ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে রাতের বেলা খিচুড়ি খাওয়ার অভিযানে যাওয়া।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি বেশিরভাগ সময় আমার বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা করি। মাঝে মাঝে সাথে যোগ দেয় বন্ধু রাফসান। তবে এরা দুজন আমার এলাকার বাইরের বন্ধু। ওদের বাড়ি আমার বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে। তবে ইদানিং আমার এলাকার ছোটবেলার বন্ধুদের সাথেও টুকটাক ঘোরাফেরা শুরু করেছি। কিছুদিন আগে এলাকার ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে গিয়েছিলাম এক বন্ধুর দাদা বাড়িতে। সেখানে গিয়ে হাঁসের মাংস দিয়ে ভরপেট খাওয়া দাওয়ার গল্প আপনাদের কাছে করেছিলাম।

IMG_20230809_221408.jpg

কয়েকদিন আগে নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলাম। তখন বন্ধু রাশু ডাক দিয়ে বলল চল আমরা এলাকার কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব মিলে দু একদিন পরে রাতের বেলায় এক জায়গায় যাবো খিচুড়ি খেতে। ও বলল সেখানকার খিচুড়ি নাকি খেতে খুবই মজাদার। আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম জায়গাটা কোথায়? তখন ও আমাকে জানালো ট্যাপা খোলা লেকপাড়ের কাছাকাছি দোকানটি অবস্থিত। তখন আমি ওকে বললাম দোকানটি আমি চিনি। সেখানকার খিচুড়ি আসলে বেশ সুস্বাদু। আমি সেখান থেকে বেশ কয়েকবার খেয়েছি। আমার কথা শুনে ওর আগ্রহ আরও বেড়ে গেলো। যাইহোক ওর সাথে কথা বলার পর ব্যাপারটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম।

IMG_20230809_221415.jpg

হঠাৎ গতকাল রাতে ও ফোন দিয়ে বলল ১০-১৫ মিনিট পরে রুবেলের ডিসপেন্সারির সামনে চলে আয়। আমরা সবাই সেখানে আসছি। আমি তখন ওকে বললাম সবাই সেখানে আসলে আমাকে ফোন দিস। আমার ওখানে যেতে ২ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না। কিছুক্ষণ পার হলে বন্ধু রাশু ফোন দিয়ে আমাকে রুবেলের ডিসপেন্সারির সামনে যেতে বলল। সেখানে গিয়ে দেখি আরো চারজন আগে থেকেই উপস্থিত হয়েছে। আমি সেখানে যাওয়ার পর আমরা পাঁচজন একটি অটো রিক্সা খুঁজতে লাগলাম। তবে ততক্ষণে রাত বেজে গিয়েছে প্রায় পৌনে দশটা। এত রাতে আমাদের অটো রিক্সা পেতে একটু কষ্ট হলো। আমরা সেখান থেকে হেঁটে সামনে কিছুদূর আগানোর পর একটি অটো রিক্সা পেলাম। দামদর করে আমরা অটো রিক্সায় উঠে বসলাম। সেখানে যাওয়ার সময় আমরা পরিকল্পনা করছিলাম খাওয়া-দাওয়া শেষে যদি সম্ভব হয় তাহলে পদ্মার পাড়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসবো।

IMG_20230809_221411.jpg

তবে অটো রিক্সায় উঠে রওনা দেয়ার কিছুক্ষণের ভিতরে দেখলাম গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। তখনই বুঝতে পারলাম পদ্মা পাড়ের প্রোগ্রামটা বাদ দিতে হবে। যাইহোক মিনিট বিশেকের ভেতরে আমরা সেই খিচুড়ির দোকানের সামনে পৌছে গেলাম। একবার মনে চিন্তা উঁকি দিয়েছিলো যে এত রাতে সেখানে গিয়ে খাবার পাবো কিনা? তবে সেখানে গিয়ে দেখলাম এখন তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। সেই হোটেলের লোকেরা জানালো রাত একটা পর্যন্ত তাদের হোটেল খোলা থাকে। অনেকে আসে রাত এগারোটার পরে খিচুড়ি খেতে। যাই হোক আমরা পাঁচজন বেসিন থেকে হাত ধুয়ে টেবিলে বসে খিচুড়ি অর্ডার করলাম। অর্ডার করার কয়েক মিনিটের ভেতরে টেবিলে গরম গরম খিচুড়ি পরিবেশন করলো।

IMG_20230809_221419.jpg

খিচুড়িটা দেখেই মনে হচ্ছিল অত্যন্ত মসলাদার একটা খিচুড়ি। যার ভেতরে ছোট ছোট কয়েক টুকরো মুরগির মাংস দেয়া ছিলো। আর খিচুড়ির সাথে খাওয়ার জন্য দিয়েছিল কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আর একটা স্পেশাল চাটনি। সাথে আরো ছিলো মরিচ ভর্তা। আর সবাই সাথে নিয়ে ছিল কোল্ড ড্রিঙ্কস। গরম খিচুড়ি টেবিলে আসতেই সকলে বেশ মজা করে খাওয়া শুরু করলাম। খিচুড়ি খাচ্ছিলাম আর সবাই আড্ডায় মেতে উঠেছিলাম। আমি সাধারণত রাত্রে ভাত রুটি এগুলি কোন কিছুই খাই না। বেশ কিছুদিন হলো এই প্র্যাকটিসটা চালু করেছি। কিন্তু এদিন বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে রীতিমতো দেড় প্লেট খিচুড়ি খেয়ে ফেললাম। দেড় প্লেট খিচুড়ি খেয়ে আমার মনে হচ্ছিল আমি অনেকটা খেয়ে ফেলেছি। তবে পাশের দুই বন্ধুর খাওয়া দেখে মনে হল আমি বেশ কমই খেয়েছি। কারণ আমরা সবাই প্রথমে এক প্লেট খিচুড়ি নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আবার সবাই হাফ প্লেট করে খিচুড়ি নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দুই বন্ধু রাকিব এবং শোভন তারা আরও তিন হাফ খিচুড়ি নিলো। ওদের খাওয়া দেখেই বুঝতে পারছিলাম খিচুড়িটা ওরা খুবই পছন্দ করেছে। অবশ্য খিচুড়িটা আমার কাছে খেতে অনেক ভালো লেগেছিলো।

একে তো বেশ মসলাদার হালকা মাখামাখা খিচুড়ি। যেটা আমি খুবই পছন্দ করি। তাছাড়া সাথে ছিলো মুরগির মাংস। সবকিছু মিলিয়ে খিচুড়িটা আসলেই বেশ মজাদার ছিলো। খিচুড়ি খাওয়া শেষে আমরা কয়েকজন বাসার জন্য পার্সেলও নিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। তবে ফেরার সময় আমরা পরিকল্পনা করলাম শুক্রবার বিকালের দিকে সবাই মিলে যাবো ফরিদপুর শহর থেকে কিছুটা দূরে বাখুনডা নামে একটি এলাকায়। শুনেছি সেখানে দারুন মজাদার কুলফি আইসক্রিম পাওয়া যায়। শুক্রবার সেই কুলফি অভিযানের পরিকল্পনা করে আমরা যার যার মত বাড়ি ফিরে গেলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানটেপাখোলা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাই আপনার পোস্টটি পরে বুঝতে পারলাম আপনারা পাঁচজন বন্ধু বেশ মজা করে খিচুড়ি খেয়েছিলেন রাতের বেলায়। আসলে বন্ধুরা মিলে এভাবে খিচুড়ি খাওয়ার মজা কখনো ভোলা যায় না। খিচুড়ির ভিতরে কয়েক টুকরা মুরগির মাংস দেয়া ছিল জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। আপনারা মিলে পরিকল্পনা করছিলেন খাওয়া-দাওয়া শেষে পদ্মা পাড়ে কিছুটা সময় কাটাবেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। আসলে ভাই খিচুড়ির সাথে কাঁচা মরিচ , পেঁয়াজ ও স্পেশাল চাটনি পেয়েছিলেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। আসলে এরকম ভাবে খেতে এমনিতেই বেশ মজা লাগে ভাই। ধন্যবাদ ভাই বন্ধুদের সাথে এত সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ভাইয়া আপনি বন্ধুদের সাথে খুব মজা করেই খিচুড়ি খেয়েছেন।খিচুড়ি দেখে আমারই তো খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার বন্ধু রাকিব আর শোভন ভাইয়া আরো বেশি খেয়েছে খিচুড়ি। আপনি বেশকিছুদিন ধরে রাতে ভাত,রুটি খান না।তবে সেদিন খুব মজা করে দেড় প্লেট খিচুড়ি খেয়েছেন।খুব সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করেছেন। খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। শুক্রবার আবার বাখুনডা নামক এলাকায় কুলফি আইসক্রিম খেতে যাবেন।দেখার আর পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

বুঝাই যাচ্ছে যে আপনি বেশ বন্ধু পাগল একটি মানুষ। প্রতিটি মূহূর্ত বন্ধুদের সাথে আড্ডা কাটাতেই আপনার বেশ ভালো লাগে। আজও ছেলেবেলার বন্ধুদের সাথে হোটেলে বসে খিচুড়ি খেলেন। যা আপনাদের সবার মন কে করেছে আনন্দিত। খিচুড়ি স্বাদ পেয়ে দেখছি বাড়ির জন্য আবার পার্সেলও নিয়ে গেলেন।

 last year 

আমার কাছে এলাকার ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে এবং আড্ডা দিতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। কারণ আমি মনে করি ছোটবেলার বন্ধু গুলোই প্রকৃত বন্ধু। যাইহোক খিচুড়ির কালার দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে খুব ইয়াম্মি লেগেছিল। সাথে চাটনি থাকাতে আরো বেশি সুস্বাদু লেগেছিল মনে হচ্ছে। বেশ ভালোই উপভোগ করলেন সবার সাথে পুরোটা সময়। যাইহোক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58544.56
ETH 2629.02
USDT 1.00
SBD 2.44