ভাইরাল চপ ওয়ালার বিচিত্র নামের চপ।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


মাত্র অল্প কয়েকদিন আগেই আমাদের কমিউনিটিতে এডমিন ভাই-বোনদের আয়োজিত চপ তৈরির প্রতিযোগিতা শেষ হলো। এই প্রতিযোগিতার কল্যাণে বিচিত্র উপকরণ দিয়ে তৈরি করা চপের রেসিপি দেখতে পেয়েছি। এই চপের রেসিপি গুলো দেখে হঠাৎ করে আমার কয়েক মাস আগের একটি ঘটনা মনে পড়ে গেলো। আপনারা জানেন আমি একজন ভোজন রসিক মানুষ। এই কারণে আমি ফেসবুকের খাদ্য সংক্রান্ত কয়েকটি গ্রুপের মেম্বার হয়েছি। একদিন তেমনি একটি গ্রুপ থেকে একটি পোস্টে আমার চোখ আটকে গেলো। সেখানে একজন ব্যক্তি একটি চপ খেয়ে রিভিউ দিয়েছে। এরকম রিভিউ হর হামেশাই দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু আমার চোখ আটকে গেল চপের নাম দেখে। সেই চপের নাম ছিল বিরিয়ানি চপ।

Polish_20230326_001333835.jpg

জীবনে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করা চপের নাম শুনেছি। কিন্তু এই ধরনের চপের নাম প্রথম শুনতে পেলাম। পরবর্তীতে খেয়াল করে দেখলাম অল্প কয়েক দিনেই সেই চপ বিক্রেতা বেশ বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং মিডিয়ার কল্যাণে। সেই চপ বিক্রেতা যেখানে চপ বিক্রি করতো সেই জায়গাটি শহর থেকে বেশ দূরে। আমাদের শহর থেকে প্রায় ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে তার দোকানের অবস্থান। আমি খেয়াল করে দেখলাম শহর থেকে প্রচুর ছেলেপেলে সেখানে গিয়ে চপ খেয়ে রিভিউ দিচ্ছে। আমি একবার চিন্তা করছিলাম সেখানে যেতে পারলে মন্দ হতো না। এই ইউনিক চপটা খেয়ে আসা যেতো। আবার সেখানে ঘোরাফেরাও হতো।

অবশ্য কেউ কেউ এই চপের নেগেটিভ রিভিউও দিচ্ছিল। সেজন্য কিছুটা কনফিউশনে পড়ে গিয়েছিলাম। এর ভিতর একদিন একজনের পোস্ট থেকে তার এই চপ তৈরির পেছনের গল্পটা জানতে পারলাম। সেই গল্পটা আপনাদের কাছে তুলে ধরছি। একদিন রাতে সেই চপ বিক্রেতার বিরিয়ানি খাওয়ার ইচ্ছা হল। তখন সে বাজার থেকে বিরিয়ানি রান্না করার সমস্ত উপকরণ কিনে এনে তার স্ত্রীকে বলল রান্না করতে। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় তার স্ত্রী তাকে মুখের উপর মানা করে দিল। তখন সেই বেচারা রাগ করে তার স্ত্রীকে বলল তোমার প্রয়োজন নাই। আমি নিজেই বিরিয়ানি রান্না করে খেতে পারব।

যদিও তার বিরিয়ানি রান্নার কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। যাই হোক সে তার ধারণা থেকে বিরিয়ানি রান্না করতে লাগলো। রান্না শেষ হয়ে যাওয়ার পর খাবারটার চেহারা এমন দাঁড়ালো যেটিকে কিছুতেই বিরিয়ানি বলা যাচ্ছিল না। বেচারা রাগে দুঃখে সেটা না খেয়ে ফ্রিজে উঠিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। পরদিন সে চিন্তা করতে লাগলো রান্না তো করে ফেলেছে। এখন এই জিনিসটা দিয়ে কি করা যায়। হঠাৎ করে তার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। বিরিয়ানির মতো এই রান্না দিয়ে সে চপ তৈরি করে ফেলল। তার এই নতুন ধরনের চপ খেয়ে এলাকায় লোকজন বেশ খুশি হল। তাদের দু একজনের ফেসবুক পোস্ট থেকে অন্যরা জানতে পারল। তারপর রাতারাতি সেই চপওয়ালা ভাইরাল হয়ে গেল।

তখন শহর থেকে অনেক লোক যেতে লাগল তার দোকানে। এভাবেই গ্রামের ভেতরে এক সাধারণ ভাজাপোড়া বিক্রি করা লোক রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গেল। অবশ্য সেই লোকটার এখন কি অবস্থা সেটা আমি জানি না। কারণ দীর্ঘদিন তার খাবারের কোন রিভিউ দেখতে পাই না। এভাবেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের কল্যাণে গ্রামের এক অখ্যাত চপ সিঙ্গারা বিক্রেতা রাতারাতি লোকজনের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থান

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

চপের নামটা অনেক বেশি সুন্দর লাগলো বিরিয়ানি চপ। রাতে ফ্রিজে রেখে দেওয়া বিরিয়ানি কি এ ধরনের সব বানানো টা একটু অদ্ভুত বিষয়। তবে যে বানিয়েছে তার মাথায় বেশ ভালই বুদ্ধি আছে। চপের স্বাদটা বেশ ভালই হবে তাইতো সবাই রিভিউ দিছে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

আরে এমন চপের নাম আজ প্রথম শুনলাম ৷ আসলে বর্তমান সময়ে ভাইরাল হতে সময় লাগে না ৷ ভালো কিছু করলে খুব সহজে হযে যাবে ৷ যেমন টা চপ ওয়ালার কথা বললেন ৷

 last year 

বিরিয়ানি চপ তো আসলেই আনকমন। এই চপের নাম আগে কখনও শুনিনি। যাইহোক আমার কাছে বিরিয়ানি চপ ওয়ালার আইডিয়াটা দুর্দান্ত লেগেছে। আর এই লোক এভাবে ভাইরাল হবে, এটা তার কপালে আগে থেকেই ছিল। তাই তো বিরিয়ানি রান্না ভালো হয়নি। রান্না ভালো হলে সে বিরিয়ানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তো। বিরিয়ানি নিয়ে আর কোন চিন্তা ভাবনা করতো না, আর সে চপ ও বানাতেন না,ভাইরাল ও হতে পারতেন না। আর ভাইরাল হবার পিছনে সোশ্যাল মিডিয়ার অবদান তো আছেই। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে ভাইয়া। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন সবসময়।

আপনার বিরিয়ানির চাপের নাম শুনে আমি বেশ অবাক হলা।ম যাইহোক ভিন্ন ধরনের চপের এই নাম। খেতেও নিশ্চয়ই অসাধারণ রাতের বেলা বিরিয়ানি ফ্রিজের রেখে। এই চপ তৈরি করা হয়।বিষয়টা জানতে পেরে বেশ ভালই লাগলো

অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা চপের কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন

 last year 

বিরিয়ানির আলুর চপ এইরকম একটা নিউজ দেখেছিলাম এর আগে। লোকটা খুব অল্প দিনেই ঐ চপ দিয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আজ আপনার পোস্ট থেকে এই চপটা তৈরির পেছনের গল্প জানতে পারলাম। তবে এতো রিভিউ যখন দেখেছেন ট্রাই করা উচিত হা হা।

 last year 

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং মিডিয়ার কল্যাণে আজকাল রাতারাতি অনেকেই ভাইরাল হয়ে যায়। তবে বিরিয়ানির চপের অজানা তথ্যগুলো জানতে পারলাম ভাইয়া। আসলে কোন কিছুর পেছনে হয়তো অনেক গল্প লুকিয়ে থাকে। যেগুলো আমরা সহজে জানতে পারি না। সেদিন রাতে বিরিয়ানি তৈরি করতে পারেনি বলেই হয়তো নতুন একটি খাবার আবিষ্কার করেছেন। আর সেই নতুন চপ সবার কাছেই ভালো লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 64349.20
ETH 2673.53
USDT 1.00
SBD 2.83