অমর একুশে ও আমার ব্যক্তিগত চিন্তা ভাবনা।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি হাঁটতে বের হয়েছিলাম। আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম নির্ধারিত সময় হাটাহাটির পরে আমি শহীদ মিনার গুলো দেখতে যাবো। কারণ আমি যদি আগে শহীদ মিনার গুলোতে যেতাম তাহলে আর আজকের হাটাহাটি করা হোতো না। যথারীতি আমি হাটাহাটি শেষ করে প্রথমে আমাদের শহরে অবস্থিত রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রী শাখায় চলে গেলাম। কারণ একটা সময় ডিগ্রি শাখার শহীদ মিনার টাকে শহরের মূল শহীদ মিনার হিসেবে দেখা হোতো। শহরের সমস্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখানে এসে ফুল দিতো। অবশ্য মাঝে মাঝে অম্বিকা ময়দানে অবস্থিত যে শহীদ মিনারটি সেখানেও ফুল দিতে দেখেছি। এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি কিছুটা সন্ধিহান। যাই হোক হাঁটাহাঁটি শেষে আমি রওনা দিলাম রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রী শাখার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তেমন কাউকেই দেখতে পেলাম না।
আমি আশা করেছিলাম সেখানে তৈরি করা বঙ্গবন্ধুর নতুন ম্যুড়ালটির সামনে হয়তো অনেক লোকজন দেখতে পাবো। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখতে পেলাম লোকজনের সংখ্যা একেবারেই কম। তারপর একটু হেঁটে সামনে এগিয়ে যখন রাজেন্দ্র কলেজের শহীদ মিনাররর সামনে পৌঁছলাম সেখানে দেখলাম জায়গাটা পুরোপুরি ফাঁকা। দুটি মেয়েকে দেখলাম শহীদ মিনারের বেদিতে উঠে ছবি তুলছে। আমিও সেখান থেকে দু তিনটি ছবি তুললাম। তারপর চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করা যায়? পরবর্তীতে মনে হোলো সবাই মনে হয় অম্বিকা ময়দানে অবস্থিত যে শহীদ মিনারটি সেখানে ফুল দিতে গিয়েছে। তখন আমি রাজেন্দ্র কলেজ ক্যাম্পাস থেকে অম্বিকা ময়দানের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম। রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রী শাখা থেকে অম্বিকা ময়দানের দূরত্ব একেবারেই কম। মাত্র ৪-৫ মিনিটে আমি সেখানে পৌঁছে গেলাম। যেটা চিন্তা করেছিলাম সেটাই হোলো। দেখতে পেলাম অম্বিকা ময়দানের শহীদ মিনারের সামনে প্রচুর ফুল রয়েছে। বুঝতে পারলাম আমি আসার অনেক আগেই সবাই ফুল দিয়ে যার যার মত বাড়ি চলে গিয়েছে। অবশ্য একুশে ফেব্রুয়ারিতে অনেকে রাত বারোটার পরেও ফুল দিতে আসে। শহরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গতকালকে রাত বারোটার সময় শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে এটা ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।
এই যে মানুষের এত আগ্রহ এই যে ফুল দেয়া নিয়ে হুড়োহুড়ি। অনেক সময় সেটা গোলমালে পর্যন্ত পৌঁছায়। এসব কিছুতেই কি আসলে ভাষা শহীদদের বা তাদের পরিবারের লোকজনের কিছু যায় আসে? আমি কেন বলেছি এ সমস্ত কিছুই লোক দেখানো তার কারণ হচ্ছে খোঁজ নিলে জানতে পারবেন ভাষা শহীদদের পরিবারের অনেকে এখনো দীনহীন ভাবে জীবন যাপন করছে। দেশের জন্য মাতৃভাষার জন্য যারা এত বড় আত্মত্যাগ স্বীকার করেছিলো তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছুই করা হয়নি। ফুল দেয়া আর নানা রকম অনুষ্ঠানের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়। কিন্তু যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছুই করা হয় না। এই কারণেই আমি এগুলিকে লোক দেখানো ছাড়া অন্য কিছু মনে করি না। যদি আমরা সত্যিকারের ভালবাসা তাদের প্রতি প্রদর্শন করতাম তাহলে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের অবস্থা এত খারাপ থাকতো না। তাদের স্মৃতির রক্ষার্থে ও যে বিশেষ কিছু করা হয়েছে এমনটা নয়। আশেপাশে যত ভীড় দেখেন যত হুড়োহুড়ি দেখেন এ সমস্ত কিছুই রাজনৈতিক। অবশ্য কিছু সাধারন মানুষও তাদের নিজেদের আবেগের জায়গা থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসে। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় সারা দেশে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার পিছনে যে পরিমাণ টাকা খরচ করা হয় তার অর্ধেক টাকাও যদি ভাষা শহীদদের পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে ব্যয় করা হোতো। তাহলে আজকে তারা অনেক ভালো একটা জীবন কাটাতে পারতো। আর ভাষা শহীদের আত্মাও শান্তি পেতো। যাইহোক এটা একান্তই আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনা। সরকারের উচিত ভাষা শহীদদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রতি নজর দেয়া। আর ভাষা শহীদদের ইতিহাস যেন সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা ঠিক অনেকে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল বেলা আবেগের জায়গা থেকে স্কুল কলেজের শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়। ছোটবেলায় আমরাও অনেক গিয়েছি, তবে এখন যাওয়া হয় না। তবে এটা ঠিক,সরকারের উচিত ভাষা শহীদদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রতি সুনজর দেওয়া। এতে করে ভাষা শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। আসলে সবকিছুই এখন লোক দেখানো হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে থাকে শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য। যাইহোক সকাল বেলা কলেজের শহীদ মিনারে গিয়ে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যিই ভাইয়া ২১ শে ফেব্রুয়ারী প্রভাত ফেরীতে সবাই বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যায়।এই একদিন ফুলে ফুলে শহীদ মিনার ভরে উঠে।বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা আমাদের সব সময় থাকা উচিত। আর সরকারের উচিত শহীদদের পরিবারের প্রতি সুদৃষ্টি স্থাপন করা।আপনার চিন্তা ভাবনা গুলো সত্যিই প্রশংসনীয় ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে অমর একুশে নিয়ে আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।