সরকারি দপ্তরের কাজে দীর্ঘসূত্রিতা।
এই যে সরকারি যে কোনো কাজে দীর্ঘসূত্রিতা এটা আমাদের দেশে নতুন নয়। সরকারি যে কোন দপ্তরের কাজে এরকম দীর্ঘ সূত্রীতা বহু পুরাতন। সরকারি যেকোনো দপ্তরে কাজের জন্য গেলে মনে হবে তারা আপনাকে হয়রানি করার জন্য বসে রয়েছে। তাদের কাছ থেকে আপনি কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা পাবেন না। যদি সাহায্য সহযোগিতা পেতে চান তাহলে তার জন্য আপনাকে বাড়তি টাকা খরচ করতে হবে। অথচ সরকারি এই দপ্তর গুলিকে বানানো হয়েছে জনগণের সহায়তার জন্য। কিন্তু তাদের কাছে গেলে মনে হয় তারা আমাদের হয়রানি করার জন্য বসে রয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত এমন কোন সরকারি দপ্তরের লোককে দেখতে পাইনি যিনি আগ্রহ সহকারে কোন সাহায্য প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন। পৌরসভায় গিয়ে যখন কাজ হোলো না তখন গেলাম ফরিদপুর জজ কোর্টে। সেখানেও আমার একটি কাজ ছিলো।
কোর্টে গিয়েছিলাম মূলত একটি বহু পুরাতন মামলার কাগজ উঠানোর জন্য। এই ধরনের কাগজগুলো কোর্টের রেকর্ড রুমে থাকে। প্রথম দিন গিয়ে একজন পরিচিত লোকের সাথে কথা বললাম যে কিভাবে কাগজটা উঠানো যায়। তিনি আমাকে বললেন এটা কোনো ব্যাপারই না। আপনি কিছু টাকা দিয়ে যান। আমি কাগজ উঠানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এই কথা বলে আমার সামনেই রেকর্ডরুমের দুজনকে কিছু টাকা দিলেন আমার কাগজ উঠানোর জন্য। তারপর আমাকে বললেন কয়েকদিন পরে যোগাযোগ করতে। আমি সাত দিন পরে যোগাযোগ করলে তিনি জানালেন কাগজটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি তখন তাকে বললাম দরকার হলে আরো কিছু টাকা দিচ্ছি আপনি তার পরেও তাড়াতাড়ি কাগজটা খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করুন। এই কথা বলে আমি আরো কিছু টাকা তাদেরকে দিলাম। সেটাও প্রায় এক মাস হয়ে গেলো। এখন পর্যন্ত আমার সেই কাগজের হদিস পাইনি। এর ভেতরে আমি আরো একদিন গিয়েছিলাম সেখানে। গিয়ে দেখতে পেলাম আমার মত আরও অনেকে এসেছে রেকর্ডরুম থেকে বিভিন্ন রকম কাগজ উঠানোর জন্য। তাদের দু'একজনকে দেখতে পেলাম যারা কয়েক মাস ধরে ঘোরাফেরা করছে কাগজের জন্য। কিন্তু তারা তাদের প্রয়োজনীয় কাগজটা পায়নি।
এই যে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনের অসহযোগিতা এবং অদক্ষতার জন্য মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এই ভোগান্তি দেখার কেউ নেই। বাড়তি টাকা দিয়েও আমরা আমাদের কাঙ্খিত সেবাটা পাচ্ছি না। দুই দফা টাকা দিয়েও আমাকে এখনো অনিশ্চয়তায় বসে থাকতে হচ্ছে। কিন্তু এগুলো কার কাছে বলবো? কার কাছে বললে এই সমস্যার প্রতিকার পাওয়া যাবে? এগুলো বলার কোন বা শোনার কোন মানুষ নেই। সবাই ব্যস্ত রয়েছে যার যার আখের গোছাতে। সাধারণ মানুষ জনের সমস্যার দেখার কেউ নেই এই দেশে। এই দেশে শুধু ক্ষমতাবান মানুষেরাই শান্তিতে রয়েছে। সাধারণ মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ। ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে রীতিমতো লড়াই করতে হবে। এ কারণেই দেশের মানুষ সুযোগ পেলেই দেশের বাইরে চলে যায়। কারণ উন্নত বিশ্বে আর যাই হোক আপনাকে এই ধরনের হয়রানি হতে হবে না। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ মানুষ যারা দেশে রয়েছেন তাদের জন্য তো কোন পথ খোলা নেই। যার ফলে আশা করে বসে আছি কখনো হয়তো এই দেশে জনবান্ধব কোন সরকার আসবে। যে দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা উপলব্ধি করতে পারবে। এখন সেই আশায় দিনগুনি।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া সাধারণ মানুষরা সব জায়গাতেই ভোগান্তির শিকার হয়। বিশেষ করে সরকারি দপ্তর গুলোতে মানুষ এতটা অবহেলার শিকার হয় যেটা বলে বোঝানোর মত নয়। সামান্য পানির লাইন ডিসকানেক্ট করতেও তাদের রুলস দেখে সত্যি বিরক্ত লাগলো। আর কোর্টের রেকর্ডরুমের কাগজপত্র তোলা তো আরো বেশি ঝামেলার কাজ। তারা শুধু ঘুরাতে থাকে আর ঘুরাতেই থাকে। সব ঝামেলা যেন সাধারণ মানুষদেরই।
ভাই সরকারি অফিস গুলোর কথা কি আর বলবো, তাদের ভাব দেখলে মনে হয় একেকজন জমিদার। টাকা ছাড়া তো কোনো কাজ করানো যায় না এবং মাঝেমধ্যে টাকা দিয়েও কাজ হয় না। দীর্ঘদিন সাউথ কোরিয়াতে ছিলাম বলে,অটোমেটিক তুলনা চলে আসে মাথার মধ্যে। কোরিয়ার প্রতিটি সরকারি অফিসের সেবার মান দেখলে মাঝেমধ্যে অবাক হয়ে যেতাম। অনেক সময় জরুরী কিছু কাজও ফোনের মাধ্যমে সমাধান করে ফেলতে পারতাম। আমাদের দেশে কখনোই জনবান্ধব সরকার আসবে না। পৌরসভা এবং জজ কোর্টে গিয়ে তো কোনো কাজ হলো না আপনার। এই মুহূর্তে অপেক্ষা করা ছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই। যাইহোক আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই।