দীর্ঘদিন পর বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা, আড্ডা দেয়া ও রাতে ব্যাডমিন্টন খেলা ( শেষ পর্ব)।
রাফসানের এলাকা আমাদের শহর থেকে খুব বেশি দূরে না হওয়ায় আমরা ২০-২৫ মিনিটের ভেতরে সেখানে পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে রাফসানকে বললাম চল হাজিগঞ্জ যাই। তখন রাফসান জিজ্ঞেস করলো হাজীগঞ্জে গিয়ে কি হবে? তখন আমরা বললাম সেখানে নদীর পাড়ে কিছুটা সময় কাটাবো। তখন রাফসান আমাদের বলল ওদের এলাকাতেই নদীর পাড়ে সুন্দর একটি জায়গা রয়েছে। সেখানে নাকি শহর থেকে অনেক মানুষ এসে বরশি দিয়ে মাছ ধরছে। মাছ ধরার কথা শুনতেই ফেরদৌস সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠলো। আমরা তখন চিন্তা করলাম যেহেতু নদীর সৌন্দর্য দেখা আসল উদ্দেশ্য তাই যে কোন জায়গায় গেলেই হয়। তখন আমরা রাফসানদের এলাকার নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিছুক্ষণের ভেতরে সেখানে পৌঁছে আমরা যখন নদীর পাড় ধরে মোটর সাইকেলে চলতে লাগলাম। তখন খেয়াল করে দেখলাম নদীর পাড়ের দীর্ঘ এলাকা ব্যাপী কিছু দূর পরপর একেক জন মৎস্য শিকারি বরশি নিয়ে বসে মাছ ধরছে। আমাদের দেখে মনে হোলো এখন মনে হয় অনেক মাছ ধরা পড়ছে। সে কারণেই হয়তো বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এখানে আসছে মাছ ধরতে।
আমরা বেশ কিছুদূর আগানোর পর মোটরসাইকেল থেকে নেমে মৎস্য শিকারিদের সাথে কথা বলতে লাগলাম। তবে কথা বলে বুঝতে পারলাম আসলে মাছ খুব একটা বেশি ধরা পড়ছে না। যারা মাছ ধরতে এসেছে তারা সবাই সৌখিন মৎস্য শিকারি। যে কয়েকজনের সাথে কথা বলেছি তার ভিতরে বেশিরভাগ লোকই সেদিন কোন মাছ পাইনি। শুধু একজন লোককে দেখলাম এক কেজি সাইজের একটা মাছ পেয়েছে। তারা জানালো প্রতিদিন মাছ পাওয়া যায় না। দুই তিন দিন পরে হয়তো একটা দুটো মাছ পাওয়া যায়। আর যাদের ভাগ্য ভালো তারা মাঝে মাঝে মাছ পায়। মৎস্য শিকারীদের সাথে কথা বলে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমরা নদীর পাড়ে যে জায়গাটাতে মোটরসাইকেল থেকে নেমেছিলাম সেই জায়গাটা আসলেই অনেক সুন্দর ছিলো। কথাবার্তা বলার এক পর্যায়ে হঠাৎ করে আমরা ঠিক করলাম আমাদের ক্যাম্পিংয়ের প্রোগ্রামটা এখানেই করবো। ক্যাম্পিং করার জন্য এই জায়গাটা একেবারে আদর্শ জায়গা। পাশেই নদী রয়েছে আবার নদীর পাড়ে রয়েছে ফসলের ক্ষেত। আবার সেখানে একটি খড়ের পালাও দেখতে পেলাম। ক্যাম্পিং করার জন্য আমাদের খড়ের প্রয়োজন হবে। কারণ তাবুর নিচে খড় বিছিয়ে তার উপরে তাঁবু সেট করলে তখন আরামে থাকা যাবে। জায়গাটি আমাদের তিনজনেরই পছন্দ হোলো। তাছাড়া কিছু দূরে বাড়িঘর থাকায় সেখানে নিরাপত্তা নিয়েও কোন সমস্যা হবে না।
যাইহোক আমরা শেষ পর্যন্ত সেই জায়গাটাকেই ক্যাম্পিংয়ের জন্য ঠিক করলাম। আলাপ করতে করতে ততক্ষণে দেখি প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে। তখন আমরা রাফ্সানের শোরুম এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে পৌঁছে আমরা ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তবে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে রাফসানের এক ছোট ভাই জানালো যেখানে আমরা ব্যাডমিন্টন খেলেছিলাম সেখানে গতকাল থেকে কারেন্ট নেই। লাইনের কোন একটা সমস্যার কারণে এমন হয়েছে। যদিও তারা জানালো যে কোন সময় কারেন্ট চলে আসতে পারে। আমরা তখন ব্যাডমিন্টন খেলার সেই জায়গাতে গিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরও যখন দেখলাম কারেন্ট আসে না তখন আমরা সবাই যার যার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে গেলাম। অবশ্য সেখান থেকে আসার আগে রাফসান আমাকে বলেছে মাঝে মাঝে ওদের এলাকায় যেতে। কারণ সেখানে গেলে একসাথে ব্যাডমিন্টন খেলা যাবে। আমিও ঠিক করেছি সময় সুযোগ পেলে আমিও মাঝে মাঝে রাফসানের এলাকায় চলে যাবো ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য। মনে মনে এই পরিকল্পনা করতে করতে বাড়ি ফিরে এলাম। এভাবেই দুদিনব্যাপি ফেরদৌসের সাথে ঘোরাঘুরি শেষ হোলো। (শেষ)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাঘুরির ২য় পর্ব , বেশ সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। পর্বটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার বন্ধু কর্মস্থলে না যাওয়ায় একদিন বাড়তি ঘোরাঘুরি করতে পারলেন।বন্ধুর সাথে ঘোরাঘুরি মজাই আলাদা। আর হেমন্তের বিকেল ও সন্ধ্যা নদীর পাড়ে কাটানো বেশ মনোমুগ্ধকর।সেই সাথে বড়সিতে মাছ ধরার দৃশ্য অসাধারণ। ঘোরাঘুরির ছবি গুলোও অনেক সুন্দর হয়েছে। শুভ কামনা আপনার জন্য।
আপু এটা ২য় পর্ব ছিলো না, তৃতীয় এবং শেষ পর্ব ছিলো। আশা করি ঠিক করে নিবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
দুই দিনব্যাপী আপনার বন্ধু ফেরদৌসের সাথে তো দেখছি বেশ ভালই ঘোরাঘুরি করেছেন। আজকে পর্বে জানতে পারলাম আপনারা রাফসান ভাইয়ের এলাকায় থাকা একটা নদীর পাড়েও ঘুরতে গিয়েছিলেন। আর নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়ে সেখানে বেশ কিছু লোককে দেখলেন যারা মাছ ধরছিল। যদিও বা তাদের সাথে কথা বলে জানতে পারলেন সেখানে খুব বেশি মাছ পাওয়া যায় না তারপরেও তারা তাদের মাছ ধরার নেশা থেকেই প্রতিনিয়ত সেখানে মাছ ধরতে যায়। যাই হোক শেষে আবার জানতে পারলাম যে আপনারা এই জায়গাটাতেই ক্যাম্পিং করার জন্য সিদ্ধান্ত নিলেন কারণ জায়গাটা আপনাদের ক্যাম্পিং করার জন্য বেশ উপযোগী। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ফেরদৌস ভাই কর্মস্থলে না যাওয়ায় বেশ ভালোই হয়েছে,ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে আরেকদিন ঘুরাঘুরি করার সুযোগ হয়েছে আপনাদের। যাইহোক বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে এবং মাছ ধরা দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তবে বড়শি ফেললে মাছ যদি খাবার না খায়,তখন খুবই বিরক্ত লাগে। যাইহোক নদীর পাড়ে চমৎকার সময় কাটিয়েছেন আপনারা। সেদিন তাহলে ব্যাডমিন্টন খেলতে পারেননি বৈদ্যুতিক লাইনের সমস্যার জন্য। তিন পর্বের এই ব্লগটি পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লেগেছে ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার একটি ব্লগ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ফেরদৌস ভাইয়া কর্মস্থলে না যাওয়ায় আর একটা দিন সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। রাফসান ভাইয়া তার এলাকায় নদীর পাড়ের কথা বলাতে সেই নদীর পাড়ে গেলেন।দেখলেন অনেক সৌখিন মৎস্য শিকারী মাছ ধরছেন।কিন্তু মাছ তেমন কিছুই পাওয়া হয়নি।আসলে মাছ ধরতে আমার ও ভীষণ ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভালো লাগলো। আপনারা ব্যাড মিন্টন খেলতে গিয়েও খেলতে পারলেন না।কারন কারেন্টের বৈদ্যুতিক লাইনের সমস্যার জন্য। এরপর যে যার বাসায় চলে গেলেন।অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। এই বন্ধুত্ব অটুট থাকুক। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।