বন্ধুর সাথে ঘোরাফেরা ও আড্ডাবাজি।

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত পরশু রাতে ফেরদৌস ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফরিদপুর ফিরেছে। ফেরার সময় কথা হয়েছিলো ফেরদৌসের সাথে। ফেরদৌস নতুন চাকরিতে জয়েন করেছে। তার পোস্টিং হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি উপজেলায়। টানা তিন দিন ছুটি থাকায় ফেরদৌস আগে থেকে জানিয়েছিলো ছুটিতে বাড়িতে আসবে। আমি যখন ফেরদৌসকে ফোন দিলাম তখন ফেরদৌস জানালো সে কিছুক্ষণ আগে রওনা দিয়েছে। ফরিদপুর আসতে তার রাত হয়ে যাবে। যথারীতি ফেরদৌসের সাথে কথাবার্তা বলে ঠিক করলাম পরদিন আমরা ঘুরতে বের হবো। ফেরদৌস নিজের বাড়ির বাইরে থাকতে খুব একটা পছন্দ করে না। এই জন্য যত দূরেই চাকরি করতে যাক না কেনো ছুটি পেলেই বাড়িতে ছুটে আসে।

IMG_20230928_175106.jpg

পরদিন সকালে ফেরদৌসের সাথে কথা বলে ঠিক করলাম বিকাল চারটার দিকে দুজনে ঘুরতে বের হবো। সেই হিসাবে আমি আগে থেকেই আমার কাজকর্ম সব গুছিয়ে রেখেছিলাম। যাইহোক ঠিক চারটার সময় আমি নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হলাম। কিন্তু ফেরদৌস কে ফোন দিলে সে জানালো তার আসতে আরো ১৫ মিনিট সময় লাগবে। অগত্যা কি আর করা ? আমি ফেরদৌসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। অপেক্ষা করতে করতে একসময় দেখতে পেলাম ফেরদৌস মোটরসাইকেল নিয়ে আসছে। ফেরদৌস আমার কাছাকাছি এসে জিজ্ঞেস করলো কোন দিকে যাবো? তখন আমি তাকে বললাম রাফ্সানের এলাকার দিকে যাই। এই কথা বলার সাথেই ফেরদৌস মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে দাঁড়ালো। তারপর আমি মোটরসাইকেলে উঠে বসতেই মোটরসাইকেল চলতে শুরু করলো।


IMG_20230928_175109.jpg

বেশ কিছুদিন পর দুই বন্ধুর দেখা হওয়াতে দুজনে ধীরে ধীরে গল্প করতে করতে রাফসানের এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। তবে কিছুদূর আগানোর পরে আসরের আজান শুনতে পেলাম। কাছাকাছি একটি মসজিদ দেখে সেখানে মোটরসাইকেল থামিয়ে আমরা দুজনে নামাজ আদায় করলাম। নামাজ শেষ হলে আবারও রওনা দিলাম রাফসানের এলাকার উদ্দেশ্যে। মিনিট বিশেকের ভেতরেই আমরা রাফ্সানের শোরুমে পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছতেই রাফসান ফেরদৌসকে দেখে কিছুটা অবাক হলো। রাফসান ফেরদৌসকে বলল তুমি না চাকরিতে জয়েন করেছো? ফেরদৌস জানালো তিন দিনের ছুটি পাওয়াই বাড়িতে চলে এসেছি। তারপর তিন বন্ধু মিলে নানা বিষয় নিয়ে গল্প করতে লাগলাম।


IMG_20230928_175117.jpg

তবে গল্পের মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান অবস্থা। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ বসে গল্প করার পরে আমরা রাফসানকে বললাম চল সেই ব্রিজের উপর গিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটাই। প্রস্তাব দিতেই রাফসান রাজি হয়ে গেলো। তারপর আমরা দুই মোটরসাইকেলে চারজন রওনা দিলাম সেই ব্রিজের উদ্দেশ্যে। রাফসানের শোরুম থেকে সেই ব্রিজের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। মোটরসাইকেলে করে যেতে মিনিট দশেক সময় লাগে। তবে সেখানে যখন পৌঁছেছি ততক্ষণে সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা। সেখানে পৌঁছে কিছুক্ষণ গল্প করার পরে মাগরিবের আজান শুনতে পেলাম। আমি নামাজ পড়ার কথা বলতে রাফসান বলল একটু সামনে একটা মসজিদ আছে। ওখান থেকে নামাজ পড়ে আয়। তারপর আমি সেই মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে আবার সেই ব্রিজের উপরে ফিরে এলাম।


IMG_20230928_175112.jpg

আমি ফেরার পরেও সেখানে আমরা বসে আরও বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। আকাশে বেশ বড়সড় একটা চাঁদও দেখতে পাচ্ছিলাম। এভাবে আরো বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পরে আমি বললাম ঠান্ডা কিছু খাওয়া দরকার। লেবুর শরবত খেতে ইচ্ছা করছে। রাফসান তখন বলল তাহলে আমার শোরুমে চল। আমার শোরুমের একটু পাশেই লেবুর শরবত বিক্রি করে। এই কথা বলতেই আমরা আবার রাফসানের শোরুমের উদ্দেশ্যে ফিরতে লাগলাম। সেখানে ফিরে রাফসান আমাদেরকে বসিয়ে রেখে গেলো লেবুর শরবত অর্ডার করতে। কিন্তুু বেশ কিছুখন পার হয়ে যাওয়ার পরও দেখি লেবুর শরবতের কোন দেখা নেই। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর রাফসান ওর এক ছোট ভাইকে পাঠালো খোঁজ নিতে। পরে সেই ছেলেটা গিয়ে লেবুর শরবত নিয়ে এলো।


IMG_20230928_181624.jpg

গতকাল প্রচন্ড গরম পড়েছিলো। এই গরমের ভেতরে ঠান্ডা লেবুর শরবতের গ্লাসে চুমুক দিতেই মনটা প্রশান্তিতে ভরে গেলো। আমরা বসে পরিকল্পনা করছিলাম পরদিন কাশবন দেখতে যাওয়ার। কিন্তু হঠাৎ করে রাফসান জানালো ওর পরদিন শ্বশুরবাড়ি একটা দাওয়াত আছে। যার ফলে ওর কাছে ওর পক্ষে পরদিন যাওয়া সম্ভব হবে না। যাই হোক এবারের মত আমরা সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা ক্যানসেল করলাম। এর আগে একবার আমরা কাশফুল দেখতে সেই জায়গাটিতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বেশ ঝামেলা হয়েছিলো। তাই চিন্তা করলাম দুজন মিলে সেখানে না যাওয়াই ভালো হবে। যাইহোক লেবুর শরবত খাওয়া শেষ হলে আমরা রাফসানের কাজ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানপাটপাশা


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 11 months ago 

ফেরদৌস ভাইয়া বাড়িতে এলে আপনাদের সবার আড্ডা আরো বেশি জমে যায়। সেই ব্রিজ পাড়ে গিয়ে আড্ডা দিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। আর যে পরিমাণে গরম পড়েছে লেবুর শরবত খেলে সত্যি অনেক ভালো লাগে। যাইহোক যেহেতু গতবার কাশফুল দেখতে গিয়ে ঝামেলা হয়েছিল তাই দুজন মিলে না যাওয়াই ভালো। আশা করছি অন্য কোন একদিন সবাই মিলে ঘুরতে যাবেন। ভাইয়া আপনার অনুভূতি জেনে অনেক ভালো লাগলো।

 11 months ago 

বাহ্! ফেরদৌস ভাই চাকরিতে জয়েন করার পরপরই তিনদিনের ছুটি পেয়ে গেল। এই সুযোগে আপনি ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করার সুযোগ পেয়ে গেলেন। যাইহোক রাফসান ভাইয়ের শোরুমের কাছের ব্রীজটা খুব সুন্দর। বিকেলে বা সন্ধ্যার পর এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে খুব ভালো লাগে। ফুরফুরে বাতাস এসে শরীরটাকে একেবারে শীতল করে দেয়। যাইহোক সবাই মিলে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাই। এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

আপনি এবং আপনার বন্ধুরা মিলে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন ভাই। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড বাইরে থাকে। ঠিক ও যখন এভাবে বাড়ি আসে আমরা আগে থেকেই প্ল‍্যান করে ফেলি কোথায় কীভাবে ঘুরব। আপনার এবং ফেরদৌস ভাইয়ের ক্ষেএেও বিষয়টি এইরকম। আজ আবার আপনাদের সঙ্গে আরেক বন্ধু রাফসান যুক্ত হয়েছিল। এবং এই গরমে লেবুর শরবত সত্যি বেশ দারুণ লাগে ভাই।।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59934.86
ETH 2666.82
USDT 1.00
SBD 2.45