ঘূর্ণিঝড় রিমালে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও এর প্রতিকার।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত কয়েকদিন আগে ইন্ডিয়ার কিছু অংশ এবং বাংলাদেশের বেশিরভাগ অংশের উপর দিয়ে রিমাল নামের ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলো। এই ধরনের ঝড় যে এবারই প্রথম এসেছে তা নয়। বরং এর থেকে অনেক বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আমাদের এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। যদিও আমি বাংলাদেশের এমন একটা স্থানে থাকি যেখানে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে কখনো খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি। আমাদের এলাকাটা এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকে কিছুটা দূরেই থাকে। তেমন বড় কোন সমস্যা না হলেও আমরাও বেশ কিছু সমস্যায় পড়েছি এই ঘূর্ণিঝড়ের পরে। তবে যে সমস্ত জায়গার উপর দিয়ে এই ঘূর্ণিঝড় টা বয়ে গিয়েছে তাদের অবস্থা হয়েছে সবচাইতে খারাপ।

Black and Gold Fancy New Year Card_20240529_150825_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

এই ঘূর্ণিঝড়ে প্রচুর গাছপালা ও মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেই সাথে কিছু প্রাণহানির খবরও শোনা গিয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল গুলিতে কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসও হয়েছে। তবে ঝড়টি চলে গেলেও এখনো তার ক্ষয়ক্ষতি মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এখনো বাংলাদেশের অনেক জায়গায় এই ঝড়ের কারণে সৃষ্ট হওয়া ধ্বংসযজ্ঞের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। আবার এই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের যে সমস্ত মানুষ পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের পানির উপর নির্ভর করে থাকে। বিদ্যুৎ না থাকায় তারা সেই পানি পাচ্ছে না। যার ফলে বেশ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।


আমাদের দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। সামান্য একটু বাতাস বা বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। অথচ আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম এখন অনেক বেশি। ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলেও গ্রাহক সেবার দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কোন মনোযোগ নেই। যার ফলে একটু ঝড় বৃষ্টি হলেই মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়ে। আর বিদ্যুৎ বিভাগের আরো একটা অজুহাত হচ্ছে তাদের লোকবল সংকট। এই অজুহাতে তারা সাধারণ মানুষকে সেবা থেকে বঞ্চিত রাখে। আর বিদ্যুতের এই সমস্যা যে এবারই প্রথম হলো তা নয়। প্রত্যেকবার ঝড় বাদলের পরে বিদ্যুতের এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অনেক নিচু এলাকায় পানি উঠে প্রচুর ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


অনেক জায়গায় পুকুরের ভেসে গিয়ে পুকুরের মাছ সব চলে গিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের দিকে মাছের ঘেরের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে সেই সমস্ত অঞ্চলের মানুষ পড়েছে সবচাইতে বিপদে। এই সমস্ত ঝড় হয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশে কিছু ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কিন্তু খেয়াল করে দেখেছি এই ত্রাণ কার্যক্রম সব সময় থাকে অপ্রতুল। তারপরো এই ত্রাণ যাদের কাছে পৌঁছানো সবচাইতে বেশি জরুরী তাদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছায় না। যার ফলে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা মানবেতর অবস্থায় জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়। এই সমস্ত ঝড়ের ফলে সবচাইতে বেশি ক্ষতি হয় প্রান্তিক কৃষক এবং খামারিদের। বিশেষ করে মৎস্য খামারীদের। তাই সরকারের উচিত তাদের দিকে বাড়তি মনোযোগ দেয়া। সেইসাথে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নের দিকে সরকারের মনোযোগী হওয়া উচিত।


আর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা উচিত। অবশ্য এই ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে সাধারণ জনগণেরও সম্পৃক্ত হওয়া দরকার। কারণ সরকারের একার পক্ষে এতো মানুষকে প্রাণ দেয়া সম্ভবপর হবে না। তাই সাধারণ মানুষ যদি যার যার অবস্থান থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে আসে তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে। সমস্যা হচ্ছে এই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে যাদের চিন্তা করা উচিত তাদের কারো মাথায় এই ধরনের চিন্তা নেই। আমরা সাধারণ মানুষেরাই শুধু এগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি। বর্তমান সরকার পরিচালনায় যারা রয়েছেন বা দেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রয়েছেন তাদের উপর জনগণের খুব একটা বেশি ভরসা নেই। এখন দেখা যাক সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুলো এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়?

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

অবশ্যই ঘূর্ণিঝড় রিমালের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদেরকে সাহায্য করার জন্য সরকারের খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। আপনি এটা সত্যি বলেছেন ভাই শুধু সরকারের একার পক্ষে সবাইকে সহযোগিতা করাটা অনেক কষ্টসাধ্য তাই সাধারণ মানুষ সবার পাশে থাকতে হবে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last month 

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে অনেকেই বেশ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এই বিপদ কাটিয়ে উঠতে অনেকেরই প্রচুর সময় লেগে যাবে। ত্রাণ বিতরণের সময় তো দেখি যাদের সামর্থ্য আছে, তারাই সবার আগে ত্রাণ নিতে যায়। দিনশেষে অসহায় মানুষেরা আরও বিপদে পড়ে যায়। যাইহোক প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিলের দাম প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সেই অনুপাতে গ্রাহক সেবা সেভাবে পাচ্ছি না। এই মাসে আমার ৩ ফ্ল্যাটের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৬,৫০০ টাকা। যা গত মাসের তুলনায় ডাবল। কিভাবে বিদ্যুৎ বিল তৈরি করে তারাই ভালো জানে। জনগণকে একেবারে চুষে খাচ্ছে সবদিক দিয়েই। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আপনাদের এলাকাটা অনেকটাই সুরক্ষিত থাকে জেনে ভালো লাগলো। তবে যে সব এলাকাগুলো সব সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে থাকে তাদের জন্য খারাপ লাগে। সত্যি বলতে এই দুর্যোগ গুলোর কারণে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে অনেক কঠিন হয়ে যায়। এসব মানুষদের জন্য অনেক সময় সরকার থেকে ত্রাণ পাঠানো হয়। কিন্তু এত এত মানুষের কারণে সবার কাছে হয়তো সাহায্য পৌঁছায় না। যার কারণে কিছু মানুষের সমস্যা আর দূর হয় না। আর বিদ্যুতের কথা কি বলব সেই ছোট থেকেই দেখে আসছি বাংলাদেশে একটু পানি হলে বা বিদ্যুৎ চমকালে বা ঝড় হলেই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যায়। যখন অনেক বেশি ঝড় বৃষ্টি হয় তখন ঠিক আছে কিন্তু অল্প ঝড় বৃষ্টির সময়ও অনেক সময় কারেন্ট চলে যেতে দেখা যায়। আসলে এই সার্ভিসটা অনেক দুর্বল। এবার এই ঝড় বৃষ্টির কারণে আমাদের এলাকায় তো অনেক সময় ধরে বিদ্যুৎ ছিল না। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

আসলে ভাই আমাদের দেশে বিদ‍্যুৎ ব‍্যবস্থা টা আন্ডারগ্রাউন্ড না সব ওভারহেড। আর এইজন্যই ঝড় বৃষ্টি হলে বিদ‍্যুৎ খুব বিরক্ত করে। এটা প্রায় সকল এলাকায়। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কে এান সহায়তা দেওেয়া উচিৎ। তবে তার চেয়েও উচিত চিরস্থায়ী একটা ব‍্যবস্থা করা এবং ভালো বাঁধ নির্মাণ করা।

 last month 

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমাদের এদিকে খুব একটা ঝড় বৃষ্টি হয়নি। শুধুমাত্র এক রাতে ঝড় বৃষ্টি হয়েছিল। তবুও অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের গ্রামের বাসায় তো তিন দিন থেকে কারেন্ট নেই। একদিকে কারেন্ট নেই অন্যদিকে পানি শেষ হয়ে গেছে। অবস্থা খুবই খারাপ। আসলে প্রকৃতির এই বিপর্যয় জনজীবনে ভোগান্তি তৈরি করেছে। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। দারুন লিখেছেন ভাইয়া।

 last month 

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমাদের এদিকে ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও লোডশেডিং এর সমস্যা অনেক বেশি দেখা দিচ্ছে। এর আগে কখনো এরকম লোডশেডিং দেখিনি। অনেক এলাকাতে তিন চার দিন থেকে কারেন্ট নেই। বিদ্যুৎ বিল নেওয়ার সময় তারা সবকিছুই ঠিকভাবেই নেয়। আর দিনে দিনে কারেন্টের ইউনিট বাড়িয়েই চলেছে। তবে তাদের সার্ভিস টা দিনে দিনে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। উন্নতির কোন লক্ষণ নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 56523.53
ETH 2982.54
USDT 1.00
SBD 2.15