সৌদি আরব থেকে ফেরার ক্লান্তিকর যাত্রার অভিজ্ঞতা ( শেষ পর্ব)।
তবে সেখানে পৌঁছতে আমাদেরকে অনেকটা পথ হাঁটতে হয়েছিলো। যাই হোক ১৭ নম্বর কাউন্টারের কাছে পৌঁছে দেখি সেখানে আমাদের সাথে থাকা বাদবাকি লোকজনেরা বসে রয়েছেন। সেখানে পৌঁছে আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। তারপর আমি আমাদের সাথে থাকা কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলাম আমাদের প্লেন কি চলে এসেছে নাকি? তারা জানালো প্লেন এখনো আসেনি। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে প্লেন আসতে কিছুটা দেরি হবে। আমি যতক্ষণে ১৭ নম্বর কাউন্টারে পৌঁছেছি তখন আমাদের সাথে বাকি ছিলো আর মাত্র ৪০ মিনিট। সমস্ত কিছু শেষ করতে গিয়ে কখন সময় চলে গিয়েছে সেটা বুঝতেই পারিনি। যাইহোক দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার ফলে আমার তখন বেশ দুর্বল লাগছিলো। তাই আমি চিন্তা করলাম আগে কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নেই। তারপর প্লেনের খোঁজ খবর নেয়া যাবে।
বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার পরে যখন প্লেনের খোঁজ নিতে গেলাম তখন দেখলাম সেখানকার কেউই আমাদেরকে সঠিকভাবে কোন তথ্য দিতে পারছে না। অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরে একজনের মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাদের ফ্লাইট এক ঘন্টা ডিলে হবে। এই কথা শুনে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো। আমার তখন শুধু মনে হচ্ছিলো কখন ঢাকায় গিয়ে পৌঁছাবো? যাইহোক যেহেতু ফ্লাইট ডিলে হবে তাই চিন্তা করলাম ততক্ষণে সমস্ত প্রাকৃতিক কাজকর্ম সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেই। ফ্লাইটে ওঠার কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম আমাদের প্লেন প্রথমে সিলেট এয়ারপোর্টে গিয়ে ল্যান্ড করবে। সেখান থেকে কিছু যাত্রী নামার পরে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। মানে এখানেও প্রায় এক দেড় ঘন্টা সময় নষ্ট হবে। যাইহোক যথা সময়ে আমাদেরকে এনাউন্সমেন্ট করে প্লেনে উঠতে বললে আমরা সকলে প্লেনে উঠে যার যার নির্ধারিত সিটে গিয়ে বসলাম।
তারপর যথারীতি যা হয় সেভাবেই প্লেন চলতে লাগলো। তবে আমি বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রুদের ব্যবহারে খুব হতাশ। এ ব্যাপারে আজকের পোস্টে বিস্তারিত কিছু লিখবো না। পরবর্তী কোনো এক পোস্টে তাদের বিষয়ে কিছু কথা তুলে ধরবো। আমরা রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার দিকে সিলেটে ল্যান্ড করলাম। সিলেটে আমাদের বিমান ল্যান্ড করার পরেই আমি আমার ফোনের সুইচ অন করে আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। তবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে যা শুনতে পেলাম তাতে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার বোন এবং আমার স্ত্রী দুজনই আমাকে বলছিলো এয়ারপোর্ট থেকে যেন বের না হই। কারণ ঢাকার অবস্থা নাকি খুবই খারাপ।
যদিও আমরা সৌদি আরব থাকা অবস্থায় শুনতে পেয়েছিলাম ঢাকায় বেশ ঝামেলা হচ্ছে। কিন্তু অবস্থা যে এতটা খারাপ হবে সেটা চিন্তা করতে পারিনি। আমি তখন শুধু চিন্তা করছিলাম এয়ারপোর্ট থেকে কিভাবে বোনের বাসায় পৌঁছাবো। যাই হোক সিলেট থেকে আমাদের বিমান ঢাকায় পৌঁছাতে খুব একটা বেশি সময় নেয়নি। ঢাকায় যখন আমরা ল্যান্ড করলাম তখন সম্ভবত রাত সাড়ে নটা বা দশটা বাজে। কিন্তু সেখানে বিমান থেকে নামার পরেই একের পর এক দুঃসংবাদ পেতে লাগলাম। আমার সমস্ত আত্মীয়-স্বজন আমাকে ফোন করে বলতে লাগলো এয়ারপোর্ট থেকে যেন রাতে বের না হই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একটি গাড়ি নিয়ে আপুর বাসায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাও ছিল রীতিমতো ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতা। যাই হোক এভাবেই আমার সৌদি আরব থেকে দেশে আসার জার্নি শেষ হয়েছিলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | মদিনা, সৌদি আরব |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
যেকোনো এয়ারপোর্টের মধ্যে প্লেনে উঠার কাউন্টার খুঁজে পেতে সমস্যা হলে অনেকক্ষণ হাঁটতে হয়। আমিও অনেকের মুখ থেকে শুনেছি বাংলাদেশ বিমানের ক্রুদের ব্যবহার ভালো না। তবে আমি খুব সম্ভবত ২/১ বার বাংলাদেশ বিমানে চড়েছিলাম এবং আমি ক্রুদেরকে তখন দেখিনি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতে। যাইহোক অবশেষে সব ঝামেলা শেষ করে ঠিকমতো আপনার আপুর বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। কারণ তখন আমাদের দেশের অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ ছিলো। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।