা এই সেতুর সুফল জনগণ শেষ পর্যন্ত পাবে কিনা এখন সেটা নিয়েই আমার মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। যাই হোক আগামী কয়েক দিনের ভেতরেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে আশা করব সরকার জনগণের কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্তটা নেবে। আর আমরা খুব শীঘ্রই হয়তো ট্রেনে করে ঢাকা যাওয়ার স্বপ্ন টা পূরণ করতে পারবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
১০০ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ট্রেনের টিকিট মূল্য ৪০০ টাকা আমার কাছে অনেকটা বেশি মনে হচ্ছে। আমার মনে হয় এতে সাধারণ মানুষ খুব একটা আগ্রহী হবে না ট্রেনে যাতায়াত করার জন্য। তবে দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়। হয়তো শীগ্রই ফরিদপুরবাসীর ট্রেনে করে ঢাকা যাওয়ার স্বপ্ন পূর্ণ হবে।
আমিও গতকালকে এই সম্বন্ধে ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখেছিলাম। প্রস্তাবিত ভাড়া অতিরিক্ত বেশি এবং এটা যদি কার্যকর হয়, তাহলে জনগণের তেমন কোনো লাভ হবে না। আশা করি সেটা মাথায় রেখে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। আপনি সরাসরি স্টেশনে গিয়ে ব্যাপারটা জেনেছেন,এটা খুব ভালো হয়েছে। যাইহোক আপনারা যাতে স্বল্প ভাড়ায় ঢাকা আসা যাওয়া করতে পারেন সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ট্রেনে কোথাও যেতে আমার ও খুব ভালো লাগে। ফরিদপুর বাসী ট্রেনে করে এবার ঢাকা যেতে পারলে ব্যাপারটা খুব ভালোই হয়।আপনি নিজে গিয়ে জেনে এসে ভালো ই করলেন।আমাদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করলেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। তবে এসি,নন এসির ভাড়া যা বললেন তাতে সত্যিই অসুবিধাই বটে।আশাকরি ট্রেন কতৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন।