ইন্টারনেট বিহীন কিছুদিন।
দীর্ঘদিন পর ইন্টারনেট বিহীন অবস্থায় থেকে কেমন যেন অদ্ভুত লাগছিলো। কারণ আমাদের জীবনটা এখন পুরোপুরি ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে গিয়েছে। আমরা যতক্ষণ জেগে থাকি তার বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেটের সংস্পর্শে কাটায়। গত কয়েক বছর ধরে প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গিয়েছিলো সকালে ঘুম থেকে উঠেই একবার ডিসকর্ডে ঢু মারা। তারপর সবার সাথে ডিসকর্ডে কথাবার্তা বলা। এগুলো ছাড়াও আমাদের বাদবাকি কাজের সমস্ত কিছুই ইন্টারনেট নির্ভর। তাই আমাদেরকে প্রায় সারাদিনই ইন্টারনেটের সংস্পর্শে কাটাতে হোতো। হঠাৎ করে সেই অভ্যাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য অসম্ভব খারাপ লাগছিলো। যদিও প্রথম দু-এক দিন আমার খুব একটা সমস্যা হয়নি। কারণ সৌদি আরব থেকে ফেরার পরে শরীর ছিলো বেশ ক্লান্ত। প্রথম দুটো দিন আমি বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। কিন্তু তার পরের দিনগুলোতে সময় আর সহজে কাটতে চায় না। অবশ্য এর ভিতর আমার একটা লাভ হয়েছে। আমি দীর্ঘদিন পর হুমায়ূন আহমেদের একটা গল্পের বই পড়ে শেষ করেছি।
কিন্তু সেই বইটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর সময় যেনো আর কিছুতেই কাটছিলো না। তখন সময় কাটানোর একমাত্র মাধ্যম হয়ে গিয়েছিলো সেই পুরনো টেলিভিশন। মনে হচ্ছিল আবার সেই পুরনো দিনে ফিরে গিয়েছি। যখন আমাদের ইন্টারনেটের সাথে কোন সম্পর্ক ছিলো না। তখন আমরা সংবাদ থেকে শুরু করে বিনোদন সবকিছুর জন্য টেলিভিশনের উপর নির্ভর করতাম। একটা সময় ছিলো যখন আমি মনে করতাম ইন্টারনেটের ব্যবহার সীমিত হওয়া উচিত। এই যে আমরা সারাদিন ইন্টারনেট নিয়ে বা মোবাইল বা কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকি। এতে আমাদের সামাজিক জীবন পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। তাই আমি চাইতাম ইন্টারনেট যেনো আমাদেরকে সব সময় ব্যস্ত না রাখতে পারে তেমন অবস্থা। তবে যে কারনে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে আমি এটার সম্পূর্ণ বিপক্ষে ছিলাম। সারা দেশের মানুষ ধরে নিয়েছিলো সরকার আন্দোলনকারীদের উপরে ঝাপিয়ে পড়ার জন্যই ইন্টারনেট বন্ধ করে রেখেছে।
আবার অনেকে বলছিলো মানুষজন যাতে গুজব ছড়াতে না পারে সেজন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছিল পরিস্থিতি যেন আরো খারাপের দিকে না গড়াই সেজন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যাই হোক বেশ কয়েকদিন পরে সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট চালু করা হলেও সেটা আবার এমনভাবে যেটা ব্যবহার করে কোন কাজে করতে পারছিলাম না। বর্তমান বিশ্বে এইভাবে ইন্টারনেট শাটডাউন একটা নজিরবিহীন ঘটনা। এই ঘটনা বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করেছে। সেই সাথে এই ইন্টারনেট শাটডাউনের ফলে দেশের অর্থনীতি ও অনেকটা সমস্যার মুখে পড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ইন্টারনেট বন্ধ করার এই সিদ্ধান্তটা ছিলো চরম বাজে। সিদ্ধান্ত যাইহোক এখন অপেক্ষা করে বসে আছি যে ইন্টারনেট কবে আবার আগের মতো স্বাভাবিক হবে? কবে আবার আগের মতো স্বাভাবিক কর্মকান্ড শুরু করতে পারবো?
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একদম সত্যি কথাই বলেছেন ভাইয়া।ইন্টারনেট ছাড়া আমরা আসলে এখন কোন কাজই করতে পারিনা।আজকাল সবকিছুই অনলাইন মুখি হয়ে গিয়েছে।তবে আপনি একটি বই পড়ে শেষ করেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো। কারন হুমায়ুন আহমেদের বই মানেই একটা আকর্ষন।এই নেট না থাকার কারনে দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে এটা খুব সত্যি।এটা কাটিয়ে উঠতেও সময় লাগবে।আশাকরি সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমরা ও নিশ্চিন্তে বাইরে বের হতে পারবো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দরভাবে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
আপনি দেশে ফিরে এসেছেন জেনে খুশি হলাম। তবে আপনি এমন অদ্ভুত দেশে না এসে সেখানে থেকে যেতেন তাহলেই ভালো হতো। আমি হলে আসতামই না। সত্যিই ইন্টারনেট যেনো কাঁটাতারের মতো আমাদের শরীরে বিঁধে রয়েছে আর সেটা বন্ধ করে দিলে যেনো সব অন্ধকার হয়ে যায়। যখন ইন্টারনেট ছিল না তখনকার সময়টাই ভালো ছিল। পরিবারের সবাই একসাথে বসে আড্ডা দেওয়া থেকে শুরু করে টিভি দেখার দিনগুলো মধুর ছিল। তবে যেহেতু ইন্টারনেট চলেই এসেছে তাহলে একটু কিছু হলেই বন্ধ করার কি প্রয়োজন বুঝি না। এতদিন পর যাও দিয়েছে তাও সীমিত। হুমায়ূন আহমেদের গল্পের বই পড়ে কয়েকদিন কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ভাইয়া ইন্টারনেট বিহীন সময় কাটানোর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ইন্টারনেট ছাড়া বিগত কয়েকদিন আসলেই খুব বাজেভাবে কেটেছে। তবে এর মধ্যেও কিছু কিছু জিনিস ভালো লেগেছে, সেটা হচ্ছে মোবাইল বা ল্যাপটপের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিলো না বলে,তখন পরিবার এবং বন্ধু বান্ধবদের সাথে দারুণ সময় কাটাতে পেরেছি। যাইহোক এই যুগে ইন্টারনেট ছাড়া আমরা একেবারেই অচল। সামনে যাতে আর ইন্টারনেট বন্ধ করা না হয়,সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।