বন্ধু ফেরদৌসের খরগোশ কেনার গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কিছুদিন আগে ফেরদৌস ফরিদপুর এলে দুই বন্ধু মিলে নানা বিষয় নিয়ে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে ফেরদৌস বলল ফরিদপুরে খরগোশ কোথায় কিনতে পাওয়া যায়? আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম কেনো খরগোশ দিয়ে কি হবে? তখন ও বলল ওর বাসায় সর্বমোট তিনটা বাচ্চা রয়েছে। ওর নিজের একটা ছেলে আর বড় ভাইয়ের দুটো মেয়ে। তিনটি বাচ্চাই সারাদিন বাসায় বাইরে গিয়ে খেলাধুলা করে। তাছাড়া ওর বাসার সামনে রয়েছে রাস্তা। যেই রাস্তা দিয়ে সারাদিন মোটরসাইকেল যাতায়াত করে। যার ফলে বাচ্চারা বাড়ির বাইরে গেলে ওদেরকে খুব টেনশনে থাকতে হয়। এই কারণেই ফেরদৌস ঠিক করেছে বাচ্চারা যাতে বাড়ির ভেতরেই থাকে সে কারণে ওদেরকে কোন একটা পোষা প্রাণী কিনে দেবে। যাতে বাচ্চারা সারাদিন ওটা নিয়েই খেলাধুলা করে। এই চিন্তা থেকেই ফেরদৌস খরগোশের খোঁজ করছিলো।

IMG_20240222_113229.jpg

আমি ফেরদৌস কে বললাম খরগোশ কোথায় পাওয়া যায় এটা নিয়ে আমার খুব একটা ভালো ধারণা নেই। তবে তুমি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারো। এর আগে শুনেছিলাম বাজারে খরগোশ কিনতে পাওয়া যায়। তারপর ফেরদৌস খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলো বাজারে খরগোশ কিনতে পাওয়া গেলেও সেখানে দাম বেশি। তবে ফরিদপুর রেলস্টেশনের সামনে সপ্তাহে একদিন এসব পোষা প্রাণীর হাট বসে। সেখানে নাকি কম দামে খরগোশ কবুতর এগুলো কিনতে পাওয়া যায়। আমি অবশ্য জানতাম সেই হাটটা হয় কবুতরের। সেখানে যে খরগোশ পাওয়া যায় এটা আমার জানা ছিলো না। কয়েকদিন পরে ফেরদৌস আমাকে ফোন দিয়ে বলল সকালের দিকে কাজ না থাকলে রেল স্টেশনে কাছে চলে এসো। ওখান থেকে খরগোশ কিনবো। যথারীতি আমি সময় মত সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি ফেরদৌস আগে থেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে।


IMG_20240222_113458.jpg

IMG_20240222_113526.jpg

ফেরদৌস সাথে করে তার ছেলে এবং ভাতিজিকে নিয়ে গিয়েছিলো। আমরা প্রথমে ঘুরেফিরে পুরো হাটটা দেখতে লাগলাম। হাট বলতে আসলে খুব বড়ো কিছু না। ফরিদপুর রেলস্টেশনের সামনে একটা চত্বর রয়েছে। সেখানে বেশ কিছু লোকজন এসেছে কবুতর, খরগোশ আর কয়েক ধরনের পাখি নিয়ে। শুনতে পেলাম সপ্তাহে একদিন নাকি এখানে এরকম বেচাকেনা হয়। আমরা প্রথমে ঘুরে ফিরে বিভিন্ন রকমের কবুতর দেখতে লাগলাম। কবুতর দেখা শেষ হলে দেখতে পেলাম কয়েকজন খরগোশ বিক্রেতাও সেখানে রয়েছে। ফেরদৌস জানালো ফরিদপুর বাজারে থেকে এখানে খরগোশ কম দামে পাওয়া যায়। আমরা ঘুরে ফিরে প্রথমে খরগোশগুলো দেখতে লাগলাম। কিছু খরগোশ ছিল একেবারেই ছোট বাচ্চা। আর কিছু ছিলো মাঝারি আকারের। দেখেশুনে আমরা একজন খরগোশ বিক্রেতার সাথে দরদাম করতে লাগলাম। এর ভেতরে ফেরদৌসের ছেলে আর ভাতিজি রাস্তার অপর পাশ থেকে আমাদের সাথে এসে দাঁড়ালো। তাদের চোখমুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম খরগোশ পাবার আনন্দে তারা রীতিমতো আত্মহারা হয়ে রয়েছে।


IMG_20240222_113247.jpg

IMG_20240222_113550.jpg

প্রথমে আমরা দামাদামি করার সময় খরগোশ বিক্রেতা আমাদের পছন্দমতো দামে দিতে রাজি হোলো না। পরে আমরা যখন অন্য বিক্রেতার দিকে গেলাম দামাদামি করার জন্য। তখন পেছন থেকে সে বিক্রেতা আমাদেরকে ডাক দিলো। তারপর আরো কিছুক্ষণ দামাদামি করার পর শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে খরগোশ কেনা হোলো। তবে শুধু যে খরগোশ কেনা হয়েছিল তা নয়। খরগোশের সাথে খাঁচাও ছিলো। ফেরদৌস আমাকে জানালো এখান থেকে যে দামে খরগোশ কেনা হয়েছে বাজার থেকে খরগোশ কিনতে গেলে এর ডবল দাম দিতে হোতো। যাই হোক খরগোশ কেনা শেষ হলে ফেরদৌস বাচ্চাদের নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো। আমিও আমার মতো বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 months ago 

বাচ্চারা বেশ খুশি হয় যখন এদের জন্য কোন পোষাপ্রানী আনা হয়,আসলে বাসায় থাকতে একঘেয়েমি চলে আসে যার জন্য বাহিরে চলে যায়।আপনার বন্ধু বেশ ভালো বুদ্ধি বের করেছে।খরগোশ দেখতে আমার কাছেও ভালো লাগে।ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

ফেরদৌসের বুদ্ধিটা আমারও পছন্দ হয়েছে আপু। আসলে বাচ্চাদের বাসায় রাখার জন্য এই ধরনের কাজের বিকল্প নেই। তবে কতোদিন এই খরগোশ বেঁচে থাকে এখন সেটাই দেখার বিষয়।

 3 months ago 

বাচ্চাদের জন্য খরগোশ কিনেছেন খুব ভালো করছেন ৷ আসলে ছোট বাচ্চারা এটা দিয়ে বেশ মজাই পাবে ৷ কারন খরগোশ দেখতে অনেক কিউট চোখ গুলো অনেক ভালো লাগে ৷ আর আমার নিজ বাড়িতেও আছে ৷ তবে ভাই আমার তো ঘরের মেজে মাটির ৷ মাটি খুড়ে অবস্থা খারাপ ৷ তবে এখন প্রায় ৫টা আছে সবমিলে বাড়িতে থাকলে অনেক ভালো লাগে ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই খরগোশ কেনার এতো সুন্দর একটা মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য ৷

 3 months ago 

খরগোশ আমি কিনিনি ভাই। কিনেছে আমার বন্ধু ফেরদৌস। তবে খরগোশ প্রাণীটা দেখতে আমারও বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ফেরদৌস ও তার ছেলে এবং ভাতিজিকে সাথে নিয়ে খরগোশ কেনার গল্প। আপনারা ফরিদপুর রেল স্টেশনে খরগোশ কিনতে গিয়েছিলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। তবে আপনারা খরগোশ কিনতে গিয়ে দামাদামি শেষে অপর খরগোশ বিক্রেতার কাছে যখন গিয়েছিলেন পেছন থেকে ডাক দিয়ে আপনাদের সাথে আরো কিছু সময় দামাদারি করে খরগোশ দিয়েছিল এবং খরগোশের সাথে খাঁচা কিনেছেন জানতে পারলাম। তবে আপনার বন্ধু বলেছিল বাজার থেকে খরগোশ কিনতে হলে ডাবল দাম দিয়ে খরগোশ কিনতে হতো। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

 3 months ago 

খরগোশের দামটা উল্লেখ করে দিলে অনেকেই আইডিয়া পেতো। যাইহোক আমাদের গ্রামের বাড়িতে ছোট ভাই খরগোশ কিনেছিলো, বেশ কয়েক মাস আগের ঘটনা একজোরা এক হাজার টাকা। খরগোশ প্রচুর খায়, শেষে আম্মা বিরক্ত হয়ে ছোট ভাইকে বকা দিলে ছোট ভাই আবার ফেরত দিয়ে আসছে।

 3 months ago 

খরগোশের দামটা পুরোপুরি মনে নেই ভাই। তবে সম্ভবত খাঁচাসহ ৬০০ টাকা নিয়েছিলো একজোড়া। তবে অনেকেই এই প্রাণীটা আগ্রহ করে পালতে শুরু করে। কিন্তু পরবর্তীতে বিরক্ত হয়ে যায়।

 3 months ago 

ফেরদৌস ভাই চমৎকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাসায় খরগোশ থাকলে বাচ্চারা অনেক আনন্দ করতে পারবে। তাহলে খেলাধুলা করতে রাস্তায় তেমন বের হবে না। বাজারের চেয়ে হাটের মধ্যে সব জিনিসের দাম তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত হাট থেকে খরগোশ কিনতে পেরেছেন আপনারা, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। খরগোশ আমারও ভীষণ পছন্দ এবং খরগোশ কেনার কথা ছিলো আমার। কিন্তু খরগোশ বাড়ির পরিবেশ নষ্ট করে ফেলে। পরিষ্কার করতে করতে নাকি মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তাই খরগোশ না কিনে আমি ময়না পাখি কিনেছিলাম ৬৫০০ টাকা দিয়ে। যাইহোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

খরগোশ পোশার কিছু অসুবিধা আছে সেটা আমিও শুনেছি। আর বেশিরভাগ সময় দেখা যায় বাচ্চাদের অল্প কয়েক দিনের ভেতরেই আগ্রহ কমে যায় এই সমস্ত প্রাণীর ব্যাপারে। এখন দেখা যাক ফেরদৌসের বাচ্চাটা কতদিন খরগোশ নিয়ে খেলাধুলা করে।

 3 months ago 

হ্যাঁ ভাই একেবারে যথার্থ বলেছেন, বাচ্চাদের আগ্রহ কয়েকদিনের মধ্যেই চলে যায়। দেখা যাবে কয়েকদিন পর খরগোশের প্রতি কোনো আগ্রহ থাকবে না বাচ্চাদের। তবে বাচ্চাদের জন্য খরগোশ পোষার আইডিয়াটা দারুণ ছিলো।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

বাড়ির বাচ্চাদের ঘরে রাখার জন্য আপনার বন্ধুর পরিকল্পনা টি বেশ ভালো লাগলো।খরগোশ বাড়িতে পালন করলে বাচ্চাদের সময় কেটে যাবে ওদের পেছনেই।তাহলে আর বাসার বাইরে রাস্তায় যাবেনা।যেহেতু রাস্তায় যানবাহন চলে বাচ্চাদের জন্য রিস্কি।খরগোশ পেয়ে বাবুরা খুবই আনন্দিত।আমারও বেশ ভালো লাগে এই প্রাণী।বেশ সুলভ মূল্যেই আপনারা খরগোশ কিনেছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

বাসার সামনে রাস্তা থাকলে আমার বাচ্চাদের নিয়ে একটু টেনশন হয়। কারণ এখন আমাদের দেশে যেভাবে এলাকার ভিতরের রাস্তাগুলি দিয়ে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চলে তাতে বাচ্চারা খুবই ঝুঁকিতে থাকে।

 3 months ago 

বাচ্চাদের বাসায় মনোনিবেশ করানোর জন্য আপনার বন্ধু খুব ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছেন।বাচ্চারা খেলার সঙ্গী পেলো।আমার নিজের ও খরগোশ অনেক ভালো লাগে।আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

খরগোশ প্রাণীটা আসলেই দেখতে অনেক কিউট। তবে শুনেছি এটা পোষা নাকি বেশ ঝামেলার।

 3 months ago 

বর্তমান সময়ে যাদের বাসা রাস্তার পাশেই তারা আসলেই বাচ্চাদের নিয়ে খুব রিস্ক এর মধ্যে থাকে। কেননা বর্তমান সময়ে যন্ত্রচালিত বিভিন্ন গাড়িগুলো রাস্তা দিয়ে ওভারগতিতে চলে বিশেষ করে মোটর বাইক। তাই আমিও মনে করি আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাইয়ার বাচ্চাদের খরগোশ কিনে দেওয়ার প্ল্যানিংটি খুবই দারুণ ছিল। আর আসলে কিছু কিছু জায়গা থাকে যেই বাজারগুলোতে তুলনামূলকভাবে পণ্যের দাম বেশি ধরে থাকে। ফরিদপুর রেল স্টেশন থেকে খরগোশ কিনে ভালই করেছেন যেহেতু এখানে খরগোশ এর দাম অনেকটা কম। আর বিক্রেতারা এমনটাই করে প্রথমে আকাশচুম্বি দাম চেয়ে বসে থাকে পরে চলে যেতে ধরলেই পিছন থেকে ডাকে। যাই হোক ফেরদৌস ভাইয়ার আইডিয়াটা আমার মতে বেটার ছিল।

 3 months ago 

ঠিকই বলেছেন ভাই। বর্তমানে রাস্তাগুলো দিয়ে যেভাবে দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চলে তাতে বাচ্চাদের নিয়ে ঝুঁকি অনেক বেড়ে গিয়েছে। এই কারণে বাচ্চাদের ঘরের ভেতর খেলাধুলা করাই ভালো। কারণ যে কোন সময় রাস্তায় একটা অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 67708.83
ETH 3801.89
USDT 1.00
SBD 3.48