দিয়াবাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার বাজে অভিজ্ঞতা সাথে মজার খাওয়া দাওয়া (শেষ পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কোনো জায়গায় ঘুরতে গিয়ে যদি সেখানে কাঙ্খিত পরিবেশ না পাওয়া যায় তাহলে ঘোরাফেরার আনন্দটা নষ্ট হয়ে যায়। সেদিন আমাদেরও সেই অবস্থা হয়েছিলো। যদিও এখানে আমাদেরও কিছুটা সমস্যা ছিলো। কারণ আমরা বাসা থেকে বের হতে দেরি করে ফেলেছিলাম। আমরা যদি সময় মতো বাসা থেকে বের হতে পারতাম তাহলে আরো আগে সেখানে পৌঁছাতে পারতাম। আগে পৌঁছাতে পারলে সেখানকার নোংরা পরিবেশ দেখে অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ থাকতো। কিন্তু সেদিন আমাদের সেখানে পৌঁছতে সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়েছিলো। যার ফলে অন্য কোথাও যাওয়ার আর সুযোগ ছিলো না। যাইহোক যেহেতু ঘোরাফেরাটা ভালো হোলো না তখন আমরা ঠিক করলাম এখন আমরা বউবাজার নামক জায়গাটাতে যাবো। সেখানে গিয়ে দেখি কি খাওয়া যায়?

IMG_20240131_183829.jpg

আমরা অটোরিকশা করে বউবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। জায়গাটা কাছে হওয়ায় খুব অল্প সময়ে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলাম। তারপর সেখানকার দোকানগুলো ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম। সেখানে ভালো মানের কোনো রেস্টুরেন্ট বা হোটেল ছিলো না। সবই ছিল টং দোকান ধরনের। কোন রকমে কিছু উপকরণ দিয়ে ঘিরে ভেতরে চেয়ার-টেবিল রেখে কাস্টমারদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সেখানকার খাবার গুলো দেখে মনে হচ্ছিলো বেশ মজাদার। যদিও বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টে প্রায় একই রকম খাবার ছিলো। সেখানে ছিল মুরগির মাংস, হাঁসের মাংস, কলিজা ভুনা, কালা ভুনা আরো বেশ কিছু ধরনের খাবার। সাথে ছিল পড়োটা বা রুটি। আবার কিছু ফুড কার্ড দেখতে পেলাম যেখানে ভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়। আবার বেশ কিছু চায়ের দোকানে দেখতে পেলাম যেখানে মাটির পাত্রে চা পরিবেশন করছিলো। সেখানে ঘুরতে গিয়ে দেখতে পেলাম নাগরদোলা এবং আরো কয়েকটি রাইড রয়েছে বাচ্চাদের চরার জন্য। আমাদের সাথে থাকা বাচ্চারা বায়না ধরলো সেখানে চড়ার জন্য। কিন্তু আমাদের হাতে আসলে বেশি সময় ছিলো না। কারণ স্টেশন থেকে লাস্ট মেট্রো ছাড়বে ৮ টার দিকে। যার ফলে তার আগে আমাদেরকে মেট্রো স্টেশনে পৌঁছাতে হবে। না হলে মেট্রো মিস হয়ে যেতে পারে। আর এত দূরে এসে মেট্রো মিস করলে খুব ঝামেলায় পড়তে হবে। সে কারণে আমরা দেরি না করে দেখে শুনে একটি রেস্টুরেন্টে বসলাম খেতে। সেখানে আমরা খাবার গুলো দেখে অর্ডার করলাম হাঁসের মাংস আর কালা ভুনা। সাথে নিয়েছিলাম পরোটা।


IMG_20240131_183826.jpg

আমরা সেখানে টেবিলে বসার কিছুক্ষণের ভেতরে আমাদের সামনে খাবার পরিবেশন করলো। কিন্তু খাওয়ার সময় হঠাৎ করে ঘটলো বিপত্তি। আমার মেয়ে খেতে গিয়ে তার গলায় খাবার বেধে গিয়েছিলো সম্ভবত। প্রথমে মনে করেছিলাম তেমন কোন সমস্যা হবে না। পরে দেখি ওর চেহারা একটু অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। তখন আমি ওকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বমি করতে বললাম। কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পরে মেয়ে বমি করার পরে স্বাভাবিক হয়েছিলো। মেয়ের অবস্থা দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এই ঝামেলার পরে আমার মেয়ে ভয়ে আর কিছু খেতে চাই নি। আমরা খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ করে পাশেই একটি দোকানে গেলাম চা খেতে। সেখানে মাটির পাত্রে করে চা পরিবেশন করা হচ্ছিলো। এদিকে তারা যখন আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি খুব বেশি সময় নেই। এই জন্য আমি তাদেরকে তাড়া দিলাম তাড়াতাড়ি চা শেষ করার জন্য।


IMG_20240131_182225.jpg

IMG_20240131_182218.jpg

তারপর চা খাওয়া শেষ হলে আমরা দ্রুত অটো রিক্সা করে মেট্রো স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। সেখান থেকে অবশ্য মেট্রো স্টেশনের দূরত্ব ছিল একেবারেই কম। যার ফলে আমরা অতি অল্প সময়ে মেট্রো স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেখানে পৌঁছে টিকিট কাউন্টার প্রায় খালি দেখতে পেলাম। আমরা দ্রুত টিকিট কেটে তারপর গিয়ে মেট্রোর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। প্লাটফর্মে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের ভেতরেই মেট্রো চলে এলো। তবে আমরা আসার সময় যে ভুল করেছিলাম যাওয়ার সময় আর সে ভুল করিনি। কারণ আমরা পরে জানতে পেরেছিলাম মেয়েদের জন্য দুটো আলাদা কম্পার্টমেন্ট রয়েছে মেট্রোতে। সেই কারণে আমরা সাথে থাকা মেয়েদেরকে সেই কম্পার্টমেন্টে উঠতে বললাম। আর আমরা উঠলাম অন্য কম্পার্টমেন্টে। ফেরার সময় মেট্রো অনেকটা ফাঁকা ছিলো। আমরা বেশ আরামেই ফিরতে পেরেছিলাম। এভাবেই সেদিনের ঘোরাফেরা শেষ হয়েছিলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানবউবাজার, উত্তরা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

জি ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন কোথাও ঘুরতে গিয়ে যদি পরিবেশ ঠিকমতো পাওয়া না যায় তাহলে ঘোরার আনন্দটাই নষ্ট হয়ে যায়। হাঁসের মাংস এবং কালা ভুনা খেতে আমার বেশ ভালোই লাগে কিন্তু জানিনা আপনার খাওয়া হয়ে কালা ভুনা কেমন হয়েছিল। আর আপনার বাচ্চার গলায় খাবার আটকে যাওয়ার বিষয়টি সত্যি এক কষ্টকর মুহূর্ত ছিল। কেননা সন্তানের কিছু হলে মা-বাবার কোন ভাবেই ভালো লাগে না। তাও যদি আবার সেটা হয় খাওয়ার সময়। অবশেষে আপনারা স্টেশনে গিয়ে মেট্রো পেয়েছিলেন নইলে হতো বাসায় পৌঁছাতে অনেক ভোগান্তি হতো।

 4 months ago 

আসলেই ভাই আপনারা আগে আগে সেখানে পৌঁছাতে পারলে, এমন পরিবেশ দেখে অন্য জায়গায় যেতে পারতেন। যাইহোক খাওয়ার সময় আপনার মেয়ের গলায় খাবার আটকে গিয়েছিল এবং বমি করেছিল,এটা জেনে খুব খারাপ লাগলো ভাই। হয়তোবা তাড়াহুড়া করে খাবার খাচ্ছিলো,তাই এমনটা হয়েছিল। যাইহোক পরবর্তীতে আপনারা খাওয়া দাওয়া শেষ করে, মেট্রোতে চড়ে ঠিকঠাক মতো বাসায় ফিরেছেন, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। সম্ভবত মেট্রোতে একেবারে সামনের দুটি কম্পার্টমেন্ট মেয়েদের জন্য ফিক্সড করা। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আসলে দাদা সময়মতো কোন জায়গায় না পৌঁছাতে পারলে অনেক ধরনের বিপত্তি হয়। সবথেকে বড় যে ব্যাপারটা হয় সেটা হচ্ছে, সব কাজে তাড়াহুড়ো চলে আসে। তবে আপনাদের খাওয়া দাওয়া করার কথা শুনে তো বেশ ভালো লাগলো, কিন্তু আপনার মেয়ের গলায় আবার খাবার আটকে যাওয়ার ব্যাপারটা শুনে একটু ভয় পেয়েছিলাম আমি। কারণ গলায় খাবার আটকে গেলে অনেক সময় অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত যে কোন সমস্যা হয়নি এটা শুনে অনেকটা স্বস্তি পেলাম। তবে সব শেষে আপনারা ঠিকঠাক মতো বাড়ি আসতে পেরেছেন, এটাই অনেক বড় ব্যাপার।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66120.88
ETH 3555.65
USDT 1.00
SBD 3.12