পদ্মায় গোসল করতে গিয়ে নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম।
যদিও গরম এতটুকুও কমেনি তবু বন্ধু ফেরদৌস ফরিদপুর আসার কারণে আমার ঘোরাফেরা শুরু হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন পর ফেরদৌস আসার কারণে দুজনের কারোরই বাসায় বসে থাকতে ইচ্ছা করছিল না। তাই গতকালকেই আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম আজকে পদ্মায় গোসল করতে যাবো। এই প্রচন্ড গরমের ভিতরে নদীর ঠান্ডা পানিতে গা ভাসিয়ে থাকার ইচ্ছা ছিলো। প্রথমে পরিকল্পনা করেছিলাম বন্ধু রাফসানকে সাথে নিয়ে গোসল করতে যাবো। কিন্তু পরবর্তীতে রাফসানের সাথে ফোনে কথা বলে জানতে পারলাম ও একটি জরুরী কাজে ব্যস্ত আছে। তাই ওর পক্ষে এখন নদীতে যাওয়া সম্ভব নয়।
তারপর আমি আর ফেরদৌস ঠিক করলাম আমরা দুজনেই গোসল করতে যাবো। এরপর চিন্তা করছিলাম কোথায় যাওয়া যায় গোসল করার জন্য? শেষ পর্যন্ত অনেক চিন্তা ভাবনা করে দুজন মিলে একটি জায়গা ঠিক করলাম। দীর্ঘদিন পর পদ্মায় গোসল করতে যাব এটা চিন্তা করতেই অনেক ভালো লাগছিলো। তাছাড়া এই প্রচন্ড গরমের ভেতরে নদীর ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে সময়টা ভালো কাটবে সেটাও মনে হচ্ছিলো। যাই হোক পরিকল্পনা করা হলো আজ বেলা বারোটার দিকে আমরা দুজন এক জায়গায় মিলিত হবো। তারপর সেখান থেকে দুজনে পদ্মার উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। তবে বারোটার দিকে আমি ফোন দিয়ে জানতে পারলাম ফেরদৌস একটি কাজে শহরে এসেছে। ও আমাকে বলল ফেরার সময় আমরা দুজন একসাথে চলে যাবো। তারপর ওর সাথে কথা বলে নির্ধারিত একটি জায়গা ঠিক করলাম যেখানে আমি দাঁড়াবো। ও আমাকে সেখান থেকে এসে নিয়ে যাবে।
জায়গাটি আমার বাসা থেকে খুব একটা দূরে নয়। তাই আমি বেলা ১২ঃ০০ টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে নির্ধারিত সে জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম। কিছুক্ষণ পর ফেরদৌস সেখানে উপস্থিত হলো। তারপর দুজন মিলে গেলাম ফেরদৌসের বাড়িতে। সেখান থেকে ফেরদৌস তার জামা কাপড় নিয়ে নিলো। তারপর আমরা দুজন পদ্মার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ফেরদৌসের বাড়ি থেকে পদ্মা নদীর দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। আর মোটর সাইকেলে যাওয়ার কারণে আমরা খুব অল্প সময় পদ্মার পাড়ে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছে আমরা যে জায়গাটি দেখতে পেলাম সেটি গোসল করার জন্য আমাদের কাছে খুবই পছন্দ হলো। আমরা তাড়াতাড়ি করে মোটরসাইকেল থেকে নেমে নদীর পানির কাছে চলে গেলাম। তারপর কাপড় চোপড় পাল্টে নদীতে নেমে গেলাম।
নদীতে নেমে আমি অবাক হয়ে গেলাম। কারণ আমি আমার জীবনে কখনো পদ্মার পানি এতটা গরম দেখিনি। তখন মনে করলাম হয়তো অল্প পানিতে নেমেছি এই জন্য গরম লাগছে। আরেকটু বেশি পানিতে গিয়ে দেখি কি হয়। কিন্তু আমি বুক সমান পানি গিয়ে দেখি সেখানেও পানি তুলনামুলকভাবে বেশ গরম। আমি জীবনে যতবারই পদ্মায় গোসল করতে এসেছি তখন নদীর পানি ঠান্ডা পেয়েছি। কিন্তু এই প্রথম আমার জীবনে পদ্মা নদীর পানি গরম দেখতে পেলাম। এই প্রচন্ড তাপদাহ পদ্মার মতো শীতল পানির প্রবাহকেও গরম করে তুলেছে। প্রকৃতি কতটা ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে এ থেকেই বুঝতে পারলাম।
সত্যি বলতে কি আমি আজকে গোসল করে মোটেও মজা পাইনি। কারন আমি যখনই পদ্মায় গোসল করতে গিয়েছি তখন পদ্মার পানিতে নামার সাথে সাথে মনটা ভালো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজকে নদীর পানির অবস্থা দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি। যাইহোক যেহেতু রোদের ভেতর এত কষ্ট করে সেখানে গিয়েছি। তাই সেখানে দুই বন্ধু মিলে গোসল করতে লাগলাম। আমাদের আশেপাশে আরও কিছু লোকজন ছিলো। তাদের ভেতর একজন লোককে দেখলাম সে তার দুটো বাচ্চাকে সাথে নিয়ে এসেছে নদীতে গোসল করতে। কিছুক্ষণ পরে আরো এমন কিছু লোক এসেছিল গোসল করতে। তাপদাহের কারণে পরিবেশ এতটাই গরম হয়ে গিয়েছে যে কয়েকটি কুকুরকে দেখলাম নদীর পানিতে গা ডুবিয়ে বসে আছে।
ঘন্টাখানেক গোসল করার পর আমি ফেরদৌসকে বললাম চলো আজকের মতো উঠি। সাধারণত আমি নদীতে গোসল করতে নামলে কখনো দু তিন ঘন্টার আগে উঠি না। আজকে এত তাড়াতাড়ি উঠতে বলায় ফেরদৌস অবাক হয়েছিল। অবশ্য ও বুঝতে পেরেছিল কেন আমি এত তাড়াতাড়ি গোসল শেষ করলাম। ফেরার পথে আমরা দুজন আলোচনা করছিলাম আবহাওয়া একটু ভালো হলে আবার নদীতে গোসল করতে আসতে হবে। কারণ আজকে নদীতে গোসল করে একেবারেই মন ভরেনি। আমরা ফেরার পথে বিকালে অন্য একটি জায়গার যাওয়ার পরিকল্পনা করতে লাগলাম। তারপর দুজনে বাড়ি ফিরে গেলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার পাড় |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ফেরদৌস ভাইয়া বাড়িতে গেলে ঈদ ঈদ মনে হয় আপনার তাই না ভাইয়া। খুব ভালো লাগে আপনাদের এই ঘোরাঘুরি পড়ে। তবে আজ পদ্মায় গোসল করতে গিয়ে ভালো লাগলো না।পানি এতোটাই গরম ছিল।সাধারণত নদীর পানি শীতল থাকে।আবহাওয়া কতোটা বিরুপ আকার ধারণ করেছে তা নদীর পানি গরম হওয়া দেখেই অনুভব করা যায়। যাই হোক একটু বৃষ্টি হলে পরিবেশ আবার শীতল হয়ে উঠবে।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
প্রচন্ড এই তাপ দহের মাঝে পদ্মা নদীর পানি গরম হয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। প্রথমবার পদ্মা নদীতে গরম পানিতে গোসল করার অনুভূতির কথা গুলো খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।