ব্যস্ত দিনের গল্প।
গত দু-তিন দিন আগে আমার এক বন্ধুর ফার্মেসির সামনে দাঁড়িয়ে তার সাথে গল্প করছিলাম। হঠাৎ করে সেখানে মাত্র ২৮ বছর বয়সী এক যুবক এসে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে চাইলো। ডায়াবেটিস পরীক্ষার পর দেখা গেলো তার ডায়াবেটিস অনেক বেশি। বিষয়টা দেখে আমি একটু অবাক হলাম। এই বয়সেই ডায়াবেটিস হয়ে যাওয়াটা কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হোলো আমার কাছে। গত কয়েকদিন ধরে আমারও শরীরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। এজন্য ছেলেটার ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পরে আমি চিন্তা করলাম আমারও পরীক্ষা করে দেখা দরকার। যেহেতু আমার বাবা-মা দুজনেই ডায়াবেটিসে ভুগেছেন। তাই আমারও একটু সাবধান থাকা দরকার। এই কারণে পরদিন সকালে আমিও ডায়াবেটিস মেপেছিলাম। ডায়াবেটিস মেপে দেখতে পেলাম আমার যে পরিমাণটা শো করছে সেটাকে বলা হয় বর্ডার লাইন। মানে এর থেকে আরেকটু বেশি হলেই ডায়াবেটিসের রোগিতে পরিণত হবো।
এই অসুখটাকে আমি খুবই ভয় পাই। কারন এটার পার্মানেন্ট কোন ট্রিটমেন্ট নেই। একবার এই অসুখে আক্রান্ত হলে আপনাকে সারাজীবন সাবধানে জীবন যাপন করতে হবে। অবশ্য এটার একটা ভালো দিক আছে। ডায়াবেটিস হলে যদি সেই রোগীর সচেতন হয় তাহলে তার লাইফে একটা ডিসিপ্লিন চলে আসে। যাই হোক আমি বাসায় পরীক্ষা করার পরে চিন্তা করলাম একবার ডায়াবেটিস হাসপাতাল থেকেও পরীক্ষা করা দরকার। এই কারণে আজকে সকালে উঠে গিয়েছিলাম ফরিদপুর ডায়াবেটিস হসপিটালে টেস্ট করার জন্য। আমার সাথে আমার মাও গিয়েছিলেন। তারও বেশ কিছু টেস্ট করার প্রয়োজন ছিলো। হাসপাতালে ডায়াবেটিস টেস্ট করার নিয়ম হচ্ছে আপনি প্রথমে খালি পেটে একবার গিয়ে ব্লাড দিয়ে আসবেন। তারপরে আবার নাস্তা করার দু'ঘণ্টা পরে আপনাকে ব্লাড দিতে হবে। তাই আমাকে আজ সকালে দুবার ডায়াবেটিস হসপিটালে যেতে হয়েছে। দ্বিতীয়বার ডায়াবেটিস হসপিটাল থেকে বের হয়ে আমি প্রথমে চলে গেলাম একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আমার মায়ের পরীক্ষা গুলোর ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার জন্য।
সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছিলো ডায়াবেটিস হসপিটালের পাশেই। সেখান থেকে খোঁজখবর নেয়া হলে আমি গেলাম ফরিদপুর ইসলামী ফাউন্ডেশনে একটা বিষয়ে খোঁজখবর নিতে। তবে সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম মুসলিম মিশনের অফিস সেখান থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে। মুসলিম মিশনের অফিস না পেয়ে আমি কিছুটা হতাশ হলাম। তারপর সেখান থেকে আমি চলে গেলাম বাজারে। বাজারে গিয়েছিলাম মূলত কিছু ফল কেনার জন্য। যেহেতু তরমুজ আমার খুবই প্রিয় ফল তাই প্রথমেই দেখেশুনে একটি তরমুজ কিনলাম। তবে তরমুজ কিনতে গিয়ে এক কান্ড হয়েছে। সেই গল্প পরে আরেকদিন করবো। তরমুজ কেনা শেষ হলে দেখতে পেলাম পাশেই আনারস বিক্রি হচ্ছে। আনারস আমি খুব একটা বেশি খাই না। তবে কয়েকদিন আগে ছোট সাইজের কিছু আনারস কিনেছিলাম। সেই আনারস এতোটাই মিষ্টি ছিলো যে আনারস আমার প্রিয় ফলের তালিকায় ঢুকে গিয়েছে।
যাই হোক দেখে শুনে আমি কিছু আনারস কিনলাম। আমি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমার আম্মা বলে দিয়েছিলো ফেরার সময় যেন এক ব্যাগ সিমেন্ট নিয়ে ফিরি। কারণ বাসায় ছোট্ট একটা কনস্ট্রাকশন এর কাজ হচ্ছে। সেখানে অল্প কিছু সিমেন্টের প্রয়োজন হবে। তাই আমি ফল কেনা শেষ হলে একটি রিকশা নিয়ে প্রথমে গেলাম সিমেন্টের দোকানে। সেখান থেকে সিমেন্ট কেনা শেষ হলে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। প্রচন্ড রোদ্রের ভেতরে এতক্ষণ ঘোরাফেরা করে আমি খেয়াল করে দেখি আমার পুরো শরীরটা ঘামে ভিজে গিয়েছে। মুখ থেকে টপটপ করে ঘাম ঝরছে। তখন শুধু মনে হচ্ছিলো কখন বাসায় গিয়ে একটু ঠান্ডা হবো। আর এভাবেই শেষ হোলো আমার আজকের দিনের কর্মব্যস্ততা।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এই গরমের মধ্যেও এত কাজ একদিনে করতে জাইয়েন না ভাইয়া,হয়তো প্রবলেম হতে পারে।তবে যেহেতু আপনার এখন ডায়াবেটিস এর বর্ডার লাইন তাহলে একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।ঠিক বলেছেন ডায়াবেটিস এর সুবিধা হচ্ছে ডিসিপ্লিন ঠিক থাকে,কিন্তু রোগ টার যে কোনো স্থায়ী ট্রিটমেন্ট নেই এজন্যেই একটু ভয় বেশি লাগে।প্রার্থনা রইলো ভাইয়া আপনি যেনো ডায়াবেটিস এর ভুক্তভুগী না হন।
ডায়াবেটিস রোগটা আসলেই কেমন জানি। আশাকরি আপনার বর্ডার লাইন অতিক্রম করবে না। একটু নিয়ম মেনে চলেন তাহলেই হবে। এখন যে ছোট আনারস গুলো পাওয়া যায় এগুলো বেশ মিষ্টি হয়ে থাকে। আনারস আমার বেশ পছন্দের। এবং এটা একটা ঔষধি ফল বলতে পারেন। কৃমি নাশ করতে আনারস কার্যকারিতা অনেক।
ভাইয়া ডায়াবেটিস রোগটা সত্যিই খুব জটিল রোগ। একবার শরীরে প্রবেশ করলে, তাকে আর নির্মূল করা যায় না। আমার এক খালাতো বোনের মেয়ে যার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। আর সেই ভাগ্নি ১০ বছরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল। আর আমার ভাগ্নি যখন মারা গিয়েছিল ওর ডায়াবেটিসের মাত্রা ছিল ৩০। যার কারনে শেষ অবধি আর তাকে বাঁচানো যায়নি। তাই আমিও এই রোগটিকে ভীষণ ভয় পাই ভাইয়া। আপনিও সাবধানতা অবলম্বন করে চলবেন এই প্রত্যাশা করছি। আপনার ব্যস্ত দিনের গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই গরমে বাহিরে গিয়ে খুবই ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটিয়েছেন দেখছি। আমার খুব কাছের এক বন্ধু ২৩ বছর বয়স থেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতিদিন নিয়ম মোতাবেক মেডিসিন খেতে হয়। যাইহোক ডায়াবেটিস মাপার পর যেহেতু বর্ডার লাইনে রয়েছেন, তাহলে সাবধনতা অবলম্বন করতে হবে ভাই। ফলের মধ্যে আনারস খেতে আমার সবচেয়ে বিরক্ত লাগে। তবে তরমুজ খেতে খুব ভালো লাগে। কালকে রাতে ৩০০ টাকা দিয়ে একটি তরমুজ কিনলাম। তরমুজটা খুবই মিষ্টি লেগেছে খেতে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এক বছর আগে আমার এক মামাতো ভাই মাত্র ১১ বছর বয়সে মারা গিয়েছে। দুইদিন জ্বর থাকার পর যখন হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় তখন জানতে পারে তার ডায়াবেটিকস ৩০। এত ছোট বাচ্চারও ডায়াবেটিস হয়ে যাচ্ছে এখন। সত্যি ভাইয়া সবাইকে সচেতন থাকা উচিত এবং মাঝে মাঝে পরীক্ষা করা উচিত। যাই হোক ভাইয়া আপনারও যেহেতু বর্ডার লাইনে আছে আশা করছি আরও বেশি সচেতন হবেন। তবে নিয়ম মেনে চলাফেরা করলে সবকিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তরমুজ কিনতে গিয়ে কি ঘটেছিল জানার আগ্রহ পোষণ করছি ভাইয়া।