বিভীষিকাময় রাতের অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।
কিন্তু দীর্ঘ জার্নির ক্লান্তির ফলে আমার তখন শুধু মনে হচ্ছিলো কোনোভাবে বাসায় গিয়ে পৌঁছাতে পারলেই আমি বাঁচি। কিন্তু তাদের কথা আমি উপেক্ষা করতে পারছিলাম না। এদিকে আমি খেয়াল করে দেখি আমাদের সাথে যারা ছিলো তারা সবাই বিভিন্ন উপায়ে তাদের বাড়ির দিকে রওনা দিয়ে চলে গিয়েছে। আমি লাগেজ বুঝে পাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই একটা ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি যে দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাতের ভেতরে নাকি রাস্তায় আর্মি নামবে। আর তাদের নাকি শুট অ্যাট সাইট অর্ডার দেয়া হয়েছে। মানে দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই কথা শুনে তো আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম। তখন আমি চিন্তা করতে লাগলাম এখন কি করা যায়? এর ভেতরে এয়ারপোর্টের একটি অ্যানাউন্সমেন্ট শুনতে পেলাম। সেই অ্যানাউন্সমেন্টে বলা হচ্ছিলো যে যে সমস্ত হজ থেকে ফিরে আসা যাত্রীরা বাড়িতে যেতে পারবেন না। তাদের রাত যাপনের জন্য হজ ক্যাম্পে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই অ্যানাউন্সমেন্ট শুনে কিছুটা ভালো লাগলো। এদিকে আবার আমার এক খালাতো বোন সে ফোন দিয়ে তার বাসায় যেতে বলেছিলো। যদিও তার বাসায় যাওয়ার রাস্তার কি অবস্থা সেটা সম্বন্ধে তার অথবা আমার কারোরই তেমন পরিষ্কার কোন ধারনা ছিলো না। যার ফলে আমি তার বাসায় যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে দেই। কারণ তখন মনে হচ্ছিলো যদি বোনের বাসায় ফিরতে নাও পারি তাহলে রাতটা অন্তত হজ ক্যাম্পে কাটানো যাবে। তখন আমার দুলাভাই আমাকে ফোনে জানালো সে চেষ্টা করছে এয়ারপোর্টে তার চ্যানেলের একটা গাড়ি পাঠানোর জন্য। তবে যদি সে রাতে গাড়ি নাও পাঠাতে পারে তাহলে সকালে সে আমাদের জন্য তাদের নিউজ চ্যানেলের একটা গাড়ি পাঠাবে।
দুলাভাইয়ের সাথে কথা হওয়ার পর কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। চিন্তা করলাম যে রাতে যদি বাসায় নাও ফিরতে পারি তাহলে অন্তত সকাল বেলায় বাসায় ফিরে যেতে পারবো। এদিকে আমরা তখন পর্যন্ত না খেয়েছিলাম। ইতিমধ্যে রাত বারোটার বেশি বেজে গিয়েছিলো। এয়ারপোর্টের দোকানগুলোতে দেখলাম খাওয়ার মত কোন খাবারই অবশিষ্ট নেই। তখন আমি এয়ারপোর্টের সামনে থাকা একটি দোকান থেকে হালকা কিছু খাবার নিয়ে গেলাম খাওয়ার জন্য। চিন্তা করলাম যে আপাতত এগুলো দিয়েই কোন রকমে পেটটা ঠান্ডা করি। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ এয়ারপোর্টের ভেতরে কাটানোর পরে আমাদের হজ ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য ডাক পড়লো। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | HONOR 90 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বেশ ভালো করছেন আপনি রাতে এত রিক্সের মধ্যে যাতায়ত না করে। আসলে দেশের যে পরিস্থিতি চলে গেল সেগুলো তো সরাসরি দেখিনি কিছু কিছু ভিডিওতে দেখেছি অনেক ভয়াবহ অবস্থা। আর আমরা তো নেট বিহীন বেশ খারাপ সময় কাটিয়েছিলাম। আপনিতো হজ্ব কাফেলা ক্যাম্পে থেকে গেছে রাতে বেশ ভালো করলেন। আশা করি পরে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো।
যেহেতু আর্মিদেরকে দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল,তাই এমন অবস্থায় ভয় পাওয়ার ই কথা। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনার দুলাভাই চ্যানেলের গাড়ি রাতের বেলা পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল নাকি আপনি গাড়ি ভাড়া করে আপনার আপুর বাসায় চলে গিয়েছিলেন,সেটা জানার আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া পোস্টের টাইটেল দেখে বুঝতে পারলাম আপনাকে শেষ পর্যন্ত হজ্জ ক্যাম্পে থাকতে হয়নি। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।