দীর্ঘদিন পর তিন বন্ধুর আড্ডা অতঃপর নদীতে গোসল করা (শেষ পর্ব)
রাফসানের দোকান থেকে রওনা দিয়ে আমরা প্রথমে রাফসানের বাড়ির দিকে যেতে লাগলাম। কারণ আমি আর ফেরদৌস যখন বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম তখন আমরা গোসল করার প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়েছিলাম। সাথে করে আমরা কাপড়-চোপড় নিয়ে গিয়েছিলাম। যেহেতু রাফসানের সাথে কোনো কাপড় চোপড় ছিলো না তাই কাপড়চোপড় নেয়ার জন্য আমরা প্রথমে রাফসানের বাড়ির দিকে গেলাম। সেখানে গিয়ে আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। রাফসান বাড়ির ভেতর গিয়ে কিছুক্ষণের ভেতরে কাপড় চোপড় নিয়ে চলে এলো। তারপর তিন বন্ধু মিলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
তবে আমরা রাফসানের কাছ থেকে একটা জিনিস গোপন করেছিলাম কোথায় গোসল করতে যাব সেই জিনিসটা। রাফসানকে পরিষ্কার ভাবে আমরা জানায়নি কারন সেই জায়গাটা রাফসানের এলাকা থেকে বেশ খানিকটা দূরে। আর রাফসানকে আগে থেকে বললে হয়তো সে যেতে রাজি হবে না। তাই রাফসানকে বললাম আমাদের মোটরসাইকেল পিছু পিছু আসতে। রাফসান একটু আগাচ্ছিলো আর জিজ্ঞেস করছিল জায়গাটা কোথায়? আর আমরা বলছিলাম এই তো আর একটু সামনে। শেষ পর্যন্ত চলতে চলতে আমরা যখন কাঙ্খিত জায়গার কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম তখন সে বলল এতদূর আগে জানলে আসতাম না। আমরা তখন বললাম যেহেতু চলেই এসেছিস তাহলে আর চিন্তা করে লাভ কি? তবে তার গোসল করার জায়গাটা দেখে খুবই পছন্দ হলো।
সে বলল জায়গাটা গোসল করার জন্য আসলেই সুন্দর। আমরা সাধারণত পদ্মার পাড়ে যে জায়গাটাতে ঘুরতে যাই গোসল করার জায়গাটা ছিল সেখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে। আমরা গোসল করার জন্য এমন একটি জায়গা খুঁজছিলাম যেখানে লোকজন কম আসে। খুঁজতে খুঁজতে আমরা গোসল করার এই জায়গাটি পেয়েছিলাম ।এখানে ছোট ছোট কয়েকটি চর জেগে উঠেছে নদীর বুকে। এই সমস্ত চরে গোসল করার মজাই আলাদা। যাইহোক তিন বন্ধু সেখানে পৌঁছে কাপড়চোপড় পাল্টে দৌড়ে নদীতে নেমে গেলাম। এর আগের দিন যখন নদীতে ফেরদৌসের সাথে গোসল করতে এসেছিলাম। তখন পদ্মার গরম পানিতে গোসল করে একেবারে তৃপ্তি পায়নি। সেদিন গোসল করার অভিজ্ঞতাটা ছিল রীতিমত ভয়াবহ। কারণ আমি আমার জীবনে কখনোই পদ্মার পানি এতটা গরম দেখিনি। তাই সেদিন গোসল করে ফেরার সময় মনে মনে পরিকল্পনা করেছিলাম আরো একদিন এখানে আসতে হবে গোসল করার জন্য। কারণ সেদিন যে অতৃপ্তি নিয়ে বাড়িতে ফিরেছিলাম আরো একদিন ভালোভাবে গোসল না করলে মন তৃপ্ত হবে না।
তবে আজ পানিতে নেমে দারুন লাগছিল। নদীতে যখন নামলাম তখন খেয়াল করলে দেখি পানিটা প্রচন্ড ঠান্ডাও না আবার গরমও না। এই ধরনের তাপমাত্রায় গোসল করতে অত্যন্ত মজা লাগে। তিন বন্ধু মিলে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে লাগলাম আর গোসল করতে লাগলাম। নদীতে গোসল করতে গেলে আমি সাধারণত দু-তিন ঘন্টার আগে গোসল থেকে উঠতে চাই না। কারণ নদীর পানিতে গোসল করে আমি যে শান্তি পাই সেটা আর অন্য কোথাও পাই না। আমরা অবশ্য যাওয়ার সময় টুকিটাকি কিছু খাবার কিনে নিয়ে গিয়েছিলাম। গোসলের ফাঁকে ফাঁকে আমরা সেই খাবারগুলো খাচ্ছিলাম।
আমরা বন্ধুবান্ধব মিলে যখনই গোসল করতে যাই তখনই সাথে কিছু খাবার অবশ্যই নিয়ে যাই। যেহেতু আমরা অনেকক্ষণ ধরে গোসল করি। তাই দীর্ঘক্ষণ গোসলের ফাঁকে ফাঁকে হালকা খাওয়া-দাওয়া বেশ ভালই লাগে। এর আগের দিন যখন গোসল করেছিলাম তখন পানি ছিল অত্যন্ত গরম। তবে আজকে গোসল করার সময় আকাশে খানিকটা মেঘ ছিলো। হঠাৎ করে হালকা বাতাস বইতে শুরু করলো। তখন আমাদের শীত লাগতে লাগলো। নদীর পানিতে হালকা স্রোত ছিলো। তবে সেটা অল্প পানিতে বোঝা যাচ্ছিল না। যখন আমরা বুক সমান পানিতে যাচ্ছিলাম তখন মনে হচ্ছিল স্রোত আমাদেরকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আমরা একটু কম পানিতেই গোসল করছিলাম। আর ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে একটু সাতার কাটছিলাম। যদিও আমি খুব বেশি দূর সাঁতরাতে পারি না তার পরেও যখনই নদীতে গোসল করতে যায় তখন কিছুটা সাতরানোর চেষ্টা করি। কারণ আপনারা জানেন সাঁতার কাটা অত্যন্ত ভালো একটি ব্যায়াম। যাই হোক এভাবে বেশ কিছুক্ষণ গোসল করার পরে রাফসান আর ফেরদৌস বললো চল আজকের মত উঠি। আমিও আর দ্বিমত করলাম না। গোসল শেষ করে তিন বন্ধু যার যার মত বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মা নদী |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া এত সুন্দর নদীর পানি পেলে আমি ২/৩ ঘন্টা কি পাচঁ ছয় ঘন্টা গোসল করলেও শখ মিটবে না। নদীর দৃশ্যটা দেখেই মনটা জুড়িয়ে গেল। এত সুন্দর নদীর পানি কত দিন যাবৎ দেখি না। তিন বন্ধু মিলে মোটরসাইকেল দিয়ে নদীতে গোসল করে ভালই মজা করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনি নদীতে গোসল করার পোস্ট গুলো আমাদের সাথে নিয়মিত শেয়ার করেন এবং এই পোস্ট গুলো পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। এতো সুন্দর নদীর পানিতে কয়েকঘন্টা একটানা গোসল করলেও বেশ ভালো লাগবে। আপনারা তিন বন্ধু একসাথে অনেকদিন পর নদীতে গিয়ে গোসল করলেন। নদীর পানি গরম হলে গোসল করে কোনো তৃপ্তি পাওয়া যায় না। আকাশ মেঘলা হওয়াতে নদীর পানি তেমন গরম হয়নি। তাই গোসল করে বেশ তৃপ্তি পেয়েছেন। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন আপনারা। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।