জীবনের প্রথম ক্যাম্পিংয়ের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং তান্দুরি বিরিয়ানি খাওয়ার অভিজ্ঞতা।
সেদিন সকাল সকাল আমি আর ফেরদৌস চলে গিয়েছিলাম রাফসানের এলাকায়। তারপর রাফসানের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে রাফসান বলল গত দুদিন ধরে তো বৃষ্টি হয়েছে। তাহলে চল সবাই মিলে একবার দেখে আসি সেখানকার কি অবস্থা? আমার আর ফেরদৌসের আইডিয়াটা খুবই পছন্দ হোলো। সাথে সাথেই আমরা তিন বন্ধু রওনা দিলাম আমাদের আগে থেকেই ঠিক করে রাখা স্পটের উদ্দেশ্যে। জায়গাটা ছিল রাফসানের শোরুম থেকে ২ কিলোমিটার দূরে একদম নদীর পাড়ে। জায়গাটা আমাদের সবারই বেশ পছন্দ হয়েছিলো। সেখানে পৌঁছে দেখলাম জায়গাগুলি মোটামুটি শুকিয়ে গিয়েছে। যেহেতু আমরা রাতে ক্যাম্পিং করব তার আগে সারাদিন রোদ হলে আরো কিছুটা শুকিয়ে যাবে। তখন আমাদের আর কোন সমস্যা হবে না। যাইহোক জায়গাটা ঘুরে ফিরে দেখে আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট হলাম।
তারপর ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রামটা কিভাবে করা হবে সেটা নিয়ে আলাপ আলোচনা হতে লাগলো। আমি আর ফেরদৌস ঠিক করেছিলাম আমরা রাতে ক্যাম্প ফায়ারের আয়োজন করবো। সেই সাথে চিকেন বারবিকিউ করা হবে রাতের খাবার হিসাবে। কিন্তু রাফসান বলল ভেজা মাটির উপর এগুলো করতে ঝামেলা হবে। আমরা এবার শুধু ক্যাম্পিংটা করি এখানে। এবার যদি ভালোভাবে ক্যাম্পিং করতে পারি তাহলে পরেরবার আরো বড় করে আয়োজন করা যাবে। যেহেতু পরিস্থিতি কিছুটা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তাই আমি আর ফেরদৌস রাফসানের এই প্রস্তাব মেনে নিলাম। তারপর ক্যাম্পিংয়ের সবকিছু নিয়ে খুঁটিনাটি কথাবার্তা বলে ফাইনাল করে আমি আর ফেরদৌস বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। এদিন অবশ্য আমার স্ত্রী বাড়িতে ছিলো না। সে গিয়েছিল নানি বাড়ি বেড়াতে। তাই আমার বাসায় কোন খাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো না। সে কারণে আমি আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম যাওয়ার সময় বাইরে থেকে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর বাসায় ফিরবো। কোথায় খাবো সেটাও আগেই ঠিক করেছিলাম।
চিন্তা করেছিলাম কাবাব স্টেশন নামের যে নতুন কাবাবের রেস্টুরেন্টটা হয়েছে সেখানে নতুন একটি আইটেম চালু করেছে তারা। নাম দিয়েছে চিকেন তান্দুরি বিরিয়ানি। চিকেন তান্দুরি এবং বিরিয়ানি দুটো খাবারই আমার কাছে খুবই পছন্দের। তবে যেহেতু এই দুটোর কম্বিনেশনে নতুন একটি খাবার তারা তৈরি করেছে তাই খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছিলো আগেই। সেই কারণেই সেদিন শহরে ফিরে আমি সরাসরি চলে গিয়েছিলাম কাবাব স্টেশন নামের সেই রেস্টুরেন্টে। এই রেস্টুরেন্ট থেকে কিছুদিন আগেও আমি কাবাব খেয়েছিলাম এবং বাসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। তাদের কাবাব টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিলো। এই কারণেই পরবর্তীতে আবার সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। যাইহোক রেস্টুরেন্টে গিয়ে তান্দুরি বিরিয়ানির অর্ডার করলাম। অর্ডার করার কয়েক মিনিটের ভেতরেই আমার সামনে পরিবেশন করলো গরম গরম তান্দুরি বিরিয়ানি।
খাবারটা দেখেই মনে হচ্ছিল খেতে বেশ ভালো হবে। খাবারটা মুখে দিয়ে আসলেই বেশ ভালো লাগলো। তবে এই বিরিয়ানির একটা ব্যাপার একটু অন্যরকম লেগেছে আমার কাছে। সেটা হচ্ছে আমি যে ধরনের বিরিয়ানি খাই সেগুলো সাধারণত কিছুটা মিষ্টি ফ্লেভারের হয়ে থাকে। এই বিরিয়ানিটা ছিল বেশ ঝাল। এইরকম ঝাল বিরিয়ানি আমি এর আগে খাইনি। তবে সাথের চিকেন তান্দুরিটা ছিল বেশ মজার। বিরিয়ানিটা যদি আর একটু কম ঝাল হতো তাহলে আমার জন্য ভালো হতো। অবশ্য যারা ঝাল পছন্দ করে তাদের জন্য এই বিরিয়ানিটা একেবারে পারফেক্ট। খাওয়ার এক পর্যায়ে আমি ওয়েইটারকে ডেকে মিন্ট লেমোনেড অর্ডার করলাম ড্রিংস হিসাবে। ওয়েটার বললো বিদ্যুৎ না থাকার কারণে এখন মিন্ট লেমোনেড হবে না। তখন সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি অন্য কোন সফট ড্রিংকস নেব নাকি? তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনাদের কাছে কি মোজো আছে? তখন সে বলল না তাদের রেস্টুরেন্টে মোজো নেই। তবে আমি চাইলে সে আমার জন্য এনে দেবে। আমি তখন তাকে এনে দিতে বললাম। এর ভেতরে সে যখন মোজো নিয়ে ফিরে এসেছে ঠিক তখনই কারেন্ট চলে এসেছে। তখন সে আমাকে জিজ্ঞেস করল যে আমি মোজো খাবো নাকি সে মিন্ট লেমোনেড বানিয়ে দেবে? তখন আমি তাকে বললাম মিন্ট লেমোনেড হলেই ভালো হয়। তখন সে আমাকে বলল কোন সমস্যা নেই সে মোজো যে দোকান থেকে এনেছে সেখানে ফেরত দিয়ে দেবে। তারপর মিনিট দুয়েকের ভেতর সে আমার জন্য ঠান্ডা এক গ্লাস মিন্ট লেমোনেড নিয়ে এলো। ঝাল ঝাল বিরিয়ানি খাওয়ার পর মিন্ট লেমোনেডের গ্লাসে চুমু দিয়ে বেশ ভালো লাগলো। তারপর আমার মিন্ট লেমোনেড শেষ হলে আমি বিল মিটিয়ে ওয়েটারকে কিছু টিপস দিয়ে বাসায় ফিরে এলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অবশেষে তাহলে আপনারা ক্যাম্পিংয়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পেরেছেন, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। যেহেতু রাফসান ভাই চেয়ারম্যান এর ভাতিজা,সেহেতু রাফসান ভাইদের এলাকায় ক্যাম্পিং করার আইডিয়াটা খুব ভালো হয়েছে। আশা করি আপনারা বেশ উপভোগ করবেন। যাইহোক বাসায় সুমা আপু ছিলো না বলে, বাহিরে থেকে ঝাল ঝাল তান্দুরি বিরিয়ানি এবং মিন্ট লেমোনেড খেয়ে বাসায় ফিরলেন। সবমিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জীবনের প্রথম ক্যাম্পিংয়ের প্রস্তুতি গ্রহন করলেন ভাইয়া জেনে ভালো লাগলো। যেহেতু রাফসান ভাইয়ার চাচা চেয়ারম্যান তাই ওই এলাকাতেই ভালো হবে।আপনারা খুব বেশী ইনজয় করবেন এমনটাই আশাকরি। বাসায় আপু ছিল না,নানা বাড়িতে গিয়েছিল।তাই আপনি বাইরে থেকে তান্দুরি বিরিয়ানি খেয়ে বাসায় গেলেন।সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।