পরিবার নিয়ে পছন্দের রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়ার অভিজ্ঞতা।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি খাওয়া-দাওয়া করতে অনেক ভালোবাসি। আর সেটা যদি হয় বাইরে খাওয়া দাওয়া করা তাহলে তো কথাই নেই। আমাদের পরিবারে শুধু যে আমি বাইরে খেতে পছন্দ করি তা নয়। বরং আমার মেয়ে এবং স্ত্রী দুজনেই বাইরের খাবারের প্রতি খুবই দুর্বল। বাইরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া কথা শুনলে তারা দুজনেই খুশি হয়ে ওঠে। এই জন্য আমি প্রতি মাসে চেষ্টা করি দু-একবার বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে ।সে হিসাবে কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রীকে জানালাম আমরা বাইরে খেতে যাবো। তখন তার সাথে পরামর্শ করলাম কোথায় খেতে যাওয়া যায়। ফেসবুকে ফরিদপুর ফুডব্যাংক নামক পেজ ঘেটে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এর অফার গুলো দেখতে লাগলাম। তবে কোনটাই শেষ পর্যন্ত আমাদের পছন্দ হোলো না।

IMG_20240211_144704.jpg

শেষ পর্যন্ত আমার স্ত্রী আমার উপরই ভরসা করল রেস্টুরেন্ট খোঁজার জন্য। তাই আমি আর বেশি চিন্তা-ভাবনা না করে আমাদের সবারই পছন্দের রেস্টুরেন্ট নিউ স্টার কাবাব এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে যাওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করলাম। আমরা সব সময় চেষ্টা করি দুপুরের লাঞ্চটা বাইরে সারতে। কারণ আমি সব সময় রাতে ভারী খাবার অ্যাভয়েড করে চলি। যাই হোক স্ত্রীর সাথে কথাবার্তা বলে ঠিক করলাম যোহরের নামাজ শেষ করে বেলা ২:০০ টার দিকে আমরা রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে রওনা দেবো। সেই হিসেবে আমি নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই স্ত্রীকে বলে রেখে গেলাম আমি আসার আগেই তোমরা তৈরি হয়ে থাকবে। আমি বাসায় ফিরে কাপড়চোপড় পাল্টে আমরা বের হয়ে যাবো। যথা সময় আমি বাসায় ফিরে গোছগাছ করে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। আমাদের শহর ছোট হওয়ার কারণে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় খুব সহজেই যাওয়া যায়। যদিও ইদানিং শহরের রাস্তাঘাটে বেশ ট্রাফিক জ্যাম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেই ট্র্যাফিক জ্যামের কারণে আমাদের রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে কয়েক মিনিট বেশি সময় লেগেছিলো।


IMG_20240211_144403.jpg

আমি সাধারণত প্রতিদিন জোহরের নামাজ শেষ করে বাসায় এসে খেতে বসি। যার ফলে বেলা দুটো বাজলে আমার বেশ ক্ষুধা লেগে যায়। কারণ আমি সকালের নাস্তাটা অনেক সকালে করি। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় একবার চিন্তা করছিলাম কি কি খাবো সেটা রেস্টুরেন্টে ফোন করে অর্ডার দিয়ে তারপর বের হই। তাহলে গিয়ে আর আমাদেরকে সেখানে বসে থাকতে হবে না। যদিও পরবর্তীতে সে পরিকল্পনাটা বাতিল করে দিয়েছিলাম। যাইহোক রেস্টুরেন্টে পৌঁছে মেনু কার্ড দেখে আমরা দ্রুত খাবারের অর্ডার করলাম। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি খাবার পরিবেশন করতে বেশ কিছুটা দেরি হবে। কারণ এই সমস্ত রেস্টুরেন্টে চাইনিজ বা থাই ফুড অর্ডার করলে তারপর ওরা সেটা রান্না করে গরম গরম পরিবেশন করে। যার ফলে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। তবে সেদিন রেস্টুরেন্টে পৌঁছে খেয়াল করে দেখলাম আমরা বাদে সেখানে আর কোন কাস্টমার নেই। রেস্টুরেন্টের একজন ওয়েটারকে ডেকে বিষয়টা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল আমাদের এখানে সাধারণত বিকাল থেকে সন্ধ্যার পরে বেশি লোকজন আসে। তখন বিষয়টা আমি বুঝতে পারলাম।


IMG_20240211_144408.jpg

এই রেস্টুরেন্টটা আমাদের কাছে খুবই পছন্দের কারণ এখানকার খাবারের স্বাদ যেমন ভালো দামটাও তেমনি সাধ্যের ভেতরে। তাছাড়া আমাদের শহরের বাদবাকি রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাবারের মান যেমনই হোক সব জায়গায় দাম আকাশ ছোঁয়া। ছোট শহর হিসেবে আমাদের শহরে এমনিতেই অবশ্য সবকিছুর দাম বেশি। সাধারণত এর উল্টোটাই সব সময় হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম গল্প করতে করতে টেবিলে খাবার চলে এলো। আমরা তিনজনই প্রচন্ড ক্ষুধার্ত ছিলাম। যার ফলে কয়েকটা ছবি তুলেই বিনা বাক্য ব্যয়ে খাওয়া শুরু করলাম। খাবারগুলো বরাবরের মতোই ছিলো দুর্দান্ত। এদিন আমরা অর্ডার করেছিলাম থাই চিকেন ফ্রাইড রাইস, চিকেন সিজিলিং আর চিকেন চিলি অনিয়ন। এর আগেরবার যখন আমরা এই রেস্টুরেন্টে খেয়েছিলাম তখন সাথে চিকেন ফ্রাই ও অর্ডার করেছিলাম। তবে সেবারের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছিলাম খাবারগুলো আমাদের জন্য অনেক বেশি হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আমরা খাবার গুলো শেষ করতে পেরেছিলাম না। সেই কারণেই এবার আর চিকেন ফ্রাই এর অর্ডার করিনি। একে তো সবারই প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছিল। সেই সাথে খাবারগুলো ছিল দারুন স্বাদের। যার ফলে আমরা বেশ দ্রুত আমাদের খাওয়া শেষ করে ফেললাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা ড্রিংকসের বোতলে চুমুক দিতে লাগলাম। যদিও খাওয়াটা বেশি হয়ে যাওয়ার ফলে ড্রিঙ্কসগুলো কেউ শেষ করতে পারিনি। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমি ওয়েটারকে বিল দিতে বললাম। ওয়েইটার বিল দিলে বিল মিটিয়ে আমরা বাড়ির পথে রওনা দিলাম। সেদিনের খাবারটা আমাদের সকলেরই খুব পছন্দ হয়েছিলো। আর পরিমাণও একেবারে ঠিকঠাক ছিলো। সবাই ভরপেট খেয়ে ছিলাম। আর খাওয়া-দাওয়া ভালো হলে মনে একটা আলাদা তৃপ্তি কাজ করে। সেই তৃপ্তি সহকারে আমরা বাসায় ফিরে এলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

হ্যাঁ ভাই সেটা জানি আপনি বাহিরের খাবার অনেক পছন্দ করেন। সুমা আপু এবং আপনার মেয়েও বাহিরের খাবার বেশ পছন্দ করে। আসলে পরিবার নিয়ে সবারই উচিত মাসে অন্তত ২/১ বার বাহিরে গিয়ে খাওয়া। যাইহোক আপনারা নিউ স্টার কাবাব এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দুপুরে গিয়ে বেশ ভালোই খাওয়া দাওয়া করেছেন ভাই। প্রতিটি খাবার দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে। খাবারের টেস্ট ভালো ছিলো,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। সব মিলিয়ে আপনারা চমৎকার সময় কাটিয়েছেন সেখানে। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 65435.53
ETH 3559.74
USDT 1.00
SBD 2.48