দীর্ঘদিন পর ভাগ্নেকে সাথে নিয়ে ঘোরাফেরা ও হালকা খাওয়া-দাওয়া করা।

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago (edited)

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতকাল ঢাকায় এসেছি জরুরী কাজে। ঢাকায় পৌঁছে প্রথমে গিয়েছিলাম আমার খালাতো বোনের বাসায়। সেখান থেকে সন্ধ্যার দিকে আমি আমার বড় বোনের বাসায় বনশ্রীতে পৌঁছেছিলাম। জার্নি করলে আমি এমনিতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। এবার জার্নি করে আরও বেশি ক্লান্ত লাগছিলো। কারণ বেশিরভাগ সময় পরিবার নিয়ে জার্নি করলে সাথে বেশ কিছু লাগেজ হয়ে যায়। জার্নির সময় লাগেজ টানাটানি করা বেশ ক্লান্তিকর একটা অভিজ্ঞতা। এবার যেহেতু সাথে পরিবার নিয়ে এসেছি তাই এবারও লাগেজ ছিলো কয়েকটি। যাইহোক বোনের বাসায় যখন সন্ধ্যায় পৌঁছালাম তখন আপুর সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে চলে গেলাম ঘুমোতে। কারণ শরীরটা প্রচন্ড টায়ার্ড লাগছিলো। ঘন্টাখানেকের একটা ঘুম দিয়ে যখন উঠলাম তখন টায়ার্ডনেসটা পুরোপুরি কেটে গিয়েছিলো। ঘুম থেকে উঠে মনে হল ভাগ্নেকে নিয়ে একটু বাইরে থেকে হাটাহাটি করে আসি।

IMG_20231230_221013.jpg

ভাগ্নেকে বাইরে যাওয়ার কথা বলতেই গিয়ে সে রাজি হয়ে গেলো। তারপর মামা ভাগ্নে মিলে বের হলাম বনশ্রীর রাস্তা দিয়ে হাটাহাটি করতে। আমার ভাগ্নে খেতে খুব পছন্দ করে। তাই আমি হাঁটাহাঁটির ভেতরে তাকে জিজ্ঞেস করছিলাম সে কি খেতে চায়? তবে সে এখন কিছুটা বড় হওয়ায় মনে হয় খাওয়ার কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছিলো। তাকে অনেক কিছুই খাওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু সে কোনটাতেই রাজি হচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত যখন একটি ওয়াফেল এর দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম ওয়াফেল খাবে নাকি? তার মুখ দেখে মনে হোলো ওয়াফেল খাওয়ার প্রতি তার একটা আগ্রহ আছে। তখন আমি তাকে নিয়ে সেই দোকানটাকে ঢুকলাম। দোকানটার ভিতরে ঢুকে বেশ ভালো লাগছিলো দেখতে। পুরো দোকানের ওয়াল তারা এক ধরনের ওয়ালপেপার দিয়ে ঢেকে দিয়েছে। যার ফলে দোকানের ভেতরে চেহারাটা পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে। খুব সাধারণ চেহারার একটি দোকান কেও বেশ কালারফুল দেখাচ্ছিলো। যাই হোক আমি সেখানে ঢুকে ভাগ্নেকে মেনু কার্ড দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কোনটা খাবে দেখো? পরে সে একটা স্ট্রবেরি ফ্লেভার দেয়া ওয়াফেল অর্ডার করলো।


IMG_20231230_221015.jpg

সে দোকানে ছিল পে ফার্স্ট সিস্টেম। মানে কোন খাবার অর্ডার করতে হলে আগে আপনাকে টাকা পরিশোধ করতে হবে। আমি কাউন্টারে গিয়ে টাকা পরিশোধ করে দিয়ে একটি টেবিলে বসলাম। এর ভেতরে আমার ভাগ্নে এই দোকানদারকে নানা রকম প্রশ্নে বেতি ব্যস্ত করে তুলেছিলো। তার কৌতূহলের কোন শেষ নেই। তাকে যেখানেই নিয়ে যায় সেখানেই সে মানুষজনের সাথে নানা রকম কথা বলতে শুরু করে। আর যে কোন বিষয়ে তার কৌতূহল মারাত্মক লেভেলের। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে সেটা আরো বেশি। যাই হোক অর্ডার দেয়ার কিছুক্ষণের ভেতরেই তারা ওয়াফেল পরিবেশন করলো। টেবিলে ওয়াফেল দেয়ার সাথেই আমার ভাগ্নে খাওয়া শুরু করলো। কিছুটা খাওয়ার পরে আমার হঠাৎ করে মনে পড়লো আমি তো ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছি। তখন তার আধা খাওয়া ওয়াফেলের একটা ছবি তুলে নিলাম। ভাগ্নেকে জিজ্ঞেস করলাম খেতে কেমন? সে বলল বেশ ভালই আছে। তারপর তার ওয়াফেল খাওয়া শেষ হলে আমরা সেই দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম। তারপর দুই মামা ভাগ্নে আবার হাঁটতে শুরু করলাম।


IMG_20231230_221603.jpg

আর আমি একটু পর পর তাকে জিজ্ঞেস করছিলাম আর কিছু খাবে কিনা? একটা পর্যায়ে আমরা একটি দোকান দেখতে পেলাম যেখানে সিঙ্গারা, সমুচা, চিকেন পাফ, চিকেন বান আরো বেশ কিছু খাবার দেখতে পাচ্ছিলাম। আমার ভাগ্নে বলল সেই দোকানের চিকেন পাফটা খেতে নাকি বেশ ভালো। তখন আমি আমার আর আমার ভাগ্নের জন্য দুটো চিকেন পাফ নিলাম। সেটা খেতে আসলেই বেশ ভালো ছিলো। সেখানে খাওয়া শেষ হলে আমরা আবার সামনের দিকে আগাতে লাগলাম। কিছু সামনে যাওয়ার পরে আমরা সিপির একটি আউটলেট দেখতে পেলাম। সিপির আউটলেটে চিকেন সাসলিক টাইপের একটা আইটেম পাওয়া যায়। যেটা আমার নিজের কাছে খুব ভালো লাগে। কিন্তু সেদিন গিয়ে সেটা পেলাম না। তখন আমি আমার ভাগ্নেকে জিজ্ঞেস করলাম কিছু খাবে নাকি? মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম খাওয়ার কিছুটা আগ্রহ রয়েছে। তখন জিজ্ঞেস করলাম কি খাবে? তখন সে চিকেন বল খেতে চাইলে সেখান থেকে চিকেন বল তাকে কিনে দিলাম। তারপর খেতে খেতে মামা ভাগ্নে দুজন বাসার দিকে ফিরতে লাগলাম। ভাগ্নেকে সাথে নিয়ে হাঁটছিলাম আর চিন্তা করছিলাম মানুষ কত দ্রুত বড় হয়ে যায়। কিছুদিন আগেও ভাগ্নে কতো ছোটো ছিলো। এখন লম্বায় আমাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে তার দুষ্টুমি এখনো আগের মতই রয়েছে। একমাত্র ভাগ্নে হওয়াতে ওর প্রতি আমাদের পরিবারের সকলেরই একটা আলাদা মায়া কাজ করো। যাই হোক দীর্ঘদিন পর তাকে সাথে নিয়ে ঘোরাফেরা করে সময়টা বেশ ভালোই কাটলো।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

জার্নির সময় লাগেজ টানাটানি করা খুবই বিরক্তিকর একটি কাজ। যাইহোক ভাগ্নেকে নিয়ে বেশ ভালোই হাঁটাহাঁটি করেছেন ভাই। আপনার ভাগ্নে আসলেই লজ্জা পেয়ে খাওয়ার কথা কিছু বলতে পারেনি। যাইহোক আপনি বারবার তাকে জিজ্ঞেস করে অনেক কিছুই খাইয়েছেন। তবে আপনার ভাগ্নের যেহেতু যেকোনো বিষয়ে কৌতুহল মারাত্মক লেভেলের, তাহলে আমি মনে করি সে জীবনে অনেক কিছুই জানতে এবং শিখতে পারবে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57849.42
ETH 3122.29
USDT 1.00
SBD 2.43